Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
পাকস্থলীর ক্যান্সার
পাকস্থলীর ক্যান্সার | |
---|---|
বিশেষত্ব | অনকোলজি |
পাকস্থলীর ক্যান্সার (ইংরেজি: Stomach cancer) রোগটি গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার (Gastric cancer) নামেও পরিচিত, এটি সাধারণত পাকস্থলীরর আবরণী কলা থেকে উৎপত্তি লাভ করে। প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো বুকজ্বালা, পেটের উপরের অংশে ব্যথা, বমি ও ক্ষুধামন্দা পরবর্তী লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ওজন কমে যাওয়া, জন্ডিস, বমি ডিসফ্যাজিয়া বা খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, পায়খানার সাথে কালো রক্ত যাওয়া(melena) ইত্যাদি। ক্যান্সার পাকস্থলী থেকে দেহের অন্যান্য অংশে ছড়াতে পারে বিশেষ করে যকৃৎ, ফুসফুস, অস্থি, পেরিটোনিয়াম বা উদর আবরণী ও লিম্ফনোড উল্লেখযোগ্য।
হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামক ব্যাক্টেরিয়াম প্রায় ৬০% ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এই ব্যাক্টেরিয়ামের কোনো কোনো বিশেষ টাইপের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও অনেক বেশি। অন্যান্য কারণের মধ্যে ধূমপান, জেনেটিক কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১০% ক্ষেত্রে পরিবারে ক্যান্সার হওয়ার ইতিহাস থাকে। পাকস্থলী ক্যান্সারের অধিকাংশই গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার। এটাকে আবার কয়েক উপশ্রেণীতে ভাগ করা যায়।লিম্ফোমা ও মেজেনকাইমাল টিউমারও পাকস্থলীতে হয়। পাকস্থলী ক্যান্সার সাধারণত কয়েকবছর ধরে আস্তে আস্তে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে শেষ ধাপে এসে উন্নীত হয়। এন্ডোসকপির মাধ্যমে বায়োপসি নিয়ে রোগ নির্ণয় করা হয়।তারপর মেডিকেল ইমেজিং এর মাধ্যমে শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়েছে কি না তা নির্ণয় করা হয়।জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই দুই দেশে পাকস্থলী ক্যন্সারের রোগী সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সেখানে নিয়মিত ক্যান্সার স্ক্রিনিং পরীক্ষা করানো হয়।
ধূমপান পরিহার ও ভূমধ্যসাগরীয় খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি এর চিকিৎসা করালে ভবিষ্যতে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করালে অনেক ক্যান্সারই পুরাপুরি ভালো হয়ে যায়। সাধারণত সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। বিলম্বে চিকিৎসা শুরু করলে পেলিয়েটিভ বা উপশমক চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেয়া হয়। চিকিৎসার পর পাঁচ বছর বেঁচে হার মাত্র দশ শতাংশ কারণ অধিকাংশ রোগী একদম শেষ পর্যায়ে এসে চিকিৎসা আরম্ভ করেন।যুক্তরাষ্ট্রে এই হার ২৮%।
ক্যান্সারের কারণ হিসেবে পাকস্থলী ক্যান্সার সারা পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে আছে এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে আছে। ২০১২ সালে প্রায় ৯,৫০,০০০ জন লোক এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং ৭,২৩,০০০ জন মৃত্যুবরণ করে। ১৯৩০ সালের পূর্বে সারাবিশ্বের সব জায়গায় এটি ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল। এরপর থেকে বিশ্বের অনেক স্থানে মৃত্যুহার অনেক হ্রাস পেয়েছে। রেফ্রিজারেটর সহজলভ্য হওয়ায় আচার ও অধিক লবণাক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে কারণ এখন ফ্রিজে খাবার অনেকদিন পর্যন্ত সতেজ রাখা যায়। পাকস্থলী ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি হয় পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ অঞ্চলে। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ।
লক্ষণ ও উপসর্গ
পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রায়শই বিনা উপসর্গে হয়ে থাকে (কোন লক্ষণীয় উপসর্গ তৈরি করে না) অথবা এটি প্রাথমিক পর্যায়ে কেবল অস্পষ্ট উপসর্গ (লক্ষণ যা অন্যান্য সম্পর্কিত বা অসম্পর্কিত রোগে উপস্থিত হতে পারে) হতে পারে। লক্ষণ প্রকাশ হতে হতে ক্যান্সারটি প্রায়শই একটি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায় (নিচে দেখুন) এবং মেটাস্ট্যাসাইজড (শরীরের অন্যান্য অংশে, সম্ভবত দূরবর্তী অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে), যা এটির অপেক্ষাকৃত দুর্বল আরোগ্যসম্ভাবনার মূল কারণগুলির মধ্যে একটি। পাকস্থলীর ক্যান্সারে নিম্নলিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গ হতে পারে:
প্রারম্ভিক ক্যান্সার বদহজম বা জ্বলন্ত সংবেদন (বুকজ্বালা) যুক্ত হতে পারে। তবে, বদহজমের কারণে, এন্ডোস্কোপির জন্য নির্দেশিত প্রতি ৫০ জন ব্যক্তির মধ্যে ১ এরও কম লোকের ক্যান্সার রয়েছে। [20] পেটে অস্বস্তি এবং খাবারে অনিচ্ছা, বিশেষত মাংসের জন্য, ঘটতে পারে।
পাকস্থলীর ক্যান্সারগুলি যেগুলি বেড়ে যায় এবং স্বাভাবিক টিস্যুকে আক্রমণ করে, দুর্বলতা, ক্লান্তি, খাবারের পরে পেট ফোলা, পেটের উপরিভাগে ব্যথা, বমি ভাব এবং মাঝে মাঝে বমি, পেট খারাপ বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আরও বাড়লে ওজন হ্রাস বা রক্তসহ বমি বা রক্তযুক্ত মল হতে পারে, পরবর্তীতে আংশিকভাবে পচনযুক্ত রক্ত ধারণকারী বিবরণ কালো চটচটে মল। (মেলেন) এবং কখনও কখনও রক্তাল্পতা হতে পারে। ডিসফ্যাগিয়া কার্ডিয়াতে টিউমারের উপস্থিতি বা গ্যাস্ট্রিক টিউমারের বৃদ্ধির সঙ্কেত দেয়।
এইগুলি অন্যান্য সমস্যা যেমন স্টমাক ভাইরাস, গ্যাস্ট্রিক আলসার, বা ক্রান্তীয় স্প্রের উপসর্গ হতে পারে।
কারণ
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার অনেক কারণের ফলে ঘটে। সাধারণত নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে দ্বিগুণ ঘটে। ইস্ট্রোজেন এই ধরনের ক্যান্সার বৃদ্ধির বিরুদ্ধে নারীদের সুরক্ষা দিতে পারে।
সংক্রমণ
হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি সংক্রমণ ৬৫-৮০% গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের একটি মূল ঝুঁকিপূর্ণ কারণ, তবে হেলিকোব্যাক্টার সংক্রমণযুক্ত, মাত্র ২% মানুষের পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়। যে যে কারণে এইচ পাইলোরির দ্বারা পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেগুলি হল পুরানো পেট জ্বালা অথবা ক্যাগএর মতো অতি তীব্র উপাদানের কার্যকলাপ। অনুমান করা হয়েছিল যে প্রতি বছর ৮৪,০০০ টি ক্ষেত্রে এপস্টাইন-বার ভাইরাস দায়ী। বেশি ঝুঁকির মধ্যে এইডসও অন্তর্ভুক্ত।