Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
নিদ্রারোগে ক্যাফেইন প্রভাব
নিদ্রারোগে ক্যাফেইন প্রভাব |
---|
ক্যাফেইন প্রভাবিত স্লিপ ডিজর্ডার হচ্ছে একটি মানসিক সমস্যা যা ক্যাফেইন এর অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে তৈরি হয়। "যদি ঘুমানোর খুব কম সময় পূর্বে বা সারা দিন ধরে বারবার কফি খাওয়া হয় তাহলে ঘুমের সময়ে দেরি হয়, সমগ্র ঘুমের সময়কাল কমে যায়, ঘুমের স্বাভাবিক ধাপগুলোয় পরিবর্তন ঘটে, এবং ঘুমের মান কমে যায়।" ক্যাফেইন ধীর-তরঙ্গ নিদ্রাকে (slow-wave sleep) কমিয়ে দেয় যা নিদ্রাচক্রের প্রথম দিকের অংশ, এবং দ্রুত অক্ষি সঞ্চালন নিদ্রা (rapid eye movement sleep) কমিয়ে দিতে পারে যা নিদ্রাচক্রের শেষের অংশে ঘটে। ক্যাফেইন জাগিয়ে থাকার সময়কে বাড়িয়ে দেয়, এবংসন্ধ্যার শেষে উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন গ্রহণ বিলম্বিত নিদ্রা-প্রারম্ভ (Sleep onset latency) তৈরি করে, যার ফলে দেরি করে ঘুম ধরে। বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে,ওষুধে ক্যাফেইনের পরিমাণ এবং নিদ্রাজনিত সমস্যার মধ্যে একটি সম্পর্ক দেখা যায়।
মানসিক সমস্যার এই বিশেষ ধরনটিকে ডায়গনস্টিক এন্ড স্ট্যাটিস্টিকাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিজর্ডার এর চতুর্থ ভারশনে (DSM-IV) উল্লেখ করা হয়, যেখানে বলা হয় পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণিত ক্যাফেইন এর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবে অবশ্যই ঘুমের কোন উল্লেখযোগ্য অক্ষমতা জড়িত থাকবে; যদি নিদ্রাজনিত সমস্যাগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পর্কিত স্লিপ ডিজর্ডার, নারকোলেপ্সি, সারকেডিয়ান রিদম স্লিপ ডিজর্ডার বা মানসিক সমস্যা র কারণে হয়, তাহলে ক্যাফেইন প্রভাবিত স্লিপ ডিজর্ডার সেই ঘুমের সমস্যার কারণ বলে বিবেচিত হবে না। এই সমস্যার ফলে ভুক্তভোগীর শারীরিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।
অধিক ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে একটি বিষক্রিয়া অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই বিষক্রিয়ার সময়কালে উত্তেজনা, বিরামহীনতা, উৎকণ্ঠা, অসংলগ্ন চিন্তা বা কথা বলা, এবং এমনকি ইনসমনিয়া দেখা যায়। এমনকি কেবল এক কাপ কফিও নিদ্রা-বিলম্ব এবং ঘুমের নিম্ন মান, বিশেষ করে অ-আরইএম গভীর নিদ্রার মান কমাতে পারে। সকালে এক কাপ কফি গ্রহণের ফলে সেই রাতে এই সমস্যাগুলো হতে পারে, তাই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ব্যক্তিকে ক্যাফেইন গ্রহণ বন্ধ করে দিতে হবে।
ক্যাফেইন এর জীববিজ্ঞান
ক্যাফেইন রক্তপ্রবাহে পাকস্থলি ও ক্ষুদ্রান্ত্রের মাধ্যমে প্রবেশ করে এবং গ্রহণের ১৫ মিনিটের মধ্যে এর উত্তেজক প্রভাব শুরু করতে পারে। একবার ক্যাফেইন শরীরে প্রবেশ করলে, এটি কয়েক ঘণ্টা ধরে শরীরে থাকে, এবং শরীরে থাকা কফির অর্ধেক দূর হতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যখন ক্যাফেইন মস্তিষ্কে পৌঁছায়, এটি ননএপিনেফ্রিন নামক হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় যা আমাদের মধ্যে "লড়াই নয়তো পলায়ন" প্রতিক্রিয়া বা অতিজাগরণ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, যা ক্ষতিকর ঘটনা বা জীবনঝুঁকির সময় শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিসৃত হয়। নরএপিনেফ্রিনের মাত্রা বৃদ্দির ফলে নিউরনের কার্যক্রম বৃদ্ধি পায় এবং তখন যে লক্ষণ দেখা যায় তা প্যানিক এটাক এর লক্ষণের অনুরূপ।
যদিও ক্যাফেইন ঘুমের মান হ্রাস করে, এর কোন সাক্ষ-প্রমাণ পাওয়া যায় নি যে ক্যাফেইন সব ব্যক্তির উপরেই একইভাবে কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে কোন কোন ব্যক্তির বেলায় নিয়মিত ক্যাফেইন গ্রহণের পরেও কোন ধরনের নিদ্রাজনিত সমস্যা পাওয়া যায় না। ক্যাফেইনের নিয়মিত গ্রহণ একজন ব্যক্তির জন্য স্বাভাবিক হতে পারে, তাই এটা সহজেই বোঝা সম্ভব যে সন্তোষজনক নিদ্রার জন্য কী পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ করা যাবে। এর মাধ্যমে এটা জানা যায় যে, ক্যাফেইন মস্তিষ্কের মৌলিক নিদ্রা নিয়ন্ত্রক অংশের সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং নিদ্রা নিয়ন্ত্রক কোন সহায়ক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত। সর্বোপরি ঘুমের পূর্ণাঙ্গ মান ও সময়ের জন্য প্রতিদিনকার নিদ্রাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণা
নাদজা অলিনি, স্যালোম কার্থ, এবং রেটো হাবার নিদ্রা এবং করটিকাল ম্যাচিউরেশন এর মধ্যকার সম্পর্ক নির্ণয় করেছেন এবং আরও বোঝার চেষ্টা করছেন যে কীভাবে এই বিষয়গুলো ক্যাফেইন গ্রহণের সাথে সম্পর্কিত হয় (করটিকাল ম্যাচিউরেশন একটি নিউরোডেভলপমেন্টাল পদ্ধতি যার মাধ্যমে ব্যক্তি চেতনা ও আচরণগত কাজ করতে পারে)। তারা ইলেকট্রোসাইকোলজকাল রেকর্ডিং এবং তরুণ ইঁদুরের আচরণ কাঠামোগত অবস্থার পরিমাপের মাধ্যমে নিদ্রা এবং ম্যাচিউরেশন এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো পরিমাপ করেন। গবেষণার ফলাফলে বেরিয়ে আসে যে ইঁদুরের মধ্যে যে মানুষের ঘুমের ধীর ওয়েভ কার্যক্রমের অনুরূপ ঘুমের অংশটি পাওয়া যায় তা ক্যাফেইনের স্বল্পমেয়াদী উত্তেজক প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়। আরও দেখাযায়, কম পরিমাণ ক্যাফেইন ঘুমে প্রভাবিত করে এবং ম্যাচিউরেশন সম্পর্কিত প্রভাবকগুলোতেও পরিবর্তন ঘটায়। চূড়ান্তভাবে গবেষণার মাধ্যমে পাওয়া যায় যে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির সংকটকালীন সময়ে ক্যাফেইন গ্রহণ করা হলে তা নিদ্রা ও মস্তিষ্কের পরিণতিপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে।