Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
আইভারমেকটিন
রোগশয্যাসম্বন্ধীয় তথ্য | |
---|---|
বাণিজ্যিক নাম | Scabo, Ivera |
এএইচএফএস/ ড্রাগস.কম |
মনোগ্রাফ (antiparasitic) এফডিএ পেশাগত ড্রাগের তথ্য (rosacea) |
মেডলাইনপ্লাস | a607069 |
লাইসেন্স উপাত্ত |
|
গর্ভধারণ বিষয়শ্রেণী |
|
প্রয়োগের স্থান |
মুখ, ত্বক |
এটিসি কোড | |
আইনি অবস্থা | |
আইনি অবস্থা |
|
ফার্মাকোকাইনেটিক উপাত্ত | |
প্রোটিন বন্ধন | ৯৩% |
বিপাক | যকৃৎ (CYP450) |
বর্জন অর্ধ-জীবন | ১৮ ঘণ্টা |
রেচন | মল; <১% মূত্র |
শনাক্তকারী | |
| |
সিএএস নম্বর | |
পাবকেম সিআইডি | |
ড্রাগব্যাংক |
|
কেমস্পাইডার |
|
ইউএনআইআই | |
কেইজিজি |
|
সিএইচইএমবিএল | |
পিডিবি লিগ্যান্ড | |
কমপটক্স ড্যাশবোর্ড (আইপিএ) | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | 100.067.738 |
রাসায়নিক ও ভৌত তথ্য | |
সংকেত |
C 48H 74O 14 (22,23-dihydroavermectin B1a) C 47H 72O 14 (22,23-dihydroavermectin B1b) |
মোলার ভর | ৮৭৫.১০ g/mol |
থ্রিডি মডেল (জেএসমোল) | |
| |
|
আইভারমেকটিন (ইংরেজি: Ivermectin) ওষুধটি বিভিন্ন ধরনের পরজীবী সংক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাথার উকুন, স্কেবিজ বা চুলকানি, অংকোসারসায়াসিস বা নদী অন্ধত্ব, স্ট্রনজিলোইডায়াসিস, ট্রিকিউরায়াসিস, অ্যাস্কারায়াসিস, লিমফ্যাটিক ফিলারায়াসিস বা গোদ রোগ। এই ওষুধটি মুখে সেবন করা যায় অথবা বাহ্যিক সংক্রমণের জন্য ত্বকে প্রয়োগ করা যায়। চোখে ব্যবহার এড়ানো উচিত।
উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ হলো চোখ লাল হওয়া, ত্বকের শুষ্কতা, ত্বক জ্বালাপোড়া করা। গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি, তবে দুগ্ধদান কালীন এর ব্যবহার সম্ভবত গ্রহণযোগ্য। এই ওষুধটি অ্যাভারমেকটিন গোত্রভুক্ত। এটা পরজীবীর কোষ ঝিল্লির ভেদনীয়তা বাড়িয়ে দেয় ফলে কোষের পক্ষাঘাত হয় এবং মৃত্যু ঘটে।
আইভারমেকটিন আবিষ্কার হয় ১৯৭৫ সালে এবং চিকিৎসায় ব্যবহার শুরু হয় ১৯৮১ সাল থেকে। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি তালিকাভুক্ত ওষুধ। উন্নয়নশীল দেশে এই ওষুধের একটা কোর্স সম্পন্ন করতে পাইকারি খরচ পড়ে প্রায় ০.১২ মার্কিন ডলার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই খরচ এই খরচ ৫০ ডলারের কম। অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে এটি হৃদক্রিমি ও গোল ক্রিমির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার
গুঁড়া ক্রিমি
আইভারমেকটিন গুঁড়া ক্রিমির (এন্টারোবায়াসিস) চিকিৎসায় অ্যালবেনডাজলের মতোই কার্যকর।
নদী অন্ধত্ব
অংকোসারসায়াসিস এর চিকিৎসা, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে আইভারমেকটিন ব্যবহার করা হয়। তবে ব্যাপক চক্ষুক্রিমি সংক্রমণের ক্ষেত্রে (যেমন প্রতি মিলিলিটারে Loa loa মাইক্রোফিলেরির সংখ্যা ২০,০০০ এর অধিক হলে) এর ব্যবহার নিষিদ্ধ। আইভারমেকটিনের একটি একক ডোজ ১-২ মাসের মধ্যে ত্বকে মাইক্রোফিলেরির পরিমাণ ৯৮-৯৯% কমিয়ে দিতে পারে। আইভারমেকটিন একক ডোজ (১৫০ থেকে ২০০ μg/kg) প্রতি ৬-১২ মাসে দেওয়া হয়। এটি প্রাপ্তবয়স্ক ও পাঁচ বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের দেওয়া হয়।
আমেরিকা অঞ্চল ও সাহারা-নিম্ন আফ্রিকায় গণহারে আইভারমেকটিন প্রদান অংকোসারসায়াসিস নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ত্বক ও চোখের টিসু হতে কয়েক দিনের মধ্যেই মাইক্রোফিলেরি দূর হয়ে যায় এবং ৬-১২ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অতঃপর পুনরায় আইভারমেকটিন দিতে হয়। যেহেতু আইভারমেকটিন প্রাপ্তবয়স্ক O. Volvulus এর বিরুদ্ধে কার্যকর নয় তাই এটা রোগ দূর করতে পারে না। ১৯৮৭ সাল থেকে সমগ্র আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকায় অংকোসারসায়াসিস নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রধান ওষুধ হিসেবে আইভারমেকটিন ব্যবহার হয়ে আসছে।
চক্ষুক্রিমি
আইভারমেকটিনের একটি একক ডোজ খুব দ্রুত শরীরে চক্ষুক্রিমির (Loa loa) পরিমাণ হ্রাস করতে সক্ষম। রক্তে প্রতি মিলিলিটারে ২০,০০০ এর কম মাইক্রোফিলেরি থাকলে আইভারমেকটিন সম্পর্কিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
সুতাক্রিমি
সুতাক্রিমির চিকিৎসায় আইভারমেকটিন অ্যালবেনডাজল থেকে বেশি ও থায়াবেনডাজলের সমান কার্যকর। থায়াবেনডাজলের তুলনায় আইভারমেকটিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম এবং অ্যালবেনডাজলের মতোই সহনীয়। যে সকল ব্যক্তি কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন অথবা যারা রোগ প্রতিরোধ কমানোর ওষুধ নিবেন এবং যাদের নিশ্চিত অথবা সম্ভাব্য সুতাক্রিমি সংক্রমণ হয়েছে তারা আইভারমেকটিন গ্রহণ করলে উপকার পাবেন।
চাবুক ক্রিমি
আইভারমেকটিন ও অ্যালবেনডাজলের সমন্বিত চিকিৎসা ট্রিকিউরায়াসিস বা চাবুক ক্রিমির বিরুদ্ধে কার্যকর এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বেশি না।
লিমফ্যাটিক ফিলারায়াসিস
Brugia malayi, অথবা Brugia timori, ও ভুকেরেরিয়া ব্যানক্রফটি (Wuchereria bancrofti) দ্বারা ঘটিত লিমফ্যাটিক ফিলারায়াসিস বা গোদ রোগের চিকিৎসায় আইভারমেকটিন ও অ্যালবেনডাজলের সমন্বিত চিকিৎসা বেশ কার্যকর। আইভারমেকটিন লিমফ্যাটিক ফিলারায়াসিস নিয়ন্ত্রণে ডাইইথাইল কার্বামাজিনের মতোই কার্যকর এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম।
আর্থ্রোপড
পরজীবী আর্থ্রোপড ও কীটপতঙ্গের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতার প্রমাণ রয়েছে:
এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে পারমিথ্রিনের কার্যকারিতা সিস্টেমিক বা টপিক্যাল আইভারমেকটিনের মতোই। আরেকটি পৃথক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যদিও মুখে সেবনীয় আইভারমেকটিন স্কেবিজের চিকিৎসায় কার্যকর তবে টপিক্যাল পারমিথ্রিনের চেয়ে চিকিৎসায় ব্যর্থতার হার বেশি। আরেকটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে মৌখিক আইভারমেকটিন কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার মধ্যে যৌক্তিক ভারসাম্য প্রদান করে কারণ আইভারমেকটিন পারমিথ্রিনের তুলনায় বেশি সুবিধাজনক। আইভারমেকটিন মুখে ২০০ μg/kg ডোজে অজটিল স্কেবিজে দেওয়া হয়। ১-২ সপ্তাহ অন্তর দুটি ডোজ দেওয়া হয়। জটিল স্কেবিজে ২০০ μg/kg হারে ১, ২, ৮, ৯, ১৫, ২২ ও ২৯ তম দিনে মোট সাতটি ডোজ দেওয়া হয়।
- উকুন:
যুক্তরাষ্ট্রের এফ ডি এ ছয় মাস বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের জন্য উকুনের চিকিৎসায় ০.৫% আইভারমেকটিন লোশন অনুমোদন দিয়েছে। শুষ্ক চুলে একবার লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে গোসল করার পর ৭৮% ব্যক্তি দুই সপ্তাহের মধ্যে উকুন মুক্ত হয়েছে।
- ছারপোকা:
আইভারমেকটিন ছারপোকাকে মারতে পারে। তবে এর এধরনের কাজে ব্যবহারের জন্য দীর্ঘদিন ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয় ফলে এর নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
- ম্যালেরিয়া বহনকারী মশা যেমন অ্যানোফিলিস গাম্বি:
নেমাটোড সংক্রমণের চিকিৎসা বা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে জনসাধারণকে গণহারে আইভারমেকটিন সেবন করালে তা ম্যালেরিয়া বহনকারী মশা নিধনে সাহায্য করে ফলে ম্যালেরিয়া জীবাণু যেমন প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপ্যারাম এর সংক্রমণ কমিয়ে দেয়।
রোজেসিয়া
এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে আইভারমেকটিন রোজেসিয়ার চিকিৎসায় কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপে আইভারমেকটিনের একটি ক্রিম রোজেসিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোজেসিয়া রোগে Demodex গণের এক পরজীবী মাইটের ভূমিকা রয়েছে এই প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে আইভারমেকটিন ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে আইভারমেকটিন চার মাসে ৮৩% ক্ষত সারিয়ে তুলেছে যেখানে মেট্রোনিডাজল থেরাপিতে ৭৪% কমে।
প্রতিনির্দেশনা
পাঁচ বছর বয়সের নিচের শিশু এবং যাদের ওজন ১৫ কিলোগ্রাম (৩৩ পাউন্ড) এর নিচে তাদের ক্ষেত্রে আইভারমেকটিন ব্যবহার করা যাবে না। যকৃৎ ও বৃক্কের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। আইভারমেকটিন খুব অল্প পরিমাণে মাতৃদুগ্ধে ক্ষরিত হয়। দুগ্ধ পানকারী শিশুর শরীরে এর ফল কী তা এখনো অজানা। গর্ভাবস্থায় আইভারমেকটিন ব্যবহার নিরাপদ কি না তা নিশ্চিত না। তাই গর্ভাবস্থায় এটি ব্যবহার অনুচিত। যেসব রোগে (যেমন মেনিনজাইটিস ,আফ্রিকান ট্রিপ্যানোসোমায়াসিস) রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেসব ক্ষেত্রে আইভারমেকটিন দেওয়া যাবে না।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
স্ট্রনজিলোইডায়াসিসের চিকিৎসায় আইভারমেকটিনের কিছু বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় যেমন, ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম, বমনেচ্ছা, বমন, পেটব্যথা ও ফুসকুড়ি। অংকোসারসায়াসিসের চিকিৎসায় যেসব বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সেগুলো মূলত মাইক্রোফিলেরির মৃত্যুর ফলে হয় যেমন, জ্বর, মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম, নিদ্রালুতা, দুর্বলতা, ফুসকুড়ি, চুলকানি, উদরাময়, অস্থি ও পেশিতে ব্যথা, নিম্ন রক্তচাপ,হৃদস্পন্দনের হার বৃদ্ধি, লসিকাগ্রন্থির প্রদাহ, লসিকাবাহর প্রদাহ, প্রান্তীয় স্ফীতি। এই প্রতিক্রিয়া প্রথম দিনে শুরু হয় এবং দ্বিতীয় দিনে সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে। এটা ৫-৩০% ব্যক্তির ক্ষেত্রে হয় এবং সাধারণত হালকা হয়ে থাকে। অ্যাসপিরিন ও অ্যান্টিহিস্টামিন প্রয়োগে এগুলো উপশম হয়। তবে যারা অংকোসারসায়াসিস প্রবন অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে না তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি তীব্র হতে পারে। ১-৩% ক্ষেত্রে তীব্র হয় আর ০.১% ক্ষেত্রে অত্যধিক তীব্র হয় যেমন, নিম্ন রক্তচাপ, উচ্চমাত্রার জ্বর, শ্বাসনালির সংকোচন। এ অবস্থায় কর্টিকোস্টেরয়েড কয়েকদিন ধরে প্রয়োগ করা হয়। পুনঃপুন ডোজ প্রয়োগে বিষক্রিয়া কমে আসে। যেসব স্থানে প্রাপ্তবয়স্ক ক্রিমি থাকে সেখানে মাঝে মাঝে ১-৩ সপ্তাহের মধ্যে ফুলে যায় ও ফোঁড়া হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরুর কিছুদিন পর চোখের অচ্ছোদপটল অনচ্ছ হয়ে যায় এবং চোখের আরও অন্যান্য ক্ষত দেখা দেয়। এগুলো কদাচিৎ তীব্র হয় এবং কর্টিকোস্টেরয়েড ছাড়ায় সাধারণত সেরে যায়।
অন্যান্য যে সকল ওষুধ GABA ক্রিয়া বৃদ্ধি করে সেগুলোর সাথে আইভারমেকটিন ব্যবহার করা উচিত নয় যেমন বারবিচুরেট, বেনজোডায়াজেপিন, ও ভ্যালপ্রোয়িক অ্যাসিড। ডাইইথাইল কার্বামাজিনের তুলনায় আইভারমেকটিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। ডাইইথাইল কার্বামাজিন দিয়ে অংকোসারসায়াসিসের চিকিৎসায় চোখের সমস্যা আইভারমেকটিনের তুলনায় বেশি হয়।
যাদের শরীরে Loa loa মাইক্রোফিলেরিয়ার পরিমাণ অত্যধিক তাদের আইভারমেকটিন দিলে একটি বিরল কিন্তু গুরুতর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যেমন এনসেফালোপ্যাথি। প্রতি মিলিলিটার রক্তে ৩০,০০০ এর বেশি Loa মাইক্রোফিলেরি থাকলে এরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে। আইভারমেকটিন ক্যান্সার বা গর্ভস্থ ভ্রূণের গাঠনিক বিকৃতি করতে পারে এরকম প্রমাণ নেই বললেই চলে। যেসকল ওষুধ CYP3A4 উৎসেচক কে নিবৃত্ত করে তারা প্রায়শই পি-গ্লাইকোপ্রোটিন পরিবহনকেও নিবৃত্ত করে, ফলে রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক ভেদ করে আইভারমেকটিনের শোষণ বৃদ্ধি পাবে যদি এর সাথে ঐ সকল ওষুধ যুগপৎভাবে ব্যবহার করা হয়। ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে স্ট্যাটিনসমূহ, এইচ আই ভি প্রোটিয়েজ ইনহিবিটর, অনেক ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, লিডোকেইন, বেনজোডায়াজেপিন ও গ্লুকোকর্টিকয়েড যেমন ডেক্সামিথাসন।
ঔষধবিদ্যা
ফার্মাকোডাইনামিকস
আইভারমেকটিন Streptomyces avermitilis নামক ব্যাক্টেরিয়াম থেকে উদ্ভূত। আইভারমেকটিন কোষের স্নায়ুতন্ত্র ও মাংসপেশির ক্রিয়া কে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে হত্যা করে। বিশেষত এটা কোষের নিবৃত্তমূলক স্নায়বিক উদ্দীপনা সঞ্চারণ কে বাড়িয়ে দেয়। আইভারমেকটিন অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের স্নায়ু ও পেশি কোষের ঝিল্লিতে অবস্থিত গ্লুটামেট-গেটেড ক্লোরাইড চ্যানেলের (GluCls) সাথে বন্ধন তৈরি করে ফলে ক্লোরাইড আয়নের প্রবেশ্যতা বৃদ্ধি পায় এবং কোষে অতি মেরুকরণ ঘটে। এর ফলে কোষ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয় এবং মৃত্যু ঘটে। এই ক্লোরাইড চ্যানেল সুনির্দিষ্টভাবে অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের কোষে বিদ্যমান
ফার্মাকোকাইনেটিকস
মানুষের ক্ষেত্রে মুখে আইভারমেকটিন সেবনের ৪-৫ ঘণ্টা পরে রক্তে সর্বোচ্চ ঘনত্ব পাওয়া যায়। এর অর্ধায়ু প্রায় ৫৭ ঘণ্টা। অর্ধায়ু বেশি হওয়ায় এটি শরীর থেকে বের হতে অনেক সময় লাগে এবং এর বণ্টন আয়তন অনেক বেশি। প্রায় ৯৩% আইভারমেকটিন প্লাজমা প্রোটিনের সাথে যুক্ত থাকে। এই ওষুধটি যকৃতের CYP3A4 উৎসেচকের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে রূপান্তরিত হয়ে কমপক্ষে ১০ টা উৎপাদে পরিণত হয়। আইভারমেকটিন মূলত মানব মূত্রে পাওয়া যায় না। আইভারমেকটিন মুখে সেবন, ত্বকে বা শিরাপথে প্রয়োগ করা যায়। এটি পি-গ্লাইকোপ্রোটিন এর কারণে স্তন্যপায়ীদের রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক অতিক্রম করতে পারে না। MDR1 জিনের মিউটেশান এই প্রোটিনের কাজকে প্রভাবিত করে। আইভারমেকটিন উচ্চমাত্রায় দিলে রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক অতিক্রম করতে পারে। সেক্ষেত্রে মস্তিষ্কে ২-৫ ঘণ্টা পরে সর্বোচ্চ পরিমাণে পৌঁছাতে পারে।
ইতিহাস
টোকিওর কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতোশি ওমুরা ও যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক ইন্সটিটিউট ফর থেরাপিউটিক রিসার্চের উইলিয়াম সি. ক্যাম্পবেল অ্যাভারমেকটিন পরিবারের যৌগ আবিষ্কার করেন যা থেকে রাসায়নিকভাবে আইভারমেকটিন পাওয়া যায়। সাতোশি ওমুরা Streptomyces avermitilis নামক ব্যাক্টেরিয়ামে অ্যাভারমেকটিন শনাক্ত করেন। ক্যাম্পবেল ওমুরা থেকে প্রাপ্ত অ্যাভারমেকটিন কে পরিশুদ্ধ করেন এবং আইভারমেকটিন আবিষ্কার করেন যা পূর্ববর্তীর তুলনায় বেশি শক্তিশালী কিন্ত কম বিষাক্ত। আইভারমেকটিন আবিষ্কার হয় ১৯৮১ সালে। অ্যাভারমেকটিন আবিষ্কারের জন্য ২০১৫ সালে ওমুরা ও ক্যাম্পবেল কে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
পশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার
আইভারমেকটিন জাবরকাটা পশুদের অন্ত্রীয় কৃমির চিকিৎসায় সচরাচর ব্যবহার করা হয়। কুকুরের ক্ষেত্রে হৃদক্রিমির চিকিৎসায় আইভারমেকটিন ব্যবহার করা হয়। তবে যে সকল কুকুরের MDR1 জিন মিউটেশান আছে তাদের ক্ষেত্রে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। বিড়ালের ক্ষেত্রে আইভারমেকটিন বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গবেষণা
আইভারমেকটিন কে পীতজ্বর ও চিকুনগুনিয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভাইরাসনাশক ওষুধ হিসেবে গবেষণা করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে এই পরজীবী নাশক ওষুধটিকে ফারনিসয়েড এক্স রিসেপ্টরের (FXR) একটি লিগ্যান্ড হিসেবে দেখানো হয়, যা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিজের একটা লক্ষ্যবস্তু। আইভারমেকটিন ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেও কার্যকর হতে পারে যেহেতু এটা স্বয়ং প্লাজমোডিয়াম ও এর বাহক মশা উভয়ের জন্যই বিষাক্ত।
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯
আইভারমেকটিন বানরের বৃক্ককোষ ফলনে সার্স-কোভি-২ প্রতিলিপি সৃষ্টিকে নিবৃত্ত করে, যেখানে এর নিবৃত্তমূলক ঘনত্ব (IC50) ছিল ২.২-২.৮ মাইক্রোমোল (µM)। কোষ ফলনে যে মাত্রা ব্যবহার করা হয়েছে মানব শরীরে তার চেয়ে ১০৪ গুণ (১০ হাজার গুণ) বেশি মাত্রা লাগতে পারে, যার ফলে এটিকে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় কার্যকরী বলে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। অধিকন্তু কোষ ফলন গবেষণা ডেঙ্গু চিকিৎসার ক্ষেত্রেও আশা জাগিয়েছিল কিন্তু প্রাণীদেহে পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
১০ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় কিংবা প্রতিরোধে আইভারমেকটিন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেয়। তাদের মতে বর্তমানে লভ্য উপাত্ত অনুযায়ী কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় আইভারমেকটিনের কার্যকারিতা এখনও প্রদর্শিত হয়নি। অধিক মাত্রায় আইভারমেকটিন সেবন বিপজ্জনক। যদি কোনও স্বাস্থ্য সেবা প্রদায়ক পেশাদার ব্যক্তি ব্যবস্থাপনা পত্রে আইভারমেকটিন সুপারিশ করে থাকেন, তাহলে সেটিকে ঔষধালয়ে গিয়ে ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহারবিদের সাথে আলোচনা করে সঠিক মাত্রায় সেবন করতে হবে। আইভারমেকটিনের যে রূপটি পশুদের জন্য ব্যবহৃত হয়, সেটি সেবন করা কখনোই ঠিক নয়। পশুদের জন্য অনুমোদিত আইভারমেকটিন জাতীয় ঔষধগুলি মানুষের জন্য অনুমোদিত ঔষধগুলি অপেক্ষা খুবই ভিন্ন প্রকৃতির। পশুর জন্য প্রযোজ্য আইভারমেকটিন মানুষের সেবন করা বিপজ্জনক। পশুদের আইভারমেকটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, কেননা পশুদের ওজন মানুষের চেয়ে এক টন বা তার বেশি হতে পারে, কিন্তু ঐ মাত্রাটি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি মানবদেহে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত আইভারমেকটিনও অন্যান্য ঔষধের সাথে আন্তঃক্রিয়ায় লিপ্ত হতে পারে, যেমন রক্ত পাতলাকারক ঔষধগুলির সাথে। যদি কেউ অতিরিক্ত মাত্রায় আইভারমেকটিন গ্রহণ করে, তাহলে তার বমি বমি ভাব, বমি, নিম্ন রক্তচাপ, অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি) যেমন চুলকানি, ফুসকুরি, মাথা ঘোরানো, শরীরের ভারসাম্যহানি, খিঁচুনি, সংজ্ঞাহীনতা (কোমা) এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
৮ মে, ২০২০ তারিখে পেরুর স্বাস্থ্য বিভাগ কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আইভারমেকটিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। ১২ মে ২০২০, বলিভিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগও একই ধরনের অনুমোদন দেয়।
বহিঃসংযোগ
- "Ivermectin"। Drug Information Portal। U.S. National Library of Medicine।
- The Carter Center River Blindness (Onchocerciasis) Control Program
- Trinity College Dublin. Prof William Campbell – The Story of Ivermectin
- "ivermectin (Rx) Stromectol"। Medscape।
- "Ivermectin Topical"। MedlinePlus।
টেমপ্লেট:Anthelmintics টেমপ্লেট:Ectoparasiticides