Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
যৌনকর্মীর প্রতি সহিংসতা

যৌনকর্মীর প্রতি সহিংসতা

Подписчиков: 0, рейтинг: 0

যৌনকর্মীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্তরে বিশ্বব্যাপী নথিবদ্ধ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা প্রধানত নারী, চরম ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রের অভ্যন্তরে এবং বাইরে তাঁদের হত্যাও করা হয়েছে।

ব্যাপকতা

পতিতাবৃত্তিতে কর্মরত মহিলারা অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলাদের তুলনায় অনেক উচ্চ মাত্রায় সহিংসতার সম্মুখীন হন। ২০০৪ সালে প্রকাশিত একটি দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায়, ১৯৬৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত কলোরাডো স্প্রিংসে কাজ করা সক্রিয় মহিলা যৌনকর্মীদের হত্যার হার অনুমান করা হয়েছিল ২০৪ জন, প্রতি ১০০,০০০ ব্যক্তি-বছর। গবেষণা চালানোর ১,৯৬৯ মহিলাদের সিংহভাগই রাস্তার পতিতা হিসাবে কাজ করেছিলেন; মাত্র ১২৬ জন ম্যাসেজ পার্লারে কাজ করতেন। যদিও এই কলোরাডো স্প্রিংস যৌনকর্মীদের ব্যাপকতা এবং যৌন সঙ্গীদের সংখ্যার দিক থেকে সমস্ত মার্কিন যৌনকর্মীদের প্রতিনিধি বলে ধরে নেওয়া যায় এবং যদিও তাঁরা দেশের অনেক জায়গায় যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করেছিলেন (এবং মারা গিয়েছিলেন), অন্যত্র পতিতাদের মৃত্যুর হার এবং মোটামুটি চিত্র আলাদা হতে পারে। এই হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ১৯৮০ এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ পেশার তুলনায় যথেষ্ট বেশি (মহিলা মদের দোকানের কর্মীদের জন্য প্রতি ১০০,০০০ জনে ৪ জন এবং পুরুষ ট্যাক্সি চালকদের প্রতি ১০০,০০০ জনে ২৯ জন)। যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ব্যপকতা স্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। কানাডার ভ্যানকুভার, ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ১৪ বছরের বেশি বয়সী মহিলা যৌনকর্মী যাঁরা গাঁজা ছাড়া অন্য অবৈধ মাদক ব্যবহার করতেন, তাঁদের নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৫৭% যৌনকর্মী ১৮ মাসের বেশি সময় ধরে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।কম্বোডিয়ার নমপেনের ১,০০০ জন নারী (উভয় সিসজেন্ডার এবং রূপান্তরিত লিঙ্গ) যৌনকর্মীদের নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৩% নারী আগের বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

সহিংসতার ধরন

শারীরিক

শারীরিক সহিংসতাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এইভাবে "শারীরিক শক্তি বা ক্ষমতার ইচ্ছাকৃত ব্যবহার, হুমকি দিয়ে বা প্রকৃত ভাবে, নিজের বিরুদ্ধে, অন্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে, অথবা একটি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে, যার ফলে হয় আঘাত, মৃত্যু, মানসিক ক্ষতি, ত্রুটিপূর্ণ বিকাশ বা বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।" শারীরিক সহিংসতা সাধারণত রাস্তার যৌনকর্মীদের বেশি সহ্য করতে হয়েছে, এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৭% বাইরে কাজ করা যৌনকর্মী লাথি, ঘুষি বা চড়ের শিকার হয়েছেন। সান ফ্রান্সিসকোতে কর্মরত যৌনকর্মীদের একটি গবেষণায়, অংশগ্রহণকারীদের ৮২% বলেছেন যে পতিতাবৃত্তিতে প্রবেশের পর থেকে নানা ধরনের শারীরিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন, এই হামলার ৫৫% তাঁদের মক্কেল দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। একটি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে ৭৪% যৌনকর্মী তাঁদের জীবদ্দশায় বেশ কিছু শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন। যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত বেশিরভাগ গবেষণার মধ্যে সাধারণ ঐকমত্য হল যে তাঁদের বিরুদ্ধে শারীরিক সহিংসতার হার অত্যন্ত বেশি, বিশেষ করে মহিলা যৌনকর্মীদের মধ্যে (রূপান্তরিত লিঙ্গ সহ), যাঁরা তাদের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় শারীরিক সহিংসতার হার বেশি অনুভব করেছেন।

মানসিক

মনস্তাত্ত্বিক অপব্যবহার, এছাড়াও মানসিক অপব্যবহার বা মানসিক নির্যাতন হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যেখানে একজন ব্যক্তি অন্যের প্রতি এমন আচরণ করে যার ফলে মানসিক আঘাত হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ, দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্নতা, অথবা আঘাত পরবর্তী চাপজনিত ব্যাধি (পিটিএসডি)।জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল বলে যে এই ধরনের সহিংসতার "অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু অপমানিত হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় (উদাহরণস্বরূপ অবমাননাকর নামে ডাকা) অথবা নিজের সম্পর্কে খারাপ বোধ করতে বাধ্য করা;অন্য মানুষের সামনে অপমানিত বা ছোট করা; নিজের সন্তানদের হেফাজত হারানোর হুমকি পাওয়া; বন্ধ থাকা বা পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা; নিজের বা প্রিয়জনের ক্ষতির হুমকি পাওয়া; বারবার চিৎকার করা, ভয় দেখানো শব্দ বা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ভয় সৃষ্টি করা; আচরণ নিয়ন্ত্রণ; এবং অধিকৃত বস্তু নষ্ট করা।"

কিছু নির্দিষ্ট ধরনের মানসিক নির্যাতন ও আবেগিক নির্যাতন রয়েছে যেগুলো যৌনকর্মীদের অধিক সহ্য করতে হয়, যেমন মৌলিক চাহিদা অস্বীকার, জোরপূর্বক মাদক বা অ্যালকোহল সেবন এবং কিছুসংখ্যক কন্ডম বহনের জন্য আটক হচ্ছে। পতিতাবৃত্তিতে কর্মরত নারীরা বেশিরভাগই মানসিক নির্যাতনের ঝুকিতে থাকে, নির্দিষ্টভাবে মৌখিক অকথ্য ভাষায় গালি, কারণ, বহু খরিদ্দার এবং অন্যান্য লোকেরা সামাজিক দৃষ্টিতে তাঁদের “বেশ্যা” অথবা অবাছিত মহিলা বলে। প্রায়শই মৌখিক নির্যাতন ঘটে থাকে যখন তাঁদের কাজ দেয়া হয়, অথবা কাজ দেয়ার পর খরিদ্দাররা তৃপ্ত না হয়। উভয়ক্ষেত্রে, মক্কেলের থেকে মৌখিক অপব্যবহার অগ্রমুখী হয়ে থাকে যৌন সহিংসতায় ধাবিত করতে। এক জরিপে দেখা গেছে, ৭৮% যৌনকর্মী তাঁদের জীবনকালে অনুভূতি সংক্রান্ত ও মানসিক নির্যাতনের অভিজ্ঞতা জানিয়েছে।

যৌন

যৌন সহিংসতা হলো যেকোনো যৌন কার্য অথবা জবরদস্তি বা সহিংসতার মাধ্যমে যৌন কাজ হাসিল করার প্রচেষ্টা। অনাকাঙ্খিত যৌন মন্তব্য বা তার বেশি কিছু করা, কাউকে নিয়ে ব্যবসা করা, কোনো ব্যক্তির যৌনতার বিরুদ্ধে পরিচালিত কাজ। গৃহমধ্যস্ত পতিতাদের বাদে যারা উচ্চহারে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার কথা জানিয়েছে, তাঁদের মধ্যে নির্যাতনের ক্ষেত্রে, অন্যধরনের যৌন নির্যাতন শারীরিক অপব্যবহারের তুলনায় কম। এক জরিপে, ৪৪% যৌনকর্মী সারাজীবন যৌন অপব্যবহারের অভিজ্ঞতা জানিয়েছে। যৌন লাঞ্ছনা ও ধর্ষনের হার  পুরুষের তুলনায় নারীদের মাঝে অধিক ( ট্রান্সজেন্ডার নারী সহ), সর্বোপরি হার অধিক হলেও এক জরিপে পাওয়া যায় ৬৮% উত্তরকারীরা পতিতাবৃত্তিতে প্রবেশের পর হতেই ধর্ষিত হয়ে আসছে। যৌন কর্মীদের এই ধরনের যৌন সহিংসতা ভোগান্তির ঘটনা পতিতাবৃত্তিতে কর্মরত পুরুষ ও মহিলাদের ওপর খুব আঘাতমূলক প্রভাব ফেলে। পতিতাবৃত্তি কাজের সময় উচ্চমাত্রায় ধর্ষণ ও অন্য ধরনের যৌন সহিংসতায় সংযুক্ত হয়েছে উচ্চমাত্রায় পিটিএসডি।

সাহায্যকারী কারণ

জরিপে দেখা গেছে যে, কম বয়সী দেহ ব্যবসায়ীরা মক্কেলের দ্বারা সহিংসতার প্রবণতা  বয়স্ক সহকর্মীদের তুলনায় অধিক। অধিকন্তু, সিসজেন্ডার ও ট্রান্সজেন্ডার নারী যৌন কর্মীদেরও খরিদ্দার দ্বারা প্রত্যাপিত সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয়।

সামাজিক বৈষম্য: রূপান্তরিত যৌন কর্মী

রূপান্তরিত যৌন কর্মীদের উপর একরজরিপের বর্ণনানুসারে - রূপান্তরিত নারী, বিশেষভাবে এই বর্নের যৌনকর্মীদের সিসজেন্ডার নারীদের তুলনায় উচ্চমাত্রায় নির্যাতন সহ্য করতে হয়। এর কারণ বৈষম্য ও আন্তঃক্ষেত্রীয় ব্যাপার। বিভিন্ন ধরনের সাহায্যকারী কারণ আছে, যা মধ্যে অন্তর্ভুক্ত - ট্রান্সজেন্ডার নারীদের নিয়ে সামাজিক কলঙ্ক, যা বেঁচে থাকার জন্য যৌন কাজে ঠেলে দেয়। আইনগত বৈষ্যমের কারণে উচ্চমাত্রায় বেকারত্ব এবং বয়ঃসন্ধিকাল হতে যৌবন পর্যন্ত  সমাজে রূপান্তরিত বিদ্বেষী মনোভাবই তাদের যৌন কাজে তাড়িত করে। এক জরিপ দেখিয়েছে যে রূপান্তরিত নারীরা সহিংসতা ও এইচআইভি-র ঝুকি সত্ত্বেও যৌন কাজে লিপ্ত থাকে শুধুমাত্র সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবলম্বন পেতে, যা সমাজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ। এরূপ সাধারণত দেখা যায় কৃষ্ণাঙ্গ রূপান্তরিত নারীদের ক্ষেত্রে যাদের যৌন কাজের জন্য সামান্য অর্থ দেয়া হয় এবং তারপর অধিক খরিদ্দারের কাছে পাঠানো হয়। যা তাদের বেশি নির্যাতনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

রূপান্তরিত যৌন কর্মীরা তাঁদের নিজস্ব সম্প্রদায় লাভ করতে সক্ষম, সেটি হলেও তাঁরা বৈষম্যের সম্মুখীন হয় যা প্রায়শই রাস্তাঘাটে সহিংসতায় প্রকাশ পায়। খরিদ্দার কর্তৃক যৌনকর্মীদের ধর্ষণ ও ডাকাতির ঝুকিই সর্বোচ্চ পরিমাণে থাকে, যেখানে রূপান্তরিত যৌনকর্মীরা অতিরিক্ত রূপান্তরিত বিদ্বেষী নির্যাতন ও হয়রানির বোঝা বয়ে থাকে। একটি জরিপ সান ফ্রান্সিসকোর ৪৮ জন রূপান্তরিত নারীর মতামত অন্তর্ভুক্ত করে, যারা যৌন কাজের সময়কার নির্যাতনের অভিজ্ঞতা জানায়। তাঁদের মধ্যে একজন  জানায়: "পুলিশ তোমাকে ফুটপাতে দেখলে তাঁরা তোমার মাথার চুল ধরে টানবে। যদি তোমার পরচুলা থাকে, তবে তোমাকে উচ্চস্বরে 'বালক' বলে ডাকবে। যা স্পিকার ফোনে সবাই শুনতে পারে।"[পি. ৭৭৪].

আরেকজন জানায় এক অফিসার তাকে মৌখিক সেক্স করার জন্য জোর করে এবং হাজতে আটকের ভয় দেখায়। এ ধরনের রূপান্তরিত বিদ্বেষী সামাজিক ঘৃণ্য সহিংসতা মক্কেলরাও চিরস্থায়ী করে রাখে। আরকজন মতামতে অংশগ্রহণকারী তার সহকর্মীর মৃত্যুর কথা জানায়। যে সহকর্মীকে খরিদ্দার হত্যা করেছিলো এবং তার শরীর কাটা হয়েছিলো, হত্যার কারণ খরিদ্দার তাকে সিসজেন্ডার নারী মনে করতো।

নৈতিক বনাম অনৈতিক যৌন কাজ

পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা আইন-কানুন পতিতাবৃত্তিতে জড়িত নারী পুরুষের জন্য "কাজের" সময়কার সহিংসতা জানানো আরো কষ্টকর হতে পারে। প্রায়ই মক্কেলের সাথে লেনদেন ও ব্যবস্থাপনার সাক্ষাত খুব গোপন স্থানে হয় যেখানে পতিতাবৃত্তি অনৈতিক। নিউজিল্যান্ডের বৈধ যৌন কাজ দেখিয়েছে যে যৌন কর্মীদের যখন একা কাজ করতে জোর না করা হয় বা বিচ্ছিন্ন স্থানে কাজ করা হয় তখন সহিংসতা কমে যায়। নিউজিল্যান্ডে যৌন কাজ বরাবরই বৈধ ছিলো কিন্তু অপরাধীকরণ আইন বিনষ্ট করে যা বিপদ বাড়ায়।

শিকাগোয় "দ্যা প্যারিস" বেশ্যালয় সি. ১৯১১

গৃহমধ্যস্থ বনাম বহিরঙ্গনে কাজের পরিবেশ

রাস্তার পতিতা ও অন্দরের যৌনকর্মী যারা কল গার্ল , অথবা পতিতালয়ে বা মেসেজ পার্লারে কাজ করে, তাঁদের মধ্যে শিকার হওয়ার হারে যথেষ্ট ভিন্নতা রয়েছে।লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেশ্যালয়ে আইনগতভাবে কর্মরত নারী অপেক্ষাকৃত কম নির্যাতিত হয় যেমনটা শহরে অন্দরের কর্মীরা করে থাকে যেখানে যৌন কাজ বৈধ। ১৯৯৯ সালে ২৪০ জন পতিতার মাঝে জরিপে দেখা যায় অর্ধেক যৌন কর্মীই বাইরে কাজের সময় প্রথম ছয মাসে অনেক ধরনের নির্যাতনের সম্মুখীন হয়, যা অন্দরের কর্মীদের এক-চতুর্থাংশ।

ভেতরে বা বাইরে উভয়ক্ষেত্রে যৌনকর্মীরা মক্কেল কর্তুক নির্যাতনের শিকার হয়। মানগুলো যৌনকর্মীর সংখ্যা বুঝিয়েছে।

সহিংসতার অভিজ্ঞতা বাইরে (n=১১৫) বাইরে (n=১২৫)
মক্কেলের দ্বারা সহিংসতা ৯৩ (৮১) ৬০ (৪৮)
বিগত ছয় মাসে হয়রানির অভিজ্ঞতা ৫৮ (৫০) ৩২ (২৬)
অভিজ্ঞতালব্ধ নির্যাতনের ধরণ
চড়, লাথি, ঘুষি ৫৪ (৪৭) ১৭ (১৪)
শারীরিক নির্যাতনের ভীতি ৪৫ (৩৯) ১৮ (১৪)
ডাকাতি ৪২ (৩৭) ১২ (১০)
ডাকাতির চেষ্টা ৩০ (২৬) ৬ (৫)
মারপিট ৩১ (২৭) ১ (১)
অস্ত্র দ্বারা ভয় প্রদর্শন ২৮ (২৪) ৮ (৬)
ইচ্ছার বিরুদ্ধে নেয়া ২৯ (২৫) ১৯ (১৫)
ধর্ষণের চেষ্টা (যোনি বা পচ্ছাৎ) ৩২ (২৮) ২১ (১৭)
শ্বাসরোধ ২৩ (২০) ৭ (৬)
অপহরণ ২৩ (২০) ৩ (২)
জোরপূর্বক মক্কেলকে মৌখিক সংগম ২০ (১৭) ৪ (৩)
ধর্ষণ (যোনি) ২৫ (২৩) ২ (২)
অপহরণের চেষ্টা ১৪ (১২) ১ (১)
কাটা বা ছুরিকাঘাত ৮ (৭) ----
ধর্ষণ (পচ্ছাৎ) ৬ (৫) ৮ (৬)
পুলিশের কাছে যৌন হয়রানির কারণে কমপক্ষে একটি অভিযোগ ৪১/৯৩ (৪৫) ১১/৬০ (১৮)

অপরাধী

হিংস্র খরিদ্দার, দালাল এবং পুলিশ অফিসার

অপরাধীদের দলে থাকে উগ্র মক্কেল ও দালালরা । মক্কেলরা সবসময় পতিতাদের ওপর কর্তৃত্ব পরিচালনা করার চেষ্টা করে থাকে। এই প্রচেষ্টা বিভিন্ন ভাবে করে থাকে, যৌন নির্যাতন, আবেগিক নিপীড়ন বা শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে। দালালরা যৌন কর্মীদের নির্যাতনের অন্যতম অপরাধী। এক জরিপে, ৫৩% যৌন কর্মী জানিয়েছে, দালালের হাতে নির্যাতন মুখ্য সমস্যা।  একই জরিপে, ৩৩% জানিয়েছে দালালদের থেকে প্রধান উপকার হলো সম্ভাব্য লাঞ্ছনা বা হামলা হতে সুরক্ষা।

বিশ্বের অধিকাংশ স্থানে যৌন কাজ অনৈতিক, একারণে যৌন কর্মীরা মক্কেলদের বিচ্ছিন্ন ও সতর্ক স্থানে কাজ করে থাকে, যেখানে পুলিশ দ্বারা ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। এরকম বিচ্ছিন্ন স্থানের জন্য মক্কেলের দ্বারা আক্রমাণে যৌনকর্মীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সান ফ্রান্সিসকোর এক হাজার ত্রিশ জন রাস্তার যৌন কর্মীদের ওপর পরিচালিত জরিপে, জরিপ অনুসারে, ৮২% কর্মী শারীরিক ভাবে হামলার শিকার হয়, ৮৩% কর্মী অস্ত্র দ্বারা ভয় প্রদর্শিত হয় এবং ৬৮% যৌনকর্মী ধর্ষণের শিকার হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশে যৌন কাজ অনৈতিক এবং একারণে যৌন কর্মীরা পুলিশি আটকের ভয়ে তাঁদের করা হয়রানির অভিযোগ করতে পারেনা। কিছু নির্দিষ্ট রাষ্ট্রে পতিতাবৃত্তি বিরোধী অল্প কিছু বাক্যের নির্দেশ রয়েছে এং বারবার আটকের পর অভিযোগের সাজা বৃদ্ধি হতে পারে। যা আশ্রয়ণ ও কর্মসংস্থান এবং কল্যাণমূলক উপকারের অযোগ্যতা কঠিন করে তোলে। এছাড়াও, যৌন কর্মীরা যৌন অপরাধী হিসেবে নিবন্ধিত হয় অথবা তাঁরা নিরাপত্তাহীন পরিযায়ী বা অনিশ্চিত নাগরিকত্ব পদমর্যাদা হলে বিতাড়নের সম্মুখীন হয়।

যৌন কাজ ঘিরে কলঙ্ক বিদ্যমান থাকার কারণে যৌন কর্মীদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় পুলিশ তেমন তদন্ত করে না। দক্ষিণ আফ্রিকার এক যৌন কর্মী অভিযোগ করে,  "যৌন কর্মীদের সাথে করা অপরাধের প্রমাণ জড়ো করতে, তাঁদেরকে প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে।" "পুলিশের কাছে নির্যাতনের অভিযোগ করতে গেলে, আমাদেরকে নিয়ে মজা করা হয়। আমাদেরকে বলা হয়, আমরা এই হামলা পাওয়ার যৌগ্য।" "তারা আপনাকে তাড়িয়ে দেবে," আরেক যৌন কর্মী জানায়।

পতিতাদের সাথে নির্যাতনে পুলিশ অফিসাররা নিজেরাই সাধারণ অপরাধী। কম্বোডিয়ার নম পেন - এ যৌন কর্মীদের ওপর এক জরিপে পাওয়া যায় যে নারীদের অর্ধেককেই পুলিশ মারধর করেছে এবং এক-তৃতীয়াংশ নারী পুলিশ দ্বারা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। " দক্ষিণ আফ্রিকায়,  যেখানে ১৯৫৭ সাল হতে প্রাক্তন বর্ণবাদী শাসনের অপরাধী আইন অনুসারে যৌন কাজ অনৈতিক, সেখানে পুলিশ অফিসার প্রায়ই যৌন কর্মীদের অতিরিক্ত টাকা জরিমানা করে এবং সেই টাকা আত্মসাৎ করে। যা সরকারী এজেন্ট কর্তৃক যৌন কর্মীদের ওপর অর্থনৈতিক চাদাবাজির মত।

পেশাদার খুনি

জ্যাক দ্যা রিপারের শিকার (The Illustrated Police News, 1888)

যৌন কর্মীরাও (সাধারণত যারা রাস্তার পতিতা ) অনেক সময় পেশাদার খুনীর হামলার লক্ষ্য হয়ে থাকে, যৌন কর্মীরা সহজ লক্ষ্য হয়ে থাকে এবং হাতছাড়া কমই হয়। অথবা যৌন কর্মীদের ওপর  ধর্মীয় এবং সামাজিক কলঙ্কের রীতি এনে তাঁদের খুন করা হয়।

১৯৮৮ সালে জ্যাক দ্যা রিপার নামে পরিচিত এক অচিহ্নিত পেশাদার খুনি লন্ডনে পাঁচ জন যৌন কর্মীকে খুন করে। ঐ সময় ওখানে পতিতাদের চলমান খুনের কারণে, জ্যাক দ্যা রিপারই সব খুন করেছিলো এটা নিশ্চিত হওয়া কঠিন। ঐ সময় পোস্টমর্টেম অঙ্গচ্ছেদ অনুসারে ওই নির্দিষ্ট হত্যাকান্ড অন্য যৌন কর্মীদের হত্যাকান্ড থেকে পৃথক ছিলো, এবং এর কারণ ছিলো অন্য যৌনকর্মীদের হত্যাকান্ডে রিপারের মত বৈশিষ্ট্য ছিলো না অথবা তা নিয়ে বিতর্ক ছিলো।  

১৯৭৫ হতে ১৯৮০ তে উত্তর ইংল্যান্ডে পিটার সাটকিলিফ (ওরফে দ্যা ইয়োর্কশির রিপার) ১৩ নারীকে খুনে করেছিলো, যাদের অনেক যৌন কর্মী ছিলো।

গ্যারী রিজওয়ে (ওরফে দ্যা গ্রীণ  রিভার কিলার) ১৯৮২ হতে ১৯৯৮ সালে ৪৮ যৌন কর্মীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। যা তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ানক খুনি হিসেবে পরিচিতি করে।

১৯৮০ হতে ১৯৮৩ সালের মধ্যে আলাস্কারর এঙ্কোরেজের নিকটে রবার্ট হানসেন ১৫ হতে ২১ জন যৌন কর্মীকে হত্যা করে।

জোয়েল রিফকিন ১৯৮৯ হতে ১৯৯৩ এর মধ্যে নিউইয়র্ক এলাকায় ১৭ জন যৌন কর্মীকে হত্যার দায় স্বীকার করে।

রবার্ট পিকটন , একজন কানাডিয়ান, যিনি ভ্যানকাউভার এর কাছে থাকতেন, তার পারিবারিক ফার্মে প্রচুর যৌন কর্মী থেকে যাওয়ার বিষয়ে শিরোনাম লেখেন। তিনি এখন ছয় নারীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, যে নারীরা ভ্যানকাউভারের ডাউনটাউন ইস্টসাইড হতে উধাও হয়ে গিয়েছিলো।  এবং বিশের অধিক (যদিও তাদের মৃত্যু সম্পর্কিত কোনো ফাইল নথিভুক্ত করা হয়নি) খুনের জন্য পুলিশের সন্দেহের তালিকায়ও তিনি। ২০০৭ এর ডিসেম্বরে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয় এবং ২৫ বছরের পূর্বে কোনরকম শর্তেই মুক্ত হতে পারবে না।

২০০৬ এর ডিসেম্বরে, ইংল্যান্ডের ইপসউইচে  স্টিভ রাইট পাঁচ যৌন কর্মীকে হত্যা করে।

১৯৯৬ এটা বিশ্বাস করা শুরু হয়, দ্যা লং আইল্যান্ড পেশাদার খুনিরা যৌন পেশার ১০ হতে ১৬ জন নারীকে খুন করে। যদিও মনে করা হয় হয় ২০১০ হতে ২০১৩ এর মধ্যে হত্যাকান্ড থেমে গেছে, কিন্তু অপরাধীরা স্বাধীনভাবে রয়ে গেছে।

সহিংসতা মোকাবেলায় প্রচেষ্টা

কীভাবে নির্দিষ্ট নীতি পতিতাদের নিজেদের উপকারে আসে, এর তুলনায় অধিক প্রচেষ্টা থাকে সাধারণ জনগনের মধ্যে পতিতাদের মাধ্যমে এইডস/এইচআইভি+ রোধের ওপর জোর দিয়ে। এই প্রচেষ্টা যৌনকর্মীরা যেসব সহিংসতার সম্মুখীন হয় তার অধিকাংশ উপেক্ষা করে। সম্প্রতি বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে যৌনকর্মীদের সাথে সহিংসতা নির্মূল করা প্রচেষ্টা করা হয়েছে। ইইনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড (ইউএনপিএফ), অন্য কতিপয় সংস্থার সাথে যৌনকর্মী সম্প্রদায়ে ক্ষমতায়নের সুপারিশ করে, যৌন কর্মীদের সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়তে। ইউএনপিএফ ও মতামত দিয়েছে যৌনকাজকে সাধারণ কাজের মত দেখার উপলব্ধি করতে। যৌনকর্মীদের সাথে সহিংসতা ঠেকাতে একটি ব্যাপারে প্রচেষ্টা করা হচ্ছে কারণ যৌনকর্মীদের সাথে হয়রানির প্রতিবেদন খুব কমই মিডিয়াতে আসে। ভারতের নারী যৌন কর্মীদের ওপর এক জরিপে দেখা গেছে ৫৪% নারী যৌন কর্মী তাদের ওপর করা নির্যাতনের অভিযোগ করে না। এবং মাত্র ৩৬% কর্মী তাঁদের অভিজ্ঞতা এনজিও অথবা পরিবারের সাথে শেয়ার করে।

যৌন কর্মী দ্বারা

যৌন কাজে সংশ্লিষ্ট সহিংসতা বাড়ার কারণে, অনেক পতিতা তাঁদের নির্যাতনের হার কমাতে বা নির্যাতনের শিকার না হতে নিজস্ব নীতি ব্যবহার করছে। মউরিন এ. নর্টন-হক কর্তৃক এক জরিপে পাওয়া গেছে যৌন কর্মীদের ৪০% গলিতে কাজ না করার রীতি রয়েছে, ৫৪% মাদকবহুল স্থানে কাজ করে না এবং ৬৮% কর্মী পরিত্যক্ত ভবনে কাজ করেনা। প্রায়শই সহিংসতার সমাপ্তি ঘটাতে যৌন কর্মীদের নিজেদের ওপর বা একে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। এর কারণ, নারীদের যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে যত প্রচারণা সভা আয়োজিত হয়, তাতে যৌন কর্মীদের উপস্থিতিতে গুরুত্ব দেয়া হয় না।

সরকারী নীতি

যৌন কর্মীদের অধিকার ২০১১ তে লন্ডনে পতিতাযাত্রা প্রদর্শন

ইউএন উইমেন যৌনকর্মীদের সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে রক্ষা করার জন্য যৌন কাজের নিরাপত্তাকে সমর্থন করে এবং যৌন কাজে সহিংসতা, জবরদস্তি এবং শোষণের রূপগুলির অপরাধীকরণকে উৎসাহিত করে। তারপরও, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক রাজ্যে বাধ্যতামূলক কিছু নীতি রয়েছে। যার মাধ্যমে পতিতা সংশ্লিষ্ট দোষীদের কারাগারে প্রেরন করা হয়। এর মাধ্যমে যৌন কর্মীরা তাঁদের সাথে হয়রানি করা অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারবে এবং হয়রানি অনেকাংশে কমবে, কারণ জেলভোগের একটা ঝুকি থাকবে।

নেদারল্যান্ডস একটি নীতি তৈরি করেছে, যা যৌন কর্মীদের জন্য সম্ভাব্য আদর্শ একটি পরিবেশের রূপ দেখায়। যা খরিদ্দারের সাথে সাক্ষাৎ, ব্যবস্থাপনা ও যৌন কাজের জন্য ভালো। এটি যৌন কাজে সুস্থ ও সুরক্ষিত পরিবেশ সরবরাহ করতে পারে গোপনে না থেকেই, যেখানে গোপনে থাকা পতিতাদের সাথে সহিংসতার একটি বড় কারণ। কিছু সংগঠন যৌন কর্মীদের নিয়ে সমর্থন দল গঠন করার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে যৌনকর্মীরা সমর্থন দেয়া যায় যেসব ব্যাপারে তাদের ঘাটতি থাকে।

টীকা

উৎস



Новое сообщение