Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
ক্যান্সারবিজ্ঞান
বিশেষায়িত ক্ষেত্র | ক্যান্সারের বৈশিষ্ট্যযুক্ত টিউমার | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
উপবিষয় | মেডিক্যাল অনকোলজি, সার্জিক্যাল অনকোলজি, রেডিয়েশন অনকোলজি | ||||||||||||||
উল্লেখযোগ্য পরীক্ষা | টিউমার মার্কার, টিএনএম স্টেজিং, সিটি স্ক্যান, এম আর আই | ||||||||||||||
বিশেষজ্ঞতা |
|
ক্যান্সারবিজ্ঞান বা অর্বুদবিজ্ঞান (ইংরেজি: oncology) হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি শাখা, যা ক্যান্সারের প্রতিরোধ, নির্ণয় ও পর্যবেক্ষণ, এবং চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে। যেসকল চিকিৎসক অনকোলজি নিয়ে কাজ করেন, তাঁদেরকে অনকোলজিস্ট (ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ) বলা হয়। এই নামের ব্যুৎপত্তি গ্রিক শব্দ ὄγκος (অনকোস), যার অর্থ ১."বোঝা, আয়তন, ভর" ২."কাঁটা" এবং λόγος (লোগোস), যার অর্থ "বিদ্যা"। ১৬১৮ সালে গ্যালেন অস্বাভাবিক টিউমার নিয়ে কাজ করার সময় ডি টিউমারিবাস প্রিটার ন্যাচারাম (Περὶ τῶν παρὰ φύσιν ὄγκων) বইয়ে সর্বপ্রথম নব্য-গ্রিক ভাষায় অনকোলজি শব্দটি ব্যবহার করেন।
বিগত বছরগুলোতে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের বেঁচে থাকার সময় ও হার দুটোই তিনটি প্রধান কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণগুলো হচ্ছে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (যেমন: ধূমপান ও অ্যালকোহল পান) মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থাতেও ক্যান্সারের উপস্থিতি সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়, এবং তৃতীয়ত, চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন।
ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে প্রায় সময়ই ক্যান্সার সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসা পেশাজীবীদের নিয়ে আলোচনা করা হয়। অভিজ্ঞ পেশাজীবীদের মধ্যে থাকেন মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট, রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট, প্যাথলজিস্ট, রেডিওলজিস্ট, এবং সুনির্দিষ্ট অঙ্গভিত্তিক অনকোলজিস্টগণ যাঁরা এককভাবে প্রতিটি ক্যান্সার রোগীর শারীরিক, সামাজিক, মানসিক, আবেগপ্রবণতা, আর্থিক অবস্থা বিবেচনার মাধ্যমে তার সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনকোলজি বিষয়ক সর্বশেষ উন্নয়নগুলোর বিষয়ে অবগত থাকা অনকোলজিস্টদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ক্যান্সারের চিকিৎসায় যেকোনো ধরনের পরিবর্তন অনেকটাই স্বাভাবিক।
যেহেতু ক্যান্সার নির্ণয়ের ফলে রোগীর মানসিক অবসাদগ্রস্ততা ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি হতে পারে, তাই স্বাস্থ্যকর্মীরা এসপিআইকেইএস (SPIKES) এর মত পন্থা ব্যবহার করে রোগীকে ক্যান্সারের সংবাদ দিতে পারেন।
ঝুঁকির কারণ
- তামাক
- তামাক ক্যান্সার ও ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ধূমপানের যোগ্য তামাক সেবন করলে ফুসফুস, স্বরযন্ত্র, মুখ, অন্ননালি, গলা, মস্তিষ্ক, মূত্রাশয়, বৃক্ক, যকৃৎ, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, মলাশয় এবং জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এছাড়া জটিল মেলোডিস লিউকেমিয়ার ঝুঁকিও সৃষ্টি হতে পারে। যেসব তামাক ধূমপান ব্যতীত গ্রহণ করা হয় (যেমন নস্যি বা চর্বণযোগ্য তামাক), সেসব তামাক সেবন করলে মুখ, অন্ননালি ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
- অ্যালকোহল
- অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে মুখ, গলা, অন্ননালি, স্বরযন্ত্র, যকৃৎ ও স্তনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যারা একই সাথে অ্যালকোহল পান করে এবং তামাক সেবন করে, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি বৃদ্ধি পায়।.
- স্থূলতা
- স্থূল ব্যক্তিদের স্তন, বৃহদন্ত্র, মলদ্বার, এন্ডোমেট্রিয়াম, অন্ননালি, বৃক্ক, পিত্তাশয় এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়
- বয়স
- বার্ধক্যও ক্যান্সারের ঝুঁকির একটি অন্যতম কারণ। মানুষের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স ৬৬ বছর।
- ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ
- কিছু জিন কোষের কার্যক্রম পরিবর্তন করার মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। অনেকসময় পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাবে ডিএনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। ধূমপায়ী তামাক, তেজস্ক্রিয়তা, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ও অন্যান্য কার্সিওজেনিক (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী) পদার্থের প্রভাবে ক্যান্সার হতে পারে।
- সংক্রামক পদার্থ
- অনকোভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর মত সংক্রামক পদার্থের আক্রমণে ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে।
- অনাক্রম্যতার অভাব
- দেহের অনাক্রম্যতা ব্যবস্থা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব থাকলে ক্যান্সার হওয়ার অধিক প্রবণতা দেখা যায়।
নিয়মিত পরীক্ষা
স্তন, জরায়ু, কোলন, এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
লক্ষণ ও উপসর্গ
সাধারণত যে অঙ্গে ক্যান্সার হয়েছে, ক্যান্সারের লক্ষণ এবং উপসর্গ তার ওপর নির্ভর করে।
- স্তন ক্যান্সার
- স্তনে পিণ্ড সৃষ্টি হয়। বগলের দিকে আলসআর সৃষ্টি হতে পারে। স্তনের তরলের সাথে রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে।
- এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার
- যোনিপথ হতে রক্ত নির্গত হয়।
- জরায়ুমুখের ক্যান্সার
- যৌন সঙ্গমের পর রক্তপাত হয়।
- ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার
- অনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা যায়, যেমন বদহজম, পেট ফাঁপা।
- ফুসফুসের ক্যান্সার
- অবিরাম কাশি, শ্বাসকষ্ট, থুতুর সাথে রক্ত বের হয়, কণ্ঠস্বর ফেঁসে যায়।
- মাথা ও গলার ক্যান্সার
- গলায় অনিরাময়যোগ্য আলসার, অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা পিণ্ড দেখা যায়
- মস্তিষ্কের ক্যান্সার
- অবিরাম মাথাব্যথা, বমি, সংজ্ঞাহীনতা, দৃষ্টিভ্রম হয়।
- থাইরয়েডের ক্যান্সার
- গলায় পিণ্ড সৃষ্টি হয়।
- অন্ননালির ক্যান্সার
- শক্ত খাবার গিলার সময় ব্যথা হয়, ওজন হ্রাস পায়।
- পাকস্থলীর ক্যান্সার
- বমি, বদহজম, ওজন হ্রাস পায়।
- কোলন এবং মলাশয়ের ক্যান্সার
- মলদ্বার থেকে রক্তপাত হয়, মলত্যাগের অভ্যাস পরিবর্তিত হয়।
- যকৃতের ক্যান্সার
- জণ্ডিস হয়। পেটের উপরে ডান দিকে ব্যথা হয় ও ফুলে যায়।
- অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার
- ওজন হ্রাস পায়, জণ্ডিস হয়।
- ত্বকের ক্যান্সার
- ত্বকে অনিরাময়যোগ্য আলসার অথবা পিণ্ড সৃষ্টি হয়। অনিয়মিত আকৃতির আঁচিল সৃষ্টি হয় ও দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আঁচিল কঠিন আকার ধারণ করে ও ব্যথা সৃষ্টি করে।
- বৃক্কের ক্যান্সার
- মূত্রের সাথে রক্ত বের হয়, পেটে পিণ্ড তৈরি হয়।
- মূত্রাশয়ের ক্যান্সার
- মূত্রের সাথে রক্ত বের হয়।
- প্রোস্টেট ক্যান্সার
- মূত্রত্যাগের হার বেড়ে যায় অথবা কমে যায়। হাড়ে ব্যথা হয়।
- শুক্রাশয়ের ক্যান্সার
- শুক্রাশয় স্ফীত হয়ে যায়, পিঠে ব্যথা হয় ও শ্বাসকষ্ট হয়।
- হাড়ের ক্যান্সার
- হাড় স্ফীত হয়ে যায় ও ব্যথা করে।
- লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার
- জ্বর, আক্রান্ত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে দেহের ওজন ১০% এর বেশি হ্রাস পায়। আনুষঙ্গিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে রাতে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হওয়া এবং গলা, বগল ও কুঁচকিতে পিণ্ড সৃষ্টি হয়।
- রক্তের ক্যান্সার
- রক্তপাত সংক্রান্ত লক্ষণ দেখা যায়, যেমন মাড়ির রক্তপাত, নাক থেকে রক্তপাত, বমির সাথে রক্তপাত, থুতুর সাথে রক্তপাত, রক্ত মিশ্রিত মূত্র। এছাড়া কালো রঙের মল, জ্বর এবং গলা, বগল, কুঁচকি, পেটের উপরের অংশে পিণ্ড তৈরি হয়।
রোগ নির্ণয় ও রোগের স্তরবিন্যাস
ক্যান্সারের তীব্রতা ও আকারের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় পদ্ধতি ও রোগের স্তরবিন্যাস বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
রক্তের ক্যান্সার
হিমোগ্লোবিন, শ্বেতরক্তকণিকা ও অণুচক্রিকার সংখ্যা পরিমাপ, লোহিতকোষ সূচক এবং রক্তের ফিল্মের মাধ্যমে রক্তের ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়।
শ্বাস পরীক্ষা, ফ্লো সাইটোমেট্রি পরীক্ষা, কোষীয় জিনবিদ্যা, প্রতিপ্রভা সৃষ্টিকারী এফআইএসএইচ পদ্ধতি এবং আণবিক গবেষণার মাধ্যমে অস্থিমজ্জার ক্যান্সার পরীক্ষা করা হয়।
লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার
লসিলাগ্রন্থির ট্যিসুর বায়োপসির মাধ্যমে হিস্টোপ্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা, ট্যিস্যুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত রসায়নবিদ্যা, এবং আণবিক গবেষণার মাধ্যমে এ ধরনের ক্যান্সার পরীক্ষা করা হয়।
রক্ত পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজিনেজ (এলডিএইচ), রক্তরসের ইউরিক এসিড, এবং বৃক্কের কার্যকারিতা পরীক্ষা।
প্রতিচ্ছবি নির্ভর পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত টমোগ্রাফি (সিটি স্ক্যান), পজিট্রন নিঃসরণ টমোগ্রাফি (পিইটি সিটি)।
অস্থিমজ্জার বায়োপসির মাধ্যমেও ক্যান্সার পরীক্ষা করা যায়।
কঠিন টিউমার
হিস্টোপ্যাথোলজি ও টিস্যুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত রসায়ন ব্যবহারের মাধ্যমে বায়োপসি প্রক্রিয়ায় কঠিন টিউমার নির্ণয় করা যায়।.
প্রতিচ্ছবি নির্ভর পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে এক্স-রে, আল্টাসনোগ্রাফি, কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত টমোগ্রাফি (সিট), চৌম্বকীয় অনুরণন প্রতিচ্ছবি (এমআরআই) এবং পিইটি সিটি।
নাসা ও গলবিলীয় এন্ডোসকপি, স্বরযন্ত্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ এন্ডোসকপি, ঊর্ধ্ব পাকস্থলী ও অন্ত্রের এন্ডোসকপি, কোলনসকপি, সাইটোসকপির মাধ্যমেও টিউমার পরীক্ষার করা হয়।
টিউমার শনাক্তকারী পদার্থের মধ্যে রয়েছে আলফাফেটোপ্রোটিন (এএফপি), বিটা হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন (এইচসিজি), কার্সিওএমবায়োনিক এন্টিজেন (সিইএ), সিএ ১২৫, প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (পিএসএ)।
চিকিৎসা
ক্যান্সারের ধরন ও আকারের উপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে।
কঠিন টিউমার
- স্তনের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি, এবং বিশেষায়িত থেরাপি (এইচইআর ২ নিউ ইনহিবিটর)।
- জরায়ুমুখের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে রেডিওথেরাপি, শল্যচিকিৎসা এবং কেমোথেরাপি।
- এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (ভিইজিএফ ইনহিবিটর)।
- ফুসফুসের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রোবটের সহায়তায় শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (ইজিএফআর এবং এএলকে ইনহিবিটর)।
- মাথা ও গলার ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিও শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (ইজিএফআর ইনহিবিটর)।
- মস্তিষ্কের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, সাইবারনাইফ পদ্ধতিতে রেডিও শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (ভিইজিএফ ইনহিবিটর).
- থাইরয়েডের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিও শল্যচিকিৎসা ও তেজস্ক্রিয় আয়োডাইন।
- অন্ননালির ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- পাকস্থলীর ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (এইচইআর ২ নিউ ইনহিবিটর).
- কোলন ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, কেমোথেরাপি এবং বিশেষায়িত থেরাপি (ইজিএফআর ও ভিইজিএফ ইনহিবিটর).
- মলাশয়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- যকৃতের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি অপসারণ (আরএফএ) , মাল্টি-কাইনেজ (সোরাফেনিব).
- অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- ত্বকের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, বিশেষায়িত থেরাপি (বিআরএএফ ও এমইকে ইনহিবিটর), ইমিউনোথেরাপি (সিএলটিএ ৪ ও পিডি ১ ইনহিবিটর) এবং কেমোথেরাপি।
- বৃক্কের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, মাল্টি-কাইনেজ ইনহিবিটর এবং বিশেষায়িত থেরাপি (এমটিওআর ও ভিইজিএফ ইনহিবিটর).
- মূত্রাশয়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- প্রোস্টেট ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন ও ইমিউনোথেরাপি।
- শুক্রাশয়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি।
- হাড়ের ক্যান্সার
- চিকিৎসার উপায়ের মধ্যে রয়েছে শল্যচিকিৎসা, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি।
লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার
এ ধরনের ক্যান্সার দুই ধরনের, হজকিন লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার (এইচএল) এবং নন-হজকিন লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার (এনএইচএল):
- হজকিন লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার (এইচএল)
- এ রোগের চিকিৎসায় এবিভিডি অথবা বিইএসিওপিপি রেজিম্যান এর সাথে কেমোথেরাপী ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র রেডিওথেরাপি (ইএফআরটি)।
- নন-হজকিন লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার (এনএইচএল)
- B কোষ লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমো-ইমিউনোথেরাপি (আর-সিএইচওপি) T কোষ লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি (সিএইচওপি) দিতে হয়।
রক্তের ক্যান্সার
অ্যাকিউট (তীব্র) ও ক্রনিক (দীর্ঘস্থায়ী) লিউকেমিয়া এ ধরনের ক্যান্সারের অন্তর্ভুক্ত। অ্যাকিউট লিউকেমিয়ার মধ্যে আবার রয়েছে অ্যাকিউট লিমফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (এএলএল), এবং অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া (এএমএল)। ক্রনিক লিউকেমিয়ার মধ্যে রয়েছে ক্রনিক লিমফোসাইটিক লিউকেমিয়া (সিএলএল), এবং ক্রনিক মাইলয়েড লিউকেমিয়া (সিএমএল)।
- অ্যাকিউট লিমফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (এএলএল)
- প্রথম ৬ মাস প্রচুর পরিমাণে কেমোথেরাপি দিতে হবে এবং পরের ২ বছর কেমোথেরাপি সাধারণভাবে চালিয়ে যেতে হবে। উচ্চঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ক্ষেত্রে রোগমুক্ত মেরুমজ্জা এবং স্টেম কোষ প্রতিস্থাপন পদ্ধতি ফলপ্রসূ।
- অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া (এএমএল)
- কেমোথেরাপি (ডাউনোরুবিসিন + সাইটারাবাইন) দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে এবং ধীরে ধীরে কেমোথেরাপির (উচ্চ মাত্রার সাইটারাবাইন) মাত্রা বাড়িয়ে ফেলতে হবে। উচ্চঝুঁকিসম্পন্ন রোগীদের স্টেম কোষ প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
- ক্রনিক লিমফোসাইটিক লিউকেমিয়া (সিএলএল): লক্ষণযুক্ত রোগীদের কেমো-ইমিউনোথেরাপি (এফসিআর অথবা বিআর রেজিম্যান) দিতে হবে।
- ক্রনিক মাইলয়েড লিউকেমিয়া (সিএমএল))
- প্রথম সারির চিকিৎসা হিসেবে টাইরোসিন কাইনেজ ইনহিবিটর (ইমাটিনিব) দিয়ে বিশেষায়িত থেরাপি দিতে হবে।
বিশেষত্ব
- ক্যান্সারবিজ্ঞানের প্রধান তিনটি শাখা হল:
- মেডিকেল অনকোলজি: কেমোথেরাপি, বিশেষায়িত থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি এবং হরমোনাল থেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে।
- সার্জিক্যাল অনকোলজি: অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে।
- রেডিয়েশন অনকোলজি: তেজস্ক্রিয় রশ্মির সাহায্যে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করে
- অনকোলজির উপশাখাসমূহ:
- নিউরো-অনকোলজি: মস্তিষ্কের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে।
- অকুলার-অনকোলজি: চোখের ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে থাকে।
- মাথা ও গলা অনকোলজি: মুখগহবর, নাসাগহবর, মুখগলবিল, হাইপোফ্যারিংক্স এবং স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে থাকে।
- বক্ষীয় অনকোলজি: ফুসফুস, মিডিয়াস্টিনাম, অন্ননালি ও প্লুরার ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে।
- স্তন অনকোলজি: স্তনের ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে
- গ্যাস্ট্রোইনটেসটাইনাল অনকোলজি: পাকস্থলী, কোলন, মলাশয়, পায়ুনালি, যকৃৎ, মূত্রাশয়, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে।
- হাড় এবং পেশি-কঙ্কাল অনকোলজি: হাড় ও নরম টিস্যুর ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে।
- চর্ম অনকোলজি: ত্বক, চুল, ঘর্মগ্রন্থি ও নখের ক্যান্সারের চিকিৎসা ও শল্যচিকিৎসা নিয়ে কাজ করে।
- জেনিটোরিনারি অনকোলজি: যৌন ও রেচনতন্ত্র সংক্রান্ত ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে।
- গাইনিকোলজিক অনকোলজি: স্ত্রী প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে।
- পেডিয়াট্রিক অনকোলজি: শিশুদের ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে।
- বয়ঃসন্ধিকাল ও তারুণ্য সংক্রান্ত অনকোলজি:
- হেমাটো অনকোলজি: রক্তের ক্যান্সার এবং স্টেম কোষ প্রতিস্থাপন নিয়ে কাজ করে।
- প্রতিরোধক অনকোলজি: ক্যান্সারের বিস্তার ও প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করে।
- জেরিয়্যাট্রিক অনকোলজি: বৃদ্ধ মানুষের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে।
- ব্যথা ও উপশম সংক্রান্ত অনকোলজি: ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর ব্যথা ও কষ্ট লাঘব করা নিয়ে কাজ করে।
- আণবিক অনকোলজি: আণবিক পদ্ধতিতে ক্যান্সার নির্ণয় নিয়ে গবেষণা করে।
- পারমাণবিক ঔষধ অনকোলজি: তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় ও নিরাময় নিয়ে কাজ করে থাকে।
- সাইকো-অনকোলজি: ক্যান্সার রোগীদের বিভিন্ন মানসিক সমস্যা নির্ণয় ও এর চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে থাকে।
- ভেটেরিনারি অনকোলজি: পশুদেহের ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করে।
- উদীয়মান বিশেষত্ব:
- কম্পিউটেশনাল অনকোলজি: এর একটি উদাহরণ হচ্ছে পিআরআইএমএজিই। ইইউ কর্তৃক অর্থায়িত চার বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি (Horizon 2020) ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রাশুরু করেছিল।এ প্রকল্পের আওতায় একটি ক্লাউড ভিত্তিক মাধ্যম প্রস্তাবিত হয়েছিল। এ মাধ্যমের উদ্দেশ্য ছিল ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের ক্লিনিক্ল্যাল ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করা এবং রোগ নির্ণয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রযুক্তির যোগান দেয়া। প্রকল্পটি নভেল ইমেজিং বায়োমার্কার, টিউমারের বৃদ্ধির সিমুলেশন, ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা যাচাই করার জন্য সর্বাধুনিক দৃশ্যায়ন পদ্ধতি, প্রযুক্তি নির্ভর অনুবাদের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়াটিকে সর্বোপযোগী ও সকল রোগের জন্য কার্যকরী ক্লিনিক্যাল ফলাফল পেতে চেয়েছিল।
গবেষণা এবং অগ্রগতি
- লিউকেমিয়া, লসিকাগ্রন্থির ক্যান্সার, জননকোষের টিউমার এবং প্রাথমিক পর্যায়ের কঠিন টিউমার, যেগুলো একসময় অনিরাময়যোগ্য ছিল সেগুলো এখন বিজ্ঞানের কল্যাণে নিরাময় করা সম্ভব হয়েছে। ইমিউনোথেরাপি ইতিমধ্যেই লিউকেমিয়া, মূত্রাশয়ের ক্যান্সার ও ত্বকের ক্যান্সারের জন্য কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ভবিষ্যতে শারীরিক অনকোলজি নিয়ে গবেষণার বিশাল ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
- গত কয়েক বছরে নিয়মিত পরীক্ষা, উন্নত রোগ নির্ণয় পদ্ধতি ও বিশেষায়িত থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসার ফলে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার আশাব্যঞ্জক হারে কমেছে।
- ন্যাশনাল সার্জিকাল অ্যাডজুভেন্ট ব্রেস্ট অ্যান্ড বাউয়েল প্রজেক্ট (এনএসএবিপি) মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (এমআরসি), ইউরোপীয় অর্গানাইজেশন ফর রিসার্চ অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট অফ ক্যান্সার (ইওআরটিসি), ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (এনসিআই) বৃহৎ ও বহুকেন্দ্রিক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করার ফলে ক্যান্সার রোগীর বেঁচে থাকার হার অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গ্রন্থপঞ্জি
- Watson, Ian R.; Takahashi, Koichi (২০১৩)। "Emerging patterns of somatic mutations in cancer": 703–718। ডিওআই:10.1038/nrg3539। পিএমআইডি 24022702। পিএমসি 4014352 ।
- Meyerson, Matthew; Gabriel, Stacey (২০১০)। "Advances in understanding cancer genomes through second-generation sequencing": 685–696। ডিওআই:10.1038/nrg2841। পিএমআইডি 20847746।
- Katsanis, Sara Huston; Katsanis, Nicholas (২০১৩)। "Molecular genetic testing and the future of clinical genomics": 415–426। ডিওআই:10.1038/nrg3493। পিএমআইডি 23681062। পিএমসি 4461364 ।
- Mardis, Elaine R. (২০১২)। "Applying next-generation sequencing to pancreatic cancer treatment": 477–486। ডিওআই:10.1038/nrgastro.2012.126। পিএমআইডি 22751458।
-
Mukherjee, Siddhartha (২০১১)। The Emperor of All Maladies: A Biography of Cancer। Fourth Estate। আইএসবিএন 978-0-00-725092-9। অজানা প্যারামিটার
|শিরোনাম-সংযোগ=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Vickers, Andrew (১ মার্চ ২০০৪)। "Alternative Cancer Cures: "Unproven" or "Disproven"?": 110–118। ডিওআই:10.3322/canjclin.54.2.110। পিএমআইডি 15061600। সাইট সিয়ারX 10.1.1.521.2180 ।
বহিঃসংযোগ
- "Comprehensive Cancer Information"। National Cancer Institute। জানুয়ারি ১৯৮০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-১৬। <
- "NCCN - Evidence-Based Cancer Guidelines, Oncology Drug Compendium, Oncology Continuing Medical Education"। National Comprehensive Cancer Network। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-১৬।
- "European Society for Medical Oncology | ESMO"। www.esmo.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-১৬।