Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

ধর্ষণ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
A map of the world showing a composite index about rape of women in 2018, data by WomanStats Project.
  ধর্ষণ এই সমাজে বড় সমস্যা নয়
  এই সমাজে ধর্ষণ একটি সমস্যা
  এই সমাজে ধর্ষণ একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা
  এই সমাজে ধর্ষণ একটি বড় সমস্যা
  এই সমাজে ধর্ষণ একটি সাধারণ ঘটনা
  কোনো তথ্য নেই
ধর্ষণ
Martin van Maele 06.jpg

'ধর্ষণ' (বাংলা উচ্চারণ: [ধর্ষণ] (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)) এক ধরনের যৌন নিগ্রহ। সাধারণত একজন ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম বা অন্য কোনো ধরনের যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে ধর্ষণ বলা হয়। ধর্ষণ শারীরিক বলপ্রয়োগ, অন্যভাবে চাপ প্রদান কিংবা কর্তৃত্বের অপব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত হতে পারে। অনুমতি প্রদানে অক্ষম (যেমন- কোনো অজ্ঞান, বিকলাঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি) এরকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হওয়াও ধর্ষণের আওতাভুক্ত। ধর্ষণ শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবে কখনো কখনো 'যৌন আক্রমণ' শব্দগুচ্ছটিও ব্যবহৃত হয়।

ধর্ষণের অভিযোগ, বিচার ও শাস্তিপ্রদান বিভিন্ন শাসনব্যবস্থায় বিভিন্ন রকম। আন্তর্জাতিকভাবে, ২০০৮ সালে পুলিশ কর্তৃক লিপিবদ্ধ ধর্ষণের হার ছিল আজারবাইজানে প্রতি লক্ষে ০.২ এবং বতসোয়ানায় প্রতি লক্ষে ৯২.৯। বিশ্বজুড়ে প্রধানত পুরুষদের দ্বারাই ধর্ষণ সংঘটিত হয়। অপরিচিত ব্যক্তিদের দ্বারা ধর্ষণের ঘটনার চেয়ে পরিচিত ব্যক্তিদের দ্বারা ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা অনেক বেশি, এবং কারাগারে পুরুষ কর্তৃক পুরুষনারী কর্তৃক নারী ধর্ষণের ঘটনাও সাধারণ, কিন্তু এই ধরনের ধর্ষণ সম্ভবত সবচেয়ে কম আলোচিত ধর্ষণগুলোর অন্তর্ভুক্ত।

আন্তর্জাতিক সংঘাত বা যুদ্ধের সময়ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ও ব্যাপক হারে ধর্ষণ (যুদ্ধকালীন যৌন সহিংসতাযৌন দাসত্ব) ঘটতে পারে। এ ধরনের ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধযুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ধর্ষণ গণহত্যার একটি উপাদান হিসেবেও স্বীকৃত।

ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিরা মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে এবং আঘাত-পরবর্তী চাপ বৈকল্যে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া ধর্ষণের ফলে গর্ভধারণযৌন সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি গুরুতরভাবে আহত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি ধর্ষকের দ্বারা, এবং কোনো কোনো সমাজে ভুক্তভোগীর নিজ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের দ্বারা সহিংসতার শিকার হতে পারে।

সংজ্ঞা

সাধারণ সংজ্ঞা

অধিকাংশ বিচারব্যবস্থায় ধর্ষণ বলতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়া কিংবা অন্য কোনোভাবে তার দেহে যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে বুঝায়। সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আইনবিদদের মধ্যে ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহাসিক যুগ ও ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতেও ধর্ষণের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। সময়ের সাথে ধর্ষণের সংজ্ঞারও পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৭৯ সালের পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো পুরুষকে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করার দায়ে অভিযুক্ত করা যেত না। ১৯৫০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু রাজ্যে কোনো শ্বেতাঙ্গ নারী স্বেচ্ছায় কোনো কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হলেও সেটিকে 'ধর্ষণ' বিবেচনা করা হত।

২০১২ সালের পূর্ব পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ধর্ষণকে কেবল নারীদের বিরুদ্ধে পুরুষদের দ্বারা সংঘটিত একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করত। ২০১২ সালে তারা ধর্ষণের সংজ্ঞা হিসেবে "কোনো নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বলপূর্বক তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম"-এর পরিবর্তে "ভুক্তভোগীর অনুমতি ছাড়া যোনি বা পায়ুতে শরীরের কোনো অংশ বা কোনো বস্তু দ্বারা অনুপ্রবেশ কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তির যৌনাঙ্গ দ্বারা মুখে অনুপ্রবেশ"-কে গ্রহণ করে। পূর্ববর্তী সংজ্ঞাটি ১৯২৭ সাল থেকে অপরিবর্তিত ছিল এবং এটিকে পুরাতন ও সংকীর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হত। নতুন সংজ্ঞাটি স্বীকার করে নেয় যে, নারী ও পুরুষ উভয়েই ধর্ষক বা ধর্ষিত হতে পারে, এবং কোনো বস্তুর দ্বারা ধর্ষণও ভুক্তভোগীর জন্য যোনিপথ/পায়ুপথে ধর্ষণের মতো কষ্টদায়ক হতে পারে। এফবিআই আরো স্বীকার করে যে, ভুক্তভোগী মানসিক বা শারীরিক অক্ষমতার কারণে অনুমতি প্রদানে অক্ষম হতে পারে, কিংবা ভুক্তভোগীকে মাদকদ্রব্য দ্বারা অচেতনও করা হয়ে থাকতে পারে। এফবিআই কর্তৃক এই সংজ্ঞাটি গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা রাজ্য ফৌজদারি আইনের কোনো পরিবর্তন ঘটায় নি কিংবা বিচারব্যবস্থায়ও কোনো প্রভাব ফেলে নি, বরং এর উদ্দেশ্য ছিল দেশজুড়ে যেন সঠিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগ আসে।

কিছু দেশ বা বিচারব্যবস্থা ধর্ষণ ও যৌন আক্রমণকে পৃথক হিসেবে চিহ্নিত করে। তারা সাধারণত কেবল যোনিতে শিশ্নের অনুপ্রবেশ কিংবা কেবল শিশ্নের মাধ্যমে অনুপ্রবেশকে ধর্ষণ হিসেবে এবং অন্যান্য ধরনের অনৈচ্ছিক যৌনক্রিয়াকে যৌন আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করে। উদাহরণস্বরূপ, স্কটল্যান্ডে কেবল শিশ্নের দ্বারা সংঘটিত যৌন অনুপ্রবেশকেই ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করে। ১৯৯৮ সালে রুয়ান্ডার জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ধর্ষণকে "চাপ প্রদানের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির ওপর সংঘটিত যৌন প্রকৃতির শারীরিক আক্রমণ" হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থায় 'ধর্ষণ' শব্দটি ব্যবহার না করে 'যৌন আক্রমণ' কিংবা 'অপরাধমূলক যৌন আচরণ' শব্দগুচ্ছকে ব্যবহার করা হয়।

ব্যাপ্তি

যে কোনো লিঙ্গ, বয়স, জাতি, সংস্কৃতি বা ধর্মের ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হতে পারে। ধর্ষণকে বেশ কয়েকটি ধরনে ভাগ করা হয়, যেমন- গণধর্ষণ, বৈবাহিক ধর্ষণ, অজাচার ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, কারাগারে ধর্ষণ এবং যুদ্ধকালীন ধর্ষণ। দীর্ঘদিন ধরে কোনো রকম শারীরিক ক্ষতির শিকার না হয়ে কোনো ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হতে পারে।

কারণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নারীদের প্রতি সহিংসতামূলক আক্রমণ (যার মধ্যে ধর্ষণও রয়েছে) করার পেছনে যে কারনগুলো ব্যাখা করেছেন সেগুলো হল:

  • পারিবারিক সম্মান এবং যৌন পরিশুদ্ধতার বিশ্বাস;
  • পুরুষরা যৌন সুবিধা পাবেই এমন মনোভাব;
  • যৌন সহিংসতার জন্য দুর্বল আইনকানুন

ধর্ষণের কোন একক কারণ নেই যাকে সুনির্দিষ্ট করে এই অপরাধের প্রেরণা বলা যাবে। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ আছে যেমন: রাগ, ক্ষমতা প্রদর্শন, ধর্ষকাম, যৌন তৃপ্তি বা বিবর্তনগত কারনে। অন্যদিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রামানিক কারণ খুজে পাওয়া যায় যা ধর্ষণের কারণ বলা যায়। আমেরিকান মনোবিদ ডেভিড লাইস্যাক যিনি ২০০২ সালে গবেষণা করা "অচিহ্নিত ধর্ষক" বিষয়ের সহ-লেখক ছিলেন, তিনি বলেন যে "সাধারণ মানুষের তুলনায় অচিহ্নিত ও চিহ্নিত ধর্ষকরা নারীদের প্রতি বেশি রাগ পোষন করেন, তাদের মধ্যে নারীদের উপর আধিপত্যের মনোভাব বেশি, তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা মধ্যে হঠাৎ ঝোকের বশে কাজ করার বিষয়টি থাকে, অসামাজিক হয়, অতি-পৌরুষ মনোভাব থাকে, কম দয়ালু হয় এবং সমাজের নিয়মকানুন মানতে চান না।

যৌন আগ্রাসনকে পৌরষত্বের লক্ষন ও বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন এমন অনেক পুরুষের দল আছে এবং তারা তাদের কাছাকাছি থাকা সকল পুরুষদের মধ্য থেকে বেশি উদ্দমী হয়। যুবা পুরুষদের মধ্যে যৌন আগ্রাসী আচরণ গ্যাং বা গোষ্ঠী সদস্যতার পাশাপাশি অন্য অপরাধী সহকর্মীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

দলগত গণধর্ষণকে মহিলাদের অনৈতিক আচরণকে অনুৎসাহিত করার পদ্ধতি বা শাস্তি প্রদানের পদ্ধতি হিসেবে মনে করেন উদাহরণস্বরূপ সংক্ষিপ্ত স্কার্ট পরা বা মদ্য পান করা বা বারে যাওয়া ইত্যাদি। পাপুয়া নিউ গিনির কয়েকটি অঞ্চলে, সাধারণত বয়স্কদের অনুমতি নিয়েই নারীদের প্রকাশ্য গণধর্ষণ দ্বারা শাস্তি দেওয়া হয়।

দলগত গণধর্ষণ এবং গণধর্ষণ প্রায়শই পুরুষ বন্ধনের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সৈন্যদের আচরনের মধ্যে এটি বিশেষত স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যেহেতু গণধর্ষণের ঘটনা প্রায় তিনটি চতুর্থাংশ বা তারও বেশি যুদ্ধ ধর্ষণ হিসাবে করা হয় এবং শান্তির সময় গণধর্ষণ মোট ধর্ষণের এক চতুর্থাংশেরও কম হয়। কমান্ডাররা কখনও কখনও সৈন্যদের ধর্ষণের জন্য চাপ দেয় কারণ ধর্ষণ করা নিষিদ্ধ এবং অবৈধ তাই জড়িতদের মধ্যে আনুগত্যের মনোভাব তৈরি করে। স্বেচ্ছাসেবী সৈনিকদের থেকেও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি থেকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ করা সৈন্যদের ধর্ষণে জড়িত করা হয় কারন ঐ সকল নিয়োগকৃত সৈন্যরা এই দলের প্রতি কম আনুগত্য প্রকাশ করে। পাপুয়া নিউ গিনিতে , রাসকোল গ্যাংয়ের মতো শহুরে গ্যাংগুলি প্রায়ই প্রাথমিকভাবে মহিলাদের ধর্ষণ করে কারণ তারা বিষয়টি শুরু করলে প্রশ্নবিদ্ধ হবার সুযোগ কম থাকে।

যৌন পাচার এবং সাইবার সেক্সের পাচারকারীরা আর্থিক লাভবান হবার জন্য এবং যৌন তৃপ্তির জন্য ধর্ষণ করার অনুমতি দেয় বা চালিয়ে যায়। ধর্ষণ পর্নোগ্রাফি শিশু পর্নোগ্রাফিসহ তৈরি করা হয় মুনাফা লাভ এবং অন্যান্য কারণে। পর্নহাব নামক সাইটে শিশু যৌন নির্যাতন ও শিশু ধর্ষণ ভিডিওর দৃষ্টান্ত রয়েছে, নীতিমালা অনুযায়ী পরে তা অপসারণ করা হয়।

প্রভাব

বাধ্যতামূলক যৌন ক্রিয়াকলাপের বৈশ্বিক হারের তীব্রতা নির্ধারণ করতে "হু" কর্তৃক ব্যবহৃত একটি সমীক্ষায় প্রশ্ন ছিল "আপনি কি কখনও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সঙ্গম করতে বাধ্য হয়েছেন?" এই প্রশ্নের ধরনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার হার বেশি। যেখানে সরাসরি জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নে "আপনি কখনও নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা" উত্তরের হার নেতিবাচক এবং প্রতিক্রিয়ার হার কম।

"হু"র রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের পরিণতি বর্ণিত হয় এভাবে:

আবেগিক এবং মানসিক

প্রায়ই, ধর্ষণের শিকার হওয়া ব্যক্তি তাদের সাথে কি ঘটেছে সনাক্ত করতে পারে না। পরে কিছু বছর ধরে অস্বীকার করে থাকতে পারে. তাদের অভিজ্ঞতা ধর্ষণ কি না তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকে বিশেষ করে মানসিকভাবে নিগৃহীত ধর্ষণের শিকারদের ক্ষেত্রে। সাধারণত নারীরা বিভিন্ন কারনে তারা যে নিপীড়নের স্বীকার তা চিহ্নিত করতে পারেন না যেমন লজ্জার অনুভূতি, বিমূঢ়তা, অভিন্ন আইনি সংজ্ঞা থাকা, বন্ধু/সঙ্গীকে একজন ধর্ষণকারী হিসেবে নির্ধারণ করার অনিচ্ছা অথবা তারা নিজেরাই সামাজিক অভিযোগের মুখে পড়বে এই মনোভাবের কারণে। জনসাধারণ 'পাল্টা লঘু' মনোভাব হিসাবে এই আচরণ বুঝত পারে এবং এগুলিকেই একটি অসাধু মহিলার প্রমাণ হিসাবে.তুলে ধরে।

ধর্ষণের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া

২০১৫ সালের ২১ মে রাতেবাংলাদেশের ঢাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গারো তরুণী৷ এই ধর্ষণ মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করে। পুলিশের আচরণে সংক্ষুব্ধ হয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও ব্লাস্টসহ পাঁচটি মানবাধিকার সংগঠন বাদী হয়ে বাংলাদেশ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে। রিটের শুনানি করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ ২০১৫ সালের ২৫ মে তারিখে রুল নাইসাই জারি করে৷ ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে আদালত রায় ঘোষণা করে। পূর্ণাঙ্গ রায়ে ধর্ষণের বিষয়ে ১৮ দফা নির্দেশনাসহ পরামর্শ দেয় আদালত। এর মধ্যে দ্রুত অভিযোগ নেয়া, দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা করানো ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএ টেস্ট অন্যতম৷ নির্দেশনায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয় যে, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন বা অনুরূপ সংক্রান্ত ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাত্‍ক্ষণিকভাবে অভিযোগ লিখিতভাবে রেকর্ড করবেন। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনও পুলিশ কর্মকর্তা যদি অভিযোগ নিতে দেরি করেন, তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বিধান তৈরি করতে হবে৷

১৮ দফা নির্দেশনা

১. ধর্ষণ, যৌননিপীড়ন বা এ-সংক্রান্ত ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ লিখিতভাবে রেকর্ড করবেন। এক্ষেত্রে ওই থানার আওতার মধ্যে ঘটনা সংঘটিত হোক বা না হোক, সেটা মুখ্য নয়।
২. অবিলম্বে এমন একটি সার্ভার তৈরি করতে হবে, যাতে এ ধরনের অভিযোগ সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে করা যায়।
৩. সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো পুলিশ অফিসার যদি অভিযোগ গ্রহণে বিলম্ব করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকতে হবে।
৪. প্রত্যেক থানায় কনস্টেবলের নিচে নয়, এমন একজন নারী পুলিশ রাখতে হবে। অভিযোগ পাওয়ার পর ডিউটি অফিসার একজন নারী কর্মকর্তার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মাধ্যমে ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য, শুভাকাঙ্ক্ষী, সমাজকর্মী বা আইনজীবীর উপস্থিতিতে অভিযোগ রেকর্ড করবেন।
৫. সবক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর সমস্ত তথ্য সংরক্ষণে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
৬. প্রত্যেক থানায় ভুক্তভোগীদের জন্য সহযোগিতাপূর্ণ নারী সমাজকর্মীদের একটি তালিকা তৈরি রাখতে হবে।
৭. ভুক্তভোগীর আইনজীবী, সংশ্নিষ্ট বন্ধু, সমাজকর্মী অথবা নিরাপত্তা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার অভিযোগ রেকর্ড করতে হবে।
৮. অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রের দেওয়া অধিকার সম্পর্কে ভুক্তভোগীকে সচেতন করতে হবে এবং সে চাইলে যে কোনো তথ্য প্রদান করতে হবে।
৯. অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে ডিউটি অফিসারকে 'ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার'-এ অবহিত করতে হবে।
১০. ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার কোনো নারী বা মেয়ে করণীয় সম্পর্কে বুঝতে অক্ষম হলে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে হবে।
১১. লিখিত তথ্য গ্রহণের পর কোনো প্রকার বিলম্ব না করে তদন্ত কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করবেন।
১২. ভুক্তভোগীর দ্রুত সেরে উঠতে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকতে হবে। ১৩. ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নমূলক সব ঘটনায় বাধ্যতামূলকভাবে অভিযোগ প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে।
১৪. অপরাধ ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে তা ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠাতে হবে।
১৫. যে কোনো রিপোর্ট সংগ্রহ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তদন্ত সংস্থার যে কোনো ব্যর্থতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। ১৬. যত দ্রুত সম্ভব মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত রিপোর্ট প্রস্তুত করবেন।
১৭. নারী ও শিশুদের ওপর সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে '১০৯২১' নম্বরে ফোন করে যেন প্রতিকার পেতে পারে, সে বিষয়টি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং ওয়েব সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
১৮. ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পরামর্শ দানের জন্য প্রত্যেক মহানগরে একটি করে সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

আরো দেখুন


পাদটীকা

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение