Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
জরুরি অবস্থা
জরুরি অবস্থা হচ্ছে এমন একটি পরিস্থিতি যা স্বাস্থ্য, জীবন, সম্পত্তি বা পরিবেশের তাৎক্ষণিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে। অধিকাংশ জরুরি অবস্থায় ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য দ্রুত হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন হয়। যদিও কিছু পরিস্থিতিতে ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে তবে পরবর্তীতে শুধুমাত্র উপশমকারী পরিষেবা দেওয়া হয়।
কিছু জরুরি হয় স্বত:সিদ্ধ (যেমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা বহু জীবন ও সম্পদ নাশের কারণ হতে পারে), আবার অনেক ছোট ছোট ঘটনা এমন থাকে যেগুলি জরুরি অবস্থা কি না তা নিশ্চিত করার জন্য একজন পর্যবেক্ষক (বা ক্ষতিগ্রস্ত পার্টির) বয়ানের দরকার হতে পারে। জরুরি অবস্থার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা কি তা সংশ্লিষ্ট স্থানের আইন তথা ঘটনার সাথে জড়িত সংস্থা এবং গুরুত্ব নির্ণয়ের পদ্ধতির নির্ভর করে এবং এটি সাধারণত সরকার দ্বারা নির্ধারিত হয়। সরকারী সংস্থার (জরুরি সেবা) উপর জরুরি অবস্থায় পরিষেবা প্রদানের তথা পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার কাজের দায়িত্ব বর্তায়।
জরুরি অবস্থার সংজ্ঞা
জরুরি হওয়ার জন্য একটি ঘটনাকে নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে অন্তত একটি হতে হয় : যদি এটা:
- জীবন, স্বাস্থ্য, সম্পত্তি, বা পরিবেশের উপর তাৎক্ষণিক হুমকি দেয়।
- ইতিমধ্যে জীবননাশ, স্বাস্থ্যের অবনতি, সম্পত্তির ক্ষতি, বা পরিবেশগত ক্ষতিসাধন করে থাকে।
- বর্ধিত আকার ধারণ করে জীবন, স্বাস্থ্য, সম্পত্তি, বা পরিবেশের ক্ষতি করার বিস্তর সম্ভাবনা থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ রাজ্যে হুকুম যে প্রতিটি টেলিফোন বইয়ে যেন একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপা থাকে যে যদি কেউ কোন জরুরি অবস্থা রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ করে তাহলে যেন একজন টেলিফোন লাইন (যেমন একটি পার্টি লাইন) ব্যবহারকারী ব্যক্তি এর ব্যবহার অবশ্যই পরিত্যাগ করেন। রাষ্ট্রীয় বিধি সাধারণত একটি জরুরি অবস্থাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করে, ...একটি অবস্থা যেখানে জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তি বিপদগ্রস্ত হয়, এবং দ্রুত সাহায্য তলব করা অপরিহার্য।
যদিও অধিকাংশ জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থা মানব স্বাস্থ্য, জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার ব্যাপারে একমত কিন্তু পরিবেশগত প্রভাবকে কিছু সংস্থা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে না। একই কথা পশু কল্যাণের ক্ষেত্রেও বলা যায় যেখানে কিছু জরুরিসেবা সংগঠন একজন ব্যক্তির মালিকানাধীন পশু হুমকির সম্মুখীন হলে (যদিও এই আবরণ বন্য প্রাণীর জন্য প্রযোজ্য না) "সম্পত্তি" সংজ্ঞার আওতায় তার উদ্ধারকার্য করে। এর মানে হচ্ছে যে বন্য প্রাণী বা পরিবেশের বিপদ হলে (যেমন সমুদ্রে তেল উপচে পড়ে সামুদ্রিক জীবন যে হুমকির মুখে পড়েছিল) অন্যরা সাহায্যের জন্য সাড়া দিলেও কিছু সংস্থা এক্ষেত্রে "জরুরি" প্রতিক্রিয়া প্রদান করে না। এই ধরনের ঘটনায় সংস্থাগুলির মনোভাব সাধারণত সেই এলাকার সরকারের মনোভাবের প্রতিচ্ছবি মাত্র।
জরুরি অবস্থার প্রকারভেদ
জীবনসঙ্কট
অনেক জরুরি অবস্থায় মানুষের জীবনের একটি তাৎক্ষণিক বিপদ দেখা দেয়। হার্ট এটাক, স্ট্রোক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, ট্রমা সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থায় একজন ব্যক্তির জীবনসঙ্কট বা টর্নেডো, হারিকেন, বন্যা, ভূমিকম্প, মাটিধ্বস সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাব যেমন কলেরা, ইবোলা, এবং ম্যালেরিয়া ইত্যাদিতে বৃহৎসংখ্যক মানুষের জীবনসঙ্কট দেখা দিতে পারে।
এরূপ ঘটনাকে অধিকাংশ সংস্থা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত জরুরি অবস্থা হিসাবে বিবেচনা করে যা মানুষের জীবনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু হয় না এই সাধারণ চিন্তাবৃত্তির ফলশ্রুতি মাত্র।
স্বাস্থ্যসঙ্কট
কিছু জরুরি অবস্থা তাৎক্ষনিকভাবে মানবজীবনের প্রতি হুমকি নাও হতে পারে কিন্তু সেই অবস্থা অব্যাহত থাকলে তা এক বা একাধিক ব্যক্তির স্বাস্থ্য এবং মঙ্গলের উপর গুরুতর প্রভাব বিস্তার করতে পারে (একটি স্বাস্থ্যসম্বন্ধিত জরুরি অবস্থা পরবর্তীকালে বৃহত্তর আকার ধারণ করে জীবনশঙ্কার সৃষ্টি করতে পারে)।
একটি স্বাস্থ্যসম্বন্ধিত জরুরি অবস্থা প্রায়শই একটি জীবনসংশয়ী জরুরি অবস্থার অনুরূপ হয়ে থাকে। চিকিৎসাসংক্রান্ত জরুরি অবস্থা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর অন্তর্ভুক্ত। যদিও এখানে চিকিৎসাসংক্রান্ত ঘটনার শ্রেণীকরণ করা হলে তা জীবনসংশয়ী জরুরি অবস্থা ছাড়াও বহু ঘটনাকে অন্তর্ভুক্ত করবে (যেমন অঙ্গভঙ্গ যা সাধারণত মৃত্যুর কারণ হয় না কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পুনরারোগ্য সঠিকভাবে হওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপ করা হয় প্রয়োজন হয়)। অনেক জীবনসংশয়ী জরুরি অবস্থা যেমন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট স্বাস্থ্যসম্বন্ধিত জরুরি অবস্থাও বটে।
পরিবেশের সঙ্কট
কিছু জরুরি অবস্থা জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তিঅবিলম্বেবিপন্ন করে না কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং সেই পরিবেশে বসবাসকারী প্রাণীসমূহকে প্রভাবিত করে। যদিও সব সংস্থা এরকম ঘটনাকে একটি জেনুইন অর্থাৎ খাঁটি জরুরি অবস্থা হিসাবে গণ্য করে না কিন্তু এটা জীবজগতের এবং জমির দীর্ঘমেয়াদী অবস্থার উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করতে পারে। উদাহরণস্বরুপ দাবানল এবং সমুদ্রবক্ষে জাহাজ দুর্ঘটনার ফলে তেল উপচে পড়াকে (অয়েল স্পিল) অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
জরুরি অবস্থার শ্রেণীভুক্তির পদ্ধতিসমূহ
বিশ্ব জুড়ে নানা সংস্থার ঘটনার শ্রেণীবিভাগ করার বিভিন্ন পদ্ধতি বা সিস্টেম আছে। সীমিত সম্পদ বরাদ্দকরণের ক্ষেত্রে কোন জরুরি ঘটনা কিরূপ অগ্রাধিকার পাবে তা নির্ধারণ করার জন্যই এইসব পদ্ধতি সাহায্য করে থাকে।
যে কোন শ্রেণীভুক্তকরণের প্রথম পর্যায় হল সংশ্লিষ্ট ঘটনার জরুরি ঘটনা তকমা পাওয়ার যোগ্যতা আছে কি না তা পর্যালোচনা করা এবং তৎপরবর্তীতে কিরূপ জরুরি প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত তা স্থির করা। হতে পারে কিছু সংস্থা তাদের সম্পদের লভ্যতার উপর নির্ভর করে অ-জরুরি কলের ক্ষেত্রেও সাহায্যের সাড়া দিয়ে থাকে। একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, একটি গাছ থেকে একটি বিড়ালকে উদ্ধার করার জন্য অগ্নিশমন বিভাগ সাহায্য করতে পারে যেখানে জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তির প্রতি কোন তাৎক্ষনিক ঝুঁকি নেই।
এরপর অনেক সংস্থা যেসব ঘটনা জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তির জন্য সর্বাধিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে সেগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে জরুরি অবস্থার একটি ক্রমানুযায়ী উপ-শ্রেণীভুক্তিকরণ করে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সংস্থা উন্নত চিকিৎসা অগ্রাধিকার প্রেরণ পদ্ধতি বা অ্যাডভান্সড মেডিকেল প্রাওরিটি ডিসপ্যাচ সিস্টেম (এএমপিডিএস) বা অনুরূপ সমাধান ব্যবহার করে। এই এএমপিডিএস অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার সমস্ত কলকে একটি বিভাগ বা ক্যাটাগরি প্রদান করে, হয় 'এ' বিভাগ (অবিলম্বে জীবনশঙ্কাপূর্ণ), 'বি' বিভাগ (অবিলম্বে স্বাস্থ্যজনিত আশঙ্কা) বা 'সি' বিভাগ (অনতি-জরুরি কল যার সাহায্যের প্রয়োজন)। কিছু সেবার একটি চতুর্থ ক্যাটাগরি আছে যেখানে কিছু ক্লিনিকাল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার পর তারা মনে করেন যে কোন প্রতিক্রিয়ারুপী সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
জরুরি চিকিৎসা প্রেরণ বা এমারজেন্সী মেডিকেল ডিসপ্যাচ (ইএমডি) হল মেডিকেল কলের অগ্রাধিকারকরণের জন্য আরেকটি পদ্ধতি বা সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে সাধারণত প্রতিটি অন্তর্মুখী পরিষেবা অনুরোধকে একটি কোড দেওয়া হয় যেমন আলফা (নিম্ন অগ্রাধিকার), ব্রাভো (মাঝারি অগ্রাধিকার), চার্লি (উন্নত লাইফ সাপোর্ট প্রয়োজন), ডেল্টা (উন্নত লাইফ সাপোর্ট সহ উচ্চ অগ্রাধিকার প্রয়োজন), বা ইকো (সর্বোচ্চ সম্ভবপর অগ্রাধিকার, যেমন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সময়)। এরপর এই কোড ব্যবহার করে যথাযথ স্তরের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়।
অন্যান্য সিস্টেমে (বিশেষ করে গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে) সরাসরি সম্পদ বিতরণের মাধ্যমে জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করা হয়ে থাকে। এরকম দু'টি পদ্ধতি হচ্ছে স্যাড চ্যালেট এবং ইথেন যা জরুরি সেবা কর্মীদের ঘটনার শ্রেণীভুক্তিতে এবং সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য ব্যবহৃত (দীর্ঘনামের আদ্যক্ষরসমস্টি দিয়ে গঠিত) সংক্ষিপ্তনাম বা নিমোনিক(mnemonic)। এই সংক্ষিপ্তনামগুলির সাহায্যে হতাহতের সংখ্যা (সাধারণত মৃত, আহত, অনাহতের সংখ্যা), কীভাবে ঘটনা ঘটেছে এবং কিরূপ জরুরি সেবা প্রয়োজন তা নিরূপণ করা যায়।
জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় জড়িত সংস্থা
অধিকাংশ উন্নত দেশে জরুরি সেবা প্রদানকারী একাধিক সংস্থা থাকে যাদের উদ্দেশ্য কোন জরুরি অবস্থার মোকাবিলায় জনসাধারণকে সহায়তা প্রদান করা। প্রায়ই এগুলি সরকার পরিচালিত অর্থাৎ জনসাধারণের কাছ থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব দিয়ে চালিত, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে প্রাইভেট কোম্পানিও পেমেন্টের বিনিময়ে জরুরি অবস্থায় সেবা প্রদান করে থাকে। আবার কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও আছে যারা অনুদান দিয়ে তৈরি দাতব্য তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করে জরুরি অবস্থায় পরিষেবা প্রদান করে থাকে।
অধিকাংশ উন্নত দেশে তিনটি প্রধান জরুরি পরিষেবা থাকে যথাঃ
- পুলিশ – সব ধরনের জরুরি অবস্থায় যারা ব্যক্তি এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে। যারা ইচ্ছাকৃত কর্মের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করে তাদের দণ্ডিত করার জন্যেও পুলিশ ভূমিকা পালন করে।
- ফায়ার সার্ভিস – যারা বিপদজনক অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলা তথা সড়ক দুর্ঘটনায় উদ্ধারকার্য ইত্যাদি করে। তাদের কর্ম জীবননাশ, স্বাস্থ্যক্ষয় এবং সম্পত্তির ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- জরুরি চিকিৎসা সেবা (অ্যাম্বুলেন্স / প্যারামেডিক পরিষেবা) – এই সেবা জীবন বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি কমাতে চেষ্টা করে। জীবনরক্ষায় ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি রোধে এই সেবা নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা পালন করে। কিছু এলাকায় জরুরি চিকিৎসা সেবা বা এমারজেন্সী মেডিকেল সার্ভিসকে সংক্ষেপে কেবল ইএমএস বলে।
কিছু দেশে বা অঞ্চলে এই পরিষেবাগুলির দুই বা ততোধিক একই সংস্থার দ্বারা প্রদত্ত হতে পারে। যেমন, অগ্নিশমন ও জরুরি চিকিৎসার পরিষেবা একই সংস্থা প্রদান করতে পারে, এবং বিভিন্ন শর্তের অধীনে হতে পারে (যেমন, সরকারীভাবে অগ্নিশমন এবং পুলিশ পরিষেবা, কিন্তু একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা)।
একাধিক গৌণ জরুরি পরিষেবাও থাকতে পারে, যা একটি প্রধান সংস্থার অংশ হতে পারে, বা প্রধান সংস্থার সহায়তাকারী পৃথক সত্ত্বাও হতে পারে। এই সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ রেসকিউ দল (যেমন, মাউন্টেন রেসকিউ বা খনি রেসকিউ),বোমা নিষ্পত্তি বা অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
বড় কোন জরুরি অবস্থা যেমন একটি দুর্যোগ বা গুরুতর নাগরিক অশান্তিতে সামরিক বাহিনী, এবং অপেশাদার রেডিও জরুরি সার্ভিস বা রেডিও অপেশাদার সিভিল জরুরি সেবা সাহায্য করতে পারে।
জরুরি সেবা তলব করা
অধিকাংশ দেশে একটি জরুরিকালীন টেলিফোন নম্বর আছে যা সার্বজনীন জরুরিকালীন নম্বর হিসাবে পরিচিত। এটা ব্যবহার করে কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সেবা তলব করা যায়। ভিন্ন ভিন্ন দেশে (এবং কিছু ক্ষেত্রে একই দেশের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে) এই নম্বরটি আলাদা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটা একটি ছোট নম্বর হয় যেমন ৯১১ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার অনেকাংশে), 999 (যুক্তরাজ্য), 112 (ইউরোপ) এবং 000 (অস্ট্রেলিয়া)।
অধিকাংশ মোবাইল ফোনে যদি ফোনের কীবোর্ড লক করা থাকে বা যদি ফোনে মেয়াদ শেষ এমন সিমকার্ড থাকে বা সিম নাও থাকে তাহলেও জরুরিকালীন নম্বর ডায়াল করে সেবা তলব করা যায়। তবে এইরূপ পরিষেবা দেশ এবং নেটওয়ার্ক অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়।
নাগরিক জরুরি সেবা
কয়েকটি সংস্থা বিশেষভাবে জরুরি অবস্থার জন্য প্রদত্ত সেবা ছাড়াও অন্যান্য কিছু জরুরি পরিষেবা নিজেদের দৈনন্দিন কাজের আনুষঙ্গিক অংশ হিসাবে দিয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বিদ্যুৎ বা গ্যাস সরবরাহ করার জন্য পাবলিক ইউটিলিটি বা জনসেবা কর্মীদের যাদের দ্রুত পরিষেবা দিতে হয় কারণ এই উভয় সামগ্রীর ক্ষেত্রেই পরিকাঠামোগত ব্যর্থতা হলে জীবন, স্বাস্থ্য এবং সম্পত্তির বড় সম্ভাব্য বিপদ হতে পারে।
ঘরোয়া জরুরি সেবা
সাধারণত কিছু ক্ষুদ্র, মাঝারি বা বড় ব্যবসা যারা টাকার বিনিময়ে তাদের সীমিত লাইসেন্সিং বা ক্ষমতার আওতায় ঘরোয়া জরুরি সেবা প্রদান করে থাকে। যেসব জরুরি অবস্থায় স্বাস্থ্য বা সম্পত্তি বিপদাপন্ন হয় কিন্তু যা সরকারী জরুরি প্রতিক্রিয়া পাওয়ার ন্যায় গুরুতর নয় সেসব জরুরি অবস্থা এর অন্তর্গত। ঘরোয়া জরুরি সেবা অনেকাংশে নাগরিক জরুরি সেবার অনুরূপ যেখানে সরকারী বা বেসরকারী পরিষেবা কর্মীরা সংশোধনমূলক মেরামতি জাতীয় অপরিহার্য সেবা প্রদান করে থাকে কিন্তু ঘরোয়া ক্ষেত্রে এই সেবার জন্য সংশ্লিষ্ট পার্টিকে ব্যয় বহন করতে হয়। একটি উদাহরণ হতে পারে একজন জরুরি সীসক।
জরুরি কার্য নীতি (EAP)
জরুরি কার্য নীতি হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের জরুরি অবস্থায় দিকনির্দেশ বা গাইড করার নীতিমালা। জরুরি অবস্থার সহজাত প্রকৃতি এমন যে দুইটি জরুরি অবস্থা কখনও একই হয় না। তাই জরুরি পরিষেবা কর্মীদের কিছু মৌলিক নীতি অনুসরণ করে উদ্ধারকার্য সম্পন্ন করতে হয়।
হবু উদ্ধারকর্মীদের প্রশিক্ষণ, জরুরি অবস্থায় রসদের লভ্যতা(এবং তা পৌঁছাতে কত সময় লাগবে) ও সংশ্লিষ্ট জরুরি অবস্থাটির উপর নির্ভর করে এই জরুরি কার্য নীতির প্রতি আনুগত্য(এবং এর বিষয়বস্তু)র ব্যাপক তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।
মূল জরুরি নীতি
প্রায় সবক্ষেত্রে মূল নীতি হিসেবে যা শেখানো হয় তা হল একজন ত্রাণকর্মী তিনি একজন সাধারণ ব্যক্তি বা একজন পেশাদার হতে পারেন, তার প্রাথমিক দায়িত্ব পরিস্থিতির বিপদ কতখানি তার মূল্যায়ন করা।
যে কারণে বিপদের মূল্যায়নকে উচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, তা হল এটা জরুরি অবস্থার ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ এবং এটা উদ্ধারকর্মীরা যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন তা নিশ্চিত করে। ফলে আরও একটি জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হওয়া আটকানো সম্ভব হয়।
একটি টিপিক্যাল বিপদের মূল্যায়নের সাথে আশপাশের পর্যবেক্ষণ, দুর্ঘটনা কারণ (যেমন একটি পতনশীল বস্তু) এবং পরিস্থিতিগত বিপদ (যেমন, দ্রুত চলন্ত ট্রাফিক) এবং ইতিহাস বা সাক্ষীদের থেকে প্রাপ্ত আনুষঙ্গিক তথ্য, উপযুক্ত জরুরি সেবা (যেমন আক্রমণকারী এখনও কাছাকাছি অপেক্ষায় আছে) ইত্যাদি জড়িত।
বিপদের প্রাথমিক মূল্যায়ন করা শেষ হলে জরুরি সেবা প্রদানের প্রক্রিয়ার অন্যান্য অংশীদারদের এই ব্যাপারে অবহিত করা উচিত, কিন্তু এর মানে এই নয় যে বিপদের চেকিং করা একবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
যদি কোন সময়ে ত্রাণকর্মীদের কোন বিপত্তি থেকে একটি উল্লেখযোগ্য বিপদের ঝুঁকি(সম্ভাবনা এবং গুরুত্বের একটি ফ্যাক্টর হিসাবে) আছে বলে মনে হয় তাহলে তাদের বিবেচনা করা উচিত যে ত্রাণকার্যে অগ্রসর হওয়া কি ঠিক হবে (না কি ফিরে চলে আসাই শ্রেয়)।
একটি জরুরি অবস্থার ব্যবস্থাপনা
অনেক প্রকার জরুরি সেবা প্রোটোকল আছে জরুরি অবস্থায় প্রযোজ্য হতে পারে, যা সাধারণত পরিকল্পনা দিয়ে শুরু হয়। ডানদিকে একটি বহুল ব্যবহৃত সিস্টেমের পর্যায়ক্রমিক চিত্র দেখানো হল।
পরিকল্পনা ফেজের শুরু হয় প্রস্তুতি দিয়ে যেখানে ত্রাণকর্তা সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় একটি নির্দিষ্ট ঘটনা বা পরিস্থিতিতে কীভাবে সাড়া দেওয়া হবে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে আদেশ ও নিয়ন্ত্রণের ক্রমনির্ণয় ও শ্রেণীবিভাগ এবং কাজের বণ্টন। এর মাধ্যমে দুর্যোগকালীন সময়ে সম্ভাব্য নেতিবাচক পরিস্থিতি যেমন তিনটি পৃথক সংস্থা একত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি সরকারী বিশ্রাম সেন্টার তৈরি করল এরকম এড়ানো যায়।
একটি জরুরি ঘটে যাবার পর উদ্ধারকারী সংস্থা তাদের প্রতিক্রিয়া পর্যায়ে আসে যেখানে তারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের প্রতিক্রিয়ার কিছু এদিক সেদিক করতে পারে (পরিকল্পনা স্তরের ফাঁকফোকরের জন্য যা অধিকাংশ ঘটনার নিজস্বতার জন্য অনিবার্য)।
এরপর সংস্থার পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হতে পারে যেখানে তারা ঘটনার পরিষ্করণে বা জড়িত ব্যক্তিদের তাদের মানসিক ধাক্কা (ট্রমা) অতিক্রম করতে সহায়তা করে।
এই বৃত্তের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রশমন জড়িত থাকে যা পুনরায় দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়া এরাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে বা অতিরিক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে ক্ষতির পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করে। এই স্তরে প্রাপ্ত তথ্য ভবিষ্যতে জরুরি অবস্থার মোকাবেলা করতে কাজে লাগাতে পুনরায় প্রস্তুতি পর্যায়ের ফিড ব্যাক হিসাবে ব্যবহার করে এই বৃত্ত পূরণ করা হয়।
রাষ্ট্রের জরুরি অবস্থা
কোন গুরুতর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যেমন নাগরিক অস্থিরতা বা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনেক সরকারের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার অধিকার থাকে, যা সরকারকে দেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে (উদাহরণস্বরূপ একটি খালি এলাকায় লুটপাট নিরুৎসাহিত করতে দ্রুত বিচারের নীতি, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ বলবৎ করা ইত্যাদি) এবং অস্থায়ীভাবে নির্দিষ্ট কিছু নাগরিক অধিকার খর্ব করতে পারে।