Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

লাফানো

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
একজন ব্যয়ামবিদ স্প্লিট-লেগ টেকনিকটি করে দেখাচ্ছেন যা নাচের সময় ব্যবহৃত অন্যতম কৌশল।

জাম্পিং বা লাফ দেওয়া হল একপ্রকার গতিশক্তির প্রকাশ যেখানে কোন প্রাণী (কিংবা কোন যন্ত্রও হতে পারে) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ অভিমূখে বাতাসে ভেসে থাকে। দৌড়ানো, গ্যালোপিং বা অন্য যেকোন চলাচলের ভঙ্গি থেকে লাফানো একেবারেই আলাদা কারণ লাফানোতে শরীর মাটি থেকে যথেষ্ট পরিমান দূরত্বে বেশ কিছুক্ষনের জন্যে সম্পূর্ণভাবে বাতাসে ভেসে থাকে। 

কিছু প্রাণী যেমন ক্যাঙ্গারু চলাফেরার একমাত্র উপায় হল লাফানো (এসব ক্ষেত্রে লাফানোকে হপিং বলে), আবার কিছু ক্ষেত্রে যেমন ব্যাঙ কেবলমাত্র শত্রুদের থেকে বাঁচতেই লাফিয়ে পালায়। লাফানো বিভিন্নপ্রকার খেলাধূলা এবং ক্রীড়াকর্মকান্ডের সাথে যুক্ত যেমন লংজাম্প, হাইজাম্প এবং প্রদর্শনমূলক লাফানো। 

বলবিদ্যা

সবরকম লাফেই কোন না কোন বস্তুর উপর চাপ প্রয়োগ করতে হয়, বস্তুর উপর প্রয়োগ করা চাপই বিপরীত চাপে লাফিয়ে ওঠা বস্তুর গতিসঞ্চার করে। যেকোন কঠিন বা তরল বস্তু (এমনকি পানিও) এই চাপ প্রয়োগের তল হতে পারে যার বিপরীতে লাফিয়ে ওঠা যায়। উদাহরণ হিসেবে পরবর্তীতে ডলফিনের কথা বলা আছে এবং ভারতীয় স্কিটার ব্যাঙও আছে যা কিনা পানির পৃষ্ঠতল থেকেও সরাসরি লাফিয়ে উঠতে পারে।

লাফানো প্রজাতিকে উড়ন্ত প্রজাতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না কারণ লাফের ক্ষেত্রে স্বল্পসময় একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে ভেসে থাকার জন্যে সাধারণ চাপের সূত্র কাজ করে থাকে। অন্যভাবে, একটি পাখিও ওড়ার জন্যে প্রাথমিকভাবে লাফাতে পারে, কিন্তু ভেসে থাকার পরে আর লাফানোর অন্যান্য সূত্র প্রয়োগ করার প্রয়োজন পরেনা। আর ওড়ার মত লাফানোর কোন সুনির্দিষ্ট গন্তব্যও থাকেনা। 

উড্ডয়নের সময় ভূমি বা তল থেকে বিচ্ছেদের সাথে সাথে লাফানো ব্যক্তি বা বস্তু একপ্রকার অধিবৃত্তাকার পথ অতিক্রম করে। লাফানোর সময় কোণ এবং প্রারম্ভিক প্রয়োগকৃত শক্তি লাফিয়ে অতিক্রান্ত দূরত্ব, সময়, উচ্চতা পরিমাপ করে। ভূমি থেকে ৪৫ ডিগ্রী কোণ লক্ষ্য করে লাফালে সর্বোচ্চ উচ্চতা ছুঁতে পারা যায়। তবে ৩৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রীর ভেতর যেকোন কোণে লাফালেও সর্বোচ্চ উচ্চতা অর্জনের সম্ভাবনা শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি থাকে। লাফানোর সময় পেশিশক্তিই মূলত গতিশক্তিতে রুপান্তরিত হয়। লাফানো ব্যক্তির প্রয়োগকৃত পেশিশক্তির উপর নির্ভর করে কতটা দ্রুততায় লাফ দেয়া হবে। পেশি যত দ্রুত কাজ করে, লাফ দিতে তত কম সময় লাগে।

একটি কুকুরের নিশ্চল অবস্থা থেকে লাফানোর ছবি।

লাফানোর উচ্চতা এবং লাফিয়ে অতিক্রান্ত দূরত্ব পরিমাপের জন্যে "যান্ত্রিক শক্তির পরিমাণ" (শক্তি সরবরাহের পরিমাণ) এবং ক্ষমতা প্রয়োগের পরিমাণ (পায়ের পরিমাপ) প্রয়োজন হয়। ফলশ্রুতিতে, লাফাতে হয় এমন অনেক প্রাণীরই পা এবং পায়ের পেশী সুগঠিত পেশীবহুল এবং লাফানোর উপযোগী করে গঠিত হয়েছে। অবশ্য, পায়ের পেশীশক্তি সরবরাহেরও একটা সর্বোচ্চ সীমা আছে। সীমাবদ্ধতা এড়াতে, অনেক প্রাণীর দেহেই লাফানোর জন্যে পেশীর বদলে টেন্ডন বা এ্যাপোডেম কাজ করে, স্থিতিশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে। এসব ক্ষেত্রে মাসল বা পেশী যতটুকু কাজ করত, ততটুক সময়ে পেশীর চেয়ে অনেক দ্রুত ও তুলনামূলক অনেক বেশি শক্তি প্রয়োগ করে। 

লাফানোর সময় প্রাণী নিশ্চল অথবা সচল থাকতে পারে। নিশ্চল থাকা অবস্থায় একটামাত্র ভঙ্গিতেই শরীরে শক্তি সঞ্চালন করতে হয়। দৌড়িয়ে লাফানোর সময় সোজাসুজিভাবে লাফিয়ে আগানোর জন্যে যথেষ্ট শক্তিশালী ধাক্কা দিতে হয় যা কিনা লাফিয়ে অতিক্রম করার প্রয়োজনীয় ভরবেগ উৎপন্ন করে। নিশ্চল অবস্থায় লাফালে যেমন একটা ভঙ্গিমায়ই কেবল পেশীশক্তি খরচ হয়, দৌড়িয়ে লাফানোর ক্ষেত্রে তেমনটা না হয়ে বরং অনেক বেশি শক্তি খরচ করে আনুভূমিক গতি সঞ্চার করে থাকে। একারণেই ক্রীড়াবিদরা দৌড়ে এসে লাফালে অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।   

শরীরবিদ্যা

একটি বুলফ্রগের কঙ্কালের চিত্র, যেখানে লাল রঙে চিন্হিত হাড় লম্বা হয়েছে এবং নীল রঙের হাড় লম্বা হয়নি।

লাফানোর সুবিধার্তে প্রাণীদেহে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পরিবর্তনগুলো লাফানোর ভঙ্গির সাথে খুবই সম্পৃক্ত, কারণ কিছু কিছু প্রাণী লাফানোর পরে শুন্যে উড়ে যায় যেগুলোকে গ্লাইডিং কিংবা প্যারাস্যুটিং বলে।   

সামুদ্রিক প্রাণী খুব কমই লাফানোর সাথে সম্পৃক্ত। যেসব প্রাণী ভালো লাফায় তারা প্রায় সবাই চলাচলের গতি বাড়ানোর জন্যে সাঁতরানোর সময় গতি বাড়িয়ে দিয়ে লাফায়। খুব কম সামুদ্রিক প্রাণীই স্থলে লাফাতে পারে, যেমন মাড স্কিপার লেজ দিয়ে বাড়ি মেরে মেরে লাফায়। 

অঙ্গসংস্থানবিদ্যা

 উড়ন্ত প্রাণীর ক্ষেত্রে সাধারণত পা'ই লাফানোর প্রাথমিক শক্তি সরবরাহ করে, কিছু দুর্লভ ক্ষেত্রে অবশ্য লেজ একাজ করে। লাফানোর জন্যে অবশ্যই এসব পাখির শরীরে লম্বা পা, মজবুত পায়ের পেশী এবং অন্যান্য লাফানোর উপযোগী প্রত্যাঙ্গ থাকে।

লম্বা পা থাকার কারণে প্রাণী তার পায়ের নিচের তলে বেশি শক্তি প্রয়োগ করে চাপ দিতে পারে যা লাফানোর শক্তি এবং দূরত্বকে বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। পেশিবহুল পা বেশি শক্তি উৎপন্ন করতে পারে যা লাফানোর ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। পায়ের অঙ্গসমূহের বৃদ্ধির জন্যে অনেক প্রাণিরই পায়ের জয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পায়ের আকৃতি বড় করেছে।  

এইরকম তিন ধরনের পরিবর্তনের সবচেয়ে চমৎকার উদাহরণ হল ব্যাঙ। ব্যাঙের পা তার শরীরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন হতে পারে, শুধুমাত্র পায়ের পেশির ওজনই সারা শরীরের ওজনের ২০% পর্যন্ত হতে পারে এবং ব্যাঙের শুধু পায়ের পাতা, উরু এবং চামড়াই বড় হয়নি বরং গোড়ালী থেকে শ্রোনী (হিপ বোন) পর্যন্ত শরীরে একটি অতিরিক্ত জয়েন্ট তৈরী করে নিয়েছে। এজন্যেই ব্যাঙ মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে সেরা লাফানোর স্থান দখল করে নিয়েছে যা কিনা লাফিয়ে ৮ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা ছুঁতে পারে।  

সঞ্চিত শক্তি প্রয়োগে ক্ষমতা বাড়ানো

ঘাসফড়িং স্থিতিস্থাপক শক্তি ব্যবহার করে লাফানোর জন্যে পরিচিত। আগেই বলা হয়েছে যে প্রাথমিকভাবে প্রয়োগকৃত শক্তিই লাফিয়ে অতিক্রম করার দূরত্ব বাড়ানোর উপায়। কিন্তু দেহতত্বজনিত বাধাপ্রাপ্তির কারণে এই গতি প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ৩৭৫ ওয়াট হতে পারে। এই ত্রুটি সারিয়ে ওঠার জন্যে ঘাসফড়িং তার পায়ে "ক্যাচ মেকানিজম" নামে একপ্রকার কৌশল ব্যবহার করে থাকে। পায়ের ভেতর তরুনাস্থির মতন একপ্রকার ক্যাচ থাকে, যখনই ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া হয়, তখনই দ্রুততার সাথে পায়ে শক্তি সঞ্চারিত হয়। ঘাসফড়িঙের পায়ের তরুনাস্থি পেশীর চেয়েও দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে বিধায় পেশীর তুলনায় ক্ষিপ্রতা বৃদ্ধি পায়।   

এটাকে অনেকটা মানুষের হাত থেকে ধনুকের সাহায্যে নিক্ষিপ্ত তীরের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। ধনুকে লাগানো ইলাস্টিকে সংগৃহীত স্থিতিশক্তিই গতিশক্তির দিক নির্ণয়পূর্বক তীর নিক্ষেপ করতে পেশীকে সাহায্য করে। পেশিশক্তির বদলে স্থিতিশক্তি ব্যবহার করলে দীর্ঘক্ষণ কম শক্তিপ্রয়োগে কাজ করা যায়। অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণী এমনকি ব্যাঙের মধ্যেও লাফানোর জন্যে এরূপ স্থিতিশক্তির প্রয়োগ দেখা যায় যা সমপরিমাণ ৭ গুন পেশীশক্তির সাথে তুলনীয়।

প্রকারভেদ

 পায়ের পাতা ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে লাফানোকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়:

  • জাম্প - দু পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে শুন্যে ভেসে ওঠা এবং অবতরণ 
  • হপ - একই পায়ের পাতার উপর লাফ দিয়ে ওপরে ওঠা এবং অবতরণ 
  • লিপ - এক পায়ের পাতার ভর দিয়ে লাফানো এবং অন্য পাতায় ভর দিয়ে অবতরণ 
  • এ্যাসেম্বল - এক পায়ে ভর দিয়ে লাফ দিয়ে দুই পায়ের পাতার সাহায্যে অবতরণ 
  • সিসন - দুই পায়ের পাতায় ভর দিয়ে লাফ দিয়ে এক পায়ের পাতার অবতরণ 

লিপিং গেইট কিন্তু দৌড়ানো গেইট থেকে আলাদা (লকোমোশন দেখুন) যার মধ্যে ক্যান্টারিং, গ্যালোপিং এবং প্রংগিং অন্তর্ভুক্ত 

উচ্চতা বাড়ানোর যন্ত্রাবলী এবং কৌশল

একজন লোক ট্যাম্পোলিনে লাফাচ্ছেন।

ট্যাম্পোলিনের সাহায্যে উচ্চতা বাড়ানো যায়। আবার হাফ পাইপ নামক যন্ত্রের সাহায্যে আনুভূমিক গতিকে উলম্ব গতিতে পরিণত করা যায়। 

একজন ক্রীড়াবিদের লাফানোর উচ্চতা বাড়ানো যায় বিভিন্ন ব্যায়ামের মাধ্যমে যার একটার নাম প্লায়োমেটরিক্স, যেখানে লাফানো সংক্রান্ত কর্মকান্ডসমূহকে পুনঃপুণ ভাবে অনুশীলন করা হয় গতি, শক্তি এবং দ্রুততা বাড়ানোর জন্যে। 

টেমপ্লেট:সূত্র তালি

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение