Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
মেন গোয়িং দেয়ার ওন ওয়ে
মেন গোয়িং দেয়ার ওন ওয়ে (Men Going Their Own Way, MGTOW বা মিগটো, বাংলায় - পুরুষরা তাদের নিজস্ব পথে যাচ্ছে) হচ্ছে একটি নারীবাদী বিরোধী, নারীবিদ্বেষী অনলাইন (মূলত) সম্প্রদায়। এটি মনে করে পুরুষদেরকে নারীদের থেকে এবং "নারীবাদের দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত সমাজ" থেকে বিছিন্ন হয়ে যাওয়া উচিত। এই সম্প্রদায় ম্যানোস্ফিয়ারের একটি অংশ। একাধিক নারীবাদ-বিরোধী ওয়েবসাইট ও অনলাইন সম্প্রদায় নিয়ে ম্যানোস্ফিয়ার গঠিত। ম্যানোস্ফিয়ারের মধ্যে পুরুষ অধিকার আন্দোলন (men's rights movement), ইনসেল (incels) এবং পিকআপ আর্টিস্টরাও (pickup artists) অন্তর্ভুক্ত।
অন্যান্য ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায়ের মতো, মিগটো সম্প্রদায়টির সাথেও অল্ট-রাইট এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী আন্দোলনের মিল পাওয়া যায়, এবং অভিযোগ আছে, এরা অনলাইনে নারীদেরকে হয়রানির করে। ২০১৮ সালে সাউদার্ন পোভার্টি ল সেন্টার নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান "হেট ম্যাপ" নামে একটি হেট গ্রুপ ট্র্যাকিং প্রোজেক্ট (ঘৃণা দল চিহ্নিতকরণ প্রকল্প) গ্রহণ করে, সেই প্রকল্পে তারা মিগটোকে পুরুষ আধিপত্যবাদী মতাদর্শের অংশ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে।
mgtow.com অনুসারে, "মেন গোয়িং দেয়ার ওন ওয়ে হচ্ছে একটি স্ব-মালিকানার বিবৃতি, যেখানে আধুনিক মানুষ তার নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে ...। এটি হচ্ছে "না" শব্দের প্রকাশ, এটি "পুরুষ" শব্দটি থেকে এর নির্বোধ পূর্বসংস্কারকে দূর করে এবং এর সাংস্কৃতিক সংজ্ঞাকে ভেঙ্গে ফেলে, এটি সামাজিক ইঙ্গিতের জন্য আর কারো দিকে তাকায় না, এটি কাজ শেষে ফেলে দেয়া যায় এমন কোন বস্তু হিসেবে ব্যবহৃত হবার জন্য মাথা নত করে না, হাঁড়ু গেড়ে বসে না..., এটি তার সর্বোত্তম স্বার্থ অনুযায়ী বাঁচতে চায়।" এই ওয়েবসাইটের FAQ অংশে বলা হচ্ছে, মিগটো নারীবাদের মত কোন আন্দোলন না, বরং এটি এর ঠিক বিপরীত, এটি নারীবাদীদের মত রাস্তা অবরোধ করে মিছিল করেনা, জনসমাবেশ করেনা, রাষ্ট্রপুঞ্জ বা জাতিসংঘে সদস্য পাঠায় না, এবং গণ বিদ্যালয়গুলোতে বাচ্চাদের "মগজ ধোলাই" করে না।
ইতিহাস
মিগটো মতাদর্শের উৎপত্তি কোথায় বা কখন তা পরিষ্কার নয়, তবে মনে করা হয় এটি ২০০০ সালের প্রথম দিকে আবির্ভূত হয়েছে। শুরুর দিকে এই মতাদর্শের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ যেসব ব্লগ বা ওয়েবসাইট ছিল তাদের মধ্যে একটি ছিল "নো ম্যাম"। এই ব্লগ থেকেই ২০০১ সালে প্রথমবারের মত "মিগটো ইশতেহার" প্রকাশ করা হয়। এর আগে মিগটো সম্প্রদায়ের সদস্যরা মূলত স্বাতন্ত্র্যবাদী (লিবার্টারিয়ান) ছিলেন। এই আন্দোলনের প্রারম্ভিক সদস্য এবং সমসাময়িক সদস্যদের মধ্যে একটি বিভেদ লক্ষ্য করা যায়, প্রাক্তন সদস্যদেরকে বর্তমান সদস্যদেরকে নিয়ে উপহাস করতে দেখা যায়।
২০১৫ সালে অল্ট-রাইটরা সমাজে প্রচুর পরিচিতি লাভ করে। এসময় ম্যানোস্ফিয়ারের দুটো সম্প্রদায় - মিগটো ও পিক-আপ আর্টিস্ট সম্প্রদায় অল্ট-রাইটদের সাথে মিশে যেতে শুরু করে। মিগটো ও পিক-আপ আর্টিস্টের সদস্যপদ ও মতাদর্শের সাথে অল্ট-রাইট সদস্যপদ ও মতাদর্শের অনেক মিল আছে। এরা সবাই বিশ্বাস করে যে, নারীবাদ পাশ্চাত্য সমাজকে ধ্বংস করেছে। মিগটো এবং অন্যান্য ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায়গুলোর অনেক বৈশিষ্ট্যই বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী, স্বৈরাচারী এবং জনতোষণবাদী (পপুলিস্ট) আন্দোলনগুলোর সাথে মিলে যায়।অতি-দক্ষিণপন্থী ধারাভাষ্যকার এবং বিতার্কিক মাইলো ইয়াননোপোলোসকে ২০১৪ সালে ব্রেইটবার্ট নিউজে "দ্য সেক্সোডাস" নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। এই প্রবন্ধটির কারণে মাইলোকে মিগটোদেরকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব দান করা হয়। এখানে তিনি বলেছিলেন, পুরুষেরা নারীবাদের কারণেই নারী, প্রেম, যৌনতা ও বিবাহকে এড়িয়ে যাচ্ছে। (এখানে যে সেক্সোডাস শব্দটি ব্যবহার হল তা আসলে সেক্স ও এক্সোডাস এর সমন্বয়ে তৈরি একটি যুগ্ম শব্দ, বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায় "যৌন নির্বাসন")।
মিগটো সম্প্রদায়ের পুরুষরা সাবরেডিট r/MGTOW, r/MGTOW2 সহ বিভিন্ন ছোট ছোট সহায়ক সাবরেডিটসমূহে সক্রিয় ও একত্র হয়, সেই সাথে তারা তাদের নিজস্ব স্বাধীন ওয়েবসাইট মিগটো ফোরামেও (MGTOW Forum) একত্র হয়। সাবরেডিট হচ্ছে অনলাইন যোগাযোগ সংহতি প্রতিষ্ঠান রেডিট এর অধীনে থাকা কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের আলোচনার জন্য বরাদ্দকৃত ফোরাম। ২০১১ সালে r/MGTOW তৈরি করা হয় এবং ২০১৪ সালে মিগটো ফোরাম আবির্ভূত হয়। ২০১৭ সালে রেডিটে একটি বৃহৎ ইনসেল সাবরেডিট নিষিদ্ধ করে দেয়ার পর, একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য r/MGTOW ছিল বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সক্রিয় ম্যানোস্ফিয়ার সাবরেডিট, অবশ্য তা শীঘ্রই জনপ্রিয়তায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে যায়। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে রেডিট কর্তৃপক্ষ r/MGTOW সাবরেডিটকে কোয়ারান্টাইন করে। কোন সাবরেডিটকে কোয়ারেন্টাইন করার অর্থ হচ্ছে সেই সেই সাবরেডিটের উপর একটি সীমাবদ্ধতা চাপিয়ে দেয়া, এটা করার কারণ হিসেবে দেখানো হয়, এখানে "এমন সব জিনিস দেয়া হয় যা গড়পড়তা রেডিট-ব্যবহারকারীদের জন্য আক্রমণাত্মক বা পীড়াদায়ক"। এই সীমিতকরণ বা সীমাবদ্ধকরণের ফলে সাবরেডিটটি আর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করতে পারবে না, এবং সাম্ভাব্য আক্রমণাত্মক বিষয়গুলো দেখার জন্য প্রবেশকারীর সম্মতির প্রয়োজন পড়বে।
সদস্যপদ ও সদস্যসংখ্যা
যতগুলো ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায় রয়েছে, তাদের মধ্যে কেবল মিগটোতেই নারীদের সদস্য হওয়া অনুমোদিত নয়। মিগটো সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের বিষমকামী, শ্বেতাঙ্গ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকজন। জোন্স এবং তার সহকর্মীরা ২০১৯ সালে নিউ মিডিয়া এন্ড সোসাইটি নামক শিক্ষায়তনিক বা একাডেমিক জার্নালে লিখেছিলেন: "যদিও মিগটো এর অনুসারীদের সঠিক সংখ্যা কত তা অস্পষ্ট, একে ম্যানোস্ফিয়ারের মধ্যে একটি জনপ্রিয় এবং ক্রমবর্ধমান দল বলেই মনে হচ্ছে: ২০১৮ সালের শুরুতে সাবরেডিট r/MGTOW এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৫৪,০০০ জন সেটা বেড়ে গিয়ে ২০১৯ সালের শুরুতে হয়ে দাঁড়াত ১০৪,০০০ জন। তাছাড়া, এবং মিগটো ফোরামে ৩২,৮৫৯ জন সদস্য তালিকাভূক্ত রয়েছেন।" লেখক ডোনা জুকারবার্গ তার ২০১৮ সালের গ্রন্থ "নট অল ডেড হোয়াইট মেন"-এ মিগটোকে পুরুষদের মানবাধিকার আন্দোলন ও প্রলোভন (সিডাকশন) সম্প্রদায়ের (পিকআপ আর্টিস্ট) তুলনায় ক্ষুদ্র সম্প্রদায় হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।
মতাদর্শ
মিগটো মতাদর্শ হচ্ছে পুরুষ বিচ্ছিন্নতাবাদ, সেই সাথে এটি মনে করে, সমাজ নারীবাদের দ্বারা দূষিত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। মিগটো গোষ্ঠীগুলো নারীবাদ-বিরোধী এবং নারীবাদী-বিরোধী, তারা বিশ্বাস করে যে নারীবাদ নারীদেরকে করে তুলেছে পুরুষদের জন্য বিপজ্জনক, আর তাই পুরুষদেরকে আত্মরক্ষার জন্যই নারীদের থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া প্রয়োজন। তারা বিশ্বাস করে যে পুরুষদের বিরুদ্ধে একটি পদ্ধতিগত জ্ঞানতাত্ত্বিক পক্ষপাতিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে লৈঙ্গিক ভূমিকায় পক্ষপাতদুষ্টতা বা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড এবং পারিবারিক আদালতে পুরুষদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব। অন্যান্য ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায়ের মত মিগটোরাও মনে করে, নারীরা ডেটিং এবং বিয়েতে একই ধরনের প্যাটার্ন অনুসরণ করে: তরুণ এবং আকর্ষণীয় নারীরা "হাইপারগ্যামি" এর সাথে জড়িত থাকে, তারা অসংখ্য পুরুষের সাথে যৌন মিলনে অংশ নেয় এবং একজন "উচ্চ মর্যাদার" পুরুষ তাদের প্রতি আগ্রহ দেখালে তারা তাদের পূর্বের প্রেমিক বা স্বামীকে পরিত্যাগ করে। (হাইপারগ্যামি দ্বারা নিজের চেয়ে উচ্চ মর্যাদার কাউকে বিবাহ করাকে বোঝায়)। মিগটোরা মনে করে যে, নারীরা আকর্ষণীয় "আলফা পুরুষদের" প্রতি আকৃষ্ট হয়, কিন্তু তাদের সাথেই পরে তারা দুর্ব্যবহার করে, এবং এর মাধ্যমে নারীবাদের প্রতি নারীদের বিশ্বাস মজবুত হয়। যখন নারীদের বয়স বাড়তে শুরু করে, তখন তারা "বেটা পুরুষদের" সাথে বসতি স্থাপন করতে পছন্দ করে যারা তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে, কিন্তু এই নারীরা বেটা পুরুষদের সাথে তারা যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে চায়না, বরং কখনও কখনও তারা আকর্ষণীয় পুরুষদের সাথে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। পরিশেষে, মিগটো মতাদর্শ অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে নারীরা তাদের স্বামীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদ করে, এবং আদালত এই বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় নারীদের পক্ষে থাকে কারণ এক্ষেত্রে মিগটো মতে নারীদের জন্য "নারী সুবিধা" বা "ফিমেল প্রিভিলেজ" রয়েছে।
মিগটো আন্দোলনের পুরুষগণ ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায়সমূহের ব্যবহার করা শব্দগুলোকেই (জার্গন) ব্যবহার করে, যার মধ্যে রয়েছে দ্যা ম্যাট্রিক্স চলচ্চিত্র থেকে ধার করা পদ "রেড পিল" ও "ব্লু পিল"। ম্যানোস্ফিয়ারের যারা "নারীবাদী মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত পুরুষবিদ্বেষী সমাজ-বাস্তবতার নারীবাদী বিভ্রম" থেকে মুক্তিলাভ করেছে তাদেরকে "রেডপিলড" বা "লাল পিল গ্রাহক" বলা হয়, আর যারা তাদের মতাদর্শকে গ্রহণ করে না তাদেরকে "ব্লুপিলড" বা "নীল পিল গ্রাহক" বলা হয়। এই দুটো ছাড়াও মিগটো সম্প্রদায় অন্যান্য ম্যানোস্ফিয়ার সম্প্রদায়গুলোর মতই আরও বিভিন্ন পরিভাষা ব্যবহার করে, যার মধ্যে রয়েছে অন্যান্য পুরুষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গালাগালি যেমন "সয় বয়", "বেটা কাক", এবং "হোয়াইট নাইট" ইত্যাদি।
মিগটো সম্প্রদায়ের চার বা পাঁচটা স্তর আছে, এই সম্প্রদায়ের সদস্য এই স্তরের যেকোন একটিতে অবস্থান করতে পারে। স্তরগুলো লেভেল জিরো বা শূন্য স্তর থেকে চতুর্থ স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত। শূন্য স্তরের সদস্যদেরকে বলা হয় "পরিস্থিতিগতভাবে সচেতন" (situationally aware), এর মানে হল তারা "রেড পিল" এবং মিগটো মতাদর্শের কিছু নীতি গ্রহণ করেছে, যেমন "লিঙ্গ সমতা মিথ্যা"। কখনও কখনও তাদের "পারপল পিলড" (বেগুণী পিল গ্রাহক) হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যার মানে হল তারা তারা রেড পিল এবং ব্লু পিল গ্রাহকের মধ্যেবর্তী অবস্থায় আছে, এছাড়া শূন্য স্তরের মিগটো সদস্যরা এখনও মনে করে যে, বিবাহের সার্থকতা আছে। লেভেল ওয়ান বা প্রথম স্তরের মিগটো সদস্যরা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক, সহবাস এবং বিবাহ থেকে বিরত থাকে, কিন্তু তারা তখনও স্বল্পমেয়াদী সম্পর্ক এবং যৌন মিলনে অংশগ্রহণ করবে। যারা দ্বিতীয় স্তরে আছে তারাও স্বল্পমেয়াদী সম্পর্ক এবং যৌন মিলন থেকে বিরত থাকে। লেভেল থ্রি বা তৃতীয় স্তরের মিগটো সদস্যরা সমাজের সাথে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক কমানোর চেষ্টা করে, এবং লেভেল ফোর বা চতুর্থ স্তরের সদস্যরা পুরোপুরি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই মডেলের একটি চার স্তরের সংস্করণ আছে, যেখানে উপরে উল্লিখিত ৩য় ও ৪র্থ স্তরকে একত্র করে ৪র্থ বা চূড়ান্ত স্তরে ফেলা হয়, সেক্ষেত্রে সমাজের সাথে এই ধরনের বিচ্ছিন্নতাকে "চলমান ভূত" ("গোয়িং ঘোস্ট") হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
অন্যান্য ম্যানোস্ফিয়ার গ্রুপগুলির সাথে সম্পর্ক
মিগটো সম্প্রদায় ম্যানোস্ফিয়ারের একটি অংশ, যেখানে ম্যানোস্ফিয়ার হচ্ছে পুরুষ জাতির স্বার্থরক্ষা ও নারীবাদ বিরোধিতার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং অনলাইন ফোরামের সমষ্ট। মিগটো ছাড়াও পুরুষদের অধিকার আন্দোলন (men's rights movement), ইনসেল, পিক-আপ আর্টিস্ট এবং পিতৃ অধিকার আন্দোলনও (father's rights movements) ম্যানোস্ফিয়ারের অন্তর্গত।
পুরুষ অধিকার আন্দোলন
যদিও কেউ কেউ মিগটোদেরকে পুরুষদের অধিকার আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে, অন্যান্যরা মিগটো-এর বিচ্ছিন্নতাবাদী মতাদর্শের কারণে তাদেরকে পুরুষ অধিকার আন্দোলন থেকে আলাদা করে থাকে, কেননা পুরুষ অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা কেবল সামাজিক পরিবর্তন চায়, বিচ্ছিন্নতা চায়না। ডোনা জুকারবার্গের মতে, প্রথম দিকের মিগটো দলগুলো প্রাথমিকভাবে স্বাতন্ত্র্যবাদী (লিবারটারিয়ান) ছিল এবং "বৃহৎ সরকার" (big government) এর বিরোধিতা করত; এর ফলে পুরুষ অধিকার আন্দোলনের যারা শিশু হেফাজত (চাইল্ড কাস্টডি) ও বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন লবি বা চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মাধ্যমে সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করত তাদের সাথে মিগটোদের বিচ্ছেদের সৃষ্টি হয়।
পিকাপ আর্টিস্ট
মিগটো সম্প্রদায় ও পিকআপ আর্টিস্ট (পিইউএ) সম্প্রদায় মধ্যে নারী বিষয়ক ভিন্ন ভাবনা-চিন্তা কাজ করে, আর সেই মতপার্থক্যের কারণে এই দুই সম্প্রদায় একে অপরের প্রতি ঘৃণাও প্রকাশ করে। যেখানে মিগটো সম্প্রদায়গুলো নারীদের থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হতে চায়, সেখানে পিকআপ আর্টিস্টরা নারীদের সাথে যৌন মিলনের উন্নততর কৌশল তৈরি বা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করে। পুয়া (PUA বা পিক আপ আর্টিস্ট) সম্প্রদায় মিগটোকে "ভারজিনস গোইং দেয়ার ওন ওয়ে" (বাংলায় "ভার্জিনরা নিজেদের পথে যাচ্ছে") বলে উপহাস করে। এদিকে মিগটো সম্প্রদায় পুয়াদেরকে পুরোপুরি নারীদের অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল বলে উপহাস করে। সেই সাথে পুয়ারা নারীদের সাথে যৌন সাফল্য অর্জনের জন্য অধিক মনোযোগ প্রদান করে বলে মিগটো সম্প্রদায় মনে করে, পুয়া সম্প্রদায় নারীকেন্দ্রিক সমাজে নারীদের অতিমূল্যায়ন প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখে।
প্রতিক্রিয়া
সাউদার্ন পোভার্টি ল সেন্টার তাদের ২০১৮ সালের "হেট ম্যাপ" নামক প্রকল্পে (যেখানে হেট গ্রুপগুলোকে চিহ্নিত করা হয়) মিগটো সম্প্রদায়কে পুরুষ শ্রেষ্ঠত্ববাদী মতাদর্শের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে।
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে একদল কম্পিউটার বিজ্ঞানী "দ্য ইভোল্যুশন অফ দ্য ম্যানোস্ফিয়ার অ্যাক্রস দ্য ওয়েব" (বাংলায় "ওয়েব জুড়ে ম্যানোস্ফিয়ারের বিবর্তন") শিরোনামের একটি গবেষণাপত্রের প্রিপ্রিন্ট প্রকাশ করেন।এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ-তে তানিয়া বসু এই প্রিপ্রিন্টকে "অনলাইনে ইনসেল আন্দোলনে ইন্ধন জোগানো নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীসমূহের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ চিত্র" হিসেবে বর্ণনা করেন। r/MGTOW এবং মিগটো ফোরাম এই গবেষণাপত্রের গবেষণার অন্তর্গত ছিল। প্রিপ্রিন্ট প্রকাশিত হওয়ার পর পরই রেডিট r/MGTOW সাবরেডিটকে কোয়ারান্টাইন করে। "এমন সব জিনিস দেয়া হয়েছে যা গড়পড়তা রেডি-ব্যবহারকারীদের জন্য আক্রমণাত্মক বা পীড়াদায়ক" - এমনটা উল্লেখ করে রেডিট এর উপর একটি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয় যার ফলে তারা আর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেনা এবং তাদের সাম্ভাব্য আক্রমণাত্মক বিষয় দেখার জন্য প্রবেশকারীর সম্মতির প্রয়োজন পড়বে।
গবেষকরা মিগটো সম্প্রদায়কে নারীদের অনলাইন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। ২০২০ সালে ইনফরমেশন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোসাইটি নামক জার্নালে প্রকাশিত রাইট এট আল ( Wright et al.) গবেষণায় লেখা হয়েছে "মিগটোরা টুইটারে ব্যাপকহারে পরোক্ষ হয়রানিমূলক কাজ করে ও নারীবিদ্বেষ প্রচার করে"। ২০২০ সালের রিবেইরো এট আল. (Ribeiro et al.) এর গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, মিগটো সম্প্রদায় হচ্ছে ম্যানোস্ফিয়ারের একটি অংশ যা সংখায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং "যারা অনলাইন হয়রানি ও বাস্তব জগতে সহিংসতার সাথে জড়িত।" ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন মেল সুপ্রিমেসিজম-এর সহকর্মীরা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর কাউন্টার টেররিজম জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলেছেন, মিগটো-এর সদস্যরা "প্রকাশ্যে নারীবিদ্বেষ ছড়ায় এবং অনলাইন হয়রানির মাধ্যমে নারীদের প্রতি এই বিদ্বেষক স্বাভাবিকীকৃত করে"।
- Basu, Tanya (ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০)। "The 'manosphere' is getting more toxic as angry men join the incels"। MIT Technology Review।
-
।
|ধারাবাহিক=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - Ging, Debbie (২০১৯)। "Alphas, Betas, and Incels: Theorizing the Masculinities of the Manosphere": 638–657। আইএসএসএন 1097-184X। ডিওআই:10.1177/1097184X17706401।
- Gender Hate Online: Understanding the New Anti-Feminism। Springer Nature। ২০১৯। আইএসবিএন 978-3-319-96226-9। ওসিএলসি 1108619233।
- Hodapp, Christa (২০১৭)। Men's Rights, Gender, and Social Media। Lexington Books। আইএসবিএন 978-1-49-852617-3।
- Janik, Rachel (এপ্রিল ২৪, ২০১৮)। ""I laugh at the death of normies": How incels are celebrating the Toronto mass killing"। Hatewatch (ইংরেজি ভাষায়)। Southern Poverty Law Center।
- Jasser, Greta; Kelly, Megan (মে ২০, ২০২০)। "Male supremacism and the Hanau terrorist attack: between online misogyny and far-right violence" (ইংরেজি ভাষায়)। International Centre for Counter-Terrorism।
- Jones, Callum; Trott, Verity (নভেম্বর ৮, ২০১৯)। "Sluts and soyboys: MGTOW and the production of misogynistic online harassment"। আইএসএসএন 1461-4448। ডিওআই:10.1177/1461444819887141।
- Lamoureux, Mack (সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫)। "Inside the Group of Straight Men Who Are Swearing Off Women"। Vice (ইংরেজি ভাষায়)।
- Lin, Jie Liang (২০১৭)। "Antifeminism Online: MGTOW (Men Going Their Own Way)"। Digital Environments: Ethnographic Perspectives Across Global Online and Offline Spaces। Edition Medienwissenschaft। Transcript Verlag। পৃষ্ঠা 77–96। আইএসবিএন 978-3-8376-3497-6। জেস্টোর j.ctv1xxrxw.9।
- Lumsden, Karen (২০১৯)। "'I Want to Kill You in Front of Your Children' Is Not a Threat. It's an Expression of a Desire': Discourses of Online Abuse, Trolling, and Violence on r/MensRights"। Online Othering: Exploring Digital Violence and Discrimination on the Web। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 91–115। আইএসবিএন 978-3-03-012632-2।
-
(প্রতিবেদন)।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - Nagle, Angela (২০১৭)। Kill All Normies: Online Culture Wars From 4Chan And Tumblr To Trump And The Alt-Right। Zero Books। আইএসবিএন 978-1-78535-543-1।
- A bot will complete this citation soon. Click here to jump the queue arXiv:[১].
- Schmitz, Rachel M.; Kazyak, Emily (মে ১২, ২০১৬)। "Masculinities in Cyberspace: An Analysis of Portrayals of Manhood in Men's Rights Activist Websites": 18। ডিওআই:10.3390/socsci5020018 ।
- "Male Supremacy" (ইংরেজি ভাষায়)। Southern Poverty Law Center। ৭ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- Van Valkenburgh, Shawn P. (ডিসেম্বর ৪, ২০১৮)। "Digesting the Red Pill: Masculinity and Neoliberalism in the Manosphere" (ইংরেজি ভাষায়): 1–20। আইএসএসএন 1097-184X। ডিওআই:10.1177/1097184X18816118।
- Winter, Aaron (২০১৯)। "Online Hate: From the Far-Right to the 'Alt-Right' and from the Margins to the Mainstream"। Online Othering: Exploring Digital Violence and Discrimination on the Web। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 39–64। আইএসবিএন 978-3-03-012632-2।
- Wright, Scott; Trott, Verity (মে ১১, ২০২০)। "'The pussy ain't worth it, bro': assessing the discourse and structure of MGTOW" (ইংরেজি ভাষায়): 908–925। আইএসএসএন 1369-118X। ডিওআই:10.1080/1369118X.2020.1751867।
- Zuckerberg, Donna (২০১৮)। Not All Dead White Men: Classics and Misogyny in the Digital Age। Harvard University Press। আইএসবিএন 978-0-674-97555-2। ওসিএলসি 1020311558।
বহিঃসংযোগ
- উইকিঅভিধানে MGTOW-এর আভিধানিক সংজ্ঞা পড়ুন।