Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

জীব দ্যুতি

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
জোনাকির আলো; জীব দ্যুতির উদাহরণ

জীব দেহ হতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলো নিঃসৃত হওয়ার ঘটনাকে বায়োলুমিনিসেন্স (Bioluminescence) বা জীব দ্যুতি বলে। অথবা, যে পদ্ধতিতে কিছু জীব রাসায়নিক শক্তিকে আলোক শক্তিতে রুপান্তরিত করে। স্থলজ ও জলজ উভয় প্রকার প্রাণীতে এই রকমের দ্যুতি বা আলো দেখা যায়। যেমনঃ জোনাকি পোকা, নকটিলুকা। বিজ্ঞানীদের মতে এই সকল প্রাণীদের দেহে দু'ধরনের রাসায়নিক পদার্থ লুসিফেরিনলুসিফারেজ থাকে যা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে আলো উৎপন্ন করে।

সাধারণ অর্থে, জীবদ্যুতিতল মূল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি হালকা-নির্গত অণু এবং একটি এনজাইম জড়িত, সাধারণত যা লুসিফেরিন এবং লুসিফেরেজ নামে পরিচিত।  যেহেতু এগুলি জেনেরিক নাম, লুসিফারিন এবং লুসিফেরেসগুলি প্রায়শই প্রজাতি বা গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত করে আলাদা হতে পারে , অর্থাৎ ফায়ারফ্লাই লুসিফেরিন।  সমস্ত বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্ষেত্রে, এনজাইম লুসিফেরিনের জারণকে অনুঘটক বা catalyst করে।

কিছু প্রজাতিতে লুসিফ্রেসের জন্য অন্যান্য কফ্যাক্টর(কোএনজাইম) যেমন ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম আয়নগুলির প্রয়োজন হয় এবং কখনও কখনও এনার্জি বহনকারী অণু অ্যাডেনোসিন ট্রাইফোসফেট (ATP) থাকে।  বিবর্তনে, লুসিফেরিনগুলি সামান্য পরিবর্তিত হয়: বিশেষত একটি, কোয়েলেনটেরাজিন(এক ধরনের লুসিফেরিন /আলো উৎপাদক অনু) ১১ টি বিভিন্ন প্রাণী ফাইলাতে(পর্ব) পাওয়া যায়, যদিও এর মধ্যে কিছুতে, প্রাণীগুলি তাদের খাদ্যতালিকার মাধ্যমে এটি গ্রহণ করে।  বিপরীতে, লুসিফেরেসগুলি বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়, যা প্রমাণ হয় যে বিবর্তনীয় ইতিহাসে বায়োলুমিনেসেন্স ৪০ বারেরও বেশি উত্থিত হয়েছিল।

অ্যারিস্টটল এবং প্লিনি দ্য এল্ডার উভয়ই উল্লেখ করেছিলেন যে স্যাঁতসেঁতে কাঠ কখনও কখনও এক আলোকসজ্জা দেয়।  বহু শতাব্দী পরে রবার্ট বয়েল দেখিয়েছিলেন যে কাঠ এবং গ্লোভোর্ম উভয় ক্ষেত্রেই অক্সিজেন জড়িত ছিল। উনিশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বায়োলুমিনেসেন্স সঠিকভাবে তদন্ত করা হয়নি।  ঘটনাটি প্রাণী গোষ্ঠীর মধ্যে বিশেষত সামুদ্রিক পরিবেশে বিস্তৃত হয়।  জমিতে এটি ছত্রাক, ব্যাকটিরিয়া এবং পোকামাকড় সহ অমেরুদণ্ডী এর কিছু গ্রুপে দেখা যায়।

প্রাণীর দ্বারা জৈব পদার্থের ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে পাল্টা আলোকসজ্জা ছদ্মবেশ, অন্যান্য প্রাণীর নকল, উদাহরণস্বরূপ শিকারকে লোভনীয় করা এবং একই প্রজাতির অন্যান্য ব্যক্তির সাথে সংকেত দেওয়া, যেমন সঙ্গিনীকে আকর্ষণ করার জন্য।  পরীক্ষাগারে লুসিফ্রেজ-ভিত্তিক সিস্টেমগুলি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োমেডিকেল গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।  গবেষকরা রাস্তায় এবং আলংকারিক আলোতে বায়োলুমিনসেন্ট সিস্টেম ব্যবহারের সম্ভাবনাও তদন্ত করছেন এবং একটি বায়োলুমিনসেন্ট উদ্ভিদ তৈরি করা হয়েছে।

বায়োলুমিনেসেন্সঃ বায়োলুমিনেসেন্স হলো একপ্রকার শীতল আলো যা কোনো জীবন্ত জীবের দেহ থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। শীতল আলো বলতে,যে আলোতে ২০% এরও কম তাপ উৎপন্ন হয়। এরা ২০০- ১০০০ মিটার গভীরে পাওয়া যায়।

বায়োলুমিনেসেন্টঃ যে সমস্ত জীব বায়োলুমিনেসেন্স তৈরিতে সক্ষম তাদেরকে বায়োলুমিনেসেন্ট জীব বলা হয়।বেশির ভাগ বায়োলুমিনেসেন্স সমুদ্রে দেখা যায়,কেননা সমুদ্রের গভীরের যেসব স্থানে আলো পৌছাতে পারে না সেসব স্থানে ৯০% এর বেশি বায়োলুমিনেসেন্ট জীব দেখা যায়। বায়োলুমিনেসেন্স তৈরী করে এমন কিছু সামুদ্রিক জীব হলো-ব্যাকটেরিয়া,ছত্রাক,স্কুইড,জেলিফিশ,ফায়ারফ্লাই,গ্যাস্ট্রোপোড,ছোটবড় বিভিন্ন মাছ সহ খুব অল্প সংখ্যক হাঙ্গর। এছাড়াও স্থল বা ভূমিতেও বায়োলুমিনেন্ট জীব দেখা যায়,যেমনঃজোনাকি পোকা,মিলিপিড,সেন্টিপিড,নেমাটোড,রেলপথের কীট,কিছু মাশরুম এবং কেঁচো। কিন্তু মিঠাপানিতে অর্থাৎ পুকুর কিংবা নদীর পানিতে এখনো বায়োলুমিনেসেন্স লক্ষ্য করা যায় নি।

বায়োলুমিনেসেন্ট সকল জীবগুলো প্রকৃতি প্রদত্ত বায়োলুমিনেসেন্স ক্ষমতার অধিকারী নাও হতে পারে,,এক্ষেত্রে কিছু কিছু প্রাণী বায়োলুমিনেসেন্ট জীব গুলোর সাথে মিথোজীবীতা অথবা তাদেরকে ভক্ষণের ফলে বায়োলুমিনেসেন্স প্রদর্শন করতে পারে।

বায়োলুমিনেসেন্স তৈরি প্রক্রিয়াঃ লুমিনেসেন্ট প্রতিক্রিয়াতে লুসিফেরিন এবং লুসিফেরেজ নামে দুই ধরনের রাসায়নিক পদার্থ একত্রিত হয়। প্রোটিন লুসিফেরেজ অনুঘটক হিসাবে কাজ করে, লুসিফেরিনকে বেঁধে রাখে এবং এর জারণকে সহজতর করে, যার ফলে শক্তি বা আলো উৎপন্ন হয়।


বায়োলুমিনেসেন্স এর কাজ- বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে বায়োলুমিনেন্ট জীবেরা শিকার ধরা,আত্মরক্ষা,যোগাযোগ করে থাকে।

শিকার ধরতেঃ অন্ধকার মহাসাগরে বায়োলুমিনেন্ট জীব গুলো হালকা আলোর ঝলকানি ব্যবহার করে শিকারকে আকৃষ্ট করে,কিছু মাছ বায়োলুমিনেসেন্স কে একটি টর্চলাইট হিসেবে ব্যবহার করে।অ্যাংলারফিশের মতো মাছগুলি লুমিনাস ব্যাকটেরিয়াকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে শিকারকে বোকা বানিয়ে দেয়।

আত্মরক্ষাঃ

বায়োলুমিনেসেন্ট জীব গুলো যখন কোনো শিকারির ফাঁদে পড়ে তখন তারা বিভিন্ন আলো প্রদর্শন করে শিকারির চোখকে ফাঁকি দিয়ে পলায়ন করে অথবা তারা আত্মরক্ষার জন্য বর্ণ পরিবর্তন করে নিজেদের আড়াল করে রাখে।

যোগাযোগঃ "ফায়ারফ্লাই" বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে পুরুষ ও স্ত্রী'রা ঝলকানি বিনিময় করে। স্ত্রী'রা উড়ন্ত পুরুষদের ঝলকানিতে সাড়া দেয়,সাড়া পেয়ে পুরুষ সদস্যরা স্ত্রী সদস্যদের কাছে আসে এবং তাদের সঙ্গম হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফায়ারফ্লাই এর সদস্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে, প্রতিটি প্রজাতির সংকেতগুলি ক্রম অনুসারে কোড করা হয়।

বায়োলুমিনেসেন্স এর বর্ণঃ নীল রঙ ছাড়াও বায়োলুমিনেসেন্স বেশ কিছু বর্ণের হতে পারে।তবে,নীল থেকে লাল রঙের মাধ্যমে বিভিন্ন রঙে বায়োলুমিনেসেন্স হয়।ফায়ারফ্লাই এবং কিছু বিটলের মতো স্থলজ প্রাণীগুলোতে বায়োলুমিনেসেন্স সবুজ বা হলুদ আবার কখনো কখনো লালও হতে পারে।তবে সমুদ্রের বায়োলুমিনেসেন্স বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীল-সবুজ বা সবুজ হয়ে থাকে।

বায়োলুমিনেসেন্স এর উপকারিতাঃ

  • উপজাতিরা ঘন জঙ্গলের মধ্যে যাতায়াতের সময় আলো জ্বালানোর জন্য বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে থাকে।খননকারীরা সুরক্ষা প্রদীপ হিসেবে "ফায়ারফ্লাই" ব্যবহার করতেন।
  • গোবেষকরা সবুজ শক্তির সম্ভাব্য উৎস হিসেবে বায়োলুমিনেসেন্স এর দিকে ঝুকছেন।
  • ভবিষ্যতে রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট গুলোতে বায়োলুমিনেসেন্স এর ব্যবহার হতে পারে।
  • পানির বিষাক্ততা পরীক্ষণের জন্য বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহৃত হয়।

বায়োলুমিনেসেন্স একটি বিরল ঘটনা,নিম্নলিখিত স্থান সমূহতে ভ্রমণ করে আপনিও এই অসাধারণ দৃশ্য গুলো উপভোগ করতে পারবেন-

  • San Diego, California, USA
  • Luminous Lagoon, Jamaica
  • Little Corn Island, Nicaragua
  • Bocas del Toro, Panama

Новое сообщение