মেটাস্ট্যাসিস
| মেটাস্ট্যাসিস | |
|---|---|
| প্রতিশব্দ | মেটাস্ট্যাটিক রোগ |
| ছবিতে হেমাটোজেনাস মেটস্ট্যাসিস দেখা যাচ্ছে | |
| উচ্চারণ |
|
| বিশেষত্ব | অনকোলজি |
মেটাস্ট্যাসিস (ইংরেজি: metastasis) বা স্থানান্তরণ হচ্ছে ধারণকৃত দেহের (ইংরেজি: host body) ভেতরে থাকা কোনো রোগসৃষ্টিকারী এজেন্টের (ইংরেজি: pathogenic agent) প্রথম বা প্রাথমিক উৎপত্তিস্থল থেকে ঐ শরীরের-ই ভিন্ন কোনো অংশে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়া। সাধারণত ক্যান্সারজনিত টিউমারের ছড়িয়ে পড়াকে নির্দেশ করতে এই পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়। এটি সুনির্দিষ্ট ভাবে ক্যান্সার আক্রমণ পরিভাষা থেকে আলাদা, কারণ ক্যান্সার আক্রমণ বলতে ক্যান্সার শরীরের যে অংশে হয়েছে তার আশেপাশের টিস্যু বা কলায় ক্যান্সার কোষের সরাসরি বিস্তৃতি বা সংক্রমণ বোঝানো হয়। অপরদিকে মেটাস্ট্যাসিস প্রক্রিয়ায় রোগসৃষ্টিকারী এজেন্ট তার উৎপত্তিস্থল থেকে সম্পূর্ণ দূরবর্তী ভিন্ন একটি অঙ্গে রোগ (টিউমার বা ক্যান্সার) সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে আর তখন সেই অংশের টিউমার বা ক্যান্সারকে মেটাস্ট্যাসিস হিসেবে অভিহিত করা হয়।
যখন শরীরের কোনো অংশের কোষগুলো জিনগতভাবে পরিবর্তিত হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্রুততার সাথে ও অসীম সময়ের জন্য বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে তখন তাকে ক্যান্সার হিসেবে অভিহিত করা হয়। মাইটোসিসের মাধ্যমে কোষের এই অনিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় বংশবৃদ্ধির ফলে প্রাথমিক হেটেরোজেনিক টিউমার সৃষ্টি হয়। টিউমার সৃষ্টিকারী এই কোষগুলো এক পর্যায়ে মেটাপ্লেশিয়া প্রক্রিয়া পার হয়ে পরবর্তীতে তা যথাক্রমে ডিসপ্লেশিয়া ও অ্যানাপ্লেশিয়া প্রক্রিয়া অতিক্রম করে ম্যালিগন্যান্ট ফিনোটাইপ তৈরি করে। এরপর এই ম্যালিগন্যান্সি-ই শরীরের ভিন্ন কোনো অংশে (ইংরেজি: secondary site) পরিবাহিত হয়ে টিউমারিজেনেসিস তৈরি করার মাধ্যমে আক্রমণ করতে সহায়তা করে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
গোড়ার দিকে মেটাস্ট্যাসিসের অংশের আশেপাশের লিম্ফ নোডগুলো সবার আগে আক্রান্ত হয়। নিরেট টিউমার থেকে মেটাস্ট্যাসিস হওয়ার প্রাথমিক অঙ্গগুলোর মধ্যে রয়েছে ফুসফুস, যকৃৎ, মস্তিষ্ক, ও হাড়।
- লিম্ফ নোডের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে লিম্ফেডনোপ্যাথি
- ফুসফুস: কাশি, হেমোপ্টাইসিস ও ডিস্পেনিয়া (্স্বাসপ্রশ্বাসে টান)
- যকৃৎ: হেপাটোমেগালি (বড়ে হয়ে যাওয়া যকৃৎ), বমি ভাব ও জন্ডিস
- হাড়: হাড়ের ব্যাথা, আক্রান্ত হাড়ের ফ্র্যাকচার
- মস্তিষ্ক: নিউরোলজিকাল উপসর্গ, যেমন মাথা ব্যাথা, খিচুনি, ও ভার্টিগো
যদিও শেষ পর্যায়ে থাকা ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ব্যাথার উপসর্গ দেখা যায়, কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই এটি প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে দেখা যায় না।
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না।
ইতিহাস
মার্চ ২০১৪ সালে গবেষকরা মেটাস্ট্যাটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের প্রাচীনতম উদাহরণটি আবিষ্কার করেছিলেন। ২০১৩ সালে খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে প্রতিষ্ঠিত সুদানের একটি সমাধিতে পাওয়া যায় ৩,০০০ বছরের পুরনো একটি কঙ্কালের মধ্যে টিউমারের বিকাশ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। পরবর্তীতে কঙ্কালটি রেডিওগ্রাফি ও ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হয়েছিলো যাতে মেটাস্ট্যাসিসের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই আবিষ্কারগুলো পরে পাবলিক লাইব্রেরি অফ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়।
ব্যুৎপত্তি
মেটাস্ট্যাসিস একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ ‘স্থানচ্যুতি’, যা প্রথমে গ্রিক: μετά থেকে ইংরেজি: meta যার অর্থ ‘পরবর্তী’ এবং গ্রিক: στάσις থেকে ইংরেজি: stasis যার অর্থ "স্থান" থেকে।
আরো দেখুন
বহিঃসংযোগ
| শ্রেণীবিন্যাস | |
|---|---|
| বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান |
- প্রশ্নোত্তর: ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ আগস্ট ২০০৮ তারিখে জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট থেকে মেটাস্ট্যাটিক ক্যান্সার ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ আগস্ট ২০০৮ তারিখে