Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
মানব অণুজীবসমগ্র
মানব অণুজীবসমগ্র (ইংরেজি: Human microbiome) বলতে সাধারণভাবে মানবদেহের কলা ও জৈবরসের উপরিভাগে ও অভ্যন্তরে বসবাসকারী সব ধরনের অণুজীবসম্প্রদায়ের সমষ্টিকে বোঝায়। এগুলি মানুষের চর্ম, স্তনগ্রন্থি, গর্ভফুল, শুক্ররস, জরায়ু, ডিম্বকোষথলি, ফুসুফুস, লালা, মুখগহ্বরীয় শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি, নেত্রবর্ত্ম (কনজাংটিভা), পিত্তবাহ ও পৌষ্টিকনালীতে অবস্থান করতে পারে। বংশাণুবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে মানব অনুজীবসমগ্র বলতে উল্লিখিত অণুজীবগুলির বংশাণুসমগ্রের সমষ্টিকে বোঝায়, কোনও একটি মানুষের অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর বংশগতীয় চিত্র তথা অধিবংশাণুসমগ্রের একটি গাঠনিক উপাদান। মানবদেহের অণুজীবসমগ্র যে বংশাণুসমগ্রগুলি নিয়ে গঠিত, সেগুলি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিচিত্র সব অণুজীব যেমন ব্যাকটেরিয়া, আর্কিয়া (আদি এককোষী জীব), ছত্রাক এমনকি প্রোটোজোয়া ও প্রাণহীন ভাইরাসের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। যদিও অন্যান্য প্রজাতির অতিক্ষুদ্র জীবও মানবদেহে বাস করতে পারে, এগুলিকে সাধারণত মানব অণুজীবসমগ্রের সংজ্ঞার আওতা-বহির্ভূত ধরা হয়। বংশাণুসমগ্রবিজ্ঞানের প্রেক্ষাপটে মানব অণুজীবসমগ্র বলতে ঐসমস্ত অণুজীবগুলির বংশাণুসমগ্রের সমষ্টিকেও বোঝানো হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত সুস্পষ্টতর পরিভাষাটি হল "মানব অধিবংশাণুসমগ্র" (Human metagenome)।
আবার "বায়োম" তথা জীবাঞ্চলের সংজ্ঞার উপর ভিত্তি করে আরেকটি পরিভাষা রয়েছে, যার নাম "মানব অণুজীবাঞ্চল"। এটিকেও ইংরেজিতে "হিউম্যান মাইক্রোবায়োম" (Human microbiome) বলা হতে পারে। এই পরিভাষাটি দিয়ে মানবদেহে অধিবাসী সমস্ত অণুজীব, তাদের বংশাণুসমগ্র এবং তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশগত অবস্থাগুলিকে একত্রে বোঝানো হয়, অর্থাৎ এই সংজ্ঞাতে প্রদত্ত পরিবেশের জৈব ও অজৈব উভয় প্রকারের উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংখ্যার দিক থেকে মানব অণুজীবসমগ্রের সিংহভাগই ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গঠিত। অনুমান করা হয় যে মানবদেহে ৭৫ লক্ষ কোটি থেকে ২ কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া বাস করে; তুলনামূলকভাবে মানবদেহে প্রকৃত দেহকোষের সংখ্যা ৫০ লক্ষ কোটি থেকে ১ কোটি কোটি। চিরায়ত প্রাক্কলন অনুযায়ী গড়পড়তা মানবদেহের মনুষ্য কোষের তুলনায় অণুজীবকোষের সংখ্যা দশগুণ বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হলেও সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি অনুযায়ী এই অনুপাত ৩:১ বা এমনকি ১:১ হতে পারে। যাই হোক, মানবদেহে মানব বংশাণুসমগ্র নিয়ে গঠিত দেহকোষের সংখ্যার চেয়ে মানবদেহে বসবাসরত বিভিন্ন ধরনের বংশাণুসমগ্রবিশিষ্ট ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীবকোষের সংখ্যাই সম্ভবত বেশি। একারণে কেউ কেউ বলেন যে মানবদেহ এক ধরনের "অধিজীবদেহ" (Supraoganism), যা কিনা অসংখ্য মানবকোষ ও অণুজীবকোষের একটি সহাবস্থানমূলক সমবায় এবং এতে মানব ও অণুজীব উভয়ের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
মানবদেহে উপনিবেশ স্থাপনকারী কিছু কিছু অণুজীব সহজীবী প্রকৃতির; এগুলি মানুষের ক্ষতিসাধন না করে সহাবস্থান করে থাকে। আবার অন্য কিছু অণুজীব মানব পোষকদেহের সাথে মিথোজীবী সম্পর্ক গড়ে তোলে; অর্থাৎ মানবদেহের কোষ ও এগুলির মধ্যে এক ধরনের পারস্পরিক উপকার সাধনমূলক সম্পর্ক বজায় থাকে। এর বিপরীতে কিছু অণুজীব আছে, যেগুলি প্রত্যক্ষভাবে রোগ-সৃষ্টিকারী জীবাণু না হলেও এমন কিছু বিপাকীয় পদার্থ উৎপাদন করতে পারে, যা মানবদেহের কোষগুলি রূপান্তরিত করে এমন সব পদার্থ সৃষ্টি করতে পারে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। যেমন অণুজীবজাত ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন মানবদেহে এফএমও৩ নামক উৎসেচকের মধ্যস্থতায় জারিত হয়ে ক্ষতিকারক ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন এন-অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়, যা ধমনীর কাঠিন্যীভবনে ভূমিকা রাখতে পারে। কিছু অণুজীব এমনসমস্ত কাজ সম্পাদন করে যেগুলি পোষক মানবদেহের জন্য উপকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যেসমস্ত অণুজীবের উপস্থিত মানবদেহে প্রত্যাশিত এবং যেগুলি স্বাভাবিক পারিপার্শ্বিকতায় দেহে কোনও রোগ সৃষ্টি করে না, তাদেরকে "স্বাভাবিক অণুজীবসমগ্র" (normal flora বা normal microbiota) নামে ডাকা হয়।
অণুজীবগুলি যে স্বাভাবিক মানবদেহের একটি অংশ তার প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যাট ১৮৮০-র দশকে মধ্যভাগে। সেসময় অস্ট্রীয় শিশুরোগবিদ টেওডোর এশেরিখ পর্যবেক্ষণ সুস্থ ও উদরাময়ে আক্রান্ত শিশুদের অন্ত্রীয় অণুজীবসম্প্রদায়ে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তীতে ব্যাকটেরিয়াটির নাম দেওয়া হয় এশেরিচিয়া কোলাই (Escherichia Coli)। এর পরবর্তী বছরগুলিতে বিজ্ঞানীরা আরও বেশ কিছু অণুজীবকে মানবদেহ থেকে পৃথক করতে সক্ষম হন। যেমন ১৮৯৮ সালে ভেইলোনেলা পার্ভুলা (Veillonella parvula) নামক ব্যাকটেরিয়াটিকে মুখগহ্বর, পরিপাকতন্ত্র, রেচনতন্ত্র ও ঊর্ধ্ব শ্বসনতন্ত্রের অণুজীব সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এরপর ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে বাইফিডোব্যাকটেরিয়াকে অন্ত্রীয় অণুজীব সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এরপর সমগ্র ২০শ শতক ধরে আরও অনেক অণুজীবকে নাসাপথ, মুখগহ্বর, চর্ম, পৌষ্টিকালী ও রেচন-জনন নালী থেকে বের করা হয় এবং এগুলিকে মানবদেহের বিভিন্ন অণুজীবসম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও এইসব অণুজীবকে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ধারণাগত দৃষ্টিকোণ থেকে অধ্যয়ন করা হয়েছিল, তা সত্ত্বেও কেবল ২১শ শতকের প্রথম দশকে এসেই মানব অণুজীবসমগ্র ধারণাটি পূর্ণতা লাভ করে এবং ঐ নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকে অণুজীবগুলির অপেক্ষাকৃত গভীরতর গবেষণা শুরু হয়। ২০০৭ সালের পরে মানব অণুজীবসমগ্রের উপরে জ্ঞান যথেষ্ট বৃদ্ধিলাভ করে। ঐ বছর মানব অণুজীবসমগ্র প্রকল্প নামের পাঁচ বছর মেয়াদী একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল মানবদেহে প্রাপ্ত বিভিন্ন অণুজীব সম্প্রদায়গুলির ধর্ম আবিষ্কার করা এবং মানুষের স্বাস্থ্য ও রোগের উপরে প্রতিটি অণুজীবের কী ভূমিকা তা শনাক্ত করা। বংশাণুসমগ্রের অনুক্রম নির্ণয় প্রযুক্তির খরচ কমে যাওয়ার কারণে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা ঐ মুহূর্তে সুবিধাজনক ছিল। এই প্রযুক্তির সুবাদে পরীক্ষাগারে অণুজীবসমূহের ফলন বা কালচার সৃষ্টি না করে সরাসরি মানবদেহ থেকে প্রাপ্ত নমুনাতেই অণুজীব শনাক্ত করা সহজ হয়ে যায়। এছাড়া প্রযুক্তিটি একজন ব্যক্তির দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির দেহ থেকে পৃথকীকৃত অণুজীবসমূহের ডিএনএ অনুক্রম তুলনা করার প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ করে দিয়েছিল। প্রকল্পটিতে প্রধানত চর্ম, মুখগহ্বর, নাক, পৌষ্টিকনালী এবং যোনিতে অবস্থিত অণুজীবগুলির উপরে বেশি জোর দেয়া হয়। প্রকল্প শুরু হওয়ার প্রথম তিন বছরের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা মানব অণুজীব সম্প্রদায়ের অন্তর্গত বহু নতুন সদস্য আবিষ্কার করেন এবং প্রায় ২০০টি ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সদস্যের ধর্ম নির্ণয় করতে সক্ষম হন। প্রকল্পটি ২০১২ সালে এর প্রাথমিক ফলাফলগুলি প্রকাশ করার মাধ্যমে এর ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে।
কিছু কিছু প্রাক্কলন অনুযায়ী মানবদেহের অণুজীবসম্প্রদায়গুলিতে সর্বমোট ৯০০ থেকে ১০০০ ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির অণুজীব আছে। এর ফলে মানবদেহে অণুজীবীয় বংশাণুসমগ্রের এক অসাধারণ বিচিত্র সমবায়ের সৃষ্টি হয়েছে। এই অণুজীবসমগ্রের গঠন এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে আলাদা। এমনকি একই ব্যক্তির এক পার্শ্ব (যেমন ডান হাতে) যে অণুজীবসম্প্রদায়গুলি থাকে, তার প্রতিসম অপর পার্শ্বে (যেমন বাম হাতে) সেগুলি অপেক্ষা ভিন্ন অণুজীবসম্প্রদায় বাস করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষের একটি হাতের তালুতে প্রায় ১৫০ রকমের ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, কিন্তু একই ব্যক্তির দুই হাতেই বিদ্যমান, এমন সাধারণ ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির সংখ্যা মাত্র ১৭%। আর দুইজন ভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে হাতের তালুতে একই প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া আছে মাত্র ১৩%।
মানুষের অন্ত্রে অণুজীবসমগ্রের বৈচিত্র্য ও প্রাচুর্য অত্যন্ত বেশি। ১২৪ জন ইউরোপীয় ব্যক্তির উপরে করা একটি গবেষণায় গবেষকেরা প্রায় ৩৩ লক্ষ অণুজীবীয় বংশাণু পৃথক করতে সক্ষম হন। এই বংশাণুগুলির অনেকগুলিই মানব অন্ত্রে অবস্থিত ব্যাকটেরিয়ার বিভিন্ন প্রজাতিকে প্রতিনিধিত্ব করে। ধারণা করা হয় যে প্রতিটি ব্যক্তির অন্ত্রে কমপক্ষে ১৬০টি ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া বাস করে। মানব সম্প্রদায়ে প্রায়শ প্রাপ্ত এই ব্যাকটেরিয়া প্রজাতিগুলিকে চিহ্নিত করা সব মানুষের মধ্যে সাধারণ ব্যাকটেরিয়া মজ্জা সংজ্ঞায়িত করার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাধারণ ব্যাকটেরিয়া মজ্জাকে সংজ্ঞায়িত করার বদৌলতে বিজ্ঞানীরা পুষ্টি, সংস্কৃতি ও বংশগতীয় প্রতিকৃতি-র (জিনোটাইপ) সাথে মানব অণুজীবসমগ্রের আন্তঃক্রিয়াতলটিকে আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
মানব অণুজীবসমগ্রের অধিকাংশ সদস্য অণুজীবই মানবদেহের উপকারে আসে, এমন সব বৈশিষ্ট্য প্রদান করে থাকে, যা ঐসব অণুজীবের অবর্তমানে মানবদেহে অনুপস্থিত থেকে যায়। মানব অন্ত্রে অবস্থিত অনেক অণুজীব হজমকৃত খাদ্য থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে, এবং এই কাজ করতে গিয়ে ঐসব খাদ্যকে আরও বেশি করে ভাঙতে ও সহজে শোষণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া তারা মানব অন্ত্রে ক্ষতিকর বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যেন উপনিবেশ গড়তে না পারে, সে ব্যাপারেও উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলি সাহায্য করে থাকে। তবে এর বিপরীতে মানব অণুজীব সম্প্রদায়গুলিতে এমন অনেক ব্যাকটেরিয়া আছে যেগুলি রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুর সাথে একত্রে কাজ করে, কিংব নিজেরাই রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুতে পরিণত হতে পারে। এদের স্ট্যাফাইলোকক্কাস, স্ট্রেপটোকক্কাস, এন্টেরোকক্কাস, ক্লেবসিয়েলা, এন্টেরোব্যাকটার এবং নেইসারিয়া গণের ব্যাকটেরিয়াগুলি উল্লেখযোগ্য।
ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিল নামক অণুজীবের সংক্রমণের ঘটনাটি দিয়ে মানব অণুজীবসমগ্র ও সুস্বাস্থ্য ও রোগের মধ্যকার সম্পর্কের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এই অণুজীবটির সংক্রমণ হলে বারংবার গুরুতর উদরাময় রোগ হয়, তলপেটে ব্যথা হয় ও বমি বমি ভাব হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতালে কোনও রোগী পুরো মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া নিরোধক (অ্যান্টিবায়োটিক) ঔষধ সেবন করলে তার দেহে এই সংক্রমণটি ঘটে। ব্যাকটেরিয়া নিরোধক ঔষধগুলি রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে কিংবা তাদের প্রজনন ব্যাহত করে। কিন্তু এর একটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্বাভাবিক মানব অণুজীব সম্প্রদায়গুলির গঠনে নাটকীয় পরিবর্তন সংঘটিত হয়। এর ফলে পূর্বে প্রতিষ্ঠিত ব্যাকটেরিয়ার উপনিবেশগুলি সম্পূর্ণ ভিন্ন ও সম্ভাব্য রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে পারে। সি ডিফিসিল সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে রোগীর দেহের অন্ত্রে সুস্থ ব্যক্তির মল প্রতিস্থাপন করে অন্ত্রে অবস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়ার আদর্শ গণসংখ্যা পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
যেসমস্ত বিজ্ঞানী মানবদেহে অতিস্থূলতা নিয়ে গবেষণা করেন, তারা অতিস্থূল ব্যক্তিদের দেহে স্বাভাবিক ওজনের ব্যক্তিদের তুলনায় এবং পাকস্থলী-ঘুরপথ শল্যচিকিৎসাপ্রাপ্ত (গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি) ব্যক্তিদের তুলনায় প্রেভোটেলা ও ফার্মিকিউটিস প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া এবং মিথেন-উৎপাদক আর্কিয়া অণুজীবের অতিরিক্ত বাহুল্য শনাক্ত করেছেন। তারা সন্দেহ করছেন যে এই অণুজীবগুলি খাদ্য থেকে শর্করা বের করে আনতে বেশি দক্ষ। এর বিপরীতে সাধারণ ওজনের ব্যক্তিদের অন্ত্রস্থিত অণুজীবগুলি শর্করা বের করে আনার কাজে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ। এর ফলে দেহে যে অতিরিক্ত শর্করার উপস্থিতি হয়, সেগুলি দেহে মেদ আকারে জমা হতে থাকে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি অতিস্থূলতায় ভুগতে শুরু করেন।
মানব অণুজীবসমগ্রের উপরে চলমান গবেষণা ভবিষ্যতে মানব শারীরবিজ্ঞান, বিশেষ করে মানব পুষ্টিবিজ্ঞানের মৌলিক দিকগুলির উপরে আলোকপাত করতে বলে আশা করা হচ্ছে। মানুষের আবশ্যকীয় পুষ্টি সম্পর্কে উন্নততর উপলব্ধি রোগীর জন্য বা সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পথ্যগত উপদেশ প্রদান এবং খাদ্য উৎপাদনে পরিবর্তন আনতে পারে। অধিকন্তু, মানব অণুজীবসমগ্রের উপরে তথ্যাবলী নতুন নতুন রোগনির্ণয় কৌশল ও বিভিন্ন ধরনের মানব রোগের চিকিৎসার কৌশল উদ্ভাবনে ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া মানব অণুজীবসমগ্রের বিভিন্ন সদস্যের দ্বারা উৎপাদিত পদার্থ যেমন উৎসেচকগুলিকে শিল্পখাতে কাজে লাগানো হতে পারে।
বিভিন্ন মানব অণুজীবসমগ্র | |
---|---|
রোগ ও চিকিৎসা | |
সম্পর্কিত বিষয় | |