Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি
বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি | |
---|---|
বিশেষত্ব | মনোরোগ বিজ্ঞান, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান |
লক্ষণ |
|
কারণ |
|
বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি (ডিসোসিয়েটিভ ডিসঅর্ডার) হলো এক ধরনের রোগ যার কারণে স্মৃতি, আত্মপরিচয়, সচেতনতা বা চিন্তাভাবনা বিপর্যস্ত বা ব্যাহত হয়। বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকেরা বিচ্ছিন্নতাকে আবেগপূর্ণভাবে ও অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রতিরক্ষার জন্য ব্যবহার করে থাকে। কিছু বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি হওয়ার কারণ মানসিক আঘাত, কিন্তু নির্ব্যক্তিকরণ ব্যাধির মতো রোগগুলো শুধুমাত্র ক্লান্তির জন্য হতে পারে, আবার দৃশ্যমান কোন কারণ ছাড়াও এই ব্যাধি হতে পারে।
কারণ এবং চিকিৎসা
বিচ্ছিন্নতা পরিচয় ব্যাধি
চিহ্নিতকরণ: বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধি চেনা যায় যখন একই ব্যক্তির মাঝে দুই বা ততোধিক পরিচিতি বা ব্যক্তিত্ত্ব লক্ষ্য করা যায় যা ঐ ব্যক্তির আচরণ ও ব্যবহারে বড় প্রভাব ফেলক।
যদিও সকল ব্যক্তি একইভাবে বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধি অনুভব করে না, তবে অনেকের জন্য যে ভিন্ন ব্যক্তিত্ত্বের তৈরি হয় তা মূল ব্যক্তির একই বয়স, লিঙ্গ এবং গোত্রের হয়ে থাকে। প্রত্যেক ব্যক্তির তার নিজস্ব বাচনভঙ্গি, অঙ্গভঙ্গি রয়েছে। অনেক সময় ভিন্ন ব্যক্তি কাল্পনিক হয়; অনেক সময় সেগুলো প্রাণী হয়। যখন কোন ব্যক্তিত্ত্ব প্রকাশ পায় এবং কোন ব্যক্তির আচরণবও চিন্তায় প্রভাব ফেলে তখন এটিকে সুইচিং (পরিবর্তন) বলা হয়। সুইচিং সেকেন্ড থেকে মিনিট, মিনিট থেকে কয়েক দিনেও হতে পারে।
অন্যান্য লক্ষণের মাঝে রয়েছে মাথাব্যথা, স্মৃতিহ্রাস, সময় হারানো, এবং শরীর থেকে বেরি যাওয়ার মতো অনুভব হওয়া। কিছু বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগী নিজেদের এমন জিনিস করতে দেখতে পান যা তিনি সাধারণত করেন না, যেমন, টাকা চুরি, জোরে গাড়ি চালানো।
কারণ: বিচ্ছিন্নতা পরিচয় ব্যাধি হতে পারে শৈশবের কোন মানসিক আঘাতের ফলে যা ছয় থেকে নয় বছর বয়সের আগে হয়ে থাকে। বিচ্ছিন্নতা পরিচয় ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকের অনেকের আত্মীয়দের মাঝেও একই ধরনের অভিজ্ঞতা ঘটে।
চিকিৎসা: আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন মান উন্নয়নের জন্য দীর্ঘ সময়ের মনঃসমীক্ষণ প্রয়োজন হয়।
বিচ্ছিন্ন স্মৃতিহ্রাস
কারণ: মানসিক আঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের উপায়।
চিকিৎসা: মনঃসমীক্ষণ (যেমন কথোপকথন) বা মানসিক থ্যারাপি যেখানে ব্যক্তি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারির সাথে তার ব্যাধি সম্পর্কে আলোচনা করে। মনঃসমীক্ষণের মাঝে অনেক সময় সম্মোহন ব্যবহার করা হয় (স্মৃতি মনে করতে ও মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে); সৃজনশীল শিল্প থ্যারাপি (কোন ব্যক্তিকে তার মনোভাব প্রকাশ করার জন্য সৃজনশীল উপায় ব্যবহার করা হয়); পেন্টোথাল ঔষধের ব্যবহার অনেক সময় স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
বিচ্ছিন্ন স্মৃতি বিলোপ
কারণ: প্রাপ্তবয়সে ঘটা কোন মানসিক চাপের ঘটনা।
চিকিৎসা: আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে আসল পরিচয় এবং অতীতের ঘটনা মনে করতে পারে সেজন্য অনেক সময় সম্মোহন ব্যবহার করা হয়। কোন ব্যক্তির অতীতের কোন মানসিক চাপ বা ঘটনার সমাধানের জন্য মনঃসমীক্ষণও কার্যকরি হতে পারে। বিচ্ছিন্ন স্মৃতি বিলোপ আবিষ্কার ও চিকিৎসা করার পর, অনেকেই খুব দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। এই সমস্যাটি আর কখনো নাও হতে পারে।
ব্যক্তিত্বহানি ব্যাধি
কারণ: বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিগুলো সাধারণত কোন মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য তৈরি হয়ে থাকে। এই ব্যাধিগুলো সেসকল শিশুর মাঝে দেখা যায় যারা শারীরিক, যৌন এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় যেগুলো তাদের মাঝে ভীতির সৃষ্টি করে; তাছাড়া, কোন প্রিয় ব্যক্তির মৃত্যএ বা কোন যুদ্ধে হওয়া মানসিক আঘাতের কারণেও এই ব্যাধি হতে পারে।
চিকিৎসা: বিচ্ছিন্ন স্মৃতিহ্রাসের মতো একই চিকিৎসা, এবং একই ঔষধ।
কঠিন পরিস্থিতি
যেসকল মানুষ বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের নানা জটিল সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যেমন:
- নিজের ক্ষতি করা বা অঙ্গহানি করা
- আত্মহত্যার চিন্তা করা এবং সেরকম আচরণ করা
- যৌন ত্রুটি
- মদ্যপান এবং মাদক সেবন
- দুশ্চিন্তা ব্যাধি
- নানা ব্যক্তিত্ত্ব ব্যাধি
- ঘুমের ব্যাধি, যাদের মাঝে রয়েছে দুঃস্বপ্ন দেখা, অনিদ্রা এবং স্বপ্নচরণ
- খাদ্যভ্যাসে সমস্যা
- ব্যক্তিগত ও পেশগত সম্পর্কে জটিলতা
বিশেষ মানসিকতায় ঔষধের প্রভাব
দুশ্চিন্তা রোধক এবং ঘুমের ঔষধ এই রোগ প্রতিকার করতে পারেনা, তবে বিচ্ছিন্নতা ব্যাধির লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে এগুলো ভূমিকা রাখে।
প্রতিরোধ
যেসকল শিশুকে দৈহিক, মানসিক বা যৌনাত্মকভাবে নির্যাতন করা হয় তাদের নানা মানসিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি, যাদের মাঝে রয়েছে বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি। যদি দুশ্চিন্তা কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যা শিশুর মানসিকতায় প্রভাব ফেলে তাহলে সাহায্য নিতে হবে।
বিশ্বস্ত লোক যেমন বন্ধু, ডাক্তার বা কোন ধর্মীয় নেতার সাথে কথা বলা যেতে পারে।
যদি কোন শিশু কোন মানসিক আঘাতের শিকার হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
পুরুষ বনাম নারী
নারীরা বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিতে খুবই ঘনঘন আক্রান্ত হয়। পুরুষের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি নারী বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।
শিশু এবং কিশোর
ধারণা করা হয় বিচ্ছিন্নতা ব্যাধির প্রদান কারণ হয় শৈশবের কোন মানসিক আঘাত (নির্যাতন বা ক্ষতি), কিন্তু শিশু ও কিশোরের মাঝের লক্ষণগুলো অনেকসময় অস্পষ্ট হয় এবং ভুলভাবে নির্ণয় করা হয়। শিশুর বিচ্ছিন্নতার লক্ষণগুলো পেতে কষ্টকর হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে: শিশুর জন্য তার মানসিক অবস্থা ও অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে কষ্টকর হতে পারে; শিশুর যারা যত্ন নেয় তারা ভুল নির্দেশ দিতে পারে যাতে তাদের করা নির্যাতন বা খারাপ ব্যবহার ঢাকা পড়ে যায়; লক্ষণগুলো খুবই অস্পষ্ট হতে পারে।
শিশু এবং কিশোরের রোগনির্ণয় পরীক্ষার পাশাপাশি, শিশুর বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিকে বোঝার জন্য নানা ধরনের পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছে।
বর্তমান বিতর্ক এবং ডিএসএম-৫
প্রাপ্তবয়স্ক এমনকি শিশুদের বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি নিয়ে নানা সমালোচনা রয়েছে। প্রথমত, বিচ্ছিন্ন পরিচিতি ব্যাধির নিদান নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের বিষয় হলো শৈশবের মানসিক আঘাতের কারণে বিচ্ছিন্ন পরিচিতি ব্যাধি হয় কিনা সেটি নিয়ে। সমালোচনার দ্বিতীয় বিষয় হলো বিচ্ছিন্নতা মানসিক রক্ষার জন্য হয় কিনা বনাম আবেগপূর্ণ বিচ্ছিন্নতা এটি থেকে আলাদা।
২০১২ সালের একটি নিবন্ধ একটি ধারণাকে সমর্থন করে যে, বর্তমানের বা সাম্প্রতিক কোন মানসিক আঘাত কোন ব্যক্তির অতীতকে ঘুলিয়ে দিতে পারে, যা অতীতের অভিজ্ঞতা পরিবর্তন করে দিয়ে বিচ্ছিন্নতা অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে।
সাধারণ জনসংখ্যার ০.০১ থেকে ০.১ শতাংশ বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তবে অনেক গবেষক এই গবেষণার সাথে ভিন্ন মত পোষণ করেন। খুব কম ব্যক্তি মনে করে এই রোগটি সত্য, বাকিরা মনে করে এটি ভয় দেখানোর জন্য একটি গল্প কাহিনী। তবে যারা আক্রান্ত হয় চিকিৎসকরা তাদের সঠিক পরিচর্যা রক্ষা করে।
চলচ্চিত্রে বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি
বিভিন্ন মানসিক ব্যাধি চলচ্চিত্রের মাঝে বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিকে তুলে ধরা হয়েছে।
আইডেন্টিটি (২০০৩)
জন কুসাক ও রে লিয়োটা অভিনীত এই চলচ্চিত্রে মানসিক রোগকে তুলে ধরা হয়েছে।
নার্স বেটি (২০০০)
প্রথম দিকে এই চলচ্চিত্রটিকে ভালোবাসার চলচ্চিত্র মনে হলেও পরবর্তীতে এটিতে বিচ্ছিন্নতা ব্যাধির উল্লেখ পাওয়া যায়।
ভার্টিগো (১৯৫৮)
সাইকো (১৯৬০)
স্প্লিট (২০১৬)
চলচ্চিত্রটির মাঝে জেমস ম্যাক অভোয় ২৩টি ভিন্ন ব্যক্তিত্ত্বে অভিনয় করেন যা বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধির উদাহরণ।
বিখ্যাত ব্যক্তিদের বিচ্ছিন্নতা ব্যাধি
কৌতুককারি রোজেন বার, এডাম ডুরিজ এবং অবসরপ্রাপ্ত এনএফএল তারকা হারশেল ওয়াকার বিচ্ছিন্নতা পরিচিতি ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলো।
ওয়াকার বিচ্ছিন্নতা ব্যাধিতে তার পরিশ্রম নিয়ে একটি বই লিখেছেন, যেটাতে তিনি তার আত্মহত্যা করার প্রভণতাকে উল্লেখ করেছেন, তিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে শৈশব থেকে বিচ্ছিন্নতায় তার মানসিক প্রভাব। এটি থেকে বাঁচতে, তিনি একটি বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ত্ব তৈরি করেন যেটি একা বোধ করে না, ভয়হীন ছিল এবং খুবই রাগী ছিল। প্রাপ্তবয়স্কে তাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়।