Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
আহমেদ ইয়াসিন
শেখ আহমাদ ইয়াসিন أحمد ياسين | |
---|---|
২৮শে জানুয়ারী ১৯৩৬– ২২শে মার্চ ২০০৪ | |
২০০৪ সালের প্রথম দিকে গাযায় আহমাদ ইয়াসিন | |
জন্ম তারিখ | ২৮শে জানুয়ারী ১৯৩৬ |
জন্মস্থান | আল জুরাহ আসকালান প্রদেশ, ফিলিস্তিন |
মৃত্যু তারিখ | ২২শে মার্চ ২০০৪ |
মৃত্যুস্থান | গাজা স্ট্রীপ, গাজা, ফিলিস্তীন |
জাতীয়তা | ফিলিস্তিনি |
উপাধি | শায়খুল মুকাওয়ামাহ(প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা) |
আন্দোলন |
প্রথম ইন্তিফাদা দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | হালিমা ইয়াসিন |
শায়খ আহমাদ ইসমাইল হাসান ইয়াসিন (২৮শে জানুয়ারী ১৯৩৬ – ২২শে মার্চ ২০০৪) (আরবিঃ الشيخ أحمد إسماعيل حسن ياسين) একজন বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব, ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ, ফিলিস্তিনের শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রপথিক ও ধর্মীয় নেতা। তিনি গাযা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং হামাস নামক স্বশস্ত্র রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পর পরিবারের সাথে গাযার শরণার্থী শিবিরে আসেন। মাত্র বারো বছর বয়সে বন্ধূর সাথে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন এবং পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তিনি পড়াশোনার জন্য আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হলেও পরবর্তীকালে শারিরীক অক্ষমতার কারণে সেখানে পুরো পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। এছাড়া তিনি মসজিদে ইমামতি করেতেন এবং খুতবাও দিতেন। তার বলিষ্ঠ যুক্তি এবং উপস্থাপন ভঙ্গী তাকে ফিলিস্তীনের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছিল।
১৯৬৭ সালের আরব ইসরাইল যুদ্ধের পর শায়খ তার বক্তব্যে ফিলিস্তীনের প্রতিরোধের দিকে উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করেন। তিনি এসময় ইসলামী সমাজ সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে অবরুদ্ধ জনগণ, আহত এবং বন্দীদের জন্য ত্রাণ ও সাহায্যের ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে তিনি ফিলিস্তিনী জনগণের প্রিয় পাত্রে পরিণত হন। ১৯৮৩ সালে তিনি প্রথমবারের মত গ্রেফতার হন এবং ইহুদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণে জনগণকে উস্কানী দেয়ার অভিযোগে তার ১৩ বছরের জেল হয়। ১৯৮৫ সালে তিনি ছাড়া পান।১ ৯৮৭ সালে তিনি হামাস প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে হাসপাতাল, এনজিও, স্কুল, লাইব্রেরী গঠনের মাধ্যমে জনগণের মন আকর্ষণ করলেও ধীরে ধীরে হামাস ইসরাইলীদের বিরুদ্ধে একটি স্বশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনে রূপ নেয়। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মত গ্রেফতার হন। ১৯৯৭ সালে ছাড়া পেয়ে দ্বিগুন উদ্যমে প্রতিরোধ আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন।তাকে হত্যার জন্য ইসরাইল বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অবশেষে ২২ মার্চ ২০০৪ সালের ভোরে ফজরের নামাজে যাবার সময় ইসরাইলী বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে মিসাইল ছুঁড়ে তাকে হত্যা করে। তার জানাযায় বিপুল পরিমাণ ফিলিস্তীনী জনগণের সমাগম হয়। বিশ্বের অনেক দেশ এবং অনেক সংগঠন তার হত্যাকান্ডের নিন্দা জানায়।
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
শায়খ আহমাদ ইয়াসিন রহ: ১৯৩৬ সালের জানুয়ারি মাসে আসকালান শহর থেকে থেকে বিশ কি. মি দূরে জুরাহ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। এই স্থানটি ঐতিহাসিকভাবে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ একটি স্থান।তার পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ ইয়াসিন এবং মাতার নাম সা'দা আল হাবেল। তিন বছর হতে না হতেই তার পিতা মৃত্যু বরণ করেন। লোকে তাকে চিনত তার মাতার নামের সাহায্যে আহমাদ সা'দা হিসেবে । ইয়াসিনরা ছিলেন তার চার ভাই এবং দুই বোন্। ১৯৪৮ সালে তাদের গ্রাম ইসরায়েলের দখলে চলে গেলে দশ বছরের বালক আহমেদের জায়গা হয় গাজার আল শাতিঈ শরণার্থী শিবিরে। শরণার্থী শিবিরের প্রচন্ড কষ্টের মধ্যে এই বালকের মধ্যে ইসরাইলীদের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিনীদের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় যা পরবর্তীতে তার প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিবির জীবনের দু’বছরের মাথায় যখন তার বয়স মাত্র বারো, বন্ধু আব্দুল্লাহর সঙ্গে কুস্তি খেলতে গিয়ে মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত পান। টানা পঁয়তাল্লিশ দিন প্ল্যাস্টার করে রেখেও শেষ রক্ষা হয় না। আহমেদ সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান। পঙ্গু হয়ে যাবার পরেও তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য একাগ্র মানসিকতা নিয়ে তৎকালীন ইসলামী জ্ঞানের তীর্থস্থান কায়রোর আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ক্রমান্বয়ে শরীরের অবনতি ঘটায় তিনি গাযায় ফিরে আসেন। তবে এতে তার জ্ঞানের প্রতি স্পৃহা বিন্দুমাত্র কমেনি। বাড়ি বসেই তিনি পড়ে ফেলেন দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি আর ধর্মের নানা বিষয়। আধুনিক নানা বিষয়ে পণ্ডিত হয়ে ওঠেন তিনি।
কর্মজীবন
এসময় তিনি এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ পড়ানো শুরু করেন। প্রখর যুক্তি এবং মানুষকে আকৃষ্ট করার যোগ্যতার কারণে তার খুৎবা এলাকাবাসীর কাছে অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। বিশেষ করে তরুণরা তার কথা বার্তায় খুজে পায় ফিলিস্তিনী জাতির মুক্তির মন্ত্র। এভাবে নানা এলাকার মসজিদে মসজিদে লোকে তাকে ডাকতে থাকে। এর পাশাপাশি রোজগারের জন্য একটি স্কুলে আরবী ভাষা বিষয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। শিক্ষক হিসেবেও ছাত্রদের মধ্যে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার ছাত্রদের মনেও তিনি বপন করে দেন ইসরাইল বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ।
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৬০ সালে আহমাদ ইয়াসিন হালিমা নামে তার একজন আত্নীয়াকে বিয়ে করেন। তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর। শায়খ আহমাদ ইয়াসিনের ছেলে মেয়ের সংখ্যা হল এগারোজন। খুব সাধাসিধে জীবন যাপন কারী এই নেতা গাযায় তিন রুমের একটি এপার্টমেন্টে বাস করতেন।
প্রতিরোধ আন্দোলন
১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ফলে প্রায় ৭০০০০০ ফিলিস্তিনীর ওপর নেমে আসে দুযোর্গ। একে তারা নাম দেই নাক্ববা। এই দুর্যোগের স্বীকার ছিলেন আহমদ ইয়াসিন নিজে।তার পুরোকে গ্রা্মকেই ইসরাইলী বাহিনী গুড়িয়ে দেয়। এজন্য এই গ্রামটির বর্তমানে অস্তিত্ব পাওয়া যায়না। খুব কাছ থেকে ফিলিস্তিনীদের দুর্দশা দেখবার সুযোগ পাওয়ায় তিনি নির্ণয় করেন যে ইসরাইলী আগ্রাসনই ফিলিস্তীনীদের মূল সমস্যা । ১৯৫৯ সালে দ্বিতীবার মিসরে যেয়ে ইখওয়ানের আন্দোলনের সাথে তার পরিচয় ঘটে। ইখওয়ানের কর্মকাণ্ড তাকে দারুণ আকৃষ্ট করে। ফিলিস্তিন ফিরে এসে তার দাওয়াতী কাজ অব্যহত রাখেন। এসময় তিনি বলেন,
'ফিলিস্তিনের সমস্যা আমাদের, আমাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে। অস্ত্র ধরে প্রতিরোধে নামতে হবে। আমাদেরকে আরবের কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক কেউ সাহায্য করতে আসবেনা।'
১৯৬৭ তে আরব-ইজরাইল যুদ্ধের সময় গাজাসহ পুরো ফিলিস্তীন দখল করে ফেলে ইজরাইল। পঙ্গু আহমেদ ইয়াসিনের প্রতিরোধ-প্রতিশোধ এবং আল আকসার পুনরুদ্ধারের তার ভাষণে জাগরণের শুরু হয়। দলে দলে যুবকেরা যোগ দিতে থাকল তার এসব সমাবেশে।
সমাজ সংস্কার
১৯৭৮ সালে ৪৯ বছর বয়সে শেখ আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য আল মুজাম্মা আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যার নামের বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ইসলামী সমাজ সংস্কার সংস্থা। এই সংগঠন ব্যাপকভাবে জনসেবা এবং সামাজিক কাজ করতে লাগল যেমন ফ্রি ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা, ফ্রি স্কুলিং, মসজিদ এবং লাইব্রেরী নির্মাণ। ইজরাইলের তখনকার নেতারা আহমেদ ইয়াসিনকে সেভাবে বাঁধা দেয়নি। ধীরে ধীরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাড়ায় আহমাদ ইয়াসিনের কর্মকাণ্ড। ১৯৮০ সালে এই সংগঠন পরিবর্তিত হয়ে আল মুজাহিদ আল ফিলিস্তিনিয়্যুন সংগঠন গঠিত হয়। 'মাজদ' এই সাংকেতিক নামে ইসরাইলীদের উপর হামলা চালাতে থাকে তার শিষ্যরা।
হামাস প্রতিষ্ঠা
শেখ ইয়াসিন ১৯৮৭ সালে সহযোগী মুজাহিদ ও সমমনাদের নিয়ে গড়ে তোলেন ‘‘হামাস’’ নামের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন। হামাস শব্দের অর্থ 'উদ্দীপনা' । ইন্তিফাদা বা গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে হামাসের মসজিদ-কেন্দ্রিক তৎপরতা ছিল ব্যাপক বিস্তৃত। ১৯৮৮ সালে গৃহীত হয় “হামাস চার্টার” যার লক্ষ্য হলো অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো।এই চার্টার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীত হয় হামাস চার্টার। হামাসের সামরিক শাখাও গড়ে তোলা হয়। এই শাখা দখলদার বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। এই সংগ্রামের সময় ইয়াসিন ব্যাপক হুমকির সম্মুখীন হন এবং হামাসে তার সহযোগী অনেক নেতা ইসরাইলী ঘাতকদের হামলায় শহীদ হন। এই দলটিকে বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ জংগী এবং সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করে থাকে। তবে প্রথম থেকেই ইসরাইলী জনগণের ওপর জংগী আক্রমণের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, তারা শুধূ মাত্র ইসরাইলী দখলদারদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করছে, এইমর্মে ঘোষণা দিয়ে আসছে হামাস।
প্রথম ইন্তিফাদা
আহমদ ইয়াসিন ফিলিস্তনিদের বোঝালেন আমাদের ভাগ্যের রাস্তা আমাদেরকেই খুলতে হবে। হামাসের নেতৃত্বে তিনি ডাক দিলেন প্রথম ইন্তিফাদাহ এর। ইন্তিফাদাহ মানে গণ-অভ্যুত্থান। হাতের কাছে যা পাওয়া যাবে তাই নিয়েই ইসরাইলীদের প্রতিরোধে তিনি জনগণকে উত্সাহিত করতে থাকেন। শিশুরাও পর্যন্ত তার ডাকে রাস্তায় নেমে আসে। ইন্তিফাদাহ শুরুর এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে ৩১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়, আহত হয় ৭ হাজারের অধিক লোক, ১৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারপরেও অচিন্তনীয় প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় ইসরাইলী বাহিনী যার পুরোভাগের নেতৃত্বই দিয়েছেন আহমদ ইয়াসিন। তিনি এই প্রতিরোধ সম্পর্কে বলেছেন
আমরা এই পথ বেছে নিয়েছি,হয় বিজয় নাহয় মৃত্যুর মাধ্যমে এর শেষ হবে
পরবর্তীতে তার এই কথা ফিলিস্তিনী জনগণ গণজাগরণের মূলমন্ত্র হিসেবে মনে করতে থাকে।
কারাজীবন
মিসরে থাকা অবস্থায় ইখওয়ানুল মুসলিমীনের সাথে তার সম্পর্ক থাকায় মিসর সরকার তাকে জেলে পাঠায়। ১৯৮৩ তে ইজরাইলীদের হাতে প্রথম বারের মত গ্রেপ্তার হন শাইখ আহমেদ ইয়াসিন। ইজরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার এবং জনগণকে উস্কানীর অভিযোগে তাকে ১৩ বছরের জেল দেয়া হয় তাকে। ১৯৮৫, মানে গ্রেপ্তারের ১ বছরের মাথায় বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি মুক্তি পান। একটি এই বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিল Popular Front for the Liberation of Palestine General Command নামক একটি প্রতিরোধ সংগঠন এবং ইজরাইল সরকারের মধ্যে, ফিলিস্তিনের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আহমেদ জিবরিল।
১৯৮৯ সাল, প্রথম ইন্তিফাদার দুবছর পর আবার গ্রেপ্তার হন হামাসের এই প্রতিষ্ঠাতা। এইসময় তাকে বিভিন্নরকম নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ আছে। এবার ৪০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয় তাকে । প্রধান অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে ইজরাইলী সৈন্যদেরকে হত্যা, কিডন্যাপ এবং স্বশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেওয়া।জেলখানায় তার শরীরের ক্রমাবনতি ঘটতে থাকে। আস্তে আস্তে ডান চোখের দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পায়। আক্রান্ত হন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে। পক্ষাঘাতগ্রস্থ পিতাকে চলাফেরায় সাহায্য করার জন্য জেলখানায় তাকে সহযোগীতা করতেন তার দুই ছেলে। আট বছর জেল খাটার পরে ১৯৯৭ সালে জর্দানের বাদশাহ হুসাইনের সহযোগীতায় মুক্তি পান আহমদ ইয়াসিন। এরপরে দফায় দফায় তাকে গৃহবন্দীও করে রাখা হয়।
গুপ্তহত্যা
বেশ কয়েকবার হত্যা চেষ্টা চালানোর পরে ২০০৪ সালের ২২ মার্চ ভোরে বাসা থেকে ১০০ মিটার দূরের মসজিদে হুইল চেয়ারে করে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের দিকে যা্ওয়ার সময় ৬৪ অ্যাপাচি হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে হত্যা করে ইসরাইল। কিছুক্ষণ পরেই চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হুইল চেয়ারের অংশ এবং ছ্ন্নি-ভিন্ন হয়ে যাওয়া দেহের বিভিন্ন অংশগুলো কুড়িয়ে আনে স্থানীয়রা। সেদিন তার সাথে তিনজন বডিগার্ডসহ মসজিদ থেকে নামাজ শেষে বেরুনো মুসল্লিদের মধ্যে থেকে আরো ৫ জন মারা যান। গুরুতর আহত হয় প্রায় ১৭ জন। যাদের মধ্যে শহীদ ইয়াসিনের দুই পুত্রও ছিল। খ্রিষ্টান-মুসলমান নির্বিশেষে দু’লাখ লোকের ঢল নেমেছিল তার শেষকৃত্যে। আব্দুল আজিজ আল রানতিসি তার মৃত্যুর পর হামাসের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
চিন্তাধারা
আহমদ ইয়াসিন একমনে বিশ্বাস করতেন যে, ইসরাইলের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে এবং পুরো ফিলিস্তিনের প্রতিটি ইঞ্চি জমিই মুসলমানদের। আরব নেতাদের ফিলিস্তীন-ইসরাইল চুক্তিতে তার আস্থা ছিলনা। এর চেয়ে অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধেই তিনি আগ্রহী ছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন "এই পথ আমরা বেছে নিয়েছে যার শেষ শাহাদাত বা বিজয়ের মাধ্যমেই হতে পারে" পরবর্তীতে ফিলিস্তিনের কাছে এই উক্তিটি মন্ত্রের মত হয়ে দাড়ায়।
"ইসরাইলের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে, তাদের বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে হবে"
এরকম উক্তি ফিলিস্তিনীর নির্যাতিত মানুষের কাছে তার সম্মানকে বহুগুনে বাড়িয়ে তোলে। তিনি আত্নঘাতি বোমা হামলাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক মনে করতেন।
গ্রন্থপ্ঞ্জি
- Chehab, Zaki (২০০৭)। Inside Hamas: The Untold Story of Militants, Martyrs and Spies। I.B. Tauris। আইএসবিএন 978-1-84511-389-6।
- Jefferis, Jennifer (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। Hamas: Terrorism, Governance, and Its Future in Middle East Politics: Terrorism, Governance, and Its Future in Middle East Politics। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 50–। আইএসবিএন 978-1-4408-3903-0।
- Kabahā, Muṣṭafá (২০১৪)। The Palestinian People: Seeking Sovereignty and State। Lynne Rienner Publishers, Incorporated। আইএসবিএন 978-1-58826-882-2।
Pappe, Ilan (২২ জুন ২০১৭)। The Biggest Prison on Earth: A History of the Occupied Territories। Oneworld Publications। পৃষ্ঠা 281–। আইএসবিএন 978-1-78074-433-9।
বহিঃসংযোগ
- Reports on death
- "IDF strike kills Hamas leader Ahmed Yassin" (Israeli MFA)
- "Sharon was after the Yassin's murder"। ২৭ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১১।
- "Assassination of Sheik Yasin Opened Pandora's box"
- Interactive Guide: Sheikh Yassin assassination – The Guardian
- Profiles of Yassin
- UN Response
সাধারণ | |
---|---|
জাতীয় গ্রন্থাগার | |
অন্যান্য |