আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) বা কাঁচের ভেতর নিষেক (ভিট্রো = কাঁচ, ইন ভিট্রো = কাঁচের ভেতর) বা টেস্ট টিউব পদ্ধতি হচ্ছে মানবদেহের বাইরে শুক্রাণুর দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত করার পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করে থাকেন অাবার অনেক নারী সারোগেসি বা নিজ গর্ভ ভাড়া দিয়ে তাতে অন্য দম্পতির নিষিক্ত ভ্রুণ (সন্তান) ধারণ ও লালন করেন। আই.ভি.এফ (IVF) বা টেস্ট টিউব চিকিৎসা পদ্ধতির সফল পদযাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যে লুইস ব্রাউনের জন্মের মধ্য দিয়ে। এই বাচ্চাটির ক্ষেত্রে নিষেক করা হয়েছিল একটি টেস্ট টিউবে। প্রকৃতপক্ষে ভ্রণ টেস্টটিউবে বেড়ে ওঠে না, বাড়ে মায়ের জরায়ুতেই আর দশটি বাচ্চার মতোই। এ পদ্ধতিতে পুরুষের শুক্রাণু আর নারীর ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণটুকুই শুধু স্বাভাবিক পদ্ধতিতে না হয়ে দেহের বাইরে হয়। স্ত্রীর ডিম্বপাত বা ওভুলেশনের সময় ডিম্বাণু যখন পরিপক্ব হয়, তখন তা ডিম্বাশয় থেকে বের করে আনা হয় ল্যাপারোস্কপি নামের এক পদ্ধতির মাধ্যমে। যে সব নারীর ডিম্ব উৎপাদনে সমস্যা, তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে ডিম্ব উৎপাদনে সহায়তা করে এমন কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ল্যাপারোস্কপি ছাড়াও যোনিপথে ছোট্ট একটি অপারেশনের মাধ্যমেও ডিম্বাণু সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহের পর ডিম্ব রাখা হয় টেস্ট টিউব অথবা বিশেষ ধরনের একটি পাত্রে যার নাম পেট্রিডিশ। এদিকে স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। পরে ডিম্বাণুসহ সেই ডিশ বা টিউবে শুক্রাণু রাখা হয়। এ সময় একটি ডিম্বাণুর বিপরীতে থাকে প্রায় পঁচাত্তর হাজার শুক্রাণু। এরপর ডিশ বা টিউবটি কয়েক ঘণ্টা রাখা হয় ইনকিউবিটরে। ইনকিউবেটরের পরিবেশ রাখা হয় জরায়ুর অনুরূপ। এখানে উপযুক্ত শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর নিষেকের ফলে মানব ভ্রুনের সৃষ্টি হয়। তারপর বিশেষ নলের সাহায্যে স্ত্রীর জরায়ুতে রাখা হয় ভ্রণটি। অনেক ক্ষেত্রে, ভ্রণকোষটি জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের আগে বিশেষ প্রক্রিয়ায় হিমায়িত করে রাখা হয় কিছুদিন। বিশেষতঃ যাদের ক্ষেত্রে ডিম্ব উৎপাদন করা হয় ওষুধের সাহায্যে, তাদের জরায়ুর প্রকৃতি ঐ মাসিক চক্রে স্বাভাবিক থাকার সম্ভাবনা কম থাকে। সে কারণে ভ্রণ প্রতিস্থাপনের জন্য পরবর্তী স্বাভাবিক মাসিক চক্রের জন্য অপেক্ষা করা হয়। সব ভ্রণ অবশ্য কাজে লাগানো হয় না। গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে এদের গুণগত মান পরীক্ষা করে স্কোরিং করা হয়। ভ্রণে কোষের সংখ্যা যথাযথ বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধির গতির উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত ভ্রণ বাছাই করা হয়।
ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী স্বামী ব্যতীত অন্য কারো থেকে স্পার্ম সংগ্রহ করা সম্পূর্ণ হারাম।
ধর্মীয় প্রতিক্রিয়া
বৈধতা