Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর গবেষণাগার ফাঁস অনুমান
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর গবেষণাগার ফাঁস অনুমানটিতে দাবি করা হয় যে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ রোগ সৃষ্টিকারী সার্স-কোভি-২ ভাইরাসটি চীনের উহান শহরের একটি গবেষণাগার থেকে, বিশেষ করে উহান ভাইরাসবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে ফাঁস হয়ে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর বৈশ্বিক মহামারীটির সৃষ্টি হয়েছে। চীনের হুপেই প্রদেশের উহান শহর, যেখানে কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, তার সন্নিকটেই উহান ভাইরাসবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটটি অবস্থিত - এই অপ্রত্যক্ষ বা আনুষঙ্গিক সাক্ষ্যপ্রমাণের উপরে ভিত্তি করে এই অনুমানটি বিবৃত করা হয়েছে। এছাড়া গবেষণাগার ফাঁসের আরও কিছু অনুমান আছে (যাদের মধ্যে ভাইরাসটি "মানবনির্মিত" বলে দাবিকারী অনুমানগুলিও অন্তর্ভুক্ত) যেগুলি দূরকল্পনা কিংবা বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্যপ্রমাণের ভ্রান্ত উপস্থাপনের উপর ভিত্তি করে বিবৃত হয়েছে। উহান ভাইরাসবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা যে সার্স-জাতীয় করোনাভাইরাসসমূহ সংগ্রহ করেছেন, সে সম্পর্কে প্রাপ্ত সংবাদ এবং তাঁরা হয়ত ঐসব ভাইরাসের উপরে ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু অপ্রকাশিত গবেষণা করে থাকতে পারেন, এই প্রমাণহীন অভিযোগটি মিলে এই গবেষণাগার ফাঁস অনুমানটির মূল অংশটি গঠিত হয়েছে।
ভাইরাসটি যে দুর্ঘটনাক্রমে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে গবেষণাগার থেকে উদ্ভূত হয়েছে, এই ধারণা বা মতটি বৈশ্বিক মহামারীর শুরুতেই আবির্ভূত হয়েছিল। ২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টি দলের কিছু সদস্য, মার্কিন রক্ষণশীল সংবাদমাধ্যম, ইত্যাদি বেশ কিছু ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের প্রচারণার কারণে ধারণাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও বিশ্বের অন্যত্র জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এই মতটিকে ব্যাপকভাবে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির উৎস সংক্রান্ত তার নিজস্ব প্রতিবেদনে দুর্ঘটনাবশত ফাঁস হবার সম্ভাবনাটি তদন্ত করে দেখে এবং এরকম ফাঁস হওয়ার ঘটনাকে "অত্যন্ত অসম্ভাব্য" (extremely unlikely) হিসেবে বর্ণনা করে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানোম বলেন যে সংস্থাটির উপসংহার চূড়ান্ত নয় এবং তদন্তকারীদেরকে কিছু উপাত্ত দিতে অস্বীকার করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরে ভাইরাস ফাঁসের ধারণাটি আবার মার্কিন গণমাধ্যম ও জনগণের মনোযোগে ফেরত আসে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলিকে এই ব্যাপারটি পুনরায় অনুসন্ধানের আদেশ দেন। তেদ্রোস পরবর্তীতে উহান এলাকার "প্রাসঙ্গিক গবেষণাগারসমূহ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরীক্ষণের" আহ্বান জানান। চীন আহ্বানটিকে "অসম্মানজনক" ও "বিজ্ঞানের প্রতি ঔদ্ধত্য" প্রকাশ হিসেবে বর্ণনা করে সেটিকে প্রত্যাখ্যান করে।
ভাইরাসবিজ্ঞান ও আণবিক জীববিজ্ঞান ক্ষেত্রে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের সিংহভাগই গবেষণাগার ফাঁস অনুমানটি সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন। তারা এটিকে একটি সুদূর সম্ভাবনা হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে অনুমানটিকে সমর্থনকারী সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব রয়েছে। কোনও কোনও গবেষক এটিকে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। বেশিরভাগ বিজ্ঞানীই একমত যে সার্স-কোভি-২ ভাইরাসের প্রাকৃতিক উৎপত্তির অনুমানটি সঠিক হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কিছু বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের রাজনৈতিকীকরণ ও মেরুকরণের ঝুঁকির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হলেও এ ব্যাপারে একমত যে গবেষণাগার ফাঁসের সম্ভাবনাটিকে চলমান কোভিড-১৯-এর উৎস অনুসন্ধান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরীক্ষা করে দেখা উচিত।