কীটতত্ত্ব
কীটতত্ত্ব (বা কীটবিজ্ঞান বা কীটবিদ্যা; ইংরেজি: Entomology) প্রাণীবিজ্ঞানের ফলিত শাখা যেখানে কীট বা পোকা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়সমুহ বৈজ্ঞানিক উপায়ে আলোচনা করা হয়। কীটতত্ত্ব শব্দটি ইংরেজী Entomology শব্দের প্রতিশব্দ। Entomology শব্দটি দুটি গ্রীক শব্দ Entomon অর্থ insect বা কীটপতঙ্গ এবং logos অর্থ knowledge বা জ্ঞান বা আলোচনা থেকে এসেছে। এটি প্রাণিবিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা কীটপতঙ্গ সম্বন্ধে আলোচনা করে। সুতরাং প্রাণিবিজ্ঞানের যে শাখায় কীটপতঙ্গের উৎপত্তি ও বিস্তৃতি, দৈহিক গঠন, পরিস্ফুটন, শ্রেণিবিন্যাস, পরিবেশ, বিবর্তন, অর্থনৈতিক গুরুত্ব প্রভৃতি সম্বন্ধে আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা করা হয় তাকে কীটতত্ত্ব বলে।
আলোচ্য বিষয় সমূহ
প্রাণিবিদ্যার অন্যান্য শাখার মতোন কীটবিজ্ঞান একটি ট্যাক্সন-ভিত্তিক বিভাগ। যেকোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ণ, যাতে কীট সম্বন্ধীয় অনুসন্ধানের উপর আলোকপাত করা হয়, সংজ্ঞানুসারে তাকে কীটবিজ্ঞান বলে। সে কারণে কীটবিজ্ঞানের আলোচনার মধ্যে নানান বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে যেমন, আণবিক জিনতত্ত্ব, আচরণ, বায়োমেকানিকস, জৈব রসায়ন, সিসটেমেটিক্স, শারীরবিদ্যা, বিবর্তনশীল জীববিদ্যা, ইকোলজি|বাস্তুবিদ্যা, অঙ্গসংস্থানবিদ্যা, জীবাশ্মবিজ্ঞান, গণিত, নৃবিজ্ঞান, রবোটিক্স, কৃষি, পুষ্টি, ফরেনসিক বা বিচারসহায়ক বিজ্ঞান, ইত্যাদি।
কীট
কীটপতঙ্গ এক ধরনের খন্ডায়িত প্রাণী। এগুলা আর্থ্রোপোডা বা সন্ধিপদী পর্বের অন্তর্গত ইনসেক্টা শেনীর সদস্য যেগুলো প্রাণিজগতের বৃহত্তম গোষ্ঠী। প্রায় ১৩ লক্ষ বর্ণনাকৃত প্রজাতির মধ্যে কীট হল জানা জীবের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরও অধিক। ৪০ কোটি বছরেরও পুরনো ইতিহাসধারী এই কীটের সাথে মানুষ এবং অন্যান্য জীবের জীবন ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে।
অতীতে “পতঙ্গ” শব্দটি অধিক অস্পষ্ট ছিল, এবং ঐতিহাসিকভাবে কীটবিজ্ঞানের সংজ্ঞার মধ্যে অন্যান্য পর্বের বা আর্থ্রোপোড দলের স্থলজ প্রাণী, যেমন আরাকনিড, মিরিয়াপোড, কেঁচো, স্থল শামুক, এবং স্লাগের অধ্যয়নও অন্তর্ভুক্ত ছিল। বৃহৎ পরিসরে অনানুষ্ঠানিকভাবে এখনও কীট বুঝাতে এসবকেও বুঝানো হয়।