Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
মদ এবং গর্ভাবস্থা
Другие языки:

মদ এবং গর্ভাবস্থা

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
মদ এবং গর্ভাবস্থা মায়েদের জন্যে জানা অতিব জরুরি

মদ এবং গর্ভাবস্থা মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ গর্ভাবস্থায় মদ্যপান পেটের সন্তানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মদ্যপান বলতে গর্ভধারণ কাল এবং গর্ভধারণের সময় মদপান করাকে বোঝায়। গর্ভাবস্থায় মদ্য পান করেছেন এমন মায়ের সন্তানদের মাঝে ফিটাল অ্যালকোহল স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার অর্থাৎ ভ্রূণের মদ্যজ্বনিত সমস্যারাশি (এফএএসডি) দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাবটি ফিটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম (এফএএস) নামে পরিচিত। যার মাঝে, অস্বাভাবিক চেহারা, স্বল্প উচ্চতা, শরীরের কম ওজন, ক্ষুদ্র আকৃতির মাথা, সমন্বয়হীনতা, বুদ্ধিমত্তার অভাব, আচরণগত সমস্যা, কানে কম শোনা, এবং চোখের সমস্যা থাকতে পারে। এই ধরনের শিশুরা স্কুলে সমস্যা, আইনি সমস্যা, বিপদজনক আচরণ অংশগ্রহণ, এবং মদ এবং বিনোদনমূলক ড্রাগে আসক্ত হয়ে পরে। গর্ভাবস্থায় মদ্যপানে হটাৎ গর্ভপাত, মৃতবাচ্চা প্রসব, অপর্যাপ্ত ওজন, অপরিণত বাচ্চার কারণ হতে পারে। জরায়ুতে মদের সংস্পর্শে আসা সব শিশুর মধ্যেই যে মদ্যপান জনীত ক্ষতির প্রভাবে প্রভাবিত হবে তা নয়। তবে মদ্যপান বজায় রাখলে মা জন্মের পরে শিশুটির সঠিক যত্ন নাও নিতে সক্ষম হতে পারেন। গর্ভধারণের সময় মদ পান গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং যা শিশুর সম্ভাব্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

গর্ভবতী কোন মহিলা গর্ভধারণের প্রথম তিনমাসে প্রতিদিন যদি চার গ্লাস মদ পান করে তাহলে ফিটাল অ্যালকোহল সিনড্রোমের লক্ষণ দেখা দেয়। প্রতিদিন দুই গ্লাস পান করলে এফএএস এর লক্ষণ খানিকটা হালকা হয়। প্রতিদিন দুই গ্লাসের কম বা সপ্তাহে ১০ গ্লাসের কম পান করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে কিনা তা ঠিক পরিষ্কার নয়। তবে বেশিরভাগ স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস মদপান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে। এই সময় ভ্রূণ সর্বাধিক সংবেদনশীল থাকায় মদের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। তবে স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো সমগ্র গর্ভাবস্থার সময়টুকু মদ পান থেকে সম্পূর্ণ সংযমের সুপারিশ প্রদান করে।

ভ্রূণতত্ত্ব

গর্ভাবস্থার নির্দিষ্ট কিছু সময়ে শিশুর দেহের বিভিন্ন অংশের বৃদ্ধি, পরিণত এবং বিকাশ ঘটে। মদ পান এই বৃদ্ধির এক বা একাধিক স্তরে বাঁধা প্রদান করতে পারে।

ভ্রূণ থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে মানবদেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল সিস্টেম এবং অঙ্গ মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড এবং হৃদযন্ত্র গঠিত হয়। যদিও, এই দেহাংশগুলো গর্ভবস্থার পরবর্তী সময়ে তাদের বিকাশ সম্পূর্ণ করে, কিন্তু গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে মদ পান এই বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং সিস্টেম এবং অঙ্গে ত্রুটির সৃষ্টি করে।

গর্ভধারণের চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলির গঠন তৈরি হতে থাকে এবং এই সময়ে মদ্যপান হাত, পা, আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুলের বিকাশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। চতুর্থ সপ্তাহে চোখ এবং কানের গঠন তৈরি হয় এবং সংবেদনশীল এই অঙ্গগুলো মদের ক্ষতিকর প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে।

গর্ভধারণের ষষ্ঠ সপ্তাহের মধ্যে দাঁত ও তালুর বিকাশ হয়। এই সময়ের মদ্যপান এই কাঠামোগুলির উপর প্রভাব বিস্তার করে। ফিটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম মুখমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগুলির উপর যে প্রভাব তৈরি করে তা এই সময়ে মদ্যপানের কারণে ঘটে থাকে।

গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের মধ্যে অঙ্গ এবং অঙ্গ ব্যবস্থার গঠন এবং উন্নয়ন সম্পন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু তার পরেও মদের ক্ষতিকর প্রভাবের বাইরে নয় শিশু।

শিশুর মস্তিষ্ক, শরীর ও অঙ্গগুলির ক্রমবিকাশ গর্ভধারণের বিভিন্ন স্তরে ঘটে থাকে এবং যেকোন সময় মদের ক্ষতিকর প্রভাবে প্রভাবিত হতে পারে। প্রতিটি গর্ভাবস্থা ভিন্ন, মদ পানের প্রভাব একেক শিশুর উপর একেক রকম হতে পারে। জন্মের আগে মদের দ্বারা প্রভাবিত একটি শিশু জন্মের সময় 'স্বাভাবিক' বলে মনে হতে পারে। শিশুটি বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু না করা পর্যন্ত তার বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা বোঝা নাও যেতে পারে।

জন্মের পর

আপাতদৃষ্টিতে যখন একটি শিশু জন্ম নেয় তখন তাকে স্বাস্থ্যকর বলে মনে হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মদপানের কারণে শিশুটির মধ্যে যে মানসিক অথবা অঙ্গের ত্রুটি হয়েছে তা নাও বোঝা যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় মদপানের কারণে শিশুরটির মধ্যে সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যালকোহল মাইক্রোসেফেলির একটি কারণ। Alcohol is a cause of microcephaly.

গর্ভাবস্থায় মদপান শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করে না। জন্মের পর মা মদ খেলেও তার প্রভাব বুকের দুধ খাওয়ানোর উপর পরে না। মদের উপর নির্ভরশীল মায়ের শিশুর মধ্যে জন্মের পরে মদ প্রত্যাহারের লক্ষণ দেখা দেয়।

চিকিৎসা

গর্ভবতী হয়েছেন জানতে পারার সাথে সাথে একজন নারী মদ পান বন্ধ করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় মদ প্রত্যাহারের যে গুরুতর লক্ষণ রয়েছে তা দেখা দিতে পারে। বেনজোডায়াজাপিনের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় এই লক্ষণগুলোর চিকিৎসা করা যেতে পারে।

বিস্তৃতি

গর্ভাবস্থায় মদ পানকারী প্রতি ৬৭ টি মহিলার একজনের শিশু জন্ম ত্রুটি নিয়ে জন্মাবে। যে পাঁচটি দেশের সর্বাধিক মহিলারা গর্ভকালীন মদ পান করে থাকেন সেগুলো হল আয়ারল্যান্ড (প্রায় ৬০%), বেলারুশ (৪৭%), ডেনমার্ক (৪৬%), যুক্তরাজ্য (৪১%) এবং রাশিয়ান ফেডারেশন (৩৭%)। সবচেয়ে কম মদ পান করতে দেখা যায় সেই সব দেশে যেখানে ধর্মীয়ভাবে মদ পান নিশেধ করা রয়েছে। অনেক জায়গায় মদের কারণে সৃষ্ট জন্ম ত্রুটি ১% পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ, অ্যানেন্সফ্যালি, ডাউন সিনড্রোম, স্পিনা বিফিডা এবং ট্রাইসোমি ১৮ এর চাইতেও এফএএসডিতে আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা বেশি হতে পারে। বিশ্বব্যাপী, গর্ভাবস্থায় প্রতি ১০ জনে একজন মহিলা মদ পান করে। এর মাঝে ২০% স্বল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত মদ (বিঞ্জ ড্রিঙ্ক), চার বা তারও বেশি মদ পান করে থাকে।

"বিঞ্জ ড্রিংক (অতিরিক্ত মদ পান) এফএএস বা এফএএসডির সরাসরি কারণ। যা বেশ হতাশাজনক, কারণ উন্নত দেশগুলোতে অর্ধেক এবং উন্নয়নশীল দেশে ৮০% অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ঘটে। অর্থাৎ, অনেক মহিলা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি যে গর্ভবতী তা অজানা থেকে যায় এবং এই গর্ভবতী অবস্থাতেও মদ পান করতে থাকেন।"

জনস্বাস্থ্য সুপারিশ

১৯৮১ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল গর্ভবতী মহিলাদেরকে গর্ভধারণের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে যেন মদ পান থেকে বিরত থাকে সে ব্যাপারে সতর্ক প্রদান করা শুরু করে। ২০১৫ সালে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স একগুচ্ছ সুপারিশমালা প্রকাশ করে: "গর্ভাবস্থায় যে কোনও পরিমাণ মদ গ্রহণ করা নিরাপদ বলে মনে করা উচিত নয়; গর্ভাবস্থায় কোন পর্যায় মদ পান করার জন্য নিরাপদ নয়; সব ধরনের মদ - বিয়ার, ওয়াইন, এবং লিকার সব ধরণেই একই পরিমাণ ঝুঁকি রয়েছে এবং বিঞ্জ ড্রিংক উন্নয়নশীল ভ্রূণের ক্ষেত্রে বিশাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে।" গর্ভাবস্থায় অল্প পরিমাণে মদের প্রভাবে কতখানি ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না থাকার কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভাবস্থায় মদ পান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার পরামর্শ দেয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড ক্লিনিকাল এক্সেলেন্স গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস মহিলাদেরকে মদ্যপান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়, আর মহিলারা যদি পান করতেই চান তবে প্রতি সপ্তাহে এক বা দুইবারের বেশি এক বা দুইবারের বেশি নয়।

বিতর্ক

গর্ভাবস্থায় মদ পান সম্পর্কে বেশ কিছু দেশ "শূন্য সহনশীলতা" পদ্ধতি গ্রহণ করায় বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মাঝারি পরিমাণ মদ পান এফএএস এর কারণ হতে পারে তার দৃঢ় কোন প্রমাণ নেই এবং প্রকৃতপক্ষে, ভ্রূণের সম্ভাব্য ক্ষতির সাথে মদ্যপান অভ্যাসের পরিবর্তন সামাজিক, আইনি এবং স্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিডিসি একটি ইনফোগ্রাফিক (তথ্যছবি) তৈরি করে যা বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তথ্যছবিতে প্রতিষ্ঠানটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে না এমন শিশু জন্মদানের সক্ষম সকল মহিলা মদ পান থেকে বিরত থাকবেন বলে সুপারিশ করেছিল। যেহেতু একজন মহিলা গর্ভবতী হয়েছেন এটি বুঝে ওঠার আগেই গর্ভের শিশুটি অ্যালকোহল সিনড্রোমের ক্ষতিকর প্রভাবে পরতে পারে। প্রতিষ্ঠানের এই সুপারিশকে অনেকে অহেতুক এবং অত্যধিক বিস্তৃত এবং "নারীদেরকে লজ্জা দেয়া হয়েছে" বলে মনে করা হয়েছিল।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение