Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
সলুনার তত্ত্ব
সলুনার তত্ত্ব (ইংরেজি: Solunar Theory) হল একটি অনুকল্প যার মতে প্রাণী এবং মৎস তাদের দেহের সাপেক্ষে চাঁদের অবস্থান অনুসারে স্থান পরিবর্তন করে। ১৯২৬ সালে জন এ্যালডেন নাইট এই তত্ত্বটি প্রকাশ করলেও, প্রকাশের অনেক আগে থেকেই শিকারী ও মৎসজীবীদের মাঝে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে জানা যায়।
ইতিহাস
১৯২৬ সালের মে মাসে জন এ্যালডেন নাইট কিছু মাছ ধরার লোকাঁচার এবং উপাদানকে (যেমন সূর্য ও চাঁদ) একসাথে করে প্রাণীর চলাচলের ধরনের একটি তত্ত্ব দাঁড় করান। নাইট উপাদানসমূহের একটি তালিকা তৈরী করেন যা অনেক মিঠাপানি ও নোনাপানির মাছের প্রতিদিনকার আচরণকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবিত করে। প্রায় ৩৩ টি নানান ধরনের উপাদানকে বিবেচনায় আনা হয়েছিল। তিনটি ছাড়া বাকি সবগুলো বাতিল করে দেয়া হয়। এই তিনটি উপাদান হল সূর্য, চাঁদ ও জোয়ার-ভাটা। গোড়ার দিকে নোনা পানির ক্ষেত্রে জোয়ার-ভাটাকে মাছের আচরণ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হত। নাইটের গবেষণায় পাওয়া যায় যে, শুধু জোয়ার-ভাটা নয়, বরং চাঁদ ও সূর্যের পরস্পরের সাপেক্ষে অবস্থানও এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরূপক উপাদান। তার গবেষণা থেকে আরোও জানা যায়, চাঁদের উঠা-চাঁদের ডুবা ছাড়াও দিনের মধ্যবর্তী একটি সময় রয়েছে যা এই দুইটি প্রধান পর্যায়ের মাঝামাঝি সময় ঘটে। এ থেকে তিনি মূখ্য পর্যায় (চাঁদ উঠা-চাঁদ ডুবা) এবং গৌণ পর্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৬ সালে নাইট সর্বপ্রথম তার সলুনার সারণী প্রকাশ করেন।
সারণী
মাছ ধরা এবং বন্যপ্রাণী শিকারের জন্য মাসের উৎকৃষ্ট দিন এবং দিনের উপযুক্ত সময় নির্ধারণের জন্য মৎসজীবী এবং শিকারীরা সলুনার সারণী ব্যবহার করে থাকেন। মৎস শিকারীদের জন্য জোয়ার-ভাটা, সূর্যোদয়, এবং সূর্যাস্তের সময় জানাটা মাছের টোপ গেলার ক্ষণ জানার জন্য খুবই সহায়ক। জন্তু শিকারীদের জন্য জোয়ার-ভাটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কখন বন্যপ্রাণী সবচাইতে বেশি চলাচল করবে তা নির্ধারণের জন্য শিকারীরা সূর্য এবং চাঁদকেই বেশি ব্যবহার করে থাকেন। “অন্যান্য অবস্থা প্রতিকূল না হলে অন্যান্য সময়ের চেয়ে সলুনার দশায় মাছ খাবার খাবে, প্রাণীরা চলাচল করবে, পাখিরা গাইবে আর এক স্থান থেকে আরেক স্থানে উড়ে বেড়াবে, বস্তুত, সকল জীবিত বস্তু তুলনামূলক সক্রিয় হয়ে উঠবে।.... ছিপ দিয়ে যারা মাছ ধরেন তারা লক্ষ্য করলেন যে এটি হচ্ছে প্রতিদিনকার মাছ শিকারের সবচাইতে উপযুক্ত সময়ের পথপ্রদর্শক যা তাদের ক্রীড়াকে আরোও উন্নত করেছে...।” এই সারণী ব্যবহার করে একজন মৎসজীবী এবং শিকারী বলে দিতে পারেন কখন চাঁদ তাদের পদতলে আর কখন মাথার উপরে। সবচাইতে বেশি সক্রিয়তা দেখা যায় যখন ভরা অথবা নতুন চাঁদ থাকে আর সবচাইতে কম সক্রিয়তা পরিলক্ষিত হয় যখন এক-চতুর্থাংশ অথবা তিন-চতুর্থাংশ চাঁদ থাকে। এর কারণ হল চাঁদ ও সূর্যের মাধ্যাকর্ষণশক্তি তখনই সবচাইতে বেশি থাকে যখন তারা ঠিক আমাদের মাথার উপরে অথবা নিচে অবস্থান করে। নতুন প্রযুক্তির বদৌলতে এখন আরোও সঠিকভাবে সলুনার তত্ত্বের সাহায্যে মাছ এবং জন্তু শিকারের সময় বের করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত সারণীর তথ্যকে সময়ে সময়ে ইউএস নৌবাহিনী মানমন্দিরের লভ্য তথ্যের সাথে পুনরায় যাচাই করা এবং অন্যান্য প্রসিদ্ধ সলুনার তথ্য প্রদানকারীদের সাথে মিলিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জ্যোতিপদার্থবিদ্যার গণনার জটিল প্রকৃতি কারণে প্রচুর পরিমাণে অসঙ্গতি থেকে যেতে পারে। সকল তথ্য প্রদানকারীকে যাচাই করে নেয়া উচিত।