বাক-প্রত্যক্ষণ (ইংরেজি: Speech perception) বলতে যে বহুধাপবিশিষ্ট জটিল প্রক্রিয়ায় কথিত ভাষার ধ্বনিগুলি তথা বাক-ধ্বনিগুলি প্রথমে শ্রবণতন্ত্রের মাধ্যমে শোনা হয়, অতঃপর সেগুলি মস্তিষ্ক বা মনে ব্যাখ্যালাভ করে ও সবশেষে মনের ভেতরে সেগুলির অর্থ বোঝা হয়, সেই সামগ্রিক প্রক্রিয়াটিকে বোঝায়। বাক-প্রত্যক্ষণ বিষয়ক গবেষণা ভাষাবিজ্ঞানের ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিবিদ্যা ক্ষেত্রগুলির সাথে এবং মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞানাত্মক মনোবিজ্ঞান ও প্রত্যক্ষণ সংক্রান্ত ক্ষেত্রগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। বাক-প্রত্যক্ষণের গবেষণায় কীভাবে মানব শ্রোতারা বাক-ধ্বনিগুলি শনাক্ত করতে পারে এবং এই তথ্যগুলি ব্যবহার করে কথিত ভাষা বুঝতে পারে, সেই ব্যাপারটি অনুধাবনের প্রচেষ্টা করা হয়। পরিগণক (কম্পিউটার) ব্যবস্থার মাধ্যমে বাক-শনাক্তকরণ, শ্রবণহানি ও বাকহানির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বাক-প্রত্যক্ষণের মান উন্নতকরণ এবং বিদেশী ভাষার শিক্ষণের মতো ব্যবহারিক ক্ষেত্রগুলিতে বাক-প্রত্যক্ষণ বিষয়ক তাত্ত্বিক গবেষণার প্রয়োগ রয়েছে।
বাক-প্রত্যক্ষণের প্রক্রিয়াটি ধ্বনিসংকেত ও সেটির শ্রবণের স্তরে শুরু হয় (শ্রবণ প্রক্রিয়াটি কীভাবে ঘটে তার পূর্ণ বিবরণের জন্য শ্রবণশক্তি নিবন্ধটি দেখুন)। প্রাথমিক শ্রাবণিক সংকেতগুলির প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পন্ন হবার পরে মস্তিষ্কের ভেতরে বাক-ধ্বনিগুলি অধিকতর প্রক্রিয়াজাত করে সেগুলি থেকে শাব্দিক পথনির্দেশনা (Acoustic cues) ও ধ্বনিগত তথ্য (Phonetic information) বের করে আনা হয়। এভাবে প্রাপ্ত বাক-তথ্যগুলি পরবর্তীতে আরও উচ্চতর স্তরের ভাষিক প্রক্রিয়ায়, যেমন শব্দ (ব্যাকরণিক একক) শনাক্তকরণ, ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়।
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ