Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
ছলৌষধ
ছলৌষধ বা ছল-চিকিৎসা এক ধরনের ঔষধ-সদৃশ বস্তু বা চিকিৎসাপদ্ধতি যার কোনও নিরাময়মূলক প্রভাব না থাকলেও এটিকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। একে ইংরেজিতে "প্লাসিবো" বলে। সাধারণত রোগীকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করার জন্য যে তাকে ঔষধ প্রয়োগে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে প্রকৃতপক্ষে ছলৌষধ প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া ঔষধের কার্যকারিতা ও সুরক্ষা পরীক্ষণ করার সময় নিয়ন্ত্রণ হিসেবে ছলৌষধ ব্যবহার করা হয়। এতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকেরা জানতে পারে না তাদের উপর প্রয়োগকৃত ঔষধ আসলেই কার্যকরী কি কার্যকরী না। ফলে পরীক্ষার ফলাফল কোনওভাবে প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ থাকেনা। ছলৌষধ এমন একটি মানসিক অবস্থা তৈরি করে, যার ফলে রোগীর মনে হয় যে তার রোগ সেরে যাচ্ছে। যদিও এতে কোনও ঔষধি বা নিরাময়মূলক প্রভাব নেই বরং রোগীর মানসিক ইচ্ছাই কাজ করে। এই প্রভাবকে "ছলৌষধ ক্রিয়া" (ইংরেজিতে "প্লাসিবো ক্রিয়া") বলা হয়। অদ্যাবধি ছলৌষধ ক্রিয়া নিয়ে গবেষণা চলে আসছে।
চিকিৎসা গবেষণায় ছলৌষধ গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। নিষ্ক্রিয় ট্যাবলেট (ঔষধের মত দেখতে কিন্তু চিনির তৈরি ট্যাবলেট), ছল-অস্ত্রোপচার (যাতে রোগীকে বুঝ দেয়ার জন্য অস্ত্রোপাচারের অভিনয় করা হয়) এবং আরও অনেক পদ্ধতিতে ছলৌষধ বা ছল-চিকিৎসা অহরহ ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকি প্রমাণ আছে যে, রোগীদের যদি জানানো হয়, এই ছলৌষধ প্রয়োগে তাদের রোগের উন্নতি ঘটবে দেখা যায়, সত্যিকার অর্থেই তাদের রোগের অবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে। অর্থাৎ, ছলৌষধ তাদের সুস্থ বোধ করতে অবদান রাখছে। . এটাও লক্ষণীয় যে, রোগীর অজান্তে ছলৌষধ ব্যবহারে সাধারণত তা রোগে কোন অবদান রাখে না বললেই চলে। পারকিনসনের রোগ, বিষণ্ণতাসহ বিভিন্ন রোগে ব্যাথানাশক হিসেবে ছলৌষধের ব্যবহার নিয়ে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমেরান মেয়ার, জোহানা জারকো এবং ম্যাট লিবারম্যান মস্তিষ্ক ইম্যাজিং পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখিয়েছেন, ছলৌষধের প্রভাব সত্যিকার অর্থেই মস্তিষ্কের গঠনে লক্ষ করার মত পরিবর্তন আনে। ছলৌষধ শরীরের গাঠনিক বেশ কিছু পরিবর্তন যেমন হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ ও মস্তিষ্কের রাসায়নিক কার্যক্রমের পরিবর্তনের ভূমিকা রাখে। ব্যাথাসংক্রান্ত, বিষন্নতা এবং পারকিনসনের রোগের রোগে এই পরিবর্তনসমূহ লক্ষনীয়। তবে হাঁপানির মতো রোগে ছলৌষধ কোন পরিবর্তন না আনলেও রোগীরা কিছুটা সুস্থবোধ করছে এরকম মত ব্যক্ত করায় এটা নিয়ে বিতর্ক রয়ে যায়।
নৈতিকতা
ঐতিহাসিকভাবেই ছলৌষধের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান। উল্লেখযোগ্য চিকিৎসা সংঘ ছলৌষধের ব্যবহারে সম্মতি দিলেও, ১৯০৩ সালে রিচার্ড ক্যাবট ছলৌষধ ক্রিয়ার ব্যবহার করা উচিৎ নয় বলে সিদ্ধান্ত দেন। নিউম্যান দেখান যে "ছলৌষধ কূটাভাস"- যাতে ছলৌষধের ব্যবহার নৈতিকতা বিরোধী না হলেও "রোগ সারাচ্ছে না এমন কিছুর ব্যবহার" সম্পূর্ণ নৈতিকতা বিরোধী।
কীভাবে ছলৌষধ ক্রিয়া কাজ করে
ছলৌষধ ক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে রোগীর উপর নির্ভর করে। তাই এর সঠিক কারণ বের করা সম্ভব নয়। সম্ভাব্য একাধিক পদার্থ ছলৌষধ ক্রিয়াতে অবদান রাখে। গবেষণার ধরন ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই পদার্থগুলি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হয়। হরমোন এন্ডোক্যানাবিনয়েডস অথবা এন্ডজেনাস অপিওয়েডস এবং আরও কিছু পদার্থের উপস্থিতি ছলৌষধ ক্রিয়াকে প্রভাবান্বিত করে। এর মাঝে রয়েছে আশানুরূপ ক্রিয়া, গড়পড়তা ক্রিয়া এবং গবেষণা পদ্ধতির ভ্রান্তি।