Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
জুলহাজ মান্নান
জুলহাজ মান্নান | |
---|---|
জন্ম | ১২ই অক্টোবর ১৯৭৬ |
মৃত্যু | ২৫শে এপ্রিল ২০১৬ (বয়স ৩৯ বছর) |
পরিচিতির কারণ | বাংলাদেশে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ |
জুলহাজ মান্নান (ইংরেজি: Xulhaz Mannan; ১২ই অক্টোবর, ১৯৭৬ – ২৫শে এপ্রিল ২০১৬) ছিলেন ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সমকামীদের পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ও অন্য আর একজন এলজিবিটি কর্মী মাহবুব রাব্বি তনয় একসাথে তার অ্যাপার্টমেন্টে ছুরিকাঘাতের আক্রমণে নিহত হন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
মান্নান এর মা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বড় ভাই ছিলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের, ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার বড় বোন হলেন একজন ফার্মাসিস্ট, যিনি বসবাস করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার বাবা মারা যান বেশ কয়েক বছর আগে, যিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন ১৯৭১ সালে সংগঠিত হওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে। বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি তার খালাতো বোন।
মান্নান জন্মগ্রহণ করেন ১২ই অক্টোবর ১৯৭৬ সালে। তিনি তার এসএসসি এবং এইচএসসি (১৯৯৩) সম্পন্ন করেন, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে। তিনি জুনিয়র স্কুল থেকেই জড়িত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে। তারপর তিনি বি.কম সম্পন্ন করেন ঢাকা সিটি কলেজ থেকে। এরপরে তিনি পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। ২০০৩ সালে তিনি একটি মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন, সোশ্যাল সায়েন্সেসের, পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের উপর।
কর্মজীবন
তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন এমজিএইচ গ্রুপে কাজের মাধ্যমে, এবং পরে যোগ দেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে, রাষ্ট্রদূতের একজন প্রটোকল কর্মকর্তা হিসাবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এবং তারপর সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে তিনি ইউএসএইড -এ চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি তার দ্বাপ্তরিক কাজের বাইরের আরো অনেক কার্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকতেন। তিনি এনটিভির একটি প্রডাকশনের সাথে প্রথম থেকেই স্ক্রিপ্ট লেখক হিসাবে জড়িত ছিলেন। ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ, হাইকিং, ইভেন্ট সংগঠিত করা ছিল তার বেশকিছু শখ।
মান্নান ছিলেন, রূপবান ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক, যা বাংলাদেশের সমকামী সম্প্রদায়ের একমাত্র পত্রিকা, এটি ২০১৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। তিনি মানবাধিকার বিষয়ে প্রচুর কাজ করতেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানবাধিকার বিষয়ে। তিনি সফলভাবে, একটি "রেইনবো র্যালি" আয়োজন করেন ঢাকায়, ১৪ই এপ্রিল ২০১৫ সালে, যদিওবা ২০১৬ সালে নতুন করে করতে চাওয়া এই সমাবেশ বাতিল করাতে হয়েছিল পুলিশের নির্দেশনার কারণে।
২৭শে এপ্রিল ২০১৬ সালে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন তার লেখার, এটিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়বস্তুর সাথে তুলনা করে।
মৃত্যু
এপ্রিল ২০১৬ সালের প্রথম দিকে যুব এলজিবিটিদের নিয়ে "রেইনবো র্যালি" আয়োজন করার চেষ্টা করার পর তিনি মৃত্যুর হুমকি পান। এরপর মান্নান ও অন্য একজন এলজিবিটি কর্মী মাহবুব রাব্বি তনয় একসাথে তার অ্যাপার্টমেন্টে ছুরিকাঘাতের আক্রমণে নিহত হন। একজন প্রতক্ষ্যদর্শীর মাধ্যমে জানা যায়, পাঁচজন লোক, ঘটনাস্থল থেকে "আল্লাহু আকবার" ("আল্লাহ মহান") বলতে বলতে পালিয়ে যায়। আনসার-আল-ইসলাম, আল-কায়েদার-সাথে সংযুক্ত একটি গ্রুপ এই খুনের হামলার দায় স্বীকার করেছে।
প্রতিক্রিয়া
- ইউএসএআইডি মান্নান মৃত্যুর পরে নিম্নলিখিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করে যেখানে, "মানবাধিকার আদায়ে তাকে একজন একনিষ্ঠ এবং সাহসী অধিবক্তা বলা হয়"।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট রয়টার্সকে বলে, "জনাব জুলহাজ মান্নানের উপর এই বর্বর আক্রমণে আমরা ক্ষুব্ধ, তিনি আমাদের দূতাবাস পরিবারের একজন অত্যন্ত প্রিয় সদস্য ছিলেন এবং একজন সাহসী অধিবক্তা ছিলেন এলজিবিটিদের অধিকার আদায়ে, তথা মানবাধিকার আদায়ে"।
- মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট এই হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলছেন, "সহিংসতা এই বিবেকহীন ঘটনাটিকে আমরা ঘৃণার চোখে দেখছি"।
- মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এই হত্যাকান্ডের পর টেলিফোন করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবং তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন মান্নানের খুনীদের গ্রেফতারের জন্য।