Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

যৌন বিকৃতি

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
যৌন বিকৃতি
বিশেষত্ব মনোরোগ বিজ্ঞান
কারণ যৌন আকর্ষণ

যৌন বিকৃতি বা মনোরোগ বিজ্ঞানের ভাষায় প্যারাফিলিয়া (ইংরেজি: Paraphilia; যা গ্রিক παρά (প্যারা) "পাশে" এবং φιλία (-ফিলিয়া) "বন্ধুত্ব, প্রেম" থেকে এসেছে) বলতে এমনসব যৌনকর্মকাণ্ডের প্রতি আকর্ষণ এবং/অথবা সেই সকল কর্মকাণ্ডের সংঘটন বোঝায় যেগুলো 'স্বাভাবিক' নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যৌন বিকৃতিকে মানসিক রোগ বা বৈকল্য হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়ে থাকে। কোন কোন যৌনক্রিয়া স্বাভাবিক (বা অস্বাভাবিক) তা নির্ধারিত হয় তিনটি পর্যায়ে। এগুলো হলো (ক) সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি (খ) ধর্ম এবং (গ) স্থানীয় আইন। যেহেতু ধর্ম ব্যতীত বাকী দুটি নিয়ামক চলমান বা পরিবর্তশীল, তাই সার্বিকভাবে যৌন বিকৃতির সঙ্গার্থও পরম বা চূড়ান্ত নয়। উদাহরণস্বরূপ, সমকাম যৌন বিকৃতি হিসেবে সকল দেশের আইনে এক সময় অবৈধ ছিল; কিন্তু ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেকগুলি দেশে সমকাম একটি আইনসিদ্ধ যৌনক্রিয়া হিসেবে স্বীকৃত হয়। যদিও পায়ুকামের ফলে পায়ুপথের ব্যথা এবং ক্ষতির কারণে পায়ুকামকে 'ক্ষতিকর যৌনতা' বা 'অনিরাপদ যৌনতা' হিসেবে দেখা হয় এখনো।

সংজ্ঞা

যৌন বিকৃতি (যেটি একসময় কামুকতা বা লুইচ্চামি হিসেবেও পরিচিত ছিলো এবং এটাকে অন্যভাবে স্বাভাবিক যৌনতা থেকে বিচ্যুতি ঘটাও বলা হতো) হচ্ছে এমন একপ্রকার যৌনতা যা একজন মানুষের কোনো একটি জিনিস দেখে, কোনো এক বিশেষ পরিস্থিতিতে পড়লে, মলমূত্র দেখে বা কোনো গাছ বা পশুপাখি বা মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী দেখে যৌন উত্তেজনা ওঠা। সাধারণত এই ধরনের যৌন উত্তেজনা বা যৌনতাকে 'সেক্সুয়াল ফেটিশিজম' বলে। যৌনবিদরা 'আনইউযুয়াল সেক্সুয়াল ইন্টারেস্টস' এবং এই যৌন বিকৃতিকে একই ধরনের বলে অভিহিত করেন, যেমনঃ কোনো ব্যক্তি একটি জঙ্গল দিয়ে হাঁটছেন, এখন তিনি যদি কোনো বৃক্ষকে দেখে যৌন-উত্তেজনা লাভ করেন তাহলে সেটা হবে 'আনইউযুয়াল সেক্সুয়াল ইন্টারেস্ট' বা অসচরাচর যৌন আগ্রহ বা যৌন বিকৃতি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই কারণ যৌন বিকৃতিকে মানসিক বিকৃতির কাতারে ফেলা হবে নাকি এমনি কোনো সাধারণ রোগের কাতারে ফেলা হবে নাকি এটাকে কোনো রোগই ধরা হবেনা কারণ এতে তো একজন মানুষের কোনো ক্ষতি হয়না। যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) 'ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়্যাল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার্স' (ডিএসএম) এবং আন্তর্জাতিকভাবে চিকিৎসাবিদ্যায় ব্যবহৃত 'ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস' (আইসিডি) তে যৌন বিকৃতির কোনো পরম বা চূড়ান্ত বা পরিষ্কার সংজ্ঞা নেই।

প্রকারভেদ

যৌন বিকৃতি কত প্রকার এটা সঠিকভাবে বলা মুশকিল, আবার অন্যদিকে ভারতের এক গবেষণায় ৫৪৯ রকমের যৌন বিকৃতির তালিকা পাওয়া গেছে। ২০১৩ সালের ১৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের এপিএ 'ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়্যাল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার্স-৫' (ডিএসএম-৫) নামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং ওখানে মাত্র ৮ প্রকারের যৌন উত্তেজনাকে যৌন বিকৃতির তালিকাভুক্ত করা হয়েছিলো। যৌন বিকৃতির অনেক শ্রেণীবিভাগ এবং উপশ্রেণীবিভাগ আছে যদিও সব যৌন-গবেষক সবগুলোকে যৌন বিকৃতি বলেননি।

শব্দের উৎপত্তি

যৌন বিকৃতি শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে সঠিকভাবে কিছু বলা যায়না, কারণ যৌনতা নিয়ে মানব সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি যুগে যুগে পাল্টেছে, তাছাড়া একটি যৌনতাকে সব মানুষের অস্বাভাবিক নাও লাগতে পারে, যেমনঃ কোনো মানুষ যদি তার সঙ্গীর মলদ্বারের গন্ধ শোঁকেন তাহলে এই প্রবৃত্তিকে অনেকেই যৌন বিকৃতি বলবেন কারণ মলদ্বার দিয়ে মল বের হয় বা পায়খানার গন্ধ প্রায়ই থাকে আবার অনেকে বলবেননা কারণ এতে যৌনানন্দ আছে। নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী যৌনবিজ্ঞানী জন উইলিয়াম মানি (১৯২১-২০০৬) সর্বপ্রথম ইংরেজি শব্দ 'প্যারাফিলিয়া'কে জনপ্রিয় করেন 'অসচরাচর যৌন আগ্রহ'র জন্য একটি আলাদা শব্দ রাখার জন্য। তিনি প্যারাফিলিয়াকে 'সমাজবিরোধী এবং অপ্রয়োজনীয় যৌনতা' বলে আখ্যায়িত করেন। মার্কিন মনঃরোগবিশেষজ্ঞ গ্লেন গ্যাবার্ড (১৯৪৯ সালে জন্ম) মানি এবং আরেক যৌনবিজ্ঞানী উইলহেল্ম স্টিকেলের যৌন বিকৃতির সংজ্ঞাপ্রদানকে ভুল বলেন, তিনি বলেন যৌন বিকৃতিকে আলাদাভাবে বলা যায়না, কোনো যৌনতাই আদতে বিকৃতি নয় যতক্ষণ না ঐ যৌনতা নিজেকে এবং/বা সঙ্গীর কোনো শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি করে।

অস্ট্রীয় যৌনবিদ ফ্রেডরিখ সলোমন ক্রস ১৯০৩ সালে জার্মান ভাষায় প্যারাফিল নামের একটি শব্দের প্রচলন ঘটান যৌন বিকৃতি বোঝানোর জন্য, ১৯১৩ সালে শব্দটি ইংরেজি ভাষায় প্যারাফিলিয়া নামে ঢুকে যায়, মার্কিন যৌনবিদ উইলিয়াম জে. রবিনসন (১৮৬৭-১৯৩৬) ফ্রেডরিখ ক্রসের উদাহরণ টেনে শব্দটি চালু করেন। মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের অনুসারী অস্ট্রীয় মনোবিজ্ঞানী উইলহেল্ম স্টিকেল ১৯২০ এর দশকে জার্মান শব্দটি খুব বহুল ভাবে ব্যবহার করেছিলেন। শব্দটি আসে গ্রীক প্যারা যার অর্থ পাশে এবং ফিলিয়া থেকে যার অর্থ বন্ধুত্ব, প্রেম।

উনবিংশ শতকের শেষের দিকে মনোবিজ্ঞানী এবং মনঃরোগবিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন প্রকারের যৌন বিকৃতির সংজ্ঞা এবং শ্রেণীবিভাগ বানানো শুরু করেন কারণ তারা রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় 'পায়ুকাম আইন' ও 'কামুকতা আইন' থেকে ব্যতিক্রম কিছু দেখাতে চাচ্ছিলেন। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) দ্বারা তৈরি ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়্যাল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার্স - ৩ (১৯৮০) তে যৌন বিকৃতির ইংরেজি প্রতিশব্দ প্যারাফিলিয়ার পরিবর্তে 'সেক্সুয়াল ডিভায়েশন' বা লুইচ্চামি শব্দটি ব্যবহার করা হয়, ওটির পরপর দুটি সংস্করণে। ১৯৮১ সালে 'আমেরিকান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রি' নামক ম্যাগাজিনে যৌন বিকৃতিকে অস্বাভাবিক, অসচরাচর এবং অপ্রয়োজনীয় যৌনতা বলে আখ্যায়িত করে বলা হয়ঃ

  • মানুষ নয় এমন কোনো প্রাণীর বা কোনো উদ্ভিদের প্রতি যৌন-আকর্ষণ আসা
  • কোনো যৌনকর্মের মাধ্যমে নিজেকে বা নিজের সঙ্গীকে শারীরিক বা মানসিক কষ্ট দেওয়া
  • অপ্রাপ্ত বয়স্ক মানুষদের প্রতি যৌন উত্তেজনা আসা

সমকামিতা

একসময় সমকামিতাকে লুইচ্চামি বা কামুকতা হিসেবে ধরা হত।সিগমুন্ড ফ্রয়েড এবং তার সহযোগীরা সমকামিতা এবং যৌন বিকৃতিকে একই কাতারে ফেলতেন, তারা ভাবতেন সমকামিতা হচ্ছে মানুষের মনঃযৌন সমস্যা যেটার সাথে 'ইডিপাস কমপ্লেক্স' এর সম্পর্ক আছে। অনেক আগে থেকেই সভ্য সমাজে সমকামিতা লুইচ্চামি বা কামুকতার কাতারে পড়ত এবং স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্যান্য যৌনতাকেও একই শ্রেণীতে ফেলা হত, তবে বিংশ শতাব্দী থেকে ঐরূপ ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন আসতে শুরু করেছিলো কিন্তু সিগমুন্ড প্রথাবাদী মতবাদকেই তার গবেষণা লব্ধ ফল হিসেবে প্রকাশ করেছিলেন।

বিশ শতকের মাঝখান দিকে, মনঃরোগবিশেষজ্ঞরা লুইচ্চামিকে শ্রেণীবিভক্ত করেন সমকামিতাকে শীর্ষে রেখে, ঐ শ্রেণীবিভাগে ১৯৭৪ সালে আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) সমকামিতাকে যৌন বিকৃতি বা মনোবিকৃতি বা লুইচ্চামির তালিকা থেকে বাদ দেয়, সমকামিতাকে সকল প্রকার বিকৃতির বিভাগ থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালে জন্মগ্রহণকারী মার্কিন মনঃরোগবিশেষজ্ঞ মার্টিন কাফকা বলেনঃ 'সমকামিতা, যেটা একসময় যৌনতার একটি অস্বাভাবিক রূপ এবং লুইচ্চামি হিসেবে বিবেচিত হত, এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক যৌনতা বলে পরিগণিত হয়।'

সিগমুন্ড ফ্রয়েড যদিও পরে সমকামিতার বিরোধিতা করা বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি সকল মানুষের মধ্যেই সমকাম প্রবণতা একটু হলেও থাকে বলে উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, 'সমকামিতা কোনো লজ্জার ব্যাপার নয়'।

১৯৩৫ সালে সিগমুন্ড একজন মহিলার চিঠির জবাব দিয়েছিলেন এইভাবেঃ

আমি আপনার চিঠি থেকে জড়ো যে আপনার ছেলে সমকামী হয় আমি আসলেই এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি, যে আপনি তার সম্পর্কে আপনার তথ্য এই শব্দটি উল্লেখ না তার সম্পর্কে আমি কি আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি যে আপনি কেন এটিকে এড়িয়ে যান? সমকামীতা অবশ্যই কোন উপকারে আসে না, কিন্তু এটি লজ্জা করা কোন ব্যাপার না, কোন ভাইস নেই, অবনতি নেই, এটি একটি অসুস্থতা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ হতে পারে না; আমরা এটা যৌন উন্নয়ন একটি নির্দিষ্ট গ্রেফতার দ্বারা উৎপাদিত যৌন ফাংশন একটি বৈচিত্র্য বিবেচনা। প্রাচীন ও আধুনিক সময়ে অনেক সম্মানিত ব্যক্তি সমকামী ছিলেন, তাদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক সর্বাধিক পুরুষ (প্লাতো, মাইকেলএঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্য ভ্যানি, ইত্যাদি) সমকামী এবং অত্যাচারের মতো সমকামিতাকে অত্যাচারের একটি বড় অবিচার। যদি আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন না, তাহলে হ্যালোক অ্যালিসের বইগুলি পড়ুন।

যদি আমি সাহায্য করতে পারি তবে আমাকে বলার অর্থ হচ্ছে, আমি অনুমান করি, যদি আমি সমকামীতার অবসান করতে পারি এবং স্বাভাবিক বৈষম্যমূলক আচরণটি তার স্থান নিতে পারি। উত্তর, সাধারণভাবে, আমরা এই অর্জন করার অঙ্গীকার করতে পারি না। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্ষেত্রে আমরা হিটোলোজিকাল প্রবণতাগুলির চিত্তাকর্ষক জীবাণু উন্নয়ন করতে সফল হয়েছি, যা প্রত্যেক সমকামী সমকামীদের মধ্যে উপস্থিত; অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি আর সম্ভব নয়। এটি গুণমানের প্রশ্ন এবং ব্যক্তির বয়স। চিকিৎসার ফলাফল ভবিষ্যদ্বাণী করা যাবে না।

আপনার ছেলের জন্য কোন বিশ্লেষণটি ভিন্ন রেখাতে চলতে পারে। যদি তিনি অসন্তুষ্ট হন, স্নায়বিক, তার সামাজিক জীবনের প্রতিবন্ধকতা দ্বারা সংঘটিত দ্বন্দ্ব, বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাকে সমবেদনা, মনের শান্তি, পূর্ণ দক্ষতা, তিনি সমকামী হন বা পরিবর্তিত হন তবে তা পরিবর্তন করতে পারেন। আপনি যদি নিজের মন তৈরি করেন তবে তাকে আমার সাথে বিশ্লেষণ করতে হবে- আমি আশা করি না যে আপনি চান- তাকে ভিয়েনায় যেতে হবে। আমার এখানে থাকার ইচ্ছা নেই। যাইহোক, আমাকে আপনার উত্তর দিতে অবহেলা করবেন না

— সিগমুন্ড ফ্রয়েড

২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী কানাডীয় মনোবিজ্ঞানী এবং যৌনবিদ জেমস ক্যান্টর সমকাম এবং লুইচ্চামির সম্পর্ক নিরূপণ করতে গিয়ে মন্তব্য করেছিলেন এই বলে যে, "সমকাম এবং লুইচ্চামির মধ্যে যদি তুলনা করা হয় তাহলে আমি বলব দুটোই যার মধ্যে থাকে আলাদা আলাদাভাবে বা শুধু একটা, মানুষের মধ্যে সারাজীবন থাকতে পারে, কারণ বহু মানুষ যেমন সমকাম প্রবণতা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে ঠিক তেমনি লুইচ্চামি বা কামুকতা প্রবণতা নিয়েও জন্মে, অর্থাৎ দুটি যৌন প্রবৃত্তিই জন্মগত হতে পারে। গবেষণায় সমকাম এবং লুইচ্চামিকে আলাদাভাবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়, হ্যাঁ, দুটি অবশ্যই আলাদা অন্তঃত আমার মতে।"

বহিঃসংযোগ



Новое сообщение