ব্লাস্টোমা
ব্লাস্টোমা (ইংরেজি: Blastoma) হচ্ছে মূলত এক প্রকার ক্যান্সার যা সাধারণত শিশুদের মাঝে বেশি দেখা যায়। মূলত প্রিকার্সর কোষ বা ব্লাস্ট হিসেবে পরিচিত অপরিণত কোষের ম্যালিগন্যান্সিকে ব্লাস্টোমা হিসেবে অভিহিত করা হয়। ব্লাস্টোমা ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে নেফ্রোব্লাস্টোমা, মেডুলোব্লাস্টোমা, রেটিনোব্লাস্টোমা ইত্যাদি। ব্লাস্টোমা ধরনের ক্যান্সারের নামের শেষে সাধারণত ব্লাস্টোমা শব্দটি যুক্ত থাকে যার দ্বারা বোঝানো হয় যে আদি ও অপরিণত কোষ থেকে টিউমারটি সৃষ্টি হয়েছে। ক্যান্সারধর্মী টিউমার ছাড়াও অপরিণত কোষের কিছু বেনাইন টিউমারকে নির্দেশ করতেও ব্লাস্টোমা শব্দটি ব্যবহৃত হতে পারে; যেমন কন্ড্রোব্লাস্টোমা নামক হাড়ের বেনাইন টিউমার তরুণাস্থিতে থাকা কন্ড্রোসাইটের পূর্ববর্তী অপরিণত কোষ থেকে সৃষ্টি হয়।
ব্লাস্টোমার প্রকারভেদ
হেপাটোব্লাস্টোমা
হেপাটোব্লাস্টোমা হচ্ছে শিশুদের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে প্রচলিত ম্যালিগন্যান্সি, যা সাধারণত শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যে ধরা পড়ে। গত তিন দশকে হেপাটোব্লাস্টোমার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। জন্মের সময় ১ কেজির নিচে ওজন বিশিষ্ট অপরিণত শিশুর ক্ষেত্রে হেপাটোব্লাস্টোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। অপরিণত শিশুর বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধির সাথে হেপাটোব্লাস্টোমায় আক্রান্ত হওয়ার হার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে। এই রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেটে অস্বস্তি, ক্লান্তি, অরুচি, এবং রক্তস্বল্পতা।
মেডুলোব্লাস্টোমা
যেসকল মস্তিষ্কের টিউমার শিশুদের মাঝে বেশি পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে মেডুলোব্লাস্টোমাঅন্যতম। শিশুদের ম্যালিগন্যান্ট মস্তিষ্কের টিউমারের মধ্যে এই রোগের হার প্রায় ২০%। লঘুমস্তিষ্কের আদি নিউরোএক্টোডার্মাল টিউমার হিসেবে এটিকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় ১৫%, যদিও বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসার ফলে এই রোগে আরোগ্যের হার ৬০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। টিউমারের সম্পূর্ণ অপসারণের পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে কেমোথেরাপিএই রোগের সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা।