মিরর সিনড্রোম
মিরর সিনড্রোম বা ট্রিপল এডিমা বা ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোম একটি বিরল ব্যাধি যা সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের উপর প্রভাব ফেলে থাকে। এটি মাতৃত্বকালীন প্রি-এক্লাম্পসিয়া (প্রাক-সন্ন্যাস রোগ) সাথে ভ্রূণ এবং প্লেসেন্টাল হাইড্রপস এর অস্বাভাবিক সম্পর্ককে বোঝায়।
"মিরর সিনড্রোম" নামটি মাতৃত্বকালীন এডিমা এবং ফিটাল হাইড্রপসের মধ্যে থাকা সাদৃশ্যকে বোঝায়। ১৮২৯ সালে জন উইলিয়াম ব্যাল্যান্টিন প্রথম এই বিরল ব্যাধির বর্ণনা দেন।
কারণসমূহ
প্রসবজনিত নানাবিধ সমস্যা যথা -আরএইচ-আইসোইমিউনিযেশন, ফিটাল ইনফেকশন (ভ্রূণে সংক্রমণ), মেটাবোলিক ডিজঅর্ডার (বিপাকীয় রোগ), এবং ফিটাল ম্যালফর্মেশন এর মত ইমিউনোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার (রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলা জনিত রোগ) এই রোগের কারণ হতে পারে।
যে সকল মহিলা জন্মসূত্রে ডবল আলফা থ্যালাসেমিয়ার বৈশিষ্ট্য (প্রধানত আলফা থ্যালাসেমিয়া) এর অধিকারী তাদের ভ্রূণে হিমোগ্লোবিন বার্টস রোগের জীবাণু থেকে থাকে এবং মাতৃত্বের কারণে ভ্রূণে যে পরিবর্তন দেখা দেয় তার ফলে ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোম দেখা দেয়।
রোগনিরুপন
ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোমের রোগনিরুপণ প্রক্রিয়া এখনও অজানা রয়েছে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোমের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
- এডিমা, প্রধান বৈশিষ্ট্য
- মায়ের অ্যালবামিনুরিয়া, স্বল্প পরিমাণে
- প্রিএক্লাম্পসিয়া, বিরল
ভ্রূণে সাধারণত তরল পদার্থ ধারণ সম্পর্কিত যার মাঝে অ্যাসিটস এবং পলিহাইড্র্যামনিয়োস রয়েছে। ফিটাল হাইড্রপস একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভবত মারাত্মক ভ্রূণ রোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করে।
এটি টুইন-টু-টুইন ট্রান্সফিউশন সিনড্রোম এর সাথে যুক্ত হতে পারে।
রোগ নির্ণয়
যদিও ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোমের সঠিক রোগনিরুপণ প্রক্রিয়াটি জানা যায়নি, তবে অনেক লেখক ইউরিক এসিড এর মাত্রা, অ্যানিমিয়া এবং হেমোলিসিস ছাড়া হেমেটোক্রিট স্বল্পতাকে উল্লেখ করেছেন।
রোগ নির্ণয়ের ভিন্ন উপায়
ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোম এবং প্রিএক্লাম্পসিয়ার নির্ণয়ের মধ্যে পার্থক্য অত্যন্ত কম (না থাকায়) বিষয়টি ঘিরে বেশ বিতর্ক রয়েছে। অত্যন্ত গুরুতর ফিটাল হাইড্রপ্স ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে, এই ক্ষতির পরিমাণ যখন বেশি হলে ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোমের কারণ হতে পারে। এবং সিনড্রোমটি শুধুমাত্র ফিটাল-প্লেসেন্টাল রোগ বিস্তৃতির প্রকাশ মাত্র। প্ল্যাটলেট গণনা, অ্যাসপারেট ট্রান্সামিনেজ, অ্যালানাইন ট্রান্সামিনেজ, এবং হ্যাপ্টোগ্লোবিন সাধারণত অনাক্রান্ত থাকায় মিরর সিনড্রোমকে এইচইএলএলপি সিনড্রোম থেকে আলাদা করা যেতে পারে।
চিকিৎসা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাল্যান্টিন সিনড্রোমের ফলে ভ্রূণ বা নবজাতকের মৃত্যু ঘটে এবং বিপরীতে, মাতৃত্ব জনিত বিষয়টি প্রিএক্লাম্পসিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ