Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
মৃত্তিকা সৌরায়ন

মৃত্তিকা সৌরায়ন

Подписчиков: 0, рейтинг: 0

মৃত্তিকা সৌরায়ন (ইংরেজি: সোলারাইজেশন) হলো কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি অ-রাসায়নিক পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি যেখানে সৌর শক্তি ব্যবহার করে মাটির তাপমাত্রাকে এমন স্তরে উন্নীত করা হয় যাতে বহু মাটিবাহিত উদ্ভিদ রোগজীবাণু মারা যায় বা ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। মৃত্তিকা সৌরায়ন উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলগুলোতে বাগানে এবং জৈব খামারে তুলনামূলকভাবে সীমিত আকারে ব্যবহৃত হয়। মৃত্তিকা সৌরায়ন মাটির আগাছা সহ ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটোড এবং পোকামাকড় এবং পোকার কীটকে দুর্বল করে এবং মেরে ফেলে এবং মাটি দিয়ে মালচিং করে একটি তের্পল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়, সাধারণত সৌর শক্তি জমা করার জন্য স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। মৃত্তিকা সৌরায়নের সময়, তাপমাত্রা এবং মাটির আর্দ্রতার উপর নির্ভরশীল। এটি সূর্যরশ্মি ব্যবহার করে মাটি বিশুদ্ধকরণ বা দমনকারী মাটি তৈরির পদ্ধতি হিসাবেও বর্ণনা করা যেতে পারে। এই শক্তি মাটি বসবাসকারী সম্প্রদায়ের শারীরিক, রাসায়নিক এবং জৈবিক পরিবর্তন ঘটায়।।

মাটি জীবাণুমুক্তকরণ

মৃত্তিকা সৌরায়ন (সোলারাইজেশন) হল পোকাযুক্তমাটি জীবাণুমুক্ত করার একটি হাইড্রোথার্মাল প্রক্রিয়া, যা সৌর শক্তি দ্বারা সম্পন্ন হয় (প্রাচীন প্রকাশনায় মাটির সৌর উত্তাপ হিসাবে পরিচিত) এবং তুলনামূলকভাবে একটি নতুন মাটি জীবানুমুক্তকরণ পদ্ধতি, যেটির সম্পর্কে ১৯৭৬ সালে কাতান প্রথম বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। মৃত্তিকা সৌরায়ন কার্যপদ্ধতিটি জটিল এবং স্বচ্ছ পলিথিন তের্পল ব্যবহারের মাধ্যমে মাটির কীটপতঙ্গগুলির জন্য ঘাতক হিসাবে তাপের ব্যবহার জড়িত। সৌর উত্তাপের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন অনুকূল মৌসুমী তাপমাত্রা, উচ্চ তাপমাত্রা এবং সৌর বিকিরণের সময় মালচিং করা এবং মাটির আর্দ্র পরিবেশ । মাটির গভীরতা হ্রাস হওয়ার সাথে সাথে মাটির তাপমাত্রা কমে যায় এবং রোগজীবাণু নিয়ন্ত্রণের জন্য মালচিং প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। মৃত্তিকা সৌরায়ন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য মাটির তাপমাত্রা ৩৫-৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানো প্রয়োজন, যা মাটির উপরের ৩০ সেন্টিমিটারের স্তরের রোগজীবাণুকে মেরে ফেলে। সৌরায়ন মাটি সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত করে না। মৃত্তিকা সৌরায়ন উপকারী অণুজীবের বৃদ্ধির জন্য মাটি বাড়ায়। মৃত্তিকা সৌরায়ন ৯০%পর্যন্ত রোগজীবাণুকে হত্যা করে একটি উপকারী জীবাণু সম্প্রদায় তৈরি করে। আরও সুনির্দিষ্টভাবে, একটি গবেষণা প্রতিবেদন করেছিল যে, আট দিনের সৌরকরণের ফলে ১০০% V. dabliae (একটি ছত্রাক যার ফলে আবাদ করা ফসলের পচন ঘটে এবং মারা যায়) ২৫ সেন্টিমিটার গভীরতায় মারা গিয়েছিল। মৃত্তিকা সৌরায়ন উপকারী জীবাণুগুলির হ্রাস ঘটায়, তবে ব্যাসিলাস প্রজাতির মতো উপকারী ব্যাকটেরিয়া সৌরকরনকৃত মাটির উচ্চ তাপমাত্রায় বাঁচতে ও বেড়ে উঠতে সক্ষম। অন্যান্য গবেষণায়ও সৌরায়ন হওয়ার পরে ট্রাইকোডার্মা হারজিয়ানাম (Trichoderma harzianum) (ছত্রাকনাশক) এর বৃদ্ধি পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃত্তিকা সৌরায়ন অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে প্রতিযোগিতামূলক উপকারী জীবাণুগুলোর পুনর্নির্মাণের সুযোগ দেয়। সময়ের সাথে সাথে উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং সৌরায়নকৃত মাটিকে আরো রোগজীবাণু প্রতিরোধী করে তোলে। সৌরায়নের সাফল্য কেবল মাটির রোগজীবাণু হ্রাসের কারণেই হয়নি, বরংব্যাসিলাস, সিউডোমোনাস এবং টেলোমাইসিস ফ্ল্যাভাস (Talaromyces flavus) প্রভৃতি উপকারী জীবাণু বৃদ্ধিতেও হয়েছে। মাটির সৌরায়নকে মাটির রোগজীবাণু দমন এবং গাছের বৃদ্ধির কারণ হিসাবে দেখানো হয়। দমনকৃত মাটি রাইজোব্যাকটেরিয়াকে কার্যকর করে এবং সুগারবিটগুলিতে মোট শুকনো ওজন ৩.৫ গুণ বাড়াতে দেখা যায়। এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, সুগার বিটের উপর উদ্ভিদের বৃদ্ধিকারক রাইজোব্যাকটেরিয়া মাটির সৌরায়ন দ্বারা প্রভাবিত করায় মূলের ঘনত্ব ৪.৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তুতান্ত্রিকভাবে অনুকূল মাটির রোগজীবাণু দমনের জন্য মৃত্তিকা সৌরায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি পদ্ধতি।

মৃত্তিকা বিশুদ্ধকরণ

২০০৮ সালের একটি গবেষণায় ক্যাডমিয়াম-দূষিত মাটির বৈদ্যুতিন প্রতিকারের জন্য একটি তড়িৎ ক্ষেত্র তৈরি করতে একটি সৌর কোষ ব্যবহার করা হয়েছিল। সৌর কোষ দূষিত মাটিতে ক্যাডমিয়ামের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন করতে পারে এবং সৌর কোষ দ্বারা প্রাপ্ত অপসারণ দক্ষতা প্রচলিত বিদ্যুৎ সরবরাহের সাথে তুলনাযোগ্য ছিল।

কোরিয়ায়, মাটির স্লারি এবং দূষিত গ্যাস স্টেশন সাইটে বেনজিন দ্বারা দূষিত ভূগর্ভস্থ জলের বিভিন্ন প্রতিকারের পদ্ধতিগুলি মূল্যায়ন করা হয়েছিল যার মধ্যে সৌরচালিত বিভিন্ন উন্নত জারণ প্রক্রিয়া (এওপি) যুক্ত আলোক-প্রভাবক চুল্লী পদ্ধতি ছিল। সর্বাধিক সমন্বয়মূলক প্রতিকারের পদ্ধতিতে TiO2 স্লারি এবং H2O2 সিস্টেমের সাথে সৌর আলোক প্রক্রিয়া সংযুক্ত করা হয়েছে,৯৮% বেনজিনের অবক্ষয় অর্জন করা হয়েছে ,বেনজিন অপসারণে যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইতিহাস

ভারতের প্রাচীন সভ্যতায় ইতোমধ্যে মাটি এবং উদ্ভিদ উপাদানগুলিতে রোগজীবাণু নিয়ন্ত্রণে সৌর শক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়। ১৯৩৯ সালে, গ্রোশেভয়, যিনি "বালি নির্বীজনের জন্য সৌর শক্তি" শিরোনামটি ব্যবহার করেছিলেন, সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে বালু উত্তপ্ত করে Thielaviopsis basicola নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন।

মাটির সৌরায়ন হল মাটি জীবাণুমুক্তকরণের তৃতীয় পদ্ধতি; অন্য দুটি প্রধান পন্থা, মাটি বাষ্পীকরণ এবং ধূমায়ন; ১৯ শতকের শেষে বিকশিত হয়েছিল। সৌরায়নের ধারণাটি উষ্ণ জর্ডান উপত্যকার সম্প্রসারণ কর্মী এবং কৃষকদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল, যারা পলিথিনে মালচিং করা মাটির প্রচন্ড উত্তাপ লক্ষ্য করেছিলেন। জীবাণু নিয়ন্ত্রণে জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জড়িত হওয়া এবং সম্ভাব্য প্রভাবগুলি প্রথম প্রকাশে ব্যবহারের দীর্ঘ প্রভাব লক্ষ্য করার মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছিল।১৯৭৭ সালে, ডেভিসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান বিজ্ঞানীরা একটি তুলার ক্ষেতে Verticillium নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়েছিলেন,১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া গবেষণার উপর ভিত্তি করে, এই পদ্ধতিটি প্রথমবারের মত ব্যাপক সম্ভাব্য প্রযোজ্যতা প্রকাশ করে।

মাটির সৌরায়নের জন্য পলিথিনের ব্যবহার নীতিগতভাবে তার গতানুগতিক কৃষি-সংক্রান্ত ব্যবহারের চেয়ে ভিন্ন। সৌরায়নের মাধ্যমে,উষ্ণতম মাসগুলিতে(বরং শীতলতমের থেকেও ,প্রচলিত প্লাস্টিকালচারের মতো যার লক্ষ্য ছিল ফসল রক্ষা করা )মাটি মালচিং করা হয় প্রাণঘাতী তাপমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে সর্বাধিক তাপমাত্রায় বাড়ানোর জন্য।

১৯৭৬ সালের প্রভাবশালী প্রকাশনার প্রথম দশ বছরে, কমপক্ষে ২৪ টি দেশে মাটির সৌরায়ন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল এবং এখন প্রায় ৫০ টিরও বেশি জায়গায় প্রয়োগ করা হয়েছে, বেশিরভাগ উষ্ণ অঞ্চলে, যদিও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম ছিল। গবেষণাগুলোতে শাকসবজি, ক্ষেতের ফসল, শোভাবর্ধক এবং ফলের গাছ সহ বিভিন্ন ফসলের সাথে বহু রোগজীবাণু, আগাছা এবং মাটির আর্থ্রোপডের বিরুদ্ধে সৌরায়নের কার্যকারিতা প্রদর্শিত হয়েছে। যে সমস্ত রোগজীবাণু এবং আগাছা সৌরায়ন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না সেগুলিও সনাক্ত করা হয়েছে। সৌরায়ন চলাকালীন এবং তার পরে সৌরায়িত মাটিতে যে জৈবিক, রাসায়নিক এবং শারীরিক পরিবর্তনগুলো সমীক্ষা করা হয়েছে তেমনি নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতির সাথে সৌরায়নের মিথস্ক্রিয়াও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। জৈবিক নিয়ন্ত্রণ এবং বর্ধিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া সহ দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলো বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চল এবং মাটিতে সাধারণ প্রয়োগযোগ্যতা প্রদর্শন করে যাচাই করা হয়েছিল। কম্পিউটারে তৈরি অনুকরণ মডেলগুলো গবেষক ও কৃষকদের নিজেদের অঞ্চলের আশেপাশের পরিস্থিতি সৌরায়নের জন্য উপযুক্ত কিনা তার পথ দেখনোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।

অন্যান্য পদ্ধতির সাথে সংহত করে বা আবদ্ধ কাঁচঘরে সৌরায়ন করে সৌরায়নের উন্নতির গবেষণা, অথবা মালচিং মেশিনগুলের বিকাশ করে বাণিজ্যিক প্রয়োগ সম্পর্কিত গবেষণাও চালানো হয়েছে।

বিদ্যমান বাগানে সৌরায়নের ব্যবহার (উদাহরণ- পেস্তা বাগানে ভারটিসিলিয়াম Verticillium নিয়ন্ত্রণ করা) আদর্শ প্রিপ্লান্টিং পদ্ধতি থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচ্যুতি এবং এটি ১৯৭৯ এর প্রথম দিকে প্রতিবেদন করা হয়েছিল।


Новое сообщение