Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

রিকেটস্

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
রিকেটস্
XrayRicketsLegssmall.jpg
দুবছর বয়সী রিকেটস্ রোগীর মার্কাসহ ঊরুদ্বয়ের হাড় এবং ক্ষয়ে যাওয়া হাড় ঘনত্বএর এক্স-রে
উচ্চারণ
বিশেষত্ব শিশুরোগ-চিকিৎসা
লক্ষণ বাঁকা পা, শরীরের বৃদ্ধি লোপ, হাড় ব্যথা, বড়ো কপাল, ঘুমের ব্যাঘাত
জটিলতা হাড় ভাঙা, পেশির খিঁচুনি, শিরদাঁড়া অস্বাভাবিক বাঁকা, বৌদ্ধিক অসামর্থ্য
রোগের সূত্রপাত শৈশব
কারণ খাবারে যথেষ্ট ভিটামিন ডি অথবা ক্যালসিয়াম না-থাকা, কালো চামড়া, সামান্য সূর্যালোকপ্রাপ্তি, কোনো বিকল্প ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার ছাড়া শুধুমাত্র স্তনদুগ্ধ পান, সেলিয়াক রোগ, বিশেষ জেনেটিক অবস্থাসমূহ
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয় ফ্যাঙ্কোনি সিনড্রোম, স্কার্ভি, লোয়ে সিনড্রোম, ওস্টেয়োমলেসিয়া
প্রতিরোধ শুধুমাত্র স্তন্যপায়ী শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডিয়ের বিকল্প জোগান
চিকিৎসা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম
সংঘটনের হার সাধারণভাবে দেখা যায় (মধ্য প্রাচ্য, আফ্রিকা, এশিয়া)

রিকেটস্ (বাংলা ভাষায় পেঁচোয় পাওয়া রোগ ) হল একটা শারীরিক অবস্থা যার ফলে শিশুদের হাড়গুলো নরম ও দুর্বল হয়। উপসর্গগুলো দেখা যায়: পা বাঁকা, শরীরের বৃদ্ধি থেমে যায়, হাড়ের যন্ত্রণা, কপাল বড়ো, এবং ঘুমের ব্যাঘাত। আরো জটিলতাসহ হাড় ভাঙা, পেশি জড়িয়ে যাওয়া, একটা অস্বাভাবিক বাঁকা শিরদাঁড়া, অথবা বৌদ্ধিক অসামর্থ্য।
অতি সাধারণ কারণ হল ভিটামিন ডি ঘাটতি এটা ঘটতে পারে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি ছাড়া খাবার, কালো চামড়া, সামান্য সূর্যালোকপ্রাপ্তি, শুধুমাত্র স্তনদুগ্ধ পান, কোনো বিকল্প ভিটিমিন ডি খাবার ছাড়া, সেলিয়াক রোগ, এবং বিশেষ জেনেটিক অবস্থাসমূহ। অন্যান্য কারণগুলো সম্ভবত যথেষ্ট ক্যালসিয়াম অথবা ফসফরাসএর অভাব। মূলগত কারিগরির সঙ্গে বৃদ্ধি প্রক্রিয়ায় ক্যালসিয়াম তৈরি যথেষ্ট না-হওয়া। রোগনির্ণয় সাধারণত নির্ভর করে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা ক্যালসিয়াম ঘাটতি, ফসফরাস ঘাটতি এবং উচ্চ অ্যালকালাইন ফসফেট এর সঙ্গে এক্স-রেজ

শুধুমাত্র স্তন্যপায়ী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ হয় বিকল্প ভিটামিন ডি দিয়ে। চিকিৎসা নির্ভর করে নিম্নলিখিত কারণে: যদি ভিটামিন ডি ঘাটতি থেকে হয়, চিকিৎসা হল সচরাচর ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম দিয়ে। এর ফল সাধারণভাবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাওয়া যায়। হাড়ের বৈকল্যও সময় বিশেষে ভালো হয়ে যায়। ঘটনাচক্রে হাড়ের বিকলাঙ্গতা ঠিক করতে শল্যচিকিৎসা করা হতে পারে। প্রজননগত কাঠামোর রোগে আলাদাভাবে বিশেষ চিকিৎসার দরকার হয়।

রিকেটস্ আপেক্ষিকভাবে সাধারণত দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এবং এশিয়ায়। এটা সাধারণত কিছু সংখ্যালঘু বর্গ ছাড়া আমেরিকা এবং ইউরোপে দেখা যায়না। এটা শৈশবে বৈশিষ্ট্যগতভাবে শুরু হয় ৩ থেকে ১৮ মাস বয়সের মধ্যে। ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে এই রোগ সমহারে দেখা যায়। খ্রিস্টীয় প্রথম শতক থেকে রোগ হিসেবে রিকেটস্এর ধারণা এবং বর্ণনা হয়ছিল, এবং এটা রোমান সাম্রাজ্যতে ছড়িয়ে পড়েছিল। রোগটা সাধারণ্যে আসে বিশ শতকএ। শুরুতে চিকিৎসা ছিল কড লিভার অয়েলএর ব্যবহর।

চিহ্ন ও উপসর্গসমূহ

চওড়া হওয়া কবজি

রিকেটস্এর চিহ্ন ও উপসর্গগুলো যুক্ত হতে পারে বিশেষ করে গ্রিনস্টিক ফ্র্যাকচারএর ক্ষেত্রে হাড়এর কোমলতা, হাড় ভাঙায় সংবেদনশীলতা। শুরুতে শিশুদের নরম, সরু মাথার খুলির হাড়ের ফলে কঙ্কালের বৈকল্য দেখা দিতে পারে - যে অবস্থাটাকে বলে ক্র্যানিওট্যাবস, যেটা রিকেটস্এর প্রথম চিহ্ন; সম্ভবত কপালের হাড় বৃদ্ধি এবং নরম খুলির হাড়গুলো দেখা দিতে এবং দেরিতে বন্ধ হতে পারে।

ছোটো শিশুদের আনত পাগুলো এবং গোড়ালির গাঁট ও কবজি চওড়া হতে পারে; অন্যান্য শিশুদের ঠুকে যাওয়া হাঁটুগুলো এই অবস্থা হতে পারে।কিফোস্কোলিয়োসিসএর মেরুদণ্ডীয় বক্রতা অথবা অকেজো লরডোসিস দেখা দিতে পারে। শ্রোণী হাড়গুলো বিকলাঙ্গ হতে পারে। একটা অবস্থা ঘটতে পারে যার নাম রাকিটিক রোসারি, যেমন নুডলের দ্বারা কস্টোকন্ড্রাল জয়েন্টগুলোর ওপর চওড়া হয়ে যায়। এটা শরীরের একদিকে কানের মাঝখানে পঞ্জরাস্থিতে একটা চাক্ষুষ আঘাত হিসেবে দেখা যায়। কোনো একটা রোসারির সঙ্গে এর সাদৃশ্য থাকায় এই নাম দেওয়া হয়, এই ঠেলে ওঠা বক্ষাস্থির বিকলাঙ্গতা হ্যারিসন্স গ্রুভএর উপস্থিতির কারণ হতে পারে।

হাইপোক্যালসেমিয়া হল রক্তে কম পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকা একটা অবস্থা, যার ফলে হয় ধনুষ্টংকার - অনিয়ন্ত্রিত পেশির আক্ষেপ। এ থেকে দাঁতের সমস্যাও হতে পারে। রিকেটস্ রোগে ক্ষতিগ্রস্ত এক অগ্রবর্তী রোগীর একটা এক্স-রে অথবা রেডিয়োগ্রাফ করা হলে সম্ভাবনাগুলো ভালোভাবে বোঝা যায়: পাগুলো বাঁকা (পায়ের লম্বা হাড়গুলোর বহির্মুখী বক্রতা) এবং বুকে বৈকল্য হয়। মাথার খুলির পরিবর্তনও ঘটে, যার ফলে বৈশিষ্ট্যগত 'চৌকো মাথা'র মতো দেখতে লাগে, যাকে বলে 'ক্যাপুট কোয়াড্রাটাম'। সময়মতো চিকিৎসা না-হলে এই বিকলাঙ্গতাগুলো পূর্ণ বয়সেও থেকে যায়। দীর্ঘকাল এই অবস্থা চলতে থাকলে লম্বা হাড়গুলো স্থায়ী বক্রতা অথবা বিকৃতিযুক্ত এবং কার্ভড ব্যাক হয়।

কারণ

শিশুর জন্মের আগে জানতে পারা হাড়ের রোগ এবং জন্মের পর হাড়ের দুর্বল অবস্থার কারণ হতে পারে মায়ের দিক থেকে ঘাটতি। মায়ের রক্তে ভিটামিন ডি ঘাটতি হল রিকেটস্এর প্রাথমিক কারণ, যেটা শিশুর শরীরে বর্তায়। ভিটামিন ডি হাড়ের ধাতব পরিণতি সহজ করে সেরাম ফসফেট এবং ক্যালসিয়াম স্তর নিশ্চিত করে। সহজাত রিকেটস্ ময়ের অন্যান্য রোগ থেকেও হয়, যেমন, মারাত্মক ওস্টেয়োমালাসিয়া, চিকিৎসা না-করা সেলিয়াক রোগ, ম্যালঅ্যাবসর্পশন, প্রাক-সন্ন্যাসরোগ, এবং সময়ের পূর্বে জন্ম। শিশুদের মধ্যে রিকেটস্ হল বয়স্কদের ভঙ্গুর হাড়ের সঙ্গে হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগের সমান। শিশুজন্মের আগেকার যত্নে অন্তর্ভুক্ত হল ভিটামিনের স্তর যাচাই করা এবং এটা নিশ্চিত হওয়া যে, যেকোনো ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে।
স্তন্যপায়ী শিশুদেরও সম্ভবত রিকেটস্ প্রতিরোধে ভিটামিন ডি সম্পূরক অথবা রোদ্দুরে থাকা বাড়ানো দরকার হয়।
সূর্যালোকিত দেশ, যেমন, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশ, এসব দেশে সূর্যালোক থেকে যথেষ্ট দেশজ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যদিও, এসব দেশে টলায়মান বয়স্ক এবং শিশুদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়, যেটা এই অবস্থায় প্রধানত শস্য থেকে তৈরি খাবারে কম ক্যালসিয়াম গ্রহণের কারণ হয়ে থাকে।

রিকেটস্ বৃদ্ধিতে যে বিষয়গুলো সর্বধিক ঝুঁকিপূর্ণ:

  • স্তন্যপায়ী শিশুরা যাদের মায়েরা সূর্যালোক পাননা
  • স্তন্যপায়ী শিশু যারা সূর্যালোক পায়না
  • স্তন্যপায়ী শিশু যারা অল্প সূর্যালোক পায়
  • বয়ঃসন্ধিপ্রাপ্তরা, বিশেষ করে যখন বয়ঃসন্ধি সম্পর্কিত বৃদ্ধি
  • কোনো শিশু যার পথ্যে যথেষ্ট ভিটামিন ডি অথবা ক্যালসিয়াম নেই


শিশুদের মধ্যে হাইপোফসফেটেসিয়া অথবা হাইপোফসফেটেমিয়াএর মতো নরম হাড়ের রোগগুলো রিকেটস্ থেকে হয়।স্ট্রন্টিনামএর সঙ্গে হাড়ের মধ্যে ক্যালসিয়াম যুক্ত হয়; অত্যধিক পথ্যের স্তরে স্টন্টিনামের একটা রাকিটোজেনিক (রিকেটস্ তৈরি) অ্যাকশন আছে।

সূর্যালোক

সূর্যালোক, বিশেষ করে অতিবেগুনি রশ্মি মানুষের চামড়ার কোষগুলোকে ভিটামিন ডি-তে রূপান্তরণে নিষ্ক্রিয় থেকে সক্রিয় করে। ভিটামিন ডিয়ের অনুপস্থিতিতে পথ্যের ক্যালসিয়াম ঠিকমতো শোষিত হয়না, ফল হয় হাইপোক্যালসেমিয়া, কঙ্কালতন্ত্র ও দাঁতের বিকলাঙ্গতা এবং স্নায়ুপেশিগত উপসর্গগুলো, যেমন হাইপারএক্সাইটেবিলিটি। যে খাবারগুলোয় ভিটামিন ডি আছে, যেমন, মাখন, ডিম, মাছের লিভারের তেল, মার্জারিন, শক্তিশালী করা দুধ এবং জুস, পোর্টাবেলা ও শিটেক মাসরুম, এবং তৈলাক্ত মাছগুলো, যেমন, তুনা, হেরিং ও সালমন। একটা ক্বচিৎ এক্স-যুক্ত প্রভাবএর ধরন থাকে, যাকে বলে ভিটামিন ডি-রোধী রিকেটস্ অথবা এক্স-যুক্ত হাইপোফসফেটেমিয়া।

ব্রিটেনে শিশুদের মধ্যে রিকেটস্ রোগের কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নানা সামাজিক পটভূমিতে শিশুদের শরীরে ভিটামিন ডিয়ের অভাব ঘটত, কারণ শক্তিশালী সূর্যঅবরোধ, সূর্যালোকে অত্যধিক 'ঢাকা দেওয়া', অথবা শিশুকে রোদ্দুরে না-দওয়া। অন্যন্যা কয়েকটা জাতিগত গোষ্ঠীর শিশুদের ক্ষেত্রে এটা জানা যায় যে, যেখানে মায়েরা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কারণে সূর্যালোকে আসা এড়িয়ে চলত, যা থেকে মায়ের ভিটামিন ডিয়ের ঘাটতি দেখা দিত, এবং ভিটামিন ডিয়ের মাত্রা বজায় রাখার জন্যে কালো চামড়ার মানুষের বেশি সূর্যালোকের দরকার।

লন্ডনে ঐতিহাসিকভাবে, বিশেষত শিল্প বিপ্লবের সময় রিকেটস্ একটা সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। অনবরত ঘন কুয়াশা এবং প্রচণ্ড শিল্পগত ধোঁয়াশা শহরকে অবরুদ্ধ করায় সূর্যালোকের পরিমাণ শহরে এতটাই কমে যায় যে, শিশুদের মধ্যে এক থেকে অন্য ধরনের রিকেটস্ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। একে অনেক সময় জার্মান ভাষায় বলা হত 'দ্য ইংলিশ ডিজিজ' (দাই ইংলিশে ক্রানখেইত)।

বিবর্ধনমূলক বিবেচনাসমূহ

স্বাভাবিক ভিটামিন ডি বাছাই প্রকল্প: ভিটামিন ডি৩ ঘাটতির ফলে প্রায়ই রিকেটস্ হয়। মানুষের চামড়ার রং এবং অক্ষাংশকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণের বিভিন্ন মাত্রার নিশ্চিত বাছাইয়ের ফলাফল বলে মনে করা হয়। উত্তর অক্ষাংশগুলোতে হালকা চামড়ার বাছাইয়ের ফলে সেখানে অতিবগুনি রশ্মি ৭-ডিহাইড্রোকোলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ডি তৈরি করে। বিপরীতপক্ষে, নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অক্ষাংশে খুব কালো চামড়ার বাছাইয়ের ফলে বেশির ভাগ অতিবেগুনি রশ্মিকে প্রতিহত করে, ভিটামিন ডিয়ের বিষময় মাত্রা এবং এমনকি চামড়ার ক্যান্সার থেকে বাঁচায়।

এই প্রকল্পে একটা ছোটো কাহিনি প্রায়ই বলা হয় যে, অক্ষাংশের কারণে সুমেরু অধিবাসীদের মধ্যে যাদের চামড়া বেশি কালো, যেমন, ইনুইতদের পথ্য ঐতিহাসিকভাবে ভিটামিন ডিয়ে ভরপুর। যেহেতু এই জনগণ তাদের পথ্য থেকে ভিটামিন পেয়ে যেত, সেই অবস্থায় সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষিত করার কোনো নিশ্চিত বাছাইকরণ শক্তি ছিলনা।

অসমান পরিবেশ: জনগণের আগেকার বিবর্ধনমূলক পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত বর্তমান পরিবেশের মধ্যে অসমতা থেকে চূড়ান্তভাবে ভিটামিন ডি ঘাটতি দেখা দেয়। উচ্চ অক্ষাংশে অগ্রগতিসম্পন্ন স্থানান্তর পদ্ধতির সঙ্গে এই অসমতার ঝুঁকি এবং গ্রাম্য জনগণের সংখ্যা বাড়ে।

যখন কালো চামড়ার জনগণ উচ্চ অক্ষাংশে বাস করে, তখন পরিবেশগত অসমতার মতোই সেই ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে রিকেটস্ দেখা দেয়, যাদের বোরখা এবং ঘোমটার মতো লম্বা পোশাক দরকার হয়। প্রাকৃতিকভাবে সূর্য থেকে সংশ্লেষিত হয়ে ভিটামিন ডি তৈরি করতে এই ব্যক্তিদের বোরখা এবং ঘোমটা সূর্যালোকের বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

মিতল প্রমুখের উদ্ভাবন, নিম্নতম ২৫-হাইড্রক্সিভিটামিন ডি দ্বারা বিভিন্ন দেশের ভিটামিন ডি ঘাটতি মাপা হয়েছিল। ২৫(ওএইচ)ডি হল ভিটামিন ডিয়ের একটা সূচক, যেটা সহজেই মাপা যায়। এই শতাংশগুলো আপেক্ষিক ভিটামিন ডি মাত্রা হিসেবে অবশ্যই মানা যায়, তবে রিকেটস্ রোগের প্রকোপের জন্যে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়না। ইউরোপে এশীয় অভিবাসীদের বাড়তি ভিটামিন ডি ঘাটতির ঝুঁকি আছে। নেদারল্যান্ডসে ইউরোপীয় ছাড়া অন্য অভিবাসীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ ভিটামিন ডি ঘাটতি দেখা যায়, এবং তুর্কি ও মরক্কান অভিবাসীদের মধ্যে এটা ৮০ শতাংশের বেশি।

মধ্যপ্রাচ্যে সূর্যালোকের উচ্চহার সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী রিকেটস্এর সর্বাধিক প্রকোপ দেখা যায়। এটার ব্যাখ্যা এভাবে করা যায় যে, সাংস্কৃতিক অভ্যাসগত কারণে সীমিত সূর্যালোকপ্রাপ্তি এবং স্তনদুগ্ধদানকারী মহিলাদের ভিটামিন ডি সম্পূরণে ঘাটতি। ইরান এবং সৌদি আরবে যথাক্রমে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বয়ঃসন্ধিপ্রাপ্ত কন্যাদের ভিটামিন ডি ঘাটতি আছে। ভিটামিন ডি সমন্বিত পথ্যের সীমাবদ্ধতায় সামাজিক-অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর ভূমিকা আছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নাটকীয়ভাবে জাতিতত্ত্ব অনুযায়ী ভিটামিন ডি ঘাটতির বৈচিত্র্য দেখা যায়। সত্তর বছর বয়স্ক এবং তদোর্ধ্ব পুরুষদের মধ্যে অ-স্পেইনীয় সাদা চামড়ার মানুষদের জন্যে নিচু সেরাম ২৫ (ওএইচ) ডি মাত্রার প্রকোপ ছিল ২৩ শতাংশ, মেক্সিকান মার্কিনদের জন্যে ৪৫ শতাংশ, এবং অ-স্পেইনীয় কালো চামড়ার মানুষদের জন্যে ৫৮ শতাংশ। মহিলাদের মধ্যে প্রকোপ ছিল যথাক্রমে ২৮.৫, ৫৫ এবং ৬৮ শতাংশ।

তুর্কি এবং চিনে তিন বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এবং রিকেটস্এর মধ্যে একটা উপকারী সমিতি দেখা গিয়েছিল, এটা কোশ্রেন লাইব্রেরিতে একটা নিয়মতান্ত্রিক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছিল। যে শিশুরা কোনো চিকিৎসা পায়নি, তাদের তুলনায় তুর্কিতে শিশুরা মাত্র ৪ শতাংশ ভিটামিন ডি পেয়ে রিকেটস্এর উন্নতির সুযোগ পেয়েছিল। চিনে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং পুষ্টিগত পরামর্শের সমন্বয়ে রিকেটস্এর ঝুঁকি কমানোর একটা সংযোগ পাওয়া গিয়েছিল।

বিবর্ধনমূলক যথানুপাত মাথায় রেখে মাবাবারা যদি দেখেন যে, তাদের শিশু ভিটামিন ডি ঘাটতির ঝুঁকির মধ্যে আছে, তবে তারা ভিটামিন ডিয়ের সম্পূরক পুষ্টি মদজাতীয় পানীয় থেকে নিতে পারেন।

রোগনির্ণয়

কবজির এক্সরে-তে রিকেটস্এর পরিবর্তন দেখায়। এখানে প্রধানত 'কাপিং' দেখা যাচ্ছে।
বুকের এক্সরে রিকেটস্এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পরিবর্তন দেখাচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলো সাধারণত রিকেটস্এর 'রোসারি বিডস'এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

রিকেটস্ রোগ নির্ণয় নিম্নলিখিতভাবে হতে পারে:

  • রক্ত পরীক্ষসমূহ:
  • সেরাম ক্যালসিয়াম ক্যালসিয়ামের মাত্রা দেখাতে পারে, সেরাম ফরফরাস কম হতে পারে, এবং সেরাম অ্যালকালাইন ফসফেটেস হাড় থেকে উঁচু হতে পারে অথবা হাড়ের কাঠামো বা আকার পরিবর্তন হতে পারে। এটা প্রত্যঙ্গ এবং সন্ধিগুলোর বৃদ্ধি দেখাতে পারে।
  • একটা হাড়ের ঘনত্ব স্ক্যান করা যেতে পারে
  • রেডিয়োগ্রাফি বৈশিষ্ট্যগতভাবে সাময়িক মেটাফিসেসএর ক্যালসিফিকেশন দেখায়, দ্বিতীয়তে আনমিনেরালাইজড অস্টেওয়েড। কাপিং, ফ্রেয়িং, এবং মেটাফিসেসের ছড়িয়ে যাওয়া বৈশিষ্ট্যগতভাবে বৃদ্ধি এবং ধারাবাহিকভাবে ওজন নেওয়া। এই পরিবর্তনগুলো প্রক্সিম্যাল হিউমেরাস, ডিস্টাল রেডিয়স, ডিস্টাল ফিমার এবং প্রক্সিম্যাল ও ডিস্টাল টিবিয়া দুটোতেই প্রাধান্যপূর্ণভাবে তাড়াতাড়ি বেড়ে যাওয়া জায়গায় দেখা যায়। সুতরাং, রিকেটস্এর জন্যে হাঁটু, কবজি এবং অ্যাঙ্কলগুলোর অ্যান্টেরোপোস্টেরিয়র রেডিয়োগ্রাফের সঙ্গে একটা কঙ্কালতন্ত্রগত সমীক্ষা সম্পাদন করা যায়।

রোগের ধরন

পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়

রিকেট রোগগ্রস্ত শিশুদের প্রায়ই হাড় ভেঙে যায়। যেটা অনেক সময় শিশু অপব্যবহারে অভিযুক্ত হয়। এই অবস্থাটা দুর্বল পুষ্টি এবং ভিটামন ডি সম্পূরক না-থাকা, শীতে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় একমাত্র কালো চামড়াযুক্ত মায়েদের শিশুপালনে সাধারণভাবে দেখা যায়। একই পরিমাণ সূর্যালোকে হালকা চামড়ার মানুষদের থেকে অপেক্ষাকৃত কালো চামড়ার মানুষদের শরীরে কম পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হয়।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

রিকেটস্ রোগের অতি সাধারণ চিকিৎসা হল ভিটামিন ডিয়ের ব্যবহার। যাই হোক, হাড়ের মারাত্মক অস্বাভাবিকত্ব দূর করতে শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

পথ্য ও সূর্যালোক

চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত হল পথ্য গ্রহণে ক্যালসিয়াম, ফসফেটস্ এবং ভিটামিন ডি বাড়ানো। অতিবেগুনি বি সূর্যালোকে মেলে ধরা (অতি সহজভাবে যখন আকাশে সূর্য বিকশিত থাকে), কড লিভার অয়েল, এবং ভিয়োস্টেরল এইসব হল ভিটামিন ডিয়ের উৎস।

প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যের অতিবেগুনি বি রশ্মি এবং পথ্যে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের পর্যাপ্ত জোগান রিকেটস্ রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। কালো চামড়ার মানুষদের বেশিক্ষণ অতিবেগুনি রশ্মিতে অনাবৃত থাকা দরকার। রিকেটস্ নিরাময় করায় ভিটামিন ডিয়ের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত অতিবেগুনি রশ্মি চিকিৎসাতত্ত্ব এবং ওষুধ প্রমাণিত হয়েছে। বাচ্চা ও শিশুদের জন্যে দিনে ভিটামিন ডিয়ের ৪০০ আন্তর্জাতিক এককসমূহ (আই ইউ) সুপারিশ করা হয়েছে। যে শিশুরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পায়না তাদের রিকেটস্ হওয়ার বাড়তি ঝুঁকি থেকে যায়। ভিটামিন ডি হল শরীরে ঠিকমতো ক্যালসিফিকেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করায় অত্যাবশ্যক।

সম্পূরকতা

পথ্যের মাধ্যমে সম্পূরকতা এবং/অথবা সূর্যালোক প্রাপ্তিতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডিয়ের মাত্রা ঠিক রাখতে পারা যায়। যেহেতু ভিটামিন ডিএর থেকে অপেক্ষাকৃত তাৎক্ষণিকভাবে শোষিত হয় সেজন্যে ভিটামিন ডি (কোলেক্যালসিফেরল) অধিকতর গ্রহণযোগ্য। সূর্যের অরক্ষিত অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চামড়ার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধির ফলে বেশির ভাগ ডার্মেটোলজিস্ট পরিবর্ত হিসেবে ভিটামিন ডি সম্পূরক সুপারিশ করেন। সূর্যালোকে সারা শরীর অনাবৃত অবস্থায় প্রতিদিন ভিতর থেকে আনুমানিক ২৫০ অ্যান্ডএনবিপিএস;μজি (10,000 আই ইউ) তৈরি হয়।

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স (এএপি)এর মতে, স্বতন্ত্রভাবে যারা বুকের দুধ খায় তারা সহ সকল শিশুর প্রতিদিন টেমপ্লেট:কনভার্টএর ভিটামিন ডি সম্পূরকতা পান করা শুরু না-হওয়া পর্যন্ত শক্তিশালী করা ভিটামিন ডি অথবা ফর্মুলা প্রতিদিন প্রয়োজন।

মহামারীসংক্রান্ত বিদ্যা

উন্নত দেশে রিকেটস্ হল একটা ক্বচিৎ রোগ (২০০,০০০ জনে ১-এরও কম ঘটনা)। সাম্প্রতিককালে যেসব শিশুকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি খাওয়ানো হয়না তাদের মধ্যে রিকেটস্এর খবর পাওয়া গিয়েছে।
২০১৩/২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডে কমবেশি ৭০০ রিকেটস্এর ঘটনা ঘটে।

ইতিহাস

রিকেটস্ সহ শিশুর কঙ্কাল, ১৮৮১

মেথডিক স্কুল অফ মেডিসিনের প্রধান প্রতিনিধিদের একজন, যিনি চিকিৎসা করতেন আলেকজান্দ্রিয়া এবং পরে রোমএ, সেই গ্রিক চিকিৎসক এফেসাসএর সরানাস বলেছেন, শিশুদের হাড়ের বিকলাঙ্গতা প্রথম বার দেখা দেয় খ্রিস্টীয় প্রথম ও দ্বিতীয় শতকে। ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রিকেটস্ বৈশেষিক চিকিৎসাশাস্ত্রগত অবস্থার মধ্যে গণ্য হয়নি, যখন একজন ইংরেজ চিকিৎসক ড্যানিয়েল হুইসলার রোগের একেবারে শুরুর বর্ণনা দিয়েছিলেন। ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে কেইয়াস কলেজ, কেম্ব্রিজএর চিকিৎসক ফ্রান্সিস গ্লিসন রিকেটস্ সম্বন্ধে এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন, যিনি বলেছেন, এই রোগ প্রথম দেখা দেয় প্রায় ৩০ বছর আগে ডরসেট এবং সমারসেট দেশে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে জন স্নো রিকেটস্এর ধারণা দেন, সেই সময় ব্রিটেনে বেকারিদের পাঁউরুটির সঙ্গে ফটকিরি দিয়ে ভেজাল দেওয়ার কারণে ব্যাপকভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। জার্মান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কুর্ট হাল্ডস্কিনস্কি সফলভাবে ১৯১৮-১৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রদর্শন করেন, কীভাবে অতিবেগুনি আলো দিয়ে রিকেটস্এর চিকিৎসা করা যায়। রিকেটস্এর উন্নতিতে পথ্যের ভূমিকাএডোয়ার্ড মেলানবি দ্বারা ১৯১৮-২০ খ্রিষ্টাব্দে নির্ধারিত হয়। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন চিকিৎসক হ্যারি স্টিনবক প্রদর্শন করেন যে, অতিবেগুনি আলোর উজ্জ্বল দীপ্তি খাবার এবং অন্যান্য জৈব বস্তুসমূহের ভিটামিন ডিয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। স্টিনবকের উজ্জ্বল দীপ্তি কারিগরি খাদ্যসামগ্রীর জন্যে, কিন্তু অতি স্মরণীয়ভাবে দুধের জন্যে ব্যবহার হোত। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রিকেটস্ কিন্তু নির্মূল হয়ে গিয়েছিল।

শব্দপ্রকরণ

'Rickets' (রিকেটস্) শব্দ সম্ভবত পুরোনো ইংরেজি শব্দ 'wrickken' (রিকেন) (to twist / টুইস্ট হওয়া বা ঘোরা) থেকে এসেছে, কারণ যদিও এটা অনুমিত, বেশির ভাগ বড়ো অভিধান সাধারণত বলে 'ব্যুৎপত্তি অজানা'। রিকেটস্ নামটা প্লুরাল রূপে কিন্তু কাঠামোয় সিঙ্গুলার। গ্রিক শব্দ 'rachitis' (রাকিটিস) (ῥαχίτης, অর্থ 'মধ্যে অথবা শিরদাঁড়ার') পরে বৈজ্ঞানিক নাম হিসেবে রিকেটস্ নেওয়া হয়েছে, কারণ হল প্রধানত শব্দের একই আওয়াজ।

আরো দেখুন

উল্লেখসমূহ



Новое сообщение