Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাবিজ্ঞান
ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাবিজ্ঞান বা সনাতনী ওষুধ (Traditional medicine), যা লোকচিকিৎসা (folk medicine) বা দেশজ চিকিৎসা (indigenous medicine) নামেও পরিচিত, হল বিভিন্ন সমাজে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থা বা জ্ঞান যার উপর ভিত্তি করে আধুনিক যুগের উন্নত ঔষধ ব্যবস্থা বা জ্ঞান প্রতিষ্টিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) এর সংজ্ঞা আনুযায়ী- সনাতনী ওষুধ ব্যবস্থা হল বিভিন্ন সমাজ, গোষ্ঠী বা সংস্কৃতিতে দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত তত্ত্ব, বিশ্বাস, এবং অভিজ্ঞতার (যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রচলিত) উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা জ্ঞান, দক্ষতা, এবং অনুশীলনের সমষ্টি, যা নির্দিষত কোন সমাজ, গোষ্ঠী বা সংস্কৃতিতে পাওয়া যায়, ব্যাখ্যা সাধ্য হোক বা না হোক, যা স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যবহারত হয়, সাথে সাথে শারীরিক ও মানসিক রোগের প্রতিরোধ, রোগ নির্ন্য, উন্নতি বা চিকিত্সায় ব্যবহৃত হয় ("Traditional medicine is the sum total of the knowledge, skills, and practices based on the theories, beliefs, and experiences indigenous to different cultures, whether explicable or not, used in the maintenance of health as well as in the prevention, diagnosis, improvement or treatment of physical and mental illness)."
যে সমস্ত মানুষ সনাতনী ওষুধ চর্চা করেন সাধারণ ভাষায় তাদের কবিরাজ বলা হয়।
সনাতনী ওষুধ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত ওষুধ
সাধারণত সনাতনী ওষুধ ব্যবস্থায় গাছ-গাছড়া ব্যবহার করে লোকচিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এছাড়া প্রাণীজ ও অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দ্রব্য দিয়ে সনাতনী ওষুধ ব্যবস্থায় চিকিৎসা করা হয়।
বিভিন্ন সনাতনী ওষুধ ব্যবস্থা
দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ‘আয়ুর্বেদ’ ও ‘ইউনানি’; ভারতে ‘আয়ুষ’ (আয়ুর্বেদ, ইয়োগা, ইউনানি, সিদ্ধা ); ভুটানে ‘সোয়া রিগপা’; ইন্দোনেশিয়ায় ‘জামু’; গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ায় ‘কোরিয়ো’; মিয়ানমারে ‘দেসানা’ ‘ভেসিজ্জা’ ‘নেটখাট্টা’ এবং ‘ভিজ্জাধারা’; নেপালে ‘আয়ুর্বেদ’, ‘ইউনানি’ ও ‘আমচি’ এবং শ্রীলঙ্কায় ‘দেশীয়া চিকিৎসা’ ও ‘সিদ্ধা’ প্রচলিত রয়েছে।
সনাতনী ওষুধের জাতীয় নীতিমালা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) এর সহযোগিতায় অঞ্চলের ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশে সনাতনী ওষুধের জাতীয় নীতিমালা হয়েছে, ছয়টি দেশে সনাতনী পদ্ধতির চিকিৎসকদের জন্য বিধান চালু আছে এবং নয়টি দেশে সনাতনী ওষুধের ওপর উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে। সনাতনী ওষুধের চাহিদা পূরণের জন্য এবং এর মান, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতাকে আরও উন্নত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘সনাতনী ওষুধ কৌশল: ২০১৪-২০২৩’ প্রণয়ন করেছে। এ কৌশলের তিনটি মূল লক্ষ্য হলো—একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়া এবং জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা; বিধান তৈরির মাধ্যমে সনাতনী ওষুধের নিরাপত্তা, গুণমান ও কার্যকারিতাকে আরও জোরদার করা এবং সনাতনী চিকিৎসাপদ্ধতি ও স্বচিকিৎসা সেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় যথাযথভাবে অঙ্গীভূত করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ১১টি সদস্য রাষ্ট্র হলো—বাংলাদেশ, ভুটান, গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও পূর্ব তিমুর।