Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
জৈবরাজনীতি
জৈবরাজনীতি (Biopolitics) হচ্ছে জীববিজ্ঞান ও রাজনীতির সমন্বয়ে তৈরি হওয়া একটি নতুন শাখা। এটি একটি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা যেখানে জীবন ও জনগণের পরিচালনাকে বিবেচ্য হিসেবে মনে করা হয়। ফুকো এর মতে এটি হল, "জীবনকে নিশ্চিত, টেকসই, প্রজননের মাধ্যমে বৃদ্ধি ও একটি শৃঙ্খলায় নিয়ে আসা"।
এই শব্দটি সৃষ্টি করেন রুডলফ কিয়েলেন, যিনি একইসাথে ভূরাজনীতি নামক শব্দটিও তৈরি করেছিলেন। তিনি তার ১৯০৫ সালে লেখা দুই খণ্ডের গ্রন্থ দ্য গ্রেট পাওয়ারস -এ এই শব্দটির উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমসাময়িক রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলোচনায়, এই শব্দটিকে দুটি অর্থে ব্যবহার করা হয়। উত্তরকাঠামোবাদী দল এখানে মিশেল ফুকো এর কাজকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে এই শব্দটি ব্যবহার করেন, যেখানে জৈবরাজনীতি দ্বারা জীবনের উপর সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা বোঝানো হয়। অন্যদিকে আরেকটি দল এই শব্দটিকে জীববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কিত কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন।
বিভিন্ন সংজ্ঞা
- কিয়েলেন এর জৈবিকতাবাদি দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, রাষ্ট্র হচ্ছে একটি আধা-জীববিজ্ঞানগত প্রাণী, একটি "অধি-ব্যক্তিক সৃষ্টি"। কিয়েলেন "সামাজিক দলগুলোর মধ্যকার গৃহযুদ্ধকে" জৈবরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখেন এবং তার সৃষ্ট এই নতুন শিক্ষায়তনিক শাখাকে "জৈবরাজনীতি" নামে অভিহিত করেন।
- নাৎসিরাও এই শব্দটিকে প্রায়ই ব্যবহার করত। যেমন, হান্স রাইটার ১৯৩৪ সালে একটি বক্তৃতায় জাতি, রাষ্ট্র ও চূড়ান্তভাবে তাদের জাতিগত নীতি জীববিজ্ঞান ভিত্তিক ধারণার উল্লেখ করেন।
- পূর্বে মধ্যযুগেও জন অফ সালসবেরি এর গ্রন্থ পলিক্রেটিকাস এ এই শব্দের ধারণা পাওয়া যায়। সেখানে তিনি বডি পলিটিক নামে একটি শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। আধুনিক কালে ইংরেজিতে এই শব্দের প্রথম ব্যবহার করেন জি. ডব্লিউ হ্যারিস, ১৯১১ সালে নিউ এজ এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের জন্য যেখানে তিনি "রাষ্ট্রীয় মারন কক্ষে" "উন্মাদদেরকে" হত্যা করার কথা বলেন। এরপর ওয়াল্টার ব্যাগেহট এর গ্রন্থ ফিজিক্স এন্ড পলিটিক্স -এ এই শব্দটি পাওয়া যায়। এখানে জীববিজ্ঞন ও রাজনীতির বিষয়ে অনেক কিছু লেখা হয়, বিশেষ করে প্রাকৃতিক নির্বাচন ও রাজনীতি নিয়ে এখানে লেখা হয়।
- মরলি রবার্টস তার ১৯৩৮ সালের গ্রন্থ বায়ো-পলিটিক্স এ লেখেন, "কোষ ও প্রোটোজোয়া উপনিবেশগুলোর মধ্যকার দুর্বল সম্পর্ক" দ্বারাই বিশ্ব রাজনীতির সঠিক নকশাটি দেয়া যায়।
- রবার্ট ই. কাটনার এই শব্দটি তার "বৈজ্ঞানিক বর্ণবাদ" এর ধারণার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন। এই বিষয়ে তিনি ইউস্টেস মুলিন্স এর সাথে কাজ করেছিলেন। কাটনার, মুলিন্স আর আচরণগত বংশগতিবিদ গ্লেইড হুইটনি মিলে ১৯৫০ এর দশকে ইনস্টিটিউট ফর বায়োপলিটিক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। তাদের বেশিরভাগ সমালোচক তাদেরকে ইহুদি-বিদ্বেষী বলে দাবি করেন। কাটনার ও মুলিন্স মরলি রবার্টস এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, এই মরলি রবার্টস আবার অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন আর্থার কেইথ এর দ্বারা। অথবা মরলি রবার্টস আর আর্থার কেইথ উভয়েই একে অপরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হন। এই বিষয়ে বায়োপলিটিক্স অফ অরগানিক মেটারিয়ালিজম নামে একটি গ্রন্থ লেখা হয়।
- ফুকো তার রচনায় সরকারের রীতি নিয়ে বলেন। সেখানে তিনি বলেন সরকার "জৈবক্ষমতার" দ্বারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে জৈবক্ষমতা হচ্ছে মানুষের জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ ও ব্যবহার"।
- মাইকেল হার্ট ও এন্টোনিও নেগ্রি এর লেখায়, জীবন এবং শরীরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে পুঁজিবাদ-বিরোধী শক্তির উদ্ভবকে জৈবক্ষমতা বলা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে আত্মঘাতি জঙ্গিবাদ এর কথা বলা যায়।
- জীবনীতিশাস্ত্রের রাজনৈতিক প্রয়োগ।
- একটি রাজনৈতিক বর্ণালী যা জৈবপ্রযুক্তি বিপ্লবের সমাজরাজনৈতিক পরিণতির দিকে অবস্থানকে নির্দেশ করে।
- জৈবপ্রযুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে রাজনৈতিক সমর্থন।
- জৈবপ্রযুক্তির কিছু প্রয়োগ নিয়ে জননীতি।
- সকল ধরনের জীবন এর কল্যাণ এবং কীভাবে এরা একে অপরের দ্বারা চালিত হয় সেই বিষয়ে রাজনৈতিক সমর্থন।
- জৈব-আঞ্চলিকতাবাদের রাজনীতি।
- জীববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর পাঠের মিথোস্ক্রিয়া ও আন্তঃবিষয়ক পাঠ, সাধারণত জীববিজ্ঞান ও রাজনৈতিক আচরণ এর মধ্যকার সম্পর্ক। এই বিষয়ক বেশিরভাগ কাজ তিনটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে সম্মত হয়। প্রথমত, গবেষণার প্রাথমিক লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে রাজনৈতিক আচরণ, যা বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রদর্শনযোগ্য জীববিজ্ঞানগত নিয়ামকের দ্বারা নির্ণিত হয়, যেমন, জীববিজ্ঞান ও রাজনৈতিক অভিমুখিতা এর সম্পর্ক। এটি পক্ষাবলম্বন ও নির্বাচনগত আচরণ নিয়েও কাজ করে। (আরও দেখুন সমাজজীববিজ্ঞান।)
- প্রোফেসর অগ্নি ভ্লাভিয়ানোস আরভানাইটিস অনুসারে, জৈবরাজনীতি হচ্ছে সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি ধারণাগত এবং কার্যগত কাঠামো, যেখানে জীবন বা বায়োসকে (Bios) মানুষের প্রত্যেক প্রচেষ্টার কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে ধরা হয়, সেটা নীতিমালা, শিক্ষা, শিল্প, সরকার, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি যাই হোক না কেন। এই ধারণায় জীবন বা বায়োসকে পৃথিবীর সকল রকমের জীবনকে বোঝানো হয়, সেই সাথে জীবনের বংশগতিমূলক ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্যও অন্তর্ভূক্ত।
মিশেল ফুকো
ফরাসী দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক মিশেল ফুকো তার লেকচার সমগ্র "সোসাইটি মাস্ট বি ডিফেন্ডেড"-এ জৈবরাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন, যা কোলেজ দ্য ফ্রঁস - এ ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৬ সালে দেয়া হয়। জৈবরাজনীতি নিয়ে ফুকোর ধারণাটি ছিল জৈবক্ষমতা থেকে উৎসারিত এবং জনগণের শারীরিক ও রাজনৈতিক দেহ উভয়ের উপরেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এর ধারণার সম্প্রসারণ। ফুকো তার "সোসাইটি মাস্ট বি ডিফেন্ডেড" লেকচারসমগ্রে খুব সংক্ষিপ্তভাবেই জৈবরাজনীতি এর প্রসঙ্গ টেনেছেন (ফুকো এই শব্দের উদ্ভাবক নন), কিন্তু এটি সামাজিক ও মানবিক বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে।
ফুকো জৈবরাজনীতিকে "ক্ষমতার একটি নতুন প্রযুক্তি" হিসেবে বর্ণনা করেন, "যা একটি ভিন্ন মাত্রায়, ভিন্ন মাপে পরিলক্ষিত হয়, যার একটি ভিন্ন পরিসর আছে, এবং যা খুব ভিন্নরকম সরঞ্জামকে ব্যবহার করে।" ফুকো একে একটি বিষয়গত কৌশলের থেকেও বেশি মনে করতেন। ফুকোর জৈবরাজনীতি একটি জনসংখ্যার উপর নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র হিসেবে কাজ করে, যাকে ফুকো "এ গ্লোবাল মাস" বলে উল্লেখ করেছিলেন। পরের বছরগুলোতে ফুকো জৈবরাজনীতি এর ধারণাকে বিকশিত করার চেষ্টা করেন তার "দ্য বার্থ অফ বায়োপলিটিক্স" এবং "দ্য কারেজ অফ ট্রুথ" গ্রন্থের লেকচারগুলোতে।
১৯৭৬ সালে যখন ফুকো প্রথম জৈবরাজনীতির কথা বলেন, তখন তিনি জৈবরাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অসংখ্য উদাহরণ দেন। এগুলোর মধ্যে "জন্ম ও মৃত্যুর অনুপাত, প্রজননের হার, জনগণের উর্বরতা ইত্যাদি রয়েছে।" তিনি মধ্যযুগের রাজনৈতিক ক্ষমতা দিয়ে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতিকে তুলনায় আনেন। মধ্যযুগে মহামারিগুলো মৃত্যুকে জীবনের একটি চিরস্থায়ী অংশ হিসেবে পরিণত করেছিল। তারপর অষ্টাদশ শতকে জীববিজ্ঞানে মিলিউ (Milieu) এর সূচনার পর পরিবর্তিত হয়। ফুকো তারপর সেইসময়ের পদার্থিক বিজ্ঞান নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করেন, যেখানে কাজের ধারণার পরিবর্তনের মাধ্যমে জনসংখ্যার শিল্পায়ন হয়। এখানে ফুকো বলেন, সপ্তদশ শতকে মিলিউ ক্ষমতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে টীকা এবং ঔষধের বিকাশের ফলে কোন নির্দিষ্ট জনসংখ্যার ক্ষেত্রে মৃত্যুকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হল, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যার অসুখে মৃত্যু হবে নাকি হবে না তা নির্ণয় করা সম্ভব হল। এটি ছিল "অধিক সূক্ষ্ম, অধিক যৌক্তিক কৌশল: বীমা, ব্যক্তিক বা সামষ্টিক সঞ্চয়, নিরাপত্তা উপায় ইত্যাদি" এর সূচনা।
পরিভাষা
- Advocacy - সমর্থন
- Antisemitic - ইহুদি-বিদ্বেষী
- Behavioral genetics - আচরণগত বংশগতিবিদ্যা, Behavioral geneticist - আচরণগত বংশগতিবিদ
- Biopolitics - জীবনীতিশাস্ত্র
- Bioregionalism - জৈব-আঞ্চলিকতাবাদ
- Geopolitics - ভূরাজনীতি
- Organicism - জৈবিকতাবাদ
- Partisan - পক্ষাবলম্বন
- Physical science - পদার্থিক বিজ্ঞান
- Political spectrum - রাজনৈতিক বর্ণালী
- Poststructuralism - উত্তরকাঠামোবাদ
- Public policy - জননীতি
- Quasi-biological organism - আধা-জীববিজ্ঞানগত প্রাণ
- Racial policy - জাতিগত নীতি
- Suicide terrorism - আত্মঘাতি জঙ্গিবাদ
- Super-individual creature - অধি-ব্যক্তিক সৃষ্টি
আরও পড়ুন
- Research in Biopolitics: Volume 1: Sexual Politics and Political Feminism Editor Albert Somit (1991)
- Research in Biopolitics: Volume 2: Biopolitics and the Mainstream: Contributions of Biology to Political Science Editor Albert Somit (1994)
- Research in Biopolitics: Volume 3: Human Nature and Politics Editors Steven A. Peterson Albert Somit (1995)
- Research in Biopolitics: Volume 4: Research in Biopolitics Editors Albert Somit Steven A. Peterson (1996)
- Research in Biopolitics: Volume 5: Recent Explorations in Biology and Politics Editors Albert Somit Steven A. Peterson (1997)
- Research In Biopolitics: Volume 6: Sociobiology and Politics Editors Albert Somit Steven A. Peterson (1998)
- Research In Biopolitics: Volume 7: Ethnic Conflicts Explained By Ethnic Nepotism Editors Albert Somit Steven A. Peterson (1999)
- Research In Biopolitics: Volume 8: Evolutionary Approaches In The Behavioral Sciences: Toward A Better Understanding of Human Nature Editors Steven A. Peterson Albert Somit (2001)
- Research In Biopolitics: Volume 9: Biology and Political Behavior: The Brain, Genes and Politics - the Cutting Edge; Editor Albert Somit (2011)
বহিঃস্থ সূত্র
- Steinmann, Kate. (2011). Apparatus, Capture, Trace: Photography and Biopolitics in: Fillip. Fall 2011.
- Miguelángel Verde Garrido. (2015). Contesting a biopolitics of information and communications: The importance of truth and sousveillance after Snowden in: Surveillance & Society (volume 13, number 2; pages 153-167).