Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
অ্যামাজন অতিবৃষ্টি অরণ্য-এর একটি অঞ্চল, ব্রাজিলদক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যে রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম জীববৈচিত্র্য-এর প্রজাতিসমূহ।
ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য জলবায়ু অঞ্চল (Af)।

ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য (ইংরেজি:Tropical rainforest), এক প্রকার অতিবৃষ্টি অরণ্য যা ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য জলবায়ু অঞ্চলে দেখা যায়। এখানে শুষ্ক মরসুম থাকেই না। সমস্ত মাসের গড় বৃষ্টিপাত কমপক্ষে ৬০ মিমি। এটি নিম্নভূমি নিরক্ষীয় চিরসবুজ অতিবৃষ্টি অরণ্য বলেও পরিচিত। সত্যিকারের অতিবৃষ্টি অরণ্য সাধারণত নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে ১০ ডিগ্রি উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে পাওয়া যায় (মানচিত্র দেখুন); এগুলি নিরক্ষীয় অরণ্য-এর বায়োম-এর অন্তর্গত, যা প্রায় ২৮-ডিগ্রি অক্ষাংশের (কর্কটক্রান্তি এবং মকরক্রান্তি-র মধ্যবর্তী নিরক্ষীয় অঞ্চল) মধ্যে দেখা যায়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড-এর বায়োম শ্রেণিবিন্যাসের মধ্যে, ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য, এক ধরনের ক্রান্তীয় আর্দ্র বড়পাতার অরণ্য (বা ক্রান্তীয় সিক্ত অরণ্য) যা আরও বিস্তৃতভাবে মৌসুমীয় ক্রান্তীয় অরণ্য-এর অন্তর্ভুক্ত।


সংক্ষিপ্ত বিবরণ

অ্যামাজন নদীর অতিবৃষ্টি অরণ্য, পেরু

ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য দুটি শব্দে চিহ্নিত করা যায়: উষ্ণ এবং আর্দ্র। গড় মাসিক তাপমাত্রা বছরের সমস্ত মাসে ১৮ °সে (৬৪ °ফা) ছাড়িয়ে যায়। গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১,৬৮০ মিমি (৬৬ ইঞ্চি) এর চেয়ে কম নয় এবং এটি ১০ মি (৩৯০ ইঞ্চি) ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে সাধারণত তা থাকে ১,৭৫০ মিমি (৬৯ ইঞ্চি) থেকে ৩,০০০ মিমি (১২০ ইঞ্চি) এর মধ্যে। এই প্রচুর বৃষ্টিপাত প্রায়ই স্থলভাগে দ্রবণীয় পুষ্টির ক্ষয় ঘটিয়ে মাটিকে নিঃশেষ করে দেয়।

ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যে উচ্চ স্তরের জীববৈচিত্র্য দেখা যায়। প্রায় ৪০% থেকে ৭৫% জৈব প্রজাতি অতিবৃষ্টি অরণ্যের আদি বাসিন্দা (দেশীয়)। অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলিতে গ্রহের সমস্ত জীবন্ত প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির অর্ধেক বাস করে। সমস্ত সপুষ্পক উদ্ভিদের দুই-তৃতীয়াংশ পাওয়া যায় অতিবৃষ্টি অরণ্যে। প্রতি হেক্টর অতিবৃষ্টি অরণ্যে ৪২,০০০ বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ, ৩১৩ প্রজাতির ৮০৭ উদ্ভিদ এবং উচ্চতর উদ্ভিদের ১,৫০০ প্রজাতি থাকতে পারে। ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলিকে বলা হয় "বিশ্বের বৃহত্তম ঔষধালয়", কারণ এক চতুর্থাংশেরও বেশি প্রাকৃতিক ওষুধ এ সব থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে। সম্ভবত ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যে এখনও অনাবিষ্কৃত থেকে গেছে লক্ষ লক্ষ প্রজাতির উদ্ভিদ, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিজ্জাণু

মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে বিশাল আকারে খন্ড খন্ড হয়ে বিশ্বব্যাপী ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলি হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তুসংস্থান। পূর্বে আগ্নেয়গিরির উদ্‌গীরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার কারণে আবাসস্থল বিভাজন-এর ঘটনা ঘটেছিল এবং আলোচনায় সেটিই গুরুত্বপূর্ণ চালক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। তবে, প্রথম মানব চালিত আবাসস্থল ধ্বংসকে প্রজাতি বিলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলি বিংশ শতাব্দী জুড়ে ভারী (বৃক্ষ) লগিং বা চ্ছেদন এবং অরণ্য নিধন-এর কারণে বিশ্বজুড়ে অতিবৃষ্টি অরণ্যে আচ্ছাদিত অঞ্চল দ্রুত সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।

ইতিহাস

কয়েক লক্ষ বছর ধরে ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যের অস্তিত্ব পৃথিবীতে রয়েছে। বেশিরভাগ ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলি বর্তমানে মেসোজোইক যুগ-এর অতিমহাদেশ গন্ডওয়ানার খণ্ডিতাংশগুলিতে রয়েছে। ভূভাগের পৃথকীকরণের ফলে উভচরের বৈচিত্র্যের এক বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে। আবার একই সময়ে শুষ্ক জলবায়ুর কারণে, সরীসৃপের বৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের পাঁচটি প্রধান অঞ্চলে অবশিষ্ট ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলি অবস্থিত: ক্রান্তীয় আমেরিকা, আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মাদাগাস্কার এবং নিউ গিনি সহ অস্ট্রেলিয়ায় ছোট ছোট অংশ। তবে অসম্পূর্ণ জীবাশ্মের রেকর্ডের কারণে অতিবৃষ্টি অরণ্যের উৎসের সুনির্দিষ্ট বিবরণ অনিশ্চিত থেকে গেছে।

অন্যান্য ধরনের ক্রান্তীয় অরণ্য

বেশ কয়েকটি বায়োম একইরকমভাবে দেখা দিতে পারে অথবা ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যের সাথে ইকোটোন-এর মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে:

আর্দ্র মৌসুমীয় ক্রান্তীয় অরণ্য

মৌসুমীয় ক্রান্তীয় অরণ্য-এ উষ্ণ ও আর্দ্র গ্রীষ্মের ভেজা মরসুমে সামগ্রিকভাবে উচ্চ বৃষ্টিপাত ঘটে এবং শীতল শীতকাল থাকে শুষ্ক। এই বনাঞ্চলে শীতের শুকনো মরসুমে কোনও কোনও গাছের কিছু বা সমস্ত পাতা খসে যায় বলে এগুলিকে মাঝে মাঝে "ক্রান্তীয় মিশ্র অরণ্য" বলা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান-এর চারপাশ, উপকূলীয় পশ্চিম আফ্রিকা, ভারতীয় উপমহাদেশ-এর কিছু অংশ এবং ইন্দোচিন-এর বেশিরভাগ অংশে এই জাতীয় অরণ্য পাওয়া যায়।

মনটেন অতিবৃষ্টি অরণ্য

এ রকম অরণ্য, শীতল-জলবায়ুর পার্বত্য অঞ্চলে পাওয়া যায়, এবং উচ্চতর উচ্চতায় দেখা যায় ব'লে মেঘ অরণ্য হিসাবে পরিচিত। অক্ষাংশের উপর নির্ভর করে বড় পাহাড়ের, মনটেন অতিবৃষ্টি অরণ্যর নিম্ন সীমা থাকে সাধারণত ১৫০০ এবং ২৫০০ মিটারের মধ্যে, আর উপরের সীমাটি সাধারণত ২৪০০ থেকে ৩৩০০ মিটারের মধ্যে।

বন্যা অতিবৃষ্টি অরণ্য

ক্রান্তীয় মিষ্টি জলের জলাভূমি অরণ্য বা "বন্যা বনাঞ্চল" অ্যামাজন বেসিনে (ভার্জিয়া) এবং অন্যত্রও পাওয়া যায়।

অরণ্য কাঠামো

অতিবৃষ্টি অরণ্য, বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত এবং গাছপালা মাটির শীর্ষদেশ থেকে নিচের আচ্ছাদন পর্যন্ত একটি উল্লম্ব বিন্যাসে সংগঠিত থাকে। প্রতিটি স্তরে, নানান গাছপালা ও প্রাণীর সমন্বয়ে এক একটি নির্দিষ্ট এবং অনন্য জীবজগত দেখা যায়। তারা নিজেদেরকে সেই নির্দিষ্ট স্তরটির জীবনের উপযোগী করে নেয়। ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যে কেবলমাত্র উদ্ভূত স্তরটি অনন্য, অপরদিকে নাতিশীতোষ্ণ অতিবৃষ্টি অরণ্যেও এটি পাওয়া যায়।

বনতল

পশ্চিমের নিম্নভূমির গরিলা

বনতল হ'ল, অরণ্যের সর্বাধিক নীচের স্তর, যেখানে সূর্যালোক পৌঁছোয় মাত্র ২%। কম আলোয় অভিযোজন-এ সক্ষম গাছপালাই কেবলমাত্র এই অঞ্চলে বৃদ্ধি পেতে পারে। নদীর পাড়, জলাজমি প্রভৃতি থেকে দূরে, যেখানে কম সূর্যালোক ঢোকার কারণে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, সেখানের বনতল বা বনের মেঝে তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার থাকে। এই রকম আরও উন্মুক্ত স্থান, বৃহত্তর প্রাণীর সহজ সরল চলাচলের উপযুক্ত হয়, যেমন: খুরযুক্ত প্রাণী - ওকাপি (ওকাপিয়া জনস্টনি), টাপির (টাপিরাস প্রজাতি), সুমাত্রার গণ্ডার (ডাইসেরোরাইনাস সুমাত্রেনসিস), এবং পশ্চিমের নিম্নভূমির গরিলা (গরিলা গরিলা)র মতো বনমানুষ, পাশাপাশি বহু প্রজাতির সরীসৃপ, উভচর এবং কীটপতঙ্গ রয়েছে। বনের মেঝেতে থাকা ক্ষয়িষ্ণু উদ্ভিদ এবং প্রাণীজ পদার্থসমূহ, উষ্ণ ও আর্দ্রতার ফলে দ্রুত ক্ষয়ে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। প্রাণী এবং গাছের বর্জ্য ক্ষয় করতে, এখানের বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক সহায়তা করে।


Новое сообщение