Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট সংক্রমণের প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিদ্যাচর্চাকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বলা হয়; এটি মহামারী-সংক্রান্ত বিদ্যার একটি ব্যবহারিক শাখা (তুলনামূলকভাবে কম তাত্ত্বিক)। তুলনামূলকভাবে কম স্বীকৃত এবং কম অনুমোদিত হওয়া সত্ত্বেও, এটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের পরিকাঠামোর জন্য অপরিহার্য। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং হাসপাতালের মহামারী-সংক্রান্ত বিদ্যা জনস্বাস্থ্য পরিসেবারই সমতুল, এক্ষেত্রে এই পরিসেবা সরাসরি সমাজের সঙ্গে যুক্ত না থেকে একটি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানেই দান করা হয়। সংক্রমণ-বিরোধী উপাদানগুলি হল - অ্যান্টিবায়োটিক (ব্যাকটেরিয়া নিরোধক), ছত্রাক নিরোধক (অ্যান্টিফাংগাল), ভাইরাস নিরোধক (অ্যান্টিভাইরাল) এবং প্রোটোজোয়া নিরোধক (অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল)।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ অনেকগুলি বিষয়ের সঙ্গে জড়িত - যেমন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে সংক্রমণের বিস্তার (এটা হতে পারে রোগী - রোগী, রোগী - কর্মী, কর্মী - রোগী অথবা কর্মীদের নিজেদের মধ্যে), এর সাথে থাকে এর প্রতিরোধ (হাতের স্বাস্থ্যবিধি/হাত পরিষ্কার রাখা, পরিচ্ছন্নতা বজায়/সংক্রমণ-রোধ/নির্বীজকরণ, টিকাকরণ, নজরদারির মাধ্যমে), একটি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে প্রকটিত অথবা আশঙ্কা করা হচ্ছে এমন সংক্রমণের বিস্তার পরিদর্শন/অনুসন্ধান করা (নজরদারি এবং প্রাদুর্ভাব অনুসন্ধান), এবং ব্যবস্থাপনা (প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ)। এইপ্রকার ব্যবস্থার কারণে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে একটি সাধারণ নাম চালু আছে - "সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ।"

স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ

সমস্ত চিকিৎসা পদ্ধতির একটি মূখ্য উপাদান হল নির্বীজকরণ পদ্ধতি। একইভাবে, অধরা সংক্রমণ সাধারণ হওয়ায়, মানক সতর্কতা (স্বাস্থ্য সেবা) প্রয়োগ করলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সবথেকে কার্যকরী হয়।

হাত পরিষ্কার রাখার স্বাস্থ্যবিধি

১৮৪৬ সালে ভিয়েনার ইগনাজ সেম্মেলওয়েইস্‌ এবং ১৮৪৩ সালে বস্টনের সিনিয়র অলিভার ওয়েন্ডেল হোমসের দুটি স্বতন্ত্র পরীক্ষা থেকে জানা গেছে যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের হাতের সঙ্গে হাসপাতাল-জাত রোগবিস্তারের একটি যোগ রয়েছে। “আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র” (দি ইউএস সেন্টারস্‌ ফর ডিসিস্‌ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেন্‌শন্‌ বা সংক্ষেপে সিডিসি) থেকে বলা হয়েছে যে “এটা নথিবদ্ধ যে জীবাণু বিস্তার প্রতিরোধের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল, ভালভাবে হাত পরিষ্কার রাখা।” উন্নত দেশের প্রায় সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই হাত ধোওয়া বাধ্যতামূলক এবং এর জন্য বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজন হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে, ওশা (OSHA) মানক অনুযায়ী, কর্মীদের জন্য হাত ধোওয়ার সমস্তরকম বন্দোবস্ত রাখতে হবে, এবং কর্মীদের সর্বদা সচেতন থাকতে হবে যে তারা যেন সাবান এবং জল দিয়ে তাদের হাত এবং দেহের অন্য যেকোন অংশের চামড়া পরিষ্কার রাখে অথবা উক্ত দেহাংশে রক্ত বা অন্য কোন সম্ভাব্য সংক্রামক বস্তুর (OPIM) স্পর্শ হলেই যত দ্রুত সম্ভব তারা যেন জল দিয়ে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিগুলো ধুয়ে ফেলে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা “আইলিফ পদ্ধতি” গ্রহণ করেছেন, এটি হল গ্রাহাম আইলিফ, জেআর বাব এবং এ এইচ কোয়েরেশি দ্বারা আবিষ্কৃত একটি ৬ ধাপ পদ্ধতি।

ব্যাক্টিরিয়া সংখ্যা পরিবর্তনের গড় শতাংশ
ব্যবহৃত পদ্ধতি উপস্থিত ব্যক্টিরিয়ার পরিবর্তন
কাগজ তোয়ালে (২-স্তরীয় ১০০% পুনর্ব্যবহার্য্য)। -৪৮.৪%
কাগজ তোয়ালে (২-স্তরীয় থ্রু-এয়ার ড্রায়েড, ৫০% পুনর্ব্যবহার্য্য)। -৭৬.৮%
উষ্ণ এয়ার ড্রায়ার + ২৫৪.৫%
জেট এয়ার ড্রায়ার + ১৪.৯%

হাতের স্বাস্থ্যবিধি পদ্ধতির মধ্যে শুষ্ককরণ একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে, লণ্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইউরোপিয়ান টিস্যু সিম্পোসিয়ামের কাছে একটি নন-পিয়ার-রিভিউ করা গবেষণায় কাগজ তোয়ালে (পেপার টাওয়েল), ওয়ার্ম এয়ার হ্যাণ্ড ড্রায়ার এবং আধুনিক জেট-এয়ার হ্যাণ্ড ড্রায়ার ব্যবহার করার পর ব্যাক্টিরিয়ার পরিমাণ মাপা হয়। তাতে দেখা যায় যে উক্ত তিন প্রকার পদ্ধতির মধ্যে একমাত্র কাগজ তোয়ালেই হাতের সমগ্র ব্যাক্টিরিয়ার পরিমাণ কমাতে পারে, এর মধ্যে “থ্রু-এয়ার ড্রায়েড”(বায়ুবাহিত শুষ্কীকরণ) তোয়ালেই সবথেকে কার্যকরী।

গবেষকরা প্রতিটি শুষ্ককরণ পদ্ধতি আরো পরীক্ষা করে দেখেছেন যে এগুলি ব্যবহারের ফলে সাজঘরের (ওয়াশরুম) অন্যান্য ব্যবহারকারীরা এবং সাজঘর পরিবেশ কতটা কলুষিত হয়। তারা জানতে পেরেছেনঃ

  • জেট এয়ার ড্রায়ার, যেটি কিনা ঘণ্টায় ৪০০ মি. বেগে বায়ুচালনা করতে পারে বলে দাবী করা হয়, সেটি হাত থেকে এবং সংলগ্ন পরিবেশ থেকে ক্ষুদ্র-জীবাণু (Micro-organisms) অপসারণ করে এবং এর ফলে অন্যান্য ওয়াশরুম ব্যবহারকারী ও ওয়াশরুমের পরিবেশ ২ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত দূষিত হয়।
  • ওয়ার্ম এয়ার হ্যাণ্ড ড্রায়ারের ব্যবহারের ফলে ০.২৫ মিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র-জীবাণু ছড়ায়।
  • কাগজ তোয়ালের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র-জীবাণুর উল্লেখযোগ্য বিস্তার দেখা যায়নি

২০০৫ সালে, টিইউভি প্রোডাক্ট আণ্ড আমওয়েল্ট কর্তৃক একটি গবেষণায় হাত শুকোনোর বিভিন্ন পদ্ধতির মূল্যায়ন করা হয়েছে। হাত শুকোনোর পরে ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যার নিম্নলিখিত পরিবর্তন দেখা গেছেঃ

শুষ্ককরণ পদ্ধতি ব্যাক্টিরিয়া গণনার ফল
কাগজ তোয়ালে এবং রোল ২৪% হ্রাস
উষ্ণ হ্যাণ্ড-ড্রায়ার ১১৭% বৃদ্ধি

নির্বীজকরণ

নির্বীজকরণ বা স্টেরিলাইজেশান পদ্ধতিটি সমস্ত ক্ষুদ্র-জীবাণু ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয় এবং এটি দ্বারা সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পরিমাণ জীবাণু ধ্বংস করা যায়। শুধুমাত্র তাপ, গরম বাষ্প অথবা তরল রাসায়নিক নির্বীজকারক হিসেবে কাজ করতে পারে। নির্বীজকারকের (যেমন, একটি স্টিম অটোক্লেভ) কার্যকারীতা তিনটি পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়। প্রথমত, যান্ত্রিক সূচক এবং মেশিনের মাপবার যন্ত্রগুলিই মেশিনটি ঠিকমত কাজ করবে কিনা বুঝতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, তাপ-সুবেদী সূচক অথবা নির্বীজকরণ ব্যাগের ফিতে রঙ বদলায় যার ফলে তাপ অথবা বাষ্পের প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায়। এবং তৃতীয়ত (সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ) উচ্চতাপ ও রাসায়নিকরোধী ক্ষুদ্রাকৃতি জীবাণুগুলিকে (প্রায়শই ব্যাক্টিরিয়াল এণ্ডোস্পোর) প্রমাণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বাছা হয়। এই পদ্ধতিতে যদি এই জীবাণুগুলি ধ্বংস হয়, তবে নির্বীজকারকটিকে কার্যকরী হিসেবে ধরা হয়।

নির্বীজকরণ পদ্ধতিটি, যদি সঠিকভাবে সম্পাদন করা হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া বিস্তাররোধের ক্ষেত্রে এটি একটি কার্যকরী পথ। এটি ডাক্তারী উপকরণ অথবা দস্তানা এবং রক্তপ্রবাহ ও নির্বীজকৃত টিস্যুর সংস্পর্শে আসতে পারে এমন যেকোন চিকিৎসা সরঞ্জামের পরিষ্করণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এই ধরনের সরঞ্জামগুলির নির্বীজকরণের চারটি পদ্ধতি আছেঃ অটোক্লেভ (উচ্চচাপে বাষ্প ব্যবহারের মাধ্যমে), শুষ্ক তাপীয় (একটা উনুনের মধ্যে), গ্লুটারালডিহাইডস্‌ বা ফর্ম্যাল্‌ডিহাইড্‌ দ্রবণের মত রাসায়নিক নির্বীজকারক ব্যবহার করে অথবা বিকিরণের মাধ্যমে (ভৌত বিকারকের সাহায্যে)। সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং সহজলভ্য হওয়ার কারণে প্রথম দুটি পদ্ধতিই সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। সঠিকভাবে করা সম্ভব হলে বাষ্প-নির্বীজকরণ হল নির্বীজকরণের মধ্যে সবথেকে কার্যকরী পদ্ধতি, যদিও তা করা খুবই কঠিন। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলির সরঞ্জামগুলিকে এই পদ্ধতিতে নির্বীজকরণ করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণ নিয়মটি হল, কোন একটি নির্বীজকরণ সঠিকভাবে করতে হলে যেসকল অংশ সংক্রমণ-মুক্ত করতে হবে তার সমস্ত তলগুলিকে অবশ্যই বাষ্পের সংস্পর্শে আসতে হবে। অন্যদিকে, শুষ্ক তাপীয় নির্বীজকরণে একটি উনুনের সাহায্য নেওয়া হয়; এই পদ্ধতিটিও খুব সহজেই সম্পাদন করা যায়, যদিও এই পদ্ধতিতে কেবলমাত্র ধাতব অথবা কাঁচের বস্তুই নির্বীজকরণ করা যায়। কারণ সরঞ্জামগুলি কাঁচের অথবা ধাতুর নির্মিত না হলে এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত উচ্চতাপে বস্তুগুলি গলে যেতে পারে।

১২১ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় এবং ২০৯ কি.পাস্কাল (১৫পাউণ্ড/ইঞ্চি) চাপে বাষ্প নির্বীজকরণ পদ্ধতিটি সম্পাদন করা হয়। এই শর্তে, রবার নির্মিত বস্তুগুলিকে ২০ মিনিট ধরে এবং জড়ানো বস্তুগুলিকে ১৩৪ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় এবং ৩১০ কি. পাস্কাল চাপে ৭ মিনিট ধরে নির্বীজকরণ করা হয়। প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় পৌঁছে গেলে সময় ধরা হতে থাকে। বাষ্প নির্বীজকরণকে উপযুক্ত হতে হলে চারটি শর্ত মানা জরুরীঃ যথাযথ সংস্পর্শ, প্রয়োজনীয় উচ্চ তাপমাত্রা, সঠিক সময় এবং সঠিক পরিমাণ জলীয় বাষ্প। বাষ্পদ্বারা নির্বীজকরণের এই পদ্ধতিটি ১৩২ ডিগ্রী সে. (২৭০ ডিগ্রী ফা.) তাপমাত্রায় দ্বিগুণ চাপেও করা যায়। শুষ্ক তাপীয় নির্বীজকরণ পদ্ধতি একঘণ্টা ধরে ১৭০ ডিগ্রী সে. (৩৪০ ডিগ্রী ফা.) তাপমাত্রায় অথবা দুঘণ্টা ধরে ১৬০ ডিগ্রী সে. (৩২০ডিগ্রী ফা.) সম্পাদন করা হয়। উক্ত পদ্ধতিটি আবার ১২১ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় অন্ততপক্ষে ১৬ ঘণ্টা ধরেও সম্পন্ন করা হয়।

যেসকল যন্ত্রপাতি উপর্যুক্ত দুই পদ্ধতিতে নির্বীজকরণ করা যায় না সেগুলি রাসায়নিক নির্বীজকরণ ব্যবহার করে করা হয়, এই পদ্ধতিকে শীতল নির্বীজকরণও বলা হয়। যেসকল দ্রব্যসমূহ নিয়মিত নির্বীজকরণ পদ্ধতিতে নষ্ট হয়ে যায়, সেগুলিকেই সাধারণত শীতল নির্বীজকরণ পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়। সাধারণভাবে, গ্লুটারালডিহাইডস্‌ এবং ফর্ম্যালডিহাইডই এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়, যদিও এগুলিকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যখন প্রথমটিকে ব্যবহার করা হয়, তখন ২ – ৪% দ্রবণে যন্ত্রগুলিকে কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হয়; কিন্তু ফর্ম্যালডিহাইড্‌ দ্রবণ ব্যবহার করলে এর ৮% দ্রবণের মধ্যে সরঞ্জামগুলিকে ২৪ ঘণ্টা বা তার বেশি রাখলে তবে সেটা নির্বীজ হয়। রাসায়নিক নির্বীজকরণ বাষ্পীয় নির্বীজকরণের থেকে বেশি ব্যয়বহুল এবং সেই কারণে যেসকল যন্ত্রপাতি অন্য কোন পদ্ধতিতে নির্বীজ করা যায় না সেগুলির ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। যন্ত্রপাতিগুলিকে রাসায়নিক দ্রবণের মধ্যে সিক্ত করবার পর, এদেরকে আবশ্যিকভাবে জীবাণুমুক্ত জলের সাহায্যে ধুয়ে ফেলা হয় যাতে নির্বীজকৃত অংশগুলি থেকে জীবাণুর অবশিষ্টাংশ অপসৃত হয়ে যায়। সূঁচ এবং সিরিঞ্জের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে নির্বীজ করা হয় না, যেহেতু রাসায়নিক দ্রবণ ব্যবহার করার পর এতে অবশেষ থেকে যায় এবং সেগুলিকে জলের সাহায্যে ধুয়ে ফেলে নির্বীজ করা যায় না এবং প্রায়োগিক চিকিৎসায় তা হস্তক্ষেপ করতে পারে। যদিও গ্লুটারালডিহাইডের থেকে ফর্ম্যালডিহাইড কম ব্যয়বহুল, কিন্তু দ্বিতীয়টি চক্ষু, চর্ম এবং ফুসফুসীয় নালিকায় চুলকানির সৃষ্টি করতে পারে এবং এগুলিকে সম্ভাব্য কার্সিনোজেন বা ক্যান্সারাত্মক পদার্থ হিসেবেও বলা হয়ে থাকে।

অন্যান্য আরো নির্বীজকরণ পদ্ধতি রয়েছে, তবে সেগুলির কার্যকরীতা সম্বন্ধে এখনও মতদ্বৈত রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলি হল গ্যাস, অতিবেগুনী রশ্মি, গ্যাস প্লাজমা, এবং পারঅক্সিঅ্যাসিটিক অ্যাসিড বা প্যারাফর্ম্যালডিহাইডের মত রাসায়নিক এজেন্ট ব্যবহার করে নির্বীজকরণের পদ্ধতি।

পরিচ্ছন্নতা

বাড়িতেও সংক্রমণ রোধ করা যায়। সংক্রমণের ছোঁয়াচ কমাতে হলে, প্রত্যেককে উত্তম স্বাস্থ্যবিধি অবলম্বন করতে হবে, এর জন্য হাত যদি সংক্রমণের কোন সম্ভাব্য স্থান কিংবা কোন শারীরিক রসের সংস্পর্শে আসে, তবে অবশ্যই হাত ধোওয়া উচিত এবং জীবাণু যাতে বংশবিস্তার করতে না পারে তার জন্যও নিয়মিতভাবে আবর্জনা পরিষ্কার করা উচিত।

সংক্রমণরোধ

সংক্রমণরোধের ক্ষেত্রে উপরিতলে তরল রাসায়নিক ব্যবহার করে ঘরের তাপমাত্রায় রোগসৃষ্টিকারী ক্ষুদ্রাকৃতি-জীবাণু ধ্বংস করা হয়। যে সকল রোগী ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিল নামক রোগজীবাণু কর্তৃক আক্রান্ত, তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেবার পর সেই ঘর জীবাণুমুক্ত করবার জন্য অতিবেগুনী রশ্মিরও ব্যবহার করা হয়। সংক্রমণরোধ প্রক্রিয়াটি নির্বীজকরণের থেকে কম কার্যকরী, কারণ এতে ব্যাক্টিরিয়ার এণ্ডোস্পোরগুলিকে ধ্বংস করা হয় না।

ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী

বর্জনযোগ্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী

বিপত্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা যে নির্দিষ্ট পোশাক ব্যবহার করে তাকে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট বা সংক্ষেপে পি.পি.ই) বলা হয়। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কর্মীদের কাছে বিপত্তি হল, তাদের সবসময়েই রক্ত, লালা অথবা অন্যান্য অনেক দেহরস কিংবা এরোসলের সংস্পর্শে আসতে হয়, এইসকল পদার্থগুলি হেপাটাইটিস সি, এইচ.আই.ভি বা অন্যান্য রক্তবাহিত বা দেহরস বাহিত জীবাণু বহন করে। ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের দেহের সঙ্গে সম্ভাব্য সংক্রামক পদার্থগুলির মধ্যে একটি ভৌত বাধার সৃষ্টি করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য প্রশাসনের (অক্যুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ্‌ অ্যাডমিনিস্ট্রেশান বা সংক্ষেপে ওশা) বিধি অনুযায়ী রক্ত অথবা অন্যান্য সম্ভাব্য সংক্রামক পদার্থের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকলে রক্তবাহিত জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পেতে কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে।

এই উপকরণের উপাদানগুলি হল দস্তানা, আঙরাখা বা গাউন, বোনেটজাতীয় বিশেষ টুপি, জুতোর আবরক, মুখের আচ্ছাদন, সিপিআর মাস্ক, গগলস্‌ জাতীয় চশমা, অস্ত্রপ্রচারের জন্য বিশেষ মাস্ক এবং রেস্পিরেটর। কতগুলি উপাদান ব্যবহৃত হবে এবং কীভাবে তা ব্যবহৃত হবে তার জন্য লিখিত বিধি রয়েছে অথবা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির সংক্রামক নিয়ন্ত্রণ রীতির উপর তা নির্ভর করে। এগুলির মধ্যে বেশিরভাগ সরঞ্জামই নিষ্পত্তিযোগ্য (ডিসপোজেবল্‌) হয়, যাতে সংক্রামক পদার্থ এক রোগী থেকে অন্য রোগীতে স্থানান্তরিত না হতে পারে এবং জটিল ও ব্যয়বহুল সংক্রমণরোধ এড়ানো যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওশা থেকে বলা হয় যে একজন কর্মী সংক্রামক পদার্থ নিয়ে কাজ করবার পর সেখান থেকে বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে যেন তার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক পোশাকটি ছেড়ে ফেলে সেগুলির সংক্রমণ রোধ করে অথবা সেটি সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করেন।

জীবাণু প্রতিরোধী তল

ক্ষুদ্রাকৃতি-জীবাণুগুলি অসংক্রমণরোধী তলে যেখানে সজীব সংস্পর্শ হয় (যেমন, বেডরেল, বিছানার উপরকার ট্রে, কল করবার বাটন, বাথরুমের ব্যবহৃত সরঞ্জাম প্রভৃতি) সেই সকল স্থানে দীর্ঘকাল ধরে টিকে থাকে। এগুলি বিশেষত হাসপাতালের পরিবেশে খুব সংকটজনক, কারণ সেখানে অনাক্রম্যতার অভাবযুক্ত রোগীরা হাসপাতালজাত সংক্রমণের শিকার হতে পারেন।

জীবাণুরোধী তাম্র সংকর (যেমন, পিতল, ব্রোঞ্জ, কিউপ্রোনিকেল, তাম্র-নিকেল-দস্তা, এবং অন্যান্য) দ্বারা নির্মিত পৃষ্ঠতলগুলি খুব অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ জীবাণু ধ্বংসসাধনে সক্ষম। মার্কিন যুক্তরাষ্টের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থা (দি ইউনাইটেড্‌ স্টেটস্‌ এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশান এজেন্সি) ৩৫৫টি স্বতন্ত্র জীবাণুরোধী তাম্র সংকর এবং একটি কৃত্রিম তাম্র-চারিত কঠিন তলের নিবন্ধন অনুমোদন করেছে যেগুলি ই. কোলাই O157:H7, মেথিসিলিন প্রতিরোধী স্টেফাইলোকক্কাস অরেয়াস (MRSA), স্টেফাইলোকক্কাস, এন্টারোব্যাক্টার এয়ারোজিনস্‌ এবং সিউডোমোনাস এরুজিনোসা প্রভৃতি জীবাণুকে ২ ঘণ্টার মধ্যে নির্মূল করতে পারে। অন্য অনুসন্ধান থেকে জানা যাচ্ছে যে জীবাণুরোধী তাম্র সংকরের ক্লসট্রিডিয়াম ডিফিসিল, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাস, অ্যাডিনোভাইরাস, এবং ছত্রাক পর্যন্ত ধ্বংস করবার ক্ষমতা আছে। যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যাণ্ড, জাপান, কোরিয়া, ফ্রান্স, ডেনমার্ক এবং ব্রাজিলের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করার পাশাপাশি সরকারীভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী জীবাণুরোধী তাম্র সংকর স্থাপন করেছে। কৃত্রিম কঠিন তল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সাথে ইজরায়েলেও গ্রহণ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের টিকাকরণ

কাজের সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা কিছু সংক্রমণের শিকার হতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রতিরক্ষার জন্য টিকাকরণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। নির্দিষ্ট বিধি, প্রস্তাবনা, নির্দিষ্ট কাজের চরিত্র, অথবা ব্যক্তিগত ইচ্ছানুসারে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা অথবা প্রথম প্রতিক্রিয়াকারীরা হেপাটাইটিস বি; ইনফুয়েঞ্জা; হাম, মাম্পস এবং রুবেলা; টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি; এন. মেনিঞ্জাইটিস; এবং জলবসন্তের টিকা দিতে পারে।

ব্যাধি-প্রকাশ পরবর্তী চিকিৎসা

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে টিকাকরণ করা সম্ভব নয়, সেখানে ব্যাধি-প্রকাশ পরবর্তী চিকিৎসা সাহায্যে মারণ সংক্রামক রোগের হাত থেকে কর্মীদের রক্ষা করা হয়। যেমন, এইচআইভি – এইডস্‌ রোগের ভাইরাস জীবাণুর পরিমাণ রোগ প্রকাশ পাওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে একধরনের অ্যান্টিবডি ইঞ্জেকশন ব্যবহার করে কমিয়ে ফেলা সম্ভব।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সংক্রমণের জন্য নজরদারী

সিডিসির সংজ্ঞা অনুসারে নজরদারী হল সংক্রমণের অনুসন্ধান করা। হাসপাতালজাত সংক্রমণের উপস্থিতি বোঝবার জন্য একজন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকারী পেশাদারের (ইনফেকশান কন্ট্রোল প্র্যাকটিশনার বা সংক্ষেপে আই সি পি) প্রয়োজন হয়, যিনি রোগীর তালিকা পর্যালোচনা করবেন এবং দেখবেন যে রোগীটির দেহে কোন সংক্রমণের উপসর্গ কিংবা লক্ষণ রয়েছে কিনা। নজরদারী সংজ্ঞার মধ্যে রক্তবাহের সংক্রমণ, মুত্রনালীর সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, অস্ত্রপ্রচারের অংশ এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস্‌ প্রভৃতির পরীক্ষা করা হয়।

নজরদারী পদ্ধতিতে প্রথাগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুয়াল তথ্যের মূল্যায়ন করা হয় এবং তা নথিভুক্ত হয় যাতে প্রতিরোধমূলক ক্রিয়াকলাপের মূল্যায়ন করা যায়, যেমন সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীকে অন্তরীণ করা প্রভৃতি। এখন বর্ধিতহারে কম্পিউটার সফট্‌ওয়্যারে সমাধান উপলব্ধ হচ্ছে যাতে মাইক্রোবায়োলজি এবং অন্যান্য অনলাইন উৎস থেকে আগত ঝুঁকিপূর্ণ বার্তাগুলির মূল্যায়ন করে। ডেটা এন্ট্রি প্রয়োজন কমার ফলে, আইসিপির তথ্যের ভার কমে যাছে, এ কারণে তারা ডাক্তারী নজরদারির দিকে মনোনিবেশ করতে পারছেন।

১৯৯৮ সালের হিসেব অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে সৃষ্ট সংক্রমণগুলির এক-তৃতীয়াংশ ছিল প্রতিরোধক্ষম। নজরদারী এবং প্রতিরক্ষামূলক কার্যকলাপগুলি বর্ধিতভাবে হাসপাতাল কর্মীদের জন্যই প্রাধান্য পাচ্ছে। ১৯৭০এর দশকে ইউএস সিডিসির হাসপাতালজাত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কার্যক্ষমতার ওপর একটি সমীক্ষা (দি স্টাডি অন দি এফিকেসি অফ নসোকোমিয়াল ইনফেকশান কন্ট্রোল) প্রকল্প হয়েছিল যা থেকে জানা গেছে নজরদারী ক্রিয়াকলাপ এবং প্রতিরক্ষামূলক প্রচেষ্টার ওপর জোর দেওয়ার ফলে হাসপাতালজাত সংক্রমণের পরিমাণ প্রায় ৩২ শতাংশ কমে গেছে।

অন্তরীণ এবং সঙ্গরোধ

স্বাস্থ্যসেবার অন্তরীণের ক্ষেত্রে, ডাক্তারী অন্তরীণের ব্যবস্থা করা হয় যখন ছোঁয়াচে রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করবার প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন ধরনের অন্তরীণ ব্যবস্থা চালু আছে এবং এগুলি প্রয়োগ করা হয় সংক্রমণের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে এবং কোন্‌ কোন্‌ এজেন্ট এক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল তারও ওপর নির্ভর করে; এছাড়া দেখা হয় ঐ নির্দিষ্ট সংক্রমণের বিস্তার কি বায়ুবাহিত কণা অথবা অন্য কোন তরল-ফোঁটা দ্বারা সংঘটিত কিংবা প্রত্যক্ষ চর্ম সংস্পর্শ বা দেহরসের সংযোগের দ্বারা ঘটেছে।

যেসব ক্ষেত্রে সংক্রমণ শুধুমাত্র সন্দেহ করা হয়, সেখানে যতক্ষণ না পর্যন্ত রোগজীবাণুর উন্মেষপর্ব পার হয় এবং রোগ প্রকটিত হয় কিংবা ব্যক্তিটি স্বাস্থ্যবান হয়, ততক্ষণ ব্যক্তিটির সঙ্গরোধ করা যেতে পারে। গোষ্ঠীরও সঙ্গরোধ করে রাখা যেতে পারে, অথবা যেখানে একটি সম্প্রদায় বাস করে সেখানে ঘিরে ফেলবার ব্যবস্থা (Cordon sanitaire) করা যেতে পারে, অথবা একটি সম্প্রদায়ের রক্ষামূলক স্বতন্ত্রীকরণও করা যেতে পারে। সরকারী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মহামারী প্রতিরোধ করতে, স্কুল বন্ধ করা প্রভৃতি অন্যান্য সামাজিক পৃথকীকরণের প্রয়োগ ঘটাতে পারেন।

প্রাদুর্ভাবের জন্য অনুসন্ধান

যখন অস্বাভাবিকভাবে রোগের প্রকোপ দেখা যায়, তখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকারী দল অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেন যে সেখানে সত্যিই প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে কিনা, অথবা এটা একটা ছদ্ম-প্রাদুর্ভাব (ডাক্তারী পরীক্ষার সময়ে কোন দূষণের ফল), অথবা শুধুমাত্র রোগের পুনরাবৃত্তিরই অনিয়মিত উত্থানপতন। যদি সত্যিই প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়ে থাকে, তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকারী পেশাদাররা নির্ণয় করবার চেষ্টা করেন যে কি থেকে এই প্রাদুর্ভাব দেখা দিল, এবং পরিস্থিতির পুনর্বিন্যাস করে সংক্রমণের প্রকোপ রোধ করবার চেষ্টা করে। প্রায়শই, সুঅভ্যাসের অন্যথা করবার ফলেই এই ধরনের রোগবিস্তারের প্রকোপ দেখা যায়, যদিও কিছু সময়ে অন্যান্য বিষয়ও (যেমন নির্মাণ) সমস্যার উৎস হতে পারে।

প্রাদুর্ভাবের অনুসন্ধানের একাধিক কারণ থাকে। বর্তমান প্রাদুর্ভাবের অতিরিক্ত প্রকোপ রোধ করতে, ভবিষ্যতে প্রাদুর্ভাব রোধ করতে, নতুন রোগ সম্বন্ধে জানতে অথবা পুরনো রোগের সম্বন্ধে নতুন কিছু জানতে এইসকল অনুসন্ধানগুলি চালানো হয়। প্রাদুর্ভাব অনুসন্ধানের অন্যান্য সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যগুলি হল জনসাধারণকে পুনরাশ্বাস দেওয়া, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতির হ্রাস করা এবং তার সাথে মহামারীবিদ্যা সম্বন্ধে পাঠদান করা।

WHO –এর মতে, প্রাদুর্ভাব অনুসন্ধান চালানোর উদ্দেশ্য হল – কি কারণে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, কীভাবে প্যাথোজেনের বিস্তার ঘটল, কোথা থেকে এটি শুরু হল, এই রোগের বাহক কে, কতজনের সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং ঝুঁকির কারণ কি কি ইত্যাদি নির্ণয় করা।

প্রাদুর্ভাব অনুসন্ধানের ফলাফল সবসময়েই প্রতিবেদনের আকারে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হয় এবং এই প্রতিবেদনটির তথ্যগুলি কর্তৃপক্ষ, সংবাদ মাধ্যম, বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য আরো অনেক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়। এইসকল প্রতিবেদনগুলি সাধারণভাবে শিক্ষাবিজ্ঞানের কাজে লাগানো হয়।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যসেবার মহামারীবিদ্যার প্রশিক্ষণ

পেশাদার চিকিৎসাকর্মীরা পৃথক পৃথক শিক্ষাগত ক্ষেত্র থেকে আসেন। কেউ কেউ নার্স হিসেবে, কেউ বা ডাক্তারী প্রযুক্তিবিদ্‌ (বিশেষত ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজিতে), এবং কেউ চিকিৎসক হিসেবে (বিশেষ করে সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ) তাদের কর্মজীবন শুরু করেন। নিম্নে বর্ণিত পেশাদার প্রতিষ্ঠানগুলিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মহামারীবিদ্যা বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যেসকল চিকিৎসক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ চিকিৎস হতে চান তাদেরকে সংক্রামক রোগ সহযোগীতার প্রসঙ্গে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং হাসপাতালজাত মহামারীবিদ্যার সাক্ষ্যদানকারী পরিষদ (সার্টিফিকেশন বোর্ড অফ ইনফেকশন কন্ট্রোল অ্যান্ড এপিডেমিয়োলজি) নামে একটি বেসরকারী কোম্পানী আছে যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ চিকিৎসকদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরীখে এবং পেশাগত অভিজ্ঞতা বিচার করে, মানসম্মত পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের জ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণ করে তাদের শংসা দান করে। এই শংসাপত্রটি হল সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও হাসপাতালজাত মহামারীবিদ্যার শংসা বা সার্টিফিকেশন ইন ইনফেকশন কন্ট্রোল অ্যাণ্ড এপিডেমিয়োলজি, সংক্ষেপে যা সিআইসি নামে পরিচিত। পরীক্ষার জন্য আবেদন করবার আগে ২ বছর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ অভিজ্ঞতা থাকবার সুপারিশ করা হয়। শংসাপত্রটি প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নবীকরণ করা হয়।

রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র (সেন্টারস্‌ ফর ডিজিজ্‌ কন্ট্রোল অ্যাণ্ড প্রিভেনশন বা সংক্ষেপে সিডিসি) এবং আমেরিকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মহামারীবিদ্যার সোসাইটি (সোসাইটি ফর হেলথ্‌কেয়ার এপিডেমিয়োলজি অফ আমেরিকা) যৌথভাবে প্রতিবছর হাসপাতালজাত মহামারীবিদ্যার (হাসপাতালের অভ্যন্তরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ) ওপর একটি শিক্ষাক্রম চালু করেছে।

মান নির্ধারণ

অস্ট্রেলিয়া

২০০২ সালে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অফ জেনারেল প্র্যাকটিশনারস্‌, কার্যালয়ভিত্তিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি পরিমার্জিত মানক প্রকাশ করেছে যেটিতে অনাক্রম্যতার ব্যবস্থাপনা, নির্বীজকরণ এবং রোগ-নজরদারীর বিভাগগুলি সম্বন্ধে বলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি কেবলমাত্র হাতের স্বাস্থ্যবিধি, বর্জ্য এবং ক্ষৌমবস্ত্রের ব্যবস্থাপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে; এগুলি মোটেই পর্যাপ্ত নয়, কারণ কিছু প্যাথোজেন বায়ুজাত হয় এবং বায়ূদ্বারা বাহিত হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

বর্তমানে, জেনারেল বিধি অনুযায়ী, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ মানক ২৯ সি এফ আর পার্ট ১৯১০.১০৩০ রক্তবাহিত প্যাথোজেনে ধার্য করা হয়েছে।

আরো দেখুন

  • ২২ দেবনানি এম., কুমার আর, শর্মা আরকে, গুপ্তা এ কে। ভারতের একটি টার্শিয়ারী কেয়ার শিক্ষামূলক হাসপাতালের বহির্বিভাগে হস্ত-পরিচ্ছন্নতার সুবিধাগুলির ওপর করা একটি সমীক্ষা। J Infect Dev Ctries 2011;5(2):114-118.

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение