Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
পলিকণা
পলিকণা (ইংরেজি: Silt) বালি এবং কাদামাটির মাঝামাঝি আকৃতির একটি দানাদার উপাদান, যার খনিজ উৎস কোয়ার্টজ এবং ফিল্ডস্পা। পলিকনা কাদা বা বালি মিশ্রিত মাটিতে অথবা নদীর জলে মিশে থাকতে দেখা যায়। ভূমিধসের কারণে কাদামাটির প্রবাহের ফলে জলের নিচে অনেক সময় পলিকনা জমে থাকে। পলিকণায় আঠাবিহীন প্ল্যাস্টিকের মত নির্দিষ্ট অঞ্চল রয়েছে। শুকনো অবস্থায় পলিকনা সাধারণত দানাদার হয়ে থাকে এবং ভিজা হলে পিচ্ছিল অনুভূতিযুক্ত হয়ে যায়। পলিকণা হ্যান্ড লেন্সের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করা যায়। এটি দেখতে ঝকঝকে উজ্জ্বল। সামনের দাঁতে রেখে এটি জিভ দ্বারা দানাদার হিসাবে অনুভব করা যায় (এমনকি মাটির কণার সাথে মিশ্রিত থাকলেও)।
উৎস
পলিকণা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক প্রক্রিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয়, এ পদ্ধতিতে তাদের জালিকা গুলির ঘাটতি কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক শিলা আকারের কোয়ার্টজ স্ফটিকগুলি বিভক্ত করতে সক্ষম হয়। এতে শিলা এবং রেগোলিথের রাসায়নিক আবহাওয়া, তুষারপাত এবং হ্যালোক্লাস্টির মতো বেশ কয়েকটি শারীরিক আবহাওয়া প্রক্রিয়া জড়িত। মুল প্রক্রিয়াটি নদীজ ক্ষয়, বায়ুর প্রভাবজনিত ক্ষয় এবং হিমবাহ প্রবাহসহ মাটির নানাবিধ ক্ষয়ের মাধ্যমে সঙ্ঘটিত হয়ে থাকে। অর্ধ-শুষ্ক পরিবেশে যথেষ্ট পরিমাণে পলি উৎপন্ন হয়। পলিকে "চূর্ণ শিলা" বা "পাথরের ধুলা" নামেও ডাকা হয়, বিশেষত যখন জমাট বেধে থাকে। খনিজভাবে পলি মূলত কোয়ার্টজ এবং ফেল্ডস্পার দিয়ে গঠিত। পলি দিয়ে গঠিত শিলা পাললিক শিলা নামে পরিচিত। তীব্র ভুমিকম্পের ফলে জলের নিচে জমে থাকা পলি উপরিতলে উঠে আসে।
পলিকণার মাপদণ্ড
উডেন-ওয়ান্টওয়ার্থ স্কেলে (ক্রাম্বেইনের কারণে), পলি কণার ব্যাস পরিসর ০.০০৩৯ থেকে ০.০৬২৫ মি মি এর মধ্যে হয়ে থাকে, মাটির চেয়ে বড় তবে বালির কণার চেয়ে ছোট। আইএসও ১৪৬৮৮, পলিকণা ০.০০২ মিমি থেকে ০.০৬৩ মিমি এর মধ্যে ব্যাস পরিসর নির্ধারণ করেছে (এরা ৩টি উপশ্রেণীতে বিভক্ত, মাঝারি এবং বৃহৎ যথাক্রমে ০.০০২ মিমি থেকে ০.০০৬ মিমি এবং ০.০২.০ মিমি থেকে ০.০৬৩ মিমি)। বাস্তবে পলি কাদামাটি থেকে রাসায়নিকভাবে পৃথক এবং কাদামাটির সম্পূর্ণ বিপরীত, পলিকনা সামগ্রিকভাবে প্রায় একই আকারের হয়ে থাকে, অধিকন্তু এদের আকার ব্যাপ্তি বা সমাপতিত হতে পারে। তড়িৎ সৃষ্ট পাতলা প্লেট আকারের কণা থেকে কাদামাটি গঠিত হয়। বিশুদ্ধ পলিকনা সংসক্তিপ্রবণ হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মৃত্তিকাঠন শ্রেণিবদ্ধকরণ বিভাগ অনুযায়ী, ০.০৫ মিমি ব্যাস পরিসরের কনার ক্ষেত্রে বালি–পলি পৃথকীকরণ সম্ভব। ইউএসডিএ পদ্ধতিটি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কর্তৃক গৃহীত। সমন্বিত মাটি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি (ইউএসসিএস) এবং এএএসএচটিও মাটি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতিতে বালি–পলি পার্থক্য ০.০৭৫ মিমি কণা আকারে ধরা হয়। কাদা এবং পলি তাদের নমনীয়তাকে ব্যবহার করে যান্ত্রিকভাবে পৃথক করা হয়।
পরিবেশগত প্রভাব
পলিকণা সহজেই জল বা অন্য তরলে প্রবাহিত হতে পারে এবং এটি যথেষ্ট সূক্ষ্ম হওয়ায় বায়ু দ্বারা দীর্ঘ দূরত্বে বাহিত হয়ে থাকে। বায়ুপ্রবাহের কারণে সৃষ্ট বস্তুকনার স্তুপকে ধূসর-হরিদ্রাভ রঙের মিহি মাটির স্তর বলা হয়। পলি এবং কাদামাটি জলকে অস্বচ্ছ করে ফেলে। পলি সমুদ্রের স্রোতে বা জলের স্রোতের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। পলি যখন জলে দূষক হিসাবে উপস্থিত হয় তখন তাকে বালি বলে।
নীলনদের তীরে বার্ষিক বন্যার দ্বারা জমে থাকা পলি উর্বর মাটি তৈরি করে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছিল। বিংশ শতাব্দীতে মিসিসিপি নদীর তীরে জমা হওয়া পলি হ্রাস পাচ্ছে বাঁধ দেয়ার কারণে, এগুলোর প্রভাবে নিউ অরলিন্সের চারপাশে ব-দ্বীপ অঞ্চলে প্রতিরক্ষামূলক জলাভূমি এবং দ্বিপপুঞ্জ বিলুপ্ত হতে বসেছে।বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বে নোয়াখালী জেলায় ১৯৬০এর দশকে বাঁধ নির্মাণের কারণে পলি জমে "চর" এর সৃষ্টি হয়েছিল। বিগত ৫০ বছরে নোয়াখালী জেলা ৭৩ বর্গকিলোমিটার (২৮ বর্গ মাইল) অতিরিক্ত ভুমি অর্জন করেছে।
ডাচ অর্থায়নে, বাংলাদেশ সরকার ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে পুরানো চরগুলি সংস্কার শুরু করে এবং এরই অংশ হিসেবে রাস্তা, কালভার্ট, বাঁধ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শৌচাগার ও পুকুর নির্মাণের পাশাপাশি বসতিকদের জমি বিতরণ করার নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। ২০১০ সালের মধ্যে, এই কর্মসূচি ২১,০০০ পরিবারকে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার (২০,০০০ একর) জমি বরাদ্দ করবে।
শহরাঞ্চলের নদীগুলোতে পলি জমার প্রধান কারণ হচ্ছে নির্মাণ কার্যক্রম। গ্রামীণ নদীতে পলি জমার কারণ হিসেবে বলা যায়, বনভুমি ধ্বংস করে চাষাবাদ।
সংস্কৃতিতে পলি
নীল নদের তীরের উর্বর কালো পলিকে মিশরীয় দেবতা অনুবিসের সাথে সম্পর্কিত এবং পুনর্জন্মের প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করা হয়।