Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
কৃষিবনবিদ্যা
কৃষিবনবিদ্যা (ইংরেজি: Agroforestry) হল বৃক্ষ ও গুল্মের সাথে শস্য এবং/ অথবা পশুসম্পত্তির সমণ্বয় থেকে মিথষ্ক্রিয় উপকার ব্যবহার করার একটি সংহত দৃষ্টিকোণ। অধিকতর বৈচিত্রপূর্ণ, উৎপাদনশীল, লাভজনক, সাস্থ্যবান, এবং টেকসই ভূমি-ব্যবহার পদ্ধতি সৃষ্টির লক্ষ্যে এটি কৃষি ও বনবিদ্যার প্রযুক্তিকে সমণ্বিত করে। কৃষিবনবিদ্যার একটি সীমাবদ্ধ সংজ্ঞা হল, “খামারে বৃক্ষ।”
বিজ্ঞান হিসেবে
কৃষিবনবিদ্যার তত্ত্বীয় ভিত্তি মূলত কৃষিবাস্তুবিদ্যার হাত ধরে বাস্তুবিদ্যা থেকে এসেছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, কৃষিবনবিদ্যা হচ্ছে তিনটি প্রধান ভূমি-ব্যবহার বিজ্ঞানের একটি। অপর দু’টি হল কৃষি ও বনবিদ্যা।
আলোর তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে সালোকসংশ্লেষণের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে, এবং একবার এই আলোক তীব্রতা মধ্যগগণের সরাসরি সূর্যালোকের এক দশমাংশের উপরে উঠে গেলে সালোকসংশ্লেষণের হার কদাচিৎ বাড়তে দেখা যায়। এর মানে দাঁড়ায়, বৃক্ষের নিচের উদ্ভিদরাজি কম আলোতেও বেশ ভালো বাড়তে পারে। একের অধিক উদ্ভিদস্তর, বৃক্ষের কেবলমাত্র একটি স্তরের চেয়ে আরোও কার্যকারিতার সাথে সালোকসংশ্লেষণ সম্পন্ন করতে সক্ষম।
কৃষিবনবিদ্যার অনেক বিষয় বহুশস্যফলন বা ইন্টারক্রপিংয়ের সাথে মিলে যায়। দুটোর ক্ষেত্রেই একের অধিক উদ্ভিদ প্রজাতি (যেমন নাইট্রোজেন-সংবন্ধি উদ্ভিদ) কাছাকাছি আন্তঃক্রিয়ারত থাকে এবং দুটোই বহুমুখী উৎপাদন প্রদান করে যার ফলে সামগ্রিকভাবে উচ্চফলন সম্ভব হয়। যেহেতু এক খরচেই কাজ চলে, সেহেতু উৎপাদন ব্যয়ও কমে আসে। এছাড়াও কৃষিবনবিদ্যার নিজস্ব কিছু লাভ রয়েছে। কৃষিবনবিদ্যাকে উদ্দেশ্যমূলক ভূমি ব্যবস্থাপনা একক হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয় যে ব্যবস্থাপনায় বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠল উদ্ভিদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কয়েকধরনের স্থানিক বিন্যাস ও কালিক অনুক্রমে, কৃষিজ শস্য এবং/ অথবা পশুসম্পত্তির সাথে, একই ভূমিখন্ডে জন্মানো হয়।
সুবিধা
কৃষিবনবিদ্যার পদ্ধতি প্রথাগত কৃষি এবং বন উৎপাদন পদ্ধতির চেয়েও উপাকারি হতে পারে। এর মাধ্যমে অধিক উৎপাদন, অর্থনৈতিক লাভ, এবং পরিবেশগত দ্রব্য ও পরিষেবার অধিকতর বৈচিত্র পাওয়া সম্ভব।
প্রথাগত কৃষি পদ্ধতির চেয়ে কৃষিবনবিদ্যা পদ্ধতিতে সাধারণত জীববৈচিত্রের পরিমাণ বেশি হয়। একটি জমিতে দুই বা ততোধিক আন্তক্রিয়াশীল উদ্ভিদ প্রজাতি এমন এক জটিল আবাসের সৃষ্টি করে যা হরেক রকমের খেচর, কীট, এবং অন্যান্য প্রাণীকে আশ্রয় দিতে সক্ষম হয়। প্রয়োগের দিক দিয়ে চিন্তা করলে, কৃষিবনবিদ্যার সম্ভাব্য প্রভাব হতে পারেঃ
- গৃহের চাহিদা মেটানো এবং বিক্রির উদ্দেশ্যে কাঠ এবং অন্যান্য বৃক্ষ দ্রব্যের অধিক উৎপাদনের মাধ্যমে দরিদ্রতা দূরীকরণ
- খাদ্যশস্যের জন্য ভূমির উর্বরতা পুনরুদ্ধার করার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অংশগ্রহণ
- পুষ্টি ও ভূমির গড়ানো জল বা রানঅফের তীব্রতা কমানোর মাধ্যমে অধিকতর পরিষ্কার পানির জোগান
- খরা সহিষ্ণু বৃক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলস্বরুপ পরবর্তীকালে ফল, বাদাম ও ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়িয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ ও ক্ষুধার ঝুঁকি মোকাবেলা
- খামারে জন্মানো জ্বালানিকাঠের যোগান দিয়ে নির্বনায়ন ও কাষ্ঠভূমির উপর চাপ কমানো
- বিষাক্ত রাসায়নিকের (কীটনাশক, তৃণনাশক, ইত্যাদি) প্রয়োজনীয়তা হ্রাস বা দূর করা
- খামারের বৈচিত্রপূর্ণ উৎপাদনের মাধ্যমে মানবিক পুষ্টির উন্নয়ন
- যেসব পরিস্থিতিতে মূলধারার চিকিৎসাসেবায় মানুষের প্রবেশ সীমিত, সেসব ক্ষেত্রে ওষধি উদ্ভিদের জন্য উদ্ভেদি স্থান যোগান দেয়া
এছাড়াও কৃষিবনবিদ্যার অনুশীলন বেশ কিছু সংশ্লিষ্ট পরিবেশগত লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করে, যেমনঃ
- কার্বন ধরে রাখা বা কার্বন সিকুয়েস্ট্রেসন
- দুর্গন্ধ, ধূলিকণা, এবং উচচমাত্রার শব্দ হ্রাস
- বণ্যপ্রাণির আবাসস্থলের উন্নতকরণ বা রক্ষণাবেক্ষণ
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে
সাম্প্রতিককালে, ক্ষুদ্র জমির মালিক দরিদ্র কৃষকেরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অভিযোজন হিসেবে কৃষিবনবিদ্যার দিকে ঝুঁকছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার (সিসিএএফেস) উপর সিজিআইএআর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, পূর্ব আফ্রিকার ৭০০ এর বেশি পরিবারের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ পরিবার তাদের খামারে নিজস্ব অনুশীলনের পরিবর্তনস্বরুপ ১০ বছর আগে থেকেই বৃক্ষরোপন শুরু করেছিল। স্বাভাবিক আহরণ ছাড়াও ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করে, পানি এবং মাটির গুণাগুণ বাড়িয়ে, এবং ফলফলাদি, চা, কফি, তেল, পশুখাদ্য এবং ওষধী দ্রব্যের উৎপাদনের যোগান দিয়ে, বৃক্ষ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উন্নতিসাধন করে থাকে। উন্নত শস্য প্রকরণ এবং বহুশস্যফলন বা ইন্টারক্রপিংয়ের ব্যবহার ছাড়াও কৃষিবনবিদ্যাকে গৃহীত অন্যতম অভিযোজন কৌশল হিসেবে ঐ গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রয়োগ
প্রয়োগ ও অনুশীলনের ক্ষেত্রে কৃষিবনবিদ্যার ব্যাপক বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়। একটি তালিকায় এর ৫০ টিরও বেশি স্বতন্ত্র ব্যবহারের উল্লেখ করা হয়েছে। এই ৫০ টির মতো প্রয়োগকে কয়েকটি প্রধান শিরোনামের অধীনে শ্রেণীবিন্যাস করা যেতে পারে। বিভিন্ন বিভাগের প্রয়োগগুলোর মধ্যে চাক্ষুষ মিল রয়েছে। কারণ, এসব ভাগকে সাধারণত সমস্যার ধরন (বায়ু, উচ্চ বৃষ্টিপাত, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ, ইত্যাদির মোকাবেলা) এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা ও উদ্দেশ্যকে (শ্রমিক ও অন্যান্য উৎপাদন ব্যয়, উৎপাদন প্রয়োজনীয়তা, ইত্যাদি) ঘিরেই সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভাগগুলো হলঃ
- উদ্যানভূমি
- আলোছায়ার পদ্ধতি
- ক্রপ-অভার-ট্রি পদ্ধতি
- অ্যালে শস্যফলন
- ফালা বা স্ট্রিপ শস্যফলন
- প্রাণীকুল ভিত্তিক পদ্ধতি
- সীমানা পদ্ধতি
- তংগিয়া
- ভৌত অবলম্বন পদ্ধতি
- কৃষিবন
- বায়ুপ্রতিরোধ এবং আশ্রয়বেল্ট
উদ্যানভূমি
বিস্তৃত কৃষিজমি অথবা চারণভূমি জুড়ে বিক্ষিপ্ত গাছের উপস্থিতি দিয়ে চাক্ষুষভাবে উদ্যানভূমিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এসব উদ্যানভূমিতে সচরাচর আঞ্চলিকভাবে সমাদৃত একটিমাত্র বৃক্ষ প্রজাতির উপস্থিতি দেখা যায়। সুবিধাস্বরুপ এসব বৃক্ষ চারণ-পশুকে ছায়া দেয়, শক্তিশালি বাতাসের ঝাঁকুনি থেকে শস্যকে রক্ষা করে, জ্বালানি হিসেবে ছাটাইয়ের ডালপালা সরবরাহ করে, এবং কীটপতঙ্গ ও বীবর-ভক্ষক পাখিকুলের আশ্রয় হিসেবে কাজ করে।
এর অন্যান্য সুবিধাও রয়েছে। জাম্বিয়াতে Faidherbia albida প্রজাতির উপর গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, পরিপক্ব অবস্থায় এই বৃক্ষ প্রতি হেক্টরে ৪.১ টন ভুট্টা উৎপাদন করতে সক্ষম যেখানে এই বৃক্ষ ব্যতীত প্রতি হেক্টরে মাত্র ১.৩ টন উৎপাদন সম্ভব। অন্যান্য বৃক্ষের বিপরীতে Faidherbia তার নাইট্রোজেন -সমৃদ্ধ পাতাসমূহ বর্ষাকালিন শস্য জন্মানোর সময় ঝরিয়ে দেয় যে কারণে সে আলো, পুষ্টি ও পানির জন্য ঐসকল শস্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে না। শুষ্ক ঋতুতে আবার এর পাতা গজায় এবং শস্যকে ভূমি আবরণ ও ছায়া প্রদান করে।
আলোছায়ার পদ্ধতি
আলোছায়া পদ্ধতিতে শস্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বৃক্ষের চাঁদোয়ার নিচে ছায়াযুক্ত পরিবেশে বাড়তে দেয়া হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, নিচের শস্য ছায়াসহিষ্ণু হয় অথবা উপরের বৃক্ষ মোটামুটি উন্মুক্ত চাঁদোয়ার হয়। এর সুস্পষ্ট একটি উদাহরণ হল ছায়ায় বেড়ে উঠা কফি। এই অনুশীলন আগাছাদমনের ব্যয় কমায় এবং কফির গুণগত মান ও স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।
ক্রপ-অভার-ট্রি পদ্ধতি
সচরাচর দেখা না গেলেও এই পদ্ধতি বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠল উদ্ভিদকে আবরণী-শস্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ করে। এজন্য পাশের ভূমি উচচতায় ছাটাইকৃত ছোটখাটো গুল্ম অথবা বৃক্ষকে ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য আবরণী-শস্যের মতোই এর উদ্দেশ্য হল মাটির মধ্যকার পুষ্টি বৃদ্ধি এবং/ অথবা ভূমিক্ষয় হ্রাস।
অ্যালে শস্যফলন
অ্যালে শস্যফলনের ক্ষেত্রে, ঘনসন্নিবিষ্ট বৃক্ষ অথবা হেজ প্রজাতির সারির মাঝখানে শস্যের চাষ করা হয়। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বৃক্ষ সারির সাথে শস্যের ফালার একান্তরকরণ করা হয়। সাধারণত শস্য রোপনের পূর্বে বৃক্ষগুলোকে ছাটাই করা হয়। কর্তনকৃত পত্রময় উপাদানসমূহ শস্যকে পুষ্টি পযোগানোর লক্ষ্যে শস্য এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। পুষ্টির যোগান ছাড়াও গাছের সাড়ি বায়ুপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে এবং ভূমিক্ষয় রোধ করে।
আফ্রিকাতে, বিশেষত সাহারা-নিম্ন এলাকায় ভুট্টা উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে অ্যালে শস্যফলন বিশেষ সুবিধার সৃষ্টি করেছে। এসব অঞ্চলে যেসব নাইট্রোজেন-সংবন্ধি বৃক্ষ প্রজাতির উপর নির্ভর করা হয় সেগুলো হল Sesbania sesban, Tephrosia vogelii, Gliricidia sepium এবং Faidherbia albida. এর একটি সফল উদাহরণ হল মালাউইতে দশ বছর ধরে করা একটি গবেষণা, যেখানে সারবৃক্ষ, যেমন Tephrosia vogelii এবং Gliricidia sepium, ব্যবহার করে প্রতি হেক্টরে গড়ে ৩.৭ টন ভুট্টার ফলন হয়েছে, অথচ একই এলাকায় সারবৃক্ষ বা অজৈব সার ব্যতীত প্রতি হেক্টরে এক টনের বেশি উৎপাদন সম্ভব হতো না।
ফালা বা স্ট্রিপ শস্যফলন
স্ট্রিপ শস্যফলন বস্তুত অ্যালে শস্যফলনের মতোই, যেখানে বৃক্ষকে শস্যের সাথে একান্তরকরণ করা হয়। তফাৎটা হল এই, অ্যালে শস্যফলনের ক্ষেত্রে বৃক্ষগুলো এক সারিতে থাকে। স্ট্রিপ শস্যফলনে বৃক্ষ অথবা গুল্মকে বিস্তৃত ফালাতে বা স্ট্রিপে রোপন করা হয়। অ্যালে শস্যফলনের মতোন এ ধরনের পদ্ধতির উদ্দেশ্যও সাধারণ পাতার আকারে শস্যকে পুষ্টি সরবরাহ করা। স্ট্রিপ শস্যফলনের ক্ষেত্রে, একইসময়ে ভূমিক্ষয় ও ক্ষতিকর বায়ুপ্রবাহের হাত থেকে শস্যকে সুরক্ষা দেয়ার সাথে সাথে বৃক্ষের ভূমিকা এখানে সম্পূর্ণরূপে উৎপাদনমুখী হতে পারে, যেমন ফলফলাদি, বাদাম, ইত্যাদির যোগান দেয়া।
প্রাণীকুল ভিত্তিক পদ্ধতি
অনেক সময় বৃক্ষ প্রাণীকুলের উপকার করে। এর সবচাইতে জনপ্রিয় উদাহরণ হচ্ছে বনচারণ বা সিলভোপাষ্চার, যেখানে গবাদিপশু, ছাগল, অথবা ভেড়া বৃক্ষের তলে জন্মানো ঘাস খেয়ে জীবনধারণ করে। উষ্ণ জলবায়ুতে যখন অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও ছায়াময় পরিবেশে চরে বেড়ায়, পশুর ধকল কম হয় এবং দ্রুত ওজন আহরণ করে।
অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও একই ধরনের ব্যবস্থা আছে। হরিণ এবং শূকর বন বাস্তুতন্ত্রে বসবাসের বা খাওয়ার সময়, বিশেষত, যখন বৃক্ষের খাদ্য সরবরাহ তাদের খাদ্যতালিকার সাথে মিলে যায়, তখন উপকার পায়। আরেক ধরনের ব্যবস্থা হল জলবনবিদ্যা বা এ্যাকুয়াফরেস্ট্রী যেখানে বৃক্ষ মাছের পুকুরকে ছায়া দেয়। অনেক ক্ষেত্রে মাছ বৃক্ষের পাতা অথবা ফল ভক্ষণ করে।
সীমানা পদ্ধতি
সীমানা পদ্ধতির শিরোনামের অধীনে কয়েক ধরনের প্রয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে আছে জীবন্ত বেড়া, নদীতীরবর্তী বন বা বাফার, এবং বায়ুপ্রতিরোধী গাছের সারি বা উইন্ডব্রেক।
- একটি জীবন্ত বেড়া হতে পারে জীবন্ত বৃক্ষকে ঘিরে পুরু একটি বেড়া অথবা এর উপর গ্রন্থিত বেড়ার তার। মানুষ এবং প্রাণীর চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ছাড়াও এসব জীবন্ত বেড়া পতঙ্গভুক পাখির আবাসরূপে কাজ করে। সীমানা বেড়ার ক্ষেত্রে ভূমিক্ষয় কম হয়।
- নদীতীরবর্তী বাফার হল সক্রিয় জলপ্রণালী অথবা খানাখন্দের তীর ধরে অবস্থিত স্থায়ী গাছপালা। এর উদ্দেশ্য হল পুষ্টি ও মাটির হাত থেকে পৃষ্ঠজলের দূষণ প্রতিরোধ।
- উইন্ডব্রেক শস্যের উপর ও চারিদিকে বায়ুর বেগ কমিয়ে আনে। শস্যের শুকিয়ে যাওয়া হ্রাস করে এবং শক্তিশালি দমকা বাতাসে শস্যের হুমড়ি খাওয়া প্রতিরোধের মাধ্যমে এটি উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
তংগিয়া
তংগিয়া একটি পদ্ধতি যা বার্মাতে উৎপত্তি হয়েছে। বাগান অথবা বৃক্ষরোপনের প্রাথমিক পর্যায়ে বৃক্ষগুলো সাধারণত ছোট আকারের হয় এবং প্রশস্ত স্থান নিয়ে ছড়িয়ে থাকে। নতুন লাগানো এসব বৃক্ষের মাঝের খালি জায়গাগুলোতে মৌসুমি শস্য ফলানোর মতো যথেষ্ট স্থান রয়ে যায়। ব্যয়বহুল আগাছাদমনের বদলে এসব অব্যবহৃত জায়গা থেকে বাড়তি উৎপাদন ও আয় সম্ভব। অধিকতর জটিল তংগিয়াতে ক্রমানুসারে শস্যৎপাদনের জন্য বৃক্ষমধ্য স্থান ব্যবহার করা হয়। যেহেতু বৃক্ষের চাঁদোয়া বাড়ার সাথে সাথে ভূমিতে আসা সূর্যালোকের পরিমাণ কমতে থাকে, শস্যগুলো আরোও ছায়াপ্রতিরোধী হয়ে উঠে। পরবর্তী পর্যায়ে যদি বৃক্ষের পাতলাকরণ করা হয় তবে তা বৃক্ষমধ্য শস্য উৎপাদনের সুযোগ আরোও বাড়িয়ে দেয়।
ভৌত অবলম্বন পদ্ধতি
কৃষির দীর্ঘ ইতিহাসে ট্রেলিস’র ব্যবহার তুলনামুলকভাবে নতুন। এর আগে আঙুর ও অন্যান্য লতানো শস্যকে ছাটাইকৃত বৃক্ষে বড় করা হত। লতানো শস্যের ধরনের উপর ভৌত অবলম্বনের প্রকার নির্ধারিত হয়। মাঠপর্যায়ের অধিকতর জীববৈচিত্রের মধ্য দিয়েই মূলত এর সুবিধাটা পাওয়া যায়। আগাছা, রোগবালাই, এবং ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গের দমনই অনেক ক্ষেত্রে এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
কৃষিবন
এগুলোকে আর্দ্র ক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন নামে (বন উদ্যানপালন, বন খামারকরণ, ক্রান্তীয় বসত বাগান, এবং যেখানে স্বল্প উচচতার বৃক্ষ অথবা গুল্ম জন্মে- গুল্ম বাগান) এরা পরিচিত । একটা জটিল, বৃক্ষের অসজ্জিত মিশ্রণ, গুল্ম, কাষ্ঠলতা বা ভাইন, এবং মৌসুমি শস্যের মাধ্যমে এই পদ্ধতি তাদের উচ্চ মাত্রার জীববৈচিত্রের দ্বারা একটি বন বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশগত গতিময়তা অর্জন করে। আভ্যন্তরীন বাস্তুসংস্থানের কারণে তারা ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ, উদ্ভিদ রোগ, খরা, এবং বায়ুর ক্ষতির প্রতি কম সংবেদনশীল হয়। যদিও এরা উচ্চফলনশীল হতে পারে, এরূপ জটিল তন্ত্র থেকে হরেক রকমের ফলাফল পাওয়া সম্ভব। যখন এক ধরনের শস্য বা উৎপাদের প্রয়োজন হয়, তখন অন্যান্য উৎপাদগুলো কাজে লাগানো হয়না।
আরোও পড়ুন
- Patish, Daizy Rani, সম্পাদক (২০০৮)। Ecological basis of agroforestry। CRC Press। আইএসবিএন 978-1-4200-4327-3।
- The Springer Journal, "Agroforestry Systems" (ISSN 1572-9680) [১]; Editor-In-Chief: Prof. Shibu Jose, H.E. Garrett Endowed Professor and Director, The Center for Agroforestry, University of Missouri
- Robbins, Jim (নভেম্বর ২১, ২০১১)। "A Quiet Push to Grow Crops Under Cover of Trees"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২২, ২০১১।
বহিঃসংযোগ
- World Agroforestry Centre
- The Center for Agroforestry at the University of Missouri
- Online Masters Degree in Agroforestry University of Missouri
- Australian Agroforestry
- The Green Belt Movement
- Plants For A Future
- Ya'axché Conservation Trust
- Trees for the Future
- Free Distance Agroforestry Training Manual (from Trees for the Future)
- Vi-Agroforestry
- Agroforst in Deutschland