Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
চিকিৎসকের সাক্ষাৎ
চিকিৎসকের সাক্ষাৎ বলতে কোনও রোগের লক্ষণ বা মূল কারণের চিকিৎসার জন্য বা পরামর্শের জন্য রোগীর সাথে চিকিৎসকের বৈঠককে বোঝায়।
চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাতের একাধিক কারণ থাকতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য সাধারণ ডাক্তারি পরীক্ষা হতে পারে। কিংবা চলমান স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যাপারে রক্ষণাবেক্ষণমূলক সাক্ষাৎ হতে পারে। অনেক সময় নতুন কোনও উপসর্গ বা সমস্যা নিয়ে কথা হতে পারে। আবার স্বাস্থ্যের কোনও বড় ধরনের পরিবর্তন (যেমন গর্ভধারণ, মৃত্যু, খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস বা জীবনধারায় আমূল পরিবর্তন) নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
একজন চিকিৎসক শারীরস্থান (অর্থাৎ দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাঠামো ও অবস্থান), শারীরবিজ্ঞান বা শারীরবৃত্ত (অর্থাৎ শরীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি কীভাবে কাজ করে), রোগবিজ্ঞান (শারীরস্থান ও শারীরবৃত্তে কী সমস্যা হতে পারে) এবং মনোবিজ্ঞান (মন ও আচরণ) --- এই চারটি মৌলিক ভিত্তির উপর নির্ভর করে রোগনির্ণয় করেন। এছাড়া রোগীর আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিবেশও (যেমন, চাকুরি বা কাজের চাপ, পরিবার, বিশ্বাস, ইত্যাদি) রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হতে পারে এবং এগুলি ভবিষ্যতে রোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ।
একজন রোগী সাধারণত এক বা একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে হাজির হন, যাকে লক্ষণ বা উপসর্গ বলে। রোগী উপসর্গ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিস্তারিত বিবরণ লিখে রাখলে সাক্ষাৎ বেশি কার্যকর হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন উপসর্গটি হলে দেহে কীরকম অনুভূতি হয়, কখন উপসর্গটি প্রকাশ পায়, কতক্ষণ এটি বিদ্যমান থাকে, কী করলে উপসর্গ খারাপের দিকে মোড় নেয়, কী করলে উপসর্গ উপশম হয়, ইত্যাদি। অনেক সময় চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা, রঞ্জনরশ্মি (এক্স-রে) পরীক্ষা ইত্যাদি আগে থেকেই রোগীকে করে আসতে বলতে পারেন। এগুলি সাক্ষাতের যথেষ্ট আগে সম্পন্ন করতে হয়, যাতে এগুলির ফলাফল সাক্ষাতের আগেই প্রস্তুত করা যায়।
চিকিৎসক এরপর সাক্ষাতের সময় পদ্ধতিমূলকভাবে রোগনির্ণয় করার চেষ্টা করেন। তিনি রোগীর লক্ষণ-উপসর্গ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য আহরণ করেন, রোগীর অতীতের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন, রোগীর বর্তমান জীবনযাপনের পরিবেশ ও ধারা সম্পর্কে অবহিত হন। এরপর চিকিৎসক তন্ত্রীয় পর্যালোচনা সম্পাদন করেন, অর্থাৎ রোগীর দেহের প্রতিটি প্রধান তন্ত্রের উপরে কিছু পূর্ব-নির্ধারিত পর্যায়ক্রমিক প্রশ্নের উত্তর নেবার চেষ্টা করেন যেমন সামগ্রিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রশ্ন (ওজন হ্রাস), অন্তঃক্ষরাতন্ত্র, হৃদ্ ও শ্বসনতন্ত্র, ইত্যাদি। এরপর রোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পাদন করা হয় এবং দরকার হলে অতিরিক্ত চিকিৎসাবৈজ্ঞানিক পরীক্ষার সুপারিশ করা হয়। এইসব তথ্য লিখে রাখা হয় এবং এগুলি থেকে সম্ভাব্য রোগের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। সম্ভাব্য রোগগুলিকে সম্ভাবনার ক্রম অনুযায়ী একে একে অনুসন্ধান করা হয়।
এর পরবর্তী কাজ হলো রোগের বা স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনাতে রোগীর সম্মতি আদায় করা। এই পরিকল্পনাতে চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থার পরিবর্তন কিছুদিন পরপর অনুসরণের পরিকল্পনা থাকে। এই প্রক্রিয়াটির সময় চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কর্মী রোগীকে তার অসুখ বা রোগের কারণ, অগ্রগতি, ফলাফল ও সম্ভাব্য চিকিৎসার ব্যাপারে ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য উপদেশ প্রদান করেন।
চিকিৎসকের বিশেষত্ব এখানেই যে তিনি একই ধরনের উপসর্গ বহনকারী অন্যান্য অসুস্থ ও অস্বাভাবিক ব্যক্তিদের উপরে তাঁর জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে কী সুস্থ ও স্বাভাবিক তা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। এর পাশাপাশি ঔষধ ও অন্যান্য চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটি নিরাময় বা উপশম করার তাঁর ক্ষমতা পূর্ব-প্রমাণিত, যার বিপরীতে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর এসমস্ত ব্যাপারে জ্ঞান স্বল্প থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন চিকিৎসক গড়ে প্রতি সপ্তাহে পঞ্চাশ থেকে একশত রোগীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। অন্যদিকে একজন রোগী গড়ে বছরে তিনবার চিকিৎসকের সাক্ষাৎ গ্রহণ করেন। সাধারণত চিকিৎসার বিশেষায়িত ক্ষেত্র অনুযায়ী সাক্ষাৎকৃত রোগীর সংখ্যার হেরফের হতে পারে। চিকিৎসকের একটি সাক্ষাতের সময়কাল মোটামুটি ১৩ থেকে ১৬ মিনিট হয়ে থাকে।