Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
আবেশিক অনুকর্ষী ব্যক্তিত্ব ব্যাধি
আবেশিক অনুকর্ষী ব্যক্তিত্ব ব্যাধি | |
---|---|
বিশেষত্ব | মনোরোগ বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান |
আবেশিক অনুকর্ষী ব্যক্তিত্ব ব্যাধি (ইংরেজিতে obsessive–compulsive personality disorder) একটি স্নায়বিক রোগ। এই রোগ হলে রোগীর সার্বক্ষনিক অনাকাঙ্ক্ষিত, অবাঞ্ছিত ও পীড়াদায়ক চিন্তা মাথার মধ্যে আসে, যাকে আবেশ (ইংরজিতে অবসেশন) বলে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত চিন্তার জন্য রোগীর মনে অস্বস্তি, আশঙ্কা, ভয় অথবা বিষণ্ণতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বিষণ্ণতা থেকে সাময়িক মুক্তির জন্য রোগী এক কাজ বার বার করে থাকে, যাকে অনুকর্ষ (ইংরেজিতে কম্পালশন)। এর ফলে অনেক সময় আবেশ ও অনুকর্ষ দুটোই সৃষ্টি হয়। এই রোগীর বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ধোয়ামোছা বা পরিষ্কার করা, বার বার কোন কিছু পরীক্ষা করা বা অতিরিক্ত রক্ষণশীলতা। মূলত, আবেশিক অনুকর্ষী ব্যক্তিত্ব ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের কাজকর্ম একধরনের মানসিক বৈকল্য ও স্নায়বিক। ভুক্তভোগীদের মূলত অযৌক্তিক আবেশ ও অনুকর্ষ দ্বারা শনাক্ত করা হয়। রোগীরা রোগের অযৌক্তিকতা বুঝতে পারে এবং তারা প্রায়ই এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে।
এই ব্যাধি একটি দীর্ঘস্থায়ী অ-অভিযোজিত ধরন, যা সারাক্ষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সাথে সম্পর্কিত। রোগীরা সাধারণত অনমনীয় ও চারপাশের পরিবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে, বিশেষ করে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এই ব্যাধি সাধারণ জনসংখ্যার প্রায় ১% হয়। এটা মানসিক রোগীদের মধ্যে ৩-১০% এর মধ্যে দেখা যায়। আর তা প্রায়শই পুরুষদের মধ্যে দেখা দেয়।
রোগের লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য
আবেশ
আবেশ বলতে সোজা কথায় কোন কাজ করতে বাধ্য করে এমন চিন্তা বলা হয়। এগুলো এমন চিন্তা যা রোগী চিন্তা করতে চায় না কিন্তু সেই চিন্তা বার বার রোগীর মনে এসে তাকে যন্ত্রণা দেয়। রোগীরা নির্দিষ্ট কোন কাজ করে আর এ ধরনের কাজ করে বিষণ্ণতা থেকে সাময়িক শান্তি লাভ করে। এ ধরনের কাজকে অনুকর্ষ (কম্পালশন, Compulsion) বলা হয়। আবেশকে যন্ত্রণাদায়ক চিন্তা বলা হয়। প্রত্যেক রোগীর মধ্যে প্রাথমিকভাবে আবেশ বা বাধ্যকারী চিন্তা খুব স্পষ্ট ও তীব্রভাবে দেখা যায়। জীবন চলার পথে রোগীর বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই বাজে চিন্তাগুলো। আরও তীব্রভাবে যদি আবেশ দেখা দেয় তবে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়। যদি রোগীর অবস্থা আরও জটিল হয়, তবে ভুক্তভোগীর মনকে কোন চিন্তা অথবা তার প্রিয় কোন মুমূর্ষু কোন ব্যক্তির ছবি তার মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে। আবার কোন কোন রোগীর মনে অনেক সময় ঈশ্বর, শয়তান কিংবা কোন রোগ নিয়ে অবাঞ্ছিত চিন্তা আসে। আক্রান্ত রোগী মনে করে যে, ঈশ্বর, শয়তান কিংবা ওই রোগ তার অথবা তার কোন প্রিয় ব্যক্তির ক্ষতি করবে। অনেকের আবার ক্ষতিকর বস্তু ব্যবহার করে নিরাপদ থাকার প্রবণতা দেখা দেয়। অনেকে আবার যৌন আবেশ (সেক্সুয়াল অবসেশন) নামক ব্যাধিতে ভোগে। তাদের মনে নানা চিন্তা আসে যা তাদের নির্দিষ্ট কোন কাজ করতে বাধ্য করে। তাদের মনে অনেক সময় যৌন চিন্তা আসে । তাদের মনে অনেক সময় মা-বাবা, ছেলেমেয়ে, আগন্তুক, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নানা বাজে চিন্তা আসে। তাদের মনে এমন ছবি আসে যে তারা সেই মানুষগুলোর সাথে চুম্বন, সহবাস, পায়ু যৌন কর্ম করছে। রোগীর মনে অনেক সময় যেকোনো বয়সের ব্যক্তিকে নিয়ে বিষম বা সমকামিতামূলক চিন্তা আসতে পারে। এ চিন্তা সাধারণ যেকোনো ব্যক্তির মনেই আসতে পারে তবে তারা সেই চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারে কিন্তু ভুক্তভোগীদের মনে সারাক্ষণই এসব চিন্তা আসে। মনের এসব চিন্তা তাদের জন্য অনেকটা অস্বস্তিকর। এসব চিন্তা আসলে রোগী নিজেকে পাপী মনে করে। আবেশের ফলে রোগী যৌন পরিস্থিতিকে ভয় পেতে থাকে। রোগী তো বটেই এমনকি তার আশেপাশের মানুষরাও নিজের যৌন পরিচয় নিয়ে বিব্রত বোধ করে। তাছাড়া, অনেক সময় সন্দেহবাতিক রোগীদের মধ্যে দেখা যায়। রোগী এ সময় নিজেকে পাপী ও অসহায় মনে করে । মূলত এসব রোগীর অসুস্থ মস্তিষ্কের চিন্তাধারার জন্য সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগী জানে যে তার এসব চিন্তা বাস্তবের সাথে খাপ খায় না তথাপি তাদের আচরণে মনে হয় তারা এই বিষয়টা বিশ্বাস করছে।
অনুকর্ষ
রোগীর মন নির্দিষ্ট কোন সংখ্যার ওপর বিতৃষ্ণা বা অনুরাগ জন্মাতে পারে। অনেকে আবার উত্তেজনাপূর্ণভাবে অনেক আচার বা কাজ কঠোরভাবে পালন করে। যেমন, ঘরে প্রবেশের আগে অনেক রোগী ১০ বার/ ১৫ বার, অর্থাৎ নির্দিষ্ট কয়েক বার দরজা খোলে ও বন্ধ করে। অনেকে ঘর থেকে বের হওয়ার আগেও এই কাজটি করে। এই কাজ না করলে রোগীর মনে অস্বস্তি প্রবেশ করে। আবার অনেকের মনে অযাচিত ভয় আসে। যেমন, অনেকে মনে করে আমি আর কখনও ঘুমাতে বা বই পড়তে পারব না। অনেকে আবার একবার কোন কিছু লিখে বার বার তা সৌন্দর্যমন্ডিত করতে চেষ্টা করে । এর ফলে লেখাটা একটা বিশ্রী রূপ ধারণ করে । এই লক্ষণগুলোর ফলে রোগী সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তার সময়ের প্রচুর অপচয় হয় । ফলে তার কাজের, পড়ালেখার দারুণ ক্ষতি হয় । এর ফলে রোগী কঠোর মানসিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশার সম্মুখীন হয়।