Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
এলুরুতে অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব
এলুরুতে অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব | |
---|---|
রোগ | অজানা রোগ |
নিশ্চিত আক্রান্ত | ৫৮৫~ |
সক্রিয় আক্রান্ত | ৮২ |
সুস্থ | ৪৫০+ |
মৃত্যু |
১ |
মৃত্যুর হার |
০.১৮% (সর্বোচ্চ) |
অঞ্চল |
এলুরু, অন্ধ্র প্রদেশ, ভারত |
রহস্যময় রোগের প্রাদুর্ভাব - এলুরু () মৃত্যু সুস্থ আক্রান্ত ডিসে ডিসে গত ১৫ দিনে গত ১৫ দিনে | ||||
---|---|---|---|---|
তারিখ |
আক্রান্তের সংখ্যা |
মৃত্যুর সংখ্যা |
||
২০২০-১২-০৫ |
|
৫৫(প্র.না.) | ০(প্র.না.) | |
২০২০-১২-০৬ |
|
৩১৫(+৪৭৩%) | ১(প্র.না.) | |
২০২০-১২-০৭ |
|
৪৫৫(+৪৪%) | ১(=) | |
২০২০-১২-০৮ |
|
৫৬১(+২৩%) | ১(=) | |
২০২০-১২-০৯ |
|
৫৮৯(+৫%) | ১(=) | |
২০২০-১২-১০ |
|
৬০৯(+৩.৪%) | ১(=) | |
উৎস: |
২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের এলুরু শহরে একটি অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর, শনিবার, প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এক সপ্তাহান্তের মধ্যে আরও শতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ার সাথে একজনের মৃত্যু ঘটে। এর প্রকৃত কারণ অজানা, তবে পানিতে ভারী ধাতুর দূষণ এর কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
প্রাদুর্ভাব
২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর বিকালে প্রাদুর্ভাবের প্রথম রেকর্ড শনাক্ত করা হয়। পরের দিনেই একই লক্ষণবিশিষ্ট আরও শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই রোগ লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ৫ ডিসেম্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান, যা রোগের সাথে আপাত সম্পর্কহীন। প্রাদুর্ভাব ওয়ান টাউন এলাকায় শুরু হলেও ক্রমশ শহরের অন্যান্য অংশ এবং পার্শ্ববর্তী এলুরু (গ্রামীণ) ও দেন্দুলুরু গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ রোগীকেই এলুরু সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অধিক যত্নের প্রয়োজন এমন কিছু রোগীকে বিজয়ওয়াড়া এবং গুন্টুরের ইনস্টিটিউশনে পাঠানো হয়।
সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, রাত পর্যন্ত চার শতাধিক লোক এই রোগে আক্রান্ত হন। যদিও প্রায় সব বয়সেই রোগী শনাক্ত করা হয়েছে, তবু তিন শতাধিক রোগীই শিশু। "সকল বয়স এবং লিঙ্গের ক্ষেত্রেই" লক্ষণ একই রকম, তবে অধিকাংশ আক্রান্তই ২০-৩০ বছর বয়সী। শতাধিক শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়। ৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, থেকে নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে থাকে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া আরও ছয়জন ব্যক্তি দ্বিতীয়বার খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়ে পুনর্বার হাসপাতালে ভর্তি হন।
লক্ষণ
রোগের শনাক্তকৃত লক্ষণগুলো হলো মাথাব্যথা, বমি, মাথা ঘোরা, কনভালশন, খিঁচুনি, বমি বমি ভাব, উদ্বেগ, সংজ্ঞাহীনতা এবং অন্যান্য স্নায়বিক লক্ষণ। এই রোগলক্ষণকে মৃগীরোগের সাথে তুলনা করা যায়। রোগে আক্রান্তের কেউ কেউ, বিশেষত শিশুরা, হঠাৎ বমি করার পূর্ব থেকে চোখে জ্বালাপোড়ার বিষয়টি জানায়।
সম্ভাব্য কারণ
রোগ প্রাদুর্ভাবের কারণ জানতে রোগীদের নমুনা এবং স্থানীয় পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শহরে রোগ প্রাদুর্ভাবের অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও নমুনা পরীক্ষণের জন্য ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যেমন, অখিল ভারতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান সংস্থান,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ভারতীয় চিকিৎসাবিদ্যা গবেষণা পরিষদ, জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউট, কোষীয় ও আণবিক জীববিজ্ঞান কেন্দ্র এবং ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজি থেকে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হয়েছে। তবে, নমুনা পরীক্ষায় পানিতে কোনোরকম দূষণ এবং জ্ঞাত ভাইরাস (কোভিড-১৯ সহ) সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
অন্ধ্র প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয় যে, "প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষায় কোনো ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায় নি।" ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ, যেমন মেনিনজাইটিস, এবং সংক্রমণঘটিত অ্যান্টিবডির জন্যও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। "শহরের পয়ঃসরবরাহ ব্যবস্থার বাইরে থাকা ব্যক্তিরাও এতে আক্রান্ত হওয়ায়" পানি দূষণের প্রাথমিক কারণটি ভুল প্রমাণিত হয়। পাশাপাশি সার্স কোভ-২, জাপানি এনসেফালাইটিস, ডেঙ্গু জ্বর, চিকুনগুনিয়া, হেপাটাইটিস এবং জলাতঙ্ক এমনকি বায়ু দূষণকেও কারণ হিসেবে বাতিল করা হয়। রক্ত পরীক্ষা ও সিটি স্ক্যান থেকেও রোগের কারণ এবং উৎস শনাক্ত করা যায় নি। এমনকি সেরিব্রাল স্পাইনাল ফ্লুইড (মস্তিষ্কের স্নায়ুরস) পরীক্ষার ফলাফলও "স্বাভাবিক আসে।" ৭ ডিসেম্বর তারিখে রোগটিকে অসংক্রামক বলে শনাক্ত করা হয়।
সংসদের বিজেপি দলীয় সদস্য নরসিংহ রাও মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করার পর রোগের কারণ জৈব ক্লোরাইড (অর্গানোক্লোরাইড) হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। কীটনাশক এবং মশানিরোধী ফগিংয়ে এই জৈব ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয়। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর ভারতের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ থেকে অর্গানোক্লোরাইড রোগ প্রাদুর্ভাবের কারণ কিনা, সে বিষয়ে জানানো হয় যে, "খুব সম্ভবত, হ্যাঁ, [এটিই রোগের কারণ]; তবু আমরা [নিশ্চিত করার জন্য] গবেষণা প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছি।" পরবর্তীতে এই সম্ভাবনাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়, কেননা জৈবক্লোরাইডের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় শ্বাসযন্ত্রীয় সমস্যা এবং উচ্চ মৃত্যুহার পর্যবেক্ষণ করা যেত।
পরবর্তীতে প্রাথমিক ফলাফল থেকে পানি ও দুধে উচ্চ মাত্রায় সীসা ও নিকেলের উপস্থিতিকে নির্দেশ করে, যা থেকে সীসার বিষক্রিয়াকে রোগের সম্ভাব্য কারণ বলে মনে করা হয়। রোগীদের রক্তেও উচ্চ মাত্রায় উক্ত ধাতুর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। রাজ্য সরকার পরবর্তীতে খাদ্যে ভারীর ধাতুর অনুপ্রবেশের মাধ্যম হিসেবে পানি ও বায়ুর ভূমিকার প্রমাণ না পাওয়ায় সবজি ও ফলের নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। ধারণা করা হয় যে, হঠাৎ বন্যার কারণে কীটনাশক জাতীয় পদার্থ পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় অনুপ্রবেশ করে থাকতে পারে।
রোগের বিরুদ্ধে সাড়া ও প্রতিক্রিয়া
সংশ্লিষ্ট এলাকায় পরিষ্কার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিষয়ে অবহেলার কারণে প্রাদুর্ভাব রোধে ব্যর্থতার জন্য অন্ধ্র প্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডিকে বিরোধীদলের ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়।
অন্ধ্র প্রদেশের বিরোধী দল তেলুগু দেশম পার্টির নেতা নারা চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডিকে প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী করেন। তার মতানুসারে, সরকার কর্তৃক স্থানীয় পানীয় জল থেকে দূষণ অপসারণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়াই রোগ প্রাদুর্ভাবের কারণ। বিরোধী দল তেলুগু দেশম পার্টি দূষণ থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে দাবি করে পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানায়।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আল্লা কালী কৃষ্ণ শ্রীনিবাস থেকে জানানো হয় যে, “[সকল] রোগী বিপদমুক্ত। ৩০০ অস্বাভাবিক রোগীর মধ্যে ১২৫ জনকেই রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
৭ ডিসেম্বর সরকার থেকে "বাড়ি-বাড়ি জরিপ" শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। এক দিন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি এলুরুতে রোগীদের পর্যবেক্ষণে যান এবং রোগীদের সেবা ও তদারকি এবং হাসপাতাল ত্যাগের পর এক মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন। এলুরুর অবস্থা পর্যবেক্ষণে ৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে তিন-সদস্যের দল পাঠানোর ঘোষণা দেন।
আরও দেখুন
- ২০১৯ বিহারে এনসেফালাইটিসের প্রাদুর্ভাব
- ২০১৭ গোরখপুর হাসপাতালের ঘটনা
- অন্ধ্র প্রদেশে করোনাভাইরাসের মহামারী
| |
---|---|
| |
|