Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
অ্যালবিনিজম
ল্যাতিন শব্দ albus এর অর্থ 'সাদা' অথবা 'বর্ণহীন'। অ্যালবিনিজম বা লিউসিজম (Leucism) হল একটি জন্মগত ব্যাধি, যা চুল, চোখ এবং ত্বককে বিবর্ণ করে দেয়। মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, কুমির, পাখির আরও নানা প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে অ্যালবিনিজম দেখা যায়।
কারণ
ত্বক, চুল বা চোখে জৈব রঞ্জক পদার্থ বা পিগমেন্টের সম্পূর্ণ বা আংশিক অনুপস্থিতিতে অ্যালবিনিজম হয়। এর প্রভাবে ফটোফোবিয়া (আলোক সংবেদনশীলতা), নিস্টাগমুস ( চোখের অনৈচ্ছিক নড়াচড়া), এমব্লাইয়োপিয়া (এক চোখের দৃষ্টিক্ষমতা হ্রাস) ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়। এছাড়াও বিরক ক্ষেত্র বিশেষে অ্যালবিনিজমের সাথে মেলানিনের ঘাটতির সম্পর্ক রয়েছে। যার ফলে ইম্যুউনো কোষের প্রয়োজনীয় গ্রানিউলে প্রভাব বলে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সহজে রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
অনেক প্রাণী ফ্যাকাসে সাদা হওয়ার কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় জিনগত বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে। বংশসূত্রে পাওয়া টাইরোসিনেজ নামক এনজাইমের অনুপস্থিতিতে অথবা ক্ষতিগ্রস্ত টাইরোসিনেজের দরুণ অ্যালবিনিজম ঘটে। অবশ্য অ্যালবিনিজমের কারণে মানুষ ছাড়াও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণী সাদা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই প্রাণীটিকে বলে অ্যালবিনো। রঞ্জক পদার্থ উদ্ভিদ বা প্রাণীকে রঙিন করে। লিউসিজমে আক্রান্ত প্রাণীদের বেলায় একাধিক রঞ্জক পদার্থের অভাব থাকে। আর এ কারণে প্রাণীটিকে সাদা বা ফ্যাকাসে রঙের দেখায়। অ্যালবিনজমের ক্ষেত্রে প্রাণী বা ব্যক্তির মেলানিন সম্পূর্ণভাবে উহ্য থাকে। অপরদিকে লিউসিজমের ক্ষেত্রে কিছু মাত্রায় মেলানিনের অভাব দেখা যায়। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি বা রোগীকে লিউকিসটিক বা অ্যালবিনয়েড বলে।
প্রকারভেদ
দুই ধরনের অ্যালবিনিজম দেখতে পাওয়া যায়। অকুলোকিউটানয়েস ও অকুলার অ্যালবিনিজম। প্রথম প্রকারের অ্যালবিনিজমে চোখ, ত্বক এবং চুল আক্রান্ত হয়। অকুলার অ্যালবিনিজম শুধুমাত্র চোখে আক্রান্ত করে। প্রথম প্রকারের অ্যালবিনিজম "কালো-বাদামী রঙা ত্বকের মানুষের" মাঝে দেখা যায়। ন্যাশনাল অরগানাইজেশন অব অ্যালবিনিজম এন্ড হাইপোপিগমেন্টেশন এর মতে, অকুলার অ্যালবিনিজমে মানুষের চোখের মণির রঙ সবুজ থেকে নীল এমনকি বাদামী রঙ ধারণ করতে পারে। এক্ষেত্রে খুব অল্প পরিমান পিগমেন্ট চোখে থাকে বলে আলো সরাসরি আইরিশে প্রতিফলিত হয়।
জিনেটিক্স
সাধারণত বংশসূত্রেই অ্যালবিনিজম রোগ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায়। এক্ষেত্রে রিসেসিভ অ্যালীল পিতামাতা উভয়েরই থাকলে তাদের সন্তানের অ্যালবিনো হয়ার সুযোগ থাকে। পিতামাতা দুইজনের মধ্যে একজন অ্যালবিনিজমের বাহক হলে সন্তানের অ্যালবিনো হওয়ার সুযোগ কম। তবে এক্ষেত্রে সন্তানও অ্যালবিনিজমের জিনগত বাহক হয়।এক্ষেত্রে জিনগতভাবে অ্যালবিনিজম বাহক এই রোগের কোনো লক্ষণপ্রকাশ করেনা। তাই জিনগত পরীক্ষা ছাড়া একজন ব্যক্তির স্বতন্ত্রভাবে অ্যালবিনিজম রোগের বাহক কিনা তা যাচাই করা মুশকিল। নারী ও পুরুষের মাঝে অ্যালবিনিজম হওয়ার হার সমান।
অকুলার অ্যালবিনিজম এক্স-লিংকড বংশানুক্রমে বিস্তার লাভ করে। যেহেতু পুরুষদের এক্স ও ওয়াই দুই ধরনের ক্রোমোজোম থাকে অপরদিকে নারীরা দুইটি এক্স ক্রোমোজমের ধারক হয়। তাই এই ধরনের অ্যালবিনিজম নারীদের চেয়ে পুরুষদের মাঝে বেশি হতে দেখা যায়।
চিকিৎসা
অ্যালবিনিজম সম্পূর্ণভাবে সারানোর মত কোন চিকিৎসা আজ অব্দি আবিষ্কার হয়নি। অ্যালবিনিজম রোগীদের সানবার্ন এড়াতে সতর্ক থাকতে হয় এবং নিয়মিত ত্বকের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়।
অ্যালবিনিজমের জন্য হওয়া চোখের সমস্যা কমাতে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। অবশ্য বলা বাহুল্য, এসব অস্ত্রোপচারে রোগীর অবস্থাভেদে সুফলও বিভিন্ন হয়। বেশিরভাগ রোগীরাই দৃষ্টি দূর্বলতা এড়াতে চশমার ব্যবহার করে থাকেন।
আন্তর্জাতিক অ্যালবিনিজম সতর্কতা দিবস
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাবনা অনুসারে ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ১৩ই জুন আন্তর্জাতিক অ্যালবিনিজম সতর্কতা দিবস পালন করা হয়। অ্যালবিনিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার নিয়ে স্বাধীনভাবে কর্মরত নাইজেরিয়ার প্রথম নারী কর্মী ইকপোনওয়াসা এরোর উদ্যোগে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সৃষ্ট ম্যান্ডেটে দিনটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি পায়।