Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

মৌখিক পুনরুদন থেরাপি

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
মৌখিক পুনরুদন থেরাপি
Cholera rehydration nurses.jpg
কলেরায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি মৌখিক পুনরুদন দ্রবণ (ওআরএস) পান করছেন
অন্য নাম মৌখিক পুনরুদন দ্রবণ (ওআরএস),মৌখিক পুনরুদন লবণ (ওআরএস), গ্লুকোজ-লবণ দ্রবণ-salt solution
মেশ D005440
ইমেডিসিন 906999-treatment

মৌখিক পুনরুদন থেরাপি হলো এমন একধরনের তরল পুনঃস্থাপন থেরাপি বা চিকিৎসা পদ্ধতি যা ব্যবহৃত হয় পানিস্বল্পতার চিকিৎসা হিসেবে, যা কিনা বিশেষত ডায়রিয়া বা অতিসার রোগের জন্যে হয়ে থাকে। এই চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় খাবার পানি, যার সাথে থাকে বেশ খানিকটা শর্করা বা গ্লুকোজ এবং লবণ, বিশেষত সোডিয়ামপটাশিয়াম। মৌখিক পুনরুদন থেরাপি নাসাপথে স্থাপিত খাদ্যনল দ্বারাও দেয়া যায়। থেরাপির মধ্যে চিকিৎসাসূচি অনুসারে জিংক সম্পূরক হিসেবে প্রদান অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। হিসাব অনুযায়ী মৌখিক পুনরুদন থেরাপির দ্বারা ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুহার ৯৩% শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব।

এই পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বমি, উচ্চ-রক্তচাপ এবং রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। থেরাপি চলাকালীন যদি বমি হয়, তাহলে নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ মিনিট থেরাপি বন্ধ রেখে পুনরায় চালু করতে হবে। নির্দেশিত পদ্ধতি অনুযায়ী এই থেরাপিতে ব্যবহৃত হয় সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম সাইট্রেট, পটাশিয়াম ক্লোরাইড এবং শর্করা বা গ্লুকোজ। যদি প্রথম উল্লিখিত এই উপাদানগুলো না পাওয়া যায় তাহলে, গ্লুকোজ জাতীয় শর্করার বদলে সুক্রোজ শর্করা এবং সোডিয়াম সাইট্রেট এর বদলে সোডিয়াম বাই কার্বনেট ব্যবহার করা যাবে।  এ পদ্ধতিতে গ্লুকোজ  অন্ত্রে সোডিয়ামের শোষণ বাড়িয়ে দেয় এবং ফলাফলস্বরূপ পানির শোষণ ও বৃদ্ধি পায়। এই থেরাপির জন্যে ব্যবহৃত আরো বেশ কিছু প্রস্তুতপ্রণালী রয়েছে যার মধ্যে কিছু প্রস্তুতপ্রণালী ঘরেই সম্পাদন সম্ভব। যদিও ঘরে প্রস্তুতকৃত  মিশ্রণের ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি।

মৌখিক পুনরুদন থেরাপির উদ্ভাবন ১৯৪০ সালের দিকে ঘটলেও ১৯৭০ এর আগে এর ব্যবহার তেমনভাবে প্রচলিত হয়নি। মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণ  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ তালিকা -একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য সর্বাধিক কার্যকরী এবং নিরাপদ ঔষধগুলোর তালিকার অন্তর্ভুক্ত। ১ লিটার পানির জন্য প্রয়োজনীয় মিশ্রণের পাইকারি মূল্য একটি উন্নয়নশীল দেশে মাত্র ০.০৩ থেকে ০.২০  মার্কিন ডলার হয়ে থাকে। ২০১৫ সালের তথ্যানুযায়ী প্রায় ৪১ শতাংশ শিশু বৈশ্বিকভাবে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার জন্য মৌখিক মৌখিক পুনরুদন থেরাপি গ্রহণ করে থাকে। এই থেরাপির ব্যবহার অনূর্ধ্ব  ৫ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার

ওআরটি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি অন্যান্য তরল প্রতিস্থাপন থেরাপির তুলনায় কম হানিকর বিশেষ করে আন্তঃশিরা (আইভি) তরল প্রতিস্থাপন থেরাপির তুলনায়। বাচ্চাদের স্বল্প থেকে মাঝারি মাত্রার পানিস্বল্পতা যা কিনা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ গুলোতে প্রায়শই দেখা যায় তা খুব সহজেই ওআরটি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপির দ্বারা সহজেই শুশ্রুষা করা যায়। মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রাপ্ত ব্যক্তির ৬ ঘণ্টার মধ্যে খাদ্য গ্রহণ করা উচিত এবং ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণ শুরু করতে হবে।সীমিত যোগান বা সীমিত সুযোগ-ব্যবস্থা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি আগুনে পোড়ার জন্য সৃষ্ট পানি স্বল্পতার লক্ষণগুলো নিরসন এবং তরল পুনরুদনের জন্যেও ব্যবহৃত হতে পারে ।

কার্যকারিতা

ওআরটি বা ওআরএস ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সক্ষম। চারটি উন্নয়নশীল দেশেও ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে মৌখিক পুনরুদন থেরাপির ব্যবহার এবং মৃত্যুহার হ্রাসের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে।

চিকিৎসাবিধি

মৌখিক পুনরুদন থেরাপি দ্বারা চিকিৎসা শুরু করার আগে পানিস্বল্পতার মাত্রা জেনে নেয়া অত্যাবশ্যক। ওআরটি যেসব ব্যক্তি পানিস্বল্পতায় আক্রান্ত নয় এবং যারা পানিস্বল্পতায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করে উভয়ের জন্য কার্যকর। যেসব ব্যক্তি অতীব মাত্রার পানিস্বল্পতার লক্ষণ প্রকাশ করেন তাদের অতিসত্বর পেশাদার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং যত দ্রুত সম্ভব আন্তঃশিরা তরল প্রতিস্থাপন শুরু করা উচিত শরীরের তরলের স্বাভাবিক পরিমাণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্যে।

প্রতিলক্ষণ/যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবেনা

ও আর টি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ করে দিতে হবে এবং আন্তঃশিরা তরল প্রতিস্থাপন পদ্ধতি চালু করতে হবে, সেই বিশেষ ক্ষেত্র সমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে- সঠিকভাবে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রদানের পরেও বমি দীর্ঘায়িত হওয়া, মৌখিক পুনরুদন থেরাপি দেয়ার পরও পানিস্বল্পতার লক্ষণগুলো ক্রমেই অবনতি হওয়া, চেতনা বা জ্ঞান লোপ পাওয়ার জন্য বা অচেতন হওয়ার জন্য ব্যক্তি যদি তরল গিলতে না পারে অথবা ব্যক্তির অন্ত্রে কোন ধরনের বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে আছে এমন কোনো লক্ষণ যদি প্রকাশ পায় এবং আইলিয়াস রোগ বা অন্ত্রের স্বাভাবিক চলন হ্রাস পাওয়া । বায়ু সংবহনতন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্রের রক্ষাকারী ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টির জন্য যদি রক্ত সংবহনের অসুবিধা তৈরি হয় সেসব ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। স্বল্প সময়ের বমিতে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। যেসব ব্যক্তির বমি হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে একেক বারে অল্প অল্প করে, আস্তে আস্তে এবং একটু পর পরেই মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রদান করলে তা বমি উপশম হতে সহায়তা করবে।

প্রস্তুতপ্রণালী

বাণিজ্যিকভাবে পূর্বপ্রস্তুতকৃত পুনরুদন তরলের নমুনা। বাম দিকে নেপালের কিছু নমুনা এবং ডানে পেরুতে প্রাপ্ত কিছু নমুনা
বাণিজ্যিকভাবে পূর্বপ্রস্তুতকৃত পানিতে মিশিয়ে গ্রহণের উপযোগী পুনরুদন তরলের নমুনা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্দেশিত বিধি অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত মৌখিক পুনরুদন দ্রবণ (২৫০ মিলি)

ডব্লিউ.এইচ.ও বা বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এবং ইউনিসেফ সম্মিলিতভাবে মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণ এবং মৌখিক পুনরুদন লবণ উৎপাদনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে (সাধারণভাবে উভয়কেই ও.আর.এস হিসাবে বলা হয়)। এরই সাথে দ্রবণের উৎপাদনের জন্যে দরকারি উপাদানের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে তারা গ্রহণযোগ্য বিকল্প প্রস্তুতপ্রণালীর বিবরণও দিয়ে থাকে। এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে পূর্বপ্রস্তুতকৃত পুনরুদন তরল এবং পানিতে মিশিয়ে খাওয়ার উপযোগী মিশ্রণও পাওয়া যায়।  

বর্তমানে প্রচলিত ডব্লিউ.এইচ.ও বর্ণিত মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণের প্রস্তুত প্রণালী হচ্ছে ( যা কিনা স্বল্প অসমোল বিশিষ্ট ও.আর.এস অথবা হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতা বিশিষ্ট ও.আর.এস হিসেবেও পরিচিত)  ২.৬ গ্রাম লবণ ( সোডিয়াম ক্লোরাইড রাসায়নিক সংকেত→ NaCl ),  ২.৯ গ্রাম ট্রাই -সোডিয়াম সাইট্রেট ডাইহাইড্রেট ( রাসায়নিক সংকেত →C6H5Na3O7⋅2H2O ), ১.৫ গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরাইড ( KCl),   ১৩.৫ গ্রাম গ্লুকোজ (C6H12O6 ) প্রতি লিটার তরলের জন্য। যা কিনা ৪৪ মিলিমোল লবণ ১০ মিলিমোল  ট্রাই সোডিয়াম সাইট্রেট  ডাইহাইড্রেট,  ২০ মিলিমোল পটাশিয়াম ক্লোরাইড এবং ৭৫ মিলিমোল গ্লুকোজ প্রতি লিটার তরলের জন্যে। মিশ্রণটির অভিস্রাব্যতা সর্বসাকুল্যে হবে ( ৪৪×২ + ১০×৪ + ২০× ২ + ৭৫)=  ২৪৩ মিলি অসমোল/ লিটার।

মৌখিক পুনরুদন থেরাপির মিশ্রণের প্যাকেট যদি পাওয়া না যায় তবেও একটি মৌলিক বা খুবই সাধারণ মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণ তৈরি করা যেতে পারে।  এটি প্রস্তুত করা যাবে ৬ চা-চামচ (২৫.২ গ্রাম)  চিনি এবং ০.৫ চা-চামচ (২.৯ গ্রাম)  লবণ ১ লিটার পানিতে দ্রবীভূত করে।এখানে চিনি এবং লবণের মোলার অনুপাত ১:১  হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং মিশ্রণটি উচ্চ অসমোলার বিশিষ্ট হওয়া যাবে না।  পুনরুদন প্রকল্পের মতে "দ্রবণটি কিছুটা পাতলা বা কম গাঢ় হিসাবে তৈরি করাটা (১ লিটারের কিছুটা বেশি বিশুদ্ধ পানি দিয়ে) ক্ষতিকর কিছু নয়।

মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণ তৈরির জন্য সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট তরল হলো পরিষ্কার পানি।  যদি এটি না পাওয়া যায়, তাহলে সাধারণভাবে প্রাপ্য পানিই ব্যবহার করতে হবে।  মনে রাখতে হবে, প্রাপ্ত পানি নিরাপদ নয় এই কারণবশত কোনোভাবেই মৌখিক পুনরুদন থেরাপি বন্ধ করা বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রদান থেকে বিরত থাকা যাবে না,এক্ষেত্রে পুনরুদন বা তরল প্রতিস্থাপন থেরাপিই গুরুত্ব এবং প্রাধান্য পাবে।

যখন মৌখিক  পুনরোদন লবণের প্যাকেট এবং এবং পরিমাপ করার জন্য উপযোগী চা-চামচ না পাওয়া যাবে  চিনি এবং লবণ পরিমাপের জন্য, ডব্লিউ.এইচ.ও বা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতে ঘরে তৈরি তরল জাউভাত, স্যুপ ইত্যাদি তরল প্রতিস্থাপন বজায় রাখার জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে এবং ব্যবহার করা যেতে পারে। ২০১৩ সালে প্রকাশিত ল্যান্সেট জার্নালের একটি পর্যালোচনা অনুযায়ী পানিস্বল্পতা রোধের জন্য উপযোগী গৃহে তৈরি তরলের ওপর আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।  ক্রীড়াকার্যে ব্যবহৃত পানীয় আদর্শ মৌখিক পুনরোদন তরল নয়, কিন্তু আদর্শ উপাদান কিংবা আদর্শ তরল যখন পাওয়া যাবেনা  তখন এগুলো ব্যবহার করা যাবে।  কোন  অধিকতর ভালো,আদর্শ বিকল্প নেই বিধায় এগুলোর ব্যবহারে পিছপা হওয়া যাবেনা বা এগুলো ব্যবহারে বিরত থাকা যাবেনা ; পুনরোদন বা তরল প্রতিস্থাপন এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে।  কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় এগুলো কোনোভাবেই মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণের বিকল্প নয়।

হ্রাসকৃত-অভিস্রাব্যতা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ইউনিসেফের নির্দেশিত মৌখিক পুনরুদন লবণের (ওআরএস)প্যাকেট

২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণের অভিস্রাব্যতা ৩১১ থেকে ২৪৫ মিলি অসমোল/লিটারে হ্রাস করার জন্য সুপারিশ করে। এই নির্দেশিকাসমূহ ২০০৬ সালে পুনরায় নবায়ন করা হয়। এই সুপারিশগুলো করা হয় বেশ কিছু মেডিকেল পর্যবেক্ষণের  মাধ্যমে যেখানে দেখা যায় যে হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট মিশ্রণ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বাচ্চাদের পায়খানার পরিমাণ প্রায় ২৫ ভাগ এবং আন্তঃশিরা থেরাপির প্রয়োজনীয়তা প্রায় ৩০ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস করে  আদর্শ পুনরুদন মিশ্রণের তুলনায়। বমির প্রকোপও হ্রাস পায়। প্রচলিতভাবে আদর্শ মিশ্রণের তুলনায় হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতা বিশিষ্ট মৌখিক পুনরুদন মিশ্রণে গ্লুকোজ এবং সোডিয়াম এর ঘনত্ব কম থাকে, কিন্তু পটাশিয়াম এবং সাইট্রেট এর ঘনত্ব অপরিবর্তিত থাকে।

কলেরা রোগীদের জন্য যথেষ্ট সোডিয়াম না থাকার কারণে হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট দ্রবণের সমালোচনা করা হয়।কিন্তু মেডিকেল পর্যবেক্ষণে দেখা যায় হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট মিশ্রণ কলেরায় আক্রান্ত শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রেও কার্যকর।আপাতদৃষ্টিতে এগুলো নিরাপদ, কিন্তু মেডিকেল গবেষণা নিয়ে কাজ করা ব্রিটিশ সংস্থা কনক্রেনের পর্যালোচনামতে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

প্রয়োগ

ও. আর.টি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি এই তত্ত্বের  উপর প্রতিষ্ঠিত যে - ডায়রিয়া এবং বমির জন্য তরল বেরিয়ে গেলেও পরিপাকতন্ত্রে পানির শোষণ অব্যাহত থাকে।বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও.আর.টি বা মৌখিক পুনরোদন থেরাপির জন্য  উৎপাদন পদ্ধতি, প্রস্তুত-প্রণালী এবং যেসব লক্ষণে তা প্রদান করতে হবে সেসব সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের নির্দেশিকা মোতাবেক পানির স্বল্পতা রোধের জন্য মৌখিক পুনরুদন থেরাপি ডায়রিয়ার প্রথম লক্ষণ প্রকাশের সাথে সাথেই শুরু করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ড্রপার বা সিরিঞ্জের দ্বারা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রদান করা যাবে। দুই মাসের কম বয়েসী নবজাতকদের ক্ষেত্রে প্রতি ১ থেকে ২ মিনিট অন্তর অন্তর ১ চা-চামচ পরিমাণ মৌখিক পুনরুদন থেরাপি তরল দিতে হবে।  অপেক্ষাকৃত বড় শিশুদের ক্ষেত্রে এবং বড়দের ক্ষেত্রে পেয়ালা হতে  বার বার পান করতে হবে, নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ২০০ থেকে ৪০০ মিলি তরল গ্রহণ করা উচিত। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী দুই বছরের কম বয়সের  বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এক কাপের এক-চতুর্থাংশ থেকে আধাকাপ পরিমাণ তরল গ্রহণ করতে হবে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর এবং দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে অর্ধেক কাপ থেকে ১ কাপ গ্রহণ করতে হবে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর। রোগী যদি বমি করে, সেক্ষেত্রে সেবাদানকারীর উচিত ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করা এবং পুনরায় মৌখিক পুনরুদন থেরাপি চালু করা। সেবাদানকারী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও শরণার্থী শিবির, চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালেও মৌখিক পুনরুদন তরল প্রদান করতে পারেন। মায়েদের এ সময়ে বাচ্চাদের সাথে থাকতে হবে এবং তাদেরকে কীভাবে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রদান করতে হয় তা হাতে-কলমে শেখাতে হবে। এটি তাদেরকে ভবিষ্যতে গৃহে মৌখিক পুনরুদন থেরাপি দেয়ার জন্য তৈরি হতে সাহায্য করবে। মৌখিক পুনরুদন থেরাপির পুরোটা সময় জুড়ে শিশুকে স্তনদুগ্ধ পান করানো অব্যাহত রাখতে হবে।

সংযুক্ত থেরাপি সমূহ

জিংক

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মৌখিক পুনরুদন থেরাপির একটি অংশ হিসাবে ১০ থেকে ১৪ দিনের জন্য জিংক পরিপূরক পথ্য হিসাবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেয় যা কিনা রোগের মাত্রা বা তীব্রতা এবং রোগের ব্যপ্তি এবং পরবর্তী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে রোগের পুনরায়  ফিরে আসার সম্ভাবনা হ্রাস করে। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জিংক সালফেট দ্রবণ এবং বাচ্চাদের জন্য কিছুটা পরিবর্তনকৃত দ্রবণ এবং ট্যাবলেট পথ্য হিসাবে বাজারে পাওয়া যায়।

খাদ্যগ্রহণ

তীব্র পানিস্বল্পতা সেরে যাবার পর এবং স্বাভাবিক রুচি ফিরে আসার পর ব্যক্তিকে যথাযথ খাদ্য প্রদান অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা  পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে,  ওজন হ্রাসের হার কমায় এবং বাচ্চাদের অব্যাহত বৃদ্ধি সাধনে সহায়তা করে।  এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে বারবার খাবার প্রদান করা বাচ্চার জন্যে বেশি সহনীয় ( বাচ্চাকে প্রতি তিন থেকে চার ঘণ্টা অন্তর অন্তর খাবার প্রদান করা) ।  জলের মতো তরল পায়খানা সম্পন্ন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু সাধারণত পানিস্বল্পতা দূর হওয়ার সাথে সাথেই তার খাবারের রুচি ফেরত পায়,  যেখানে রক্তপায়খানাযুক্ত ডায়রিয়ায় শিশু সাধারণত খুবই অল্প পরিমাণে খাবার গ্রহণ করে থাকে যতদিন না রোগ পুরোপুরি ভাবে সেরে যায়।  এসব শিশুদেরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই পরামর্শ দেয় যে, ডায়রিয়া সেরে যাবার সাথে সাথে শিশুকে প্রতিদিন  এক বেলা অতিরিক্ত আহার প্রদান করতে হবে পরবর্তী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত, এবং যদি শিশু অপুষ্টির শিকার হয় তাহলে আরো বেশি সময় ধরে প্রতিদিন এক বেলা অতিরিক্ত আহার প্রদান করতে হবে।

অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু

অপুষ্টিজনিত কারণে পেশিক্ষয় হওয়া (শুকিয়ে যাওয়া) বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পানিস্বল্পতা খুব বেশি বলে মনে হতে পারে, যেখানে কিনা অপুষ্টির কারণে শরীর ফুলে যাওয়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পানিস্বল্পতা খুবই কম মনে হতে পারে। এসব শিশুদের সেবার ক্ষেত্রে তাদের অপুষ্টির যত্নশীল ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য সংক্রমণের চিকিৎসা অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।  পানি স্বল্পতা নির্ণয়ের কিছু প্রয়োজনীয়  লক্ষণের মধ্যে রয়েছে পানি খাওয়ার জন্য অত্যধিক আগ্রহ বা ব্যগ্রতা, ঠান্ডা এবং ভেজা হাত-পা,  দুর্বল অথবা অনুপস্থিত রেডিয়াল ধমনির স্পন্দন (কবজিতে) এবং প্রস্রাব কমে যাওয়া অথবা প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া। তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশুদের ক্ষেত্রে, প্রায়শই মাঝারি এবং তীব্র পানিস্বল্পতার মধ্যে পার্থক্য  করা সম্ভব হয় না। একটি তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু যার কিনা তীব্র পানিস্বল্পতার লক্ষণও রয়েছে, কিন্তু যার কোন পানির মতো তরল পায়খানাসম্পন্ন ডায়রিয়ার ইতিহাস নেই তাদেরকে সেপটিক শক এর (সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট রক্তচাপ কমে যাওয়া সহ আরো কিছু  সমস্যাপূর্ণ অবস্থা)  চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

প্রাথমিক বা মৌলিক ও.আর.এস বা মোখিক পুনরুদন দ্রবণ  (৯০ মিলি.মোল সোডিয়াম/লিটার) এবং বর্তমানের আদর্শ হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট ও.আর.এস (৭৫ মিলিমোল সোডিয়াম / লিটারে)  উভয়েই ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিস্বল্পতায় ভোগা তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশুর জন্য  অত্যধিক বেশি পরিমাণে সোডিয়াম এবং খুবই কম পরিমাণ পটাশিয়াম বিদ্যমান। এই অবস্থাসম্পন্ন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে  রিসোম্যাল ( ইংরেজিতে → রিহাইড্রেশন সলিউশন ফর ম্যালনিট্রিশন বা অপুষ্টির জন্য প্রযোজ্য পুনরোদন দ্রবণ ) নির্দেশিত।  এতে হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট  দ্রবণ এর তুলনায়  কম পরিমাণ সোডিয়াম (৪৫ মিলিমোল / লিটার )  এবং বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম ( ৪০ মিলিমোল/লিটার)   বিদ্যমান।

এটি ইউনিসেফ অথবা অন্যান্য প্রস্তুতকারক দ্বারা প্রস্তুতকৃত প্যাকেটে পাওয়া যায়। একটি ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে : যদি তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশুর তীব্র ডায়রিয়াও বিদ্যমান থাকে ( রিসোম্যাল  এই ক্ষেত্রে হয়তোবা যথেষ্ট পরিমাণে সোডিয়াম সরবরাহ করতে পারবে না),  এই ক্ষেত্রে আদর্শ হ্রাসকৃত অভিস্রাব্যতাসম্পন্ন ও.আর.এস (৭৫ মিলিমোল সোডিয়াম/লিটার)  নির্দেশিত।অপুষ্টির শিকার শিশুকে ধীরে ধীরে পুনরুদন প্রদান করতে হবে।  বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম ২ ঘণ্টার প্রতি ঘণ্টায় শিশুর প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১০ মিলিলিটার করে রিসোম্যাল বা অপুষ্টির জন্য প্রযোজ্য পুনরুদন দ্রবণ  প্রদান করতে হবে ( উদাহরণস্বরূপ : একটি ৯ কেজি ওজনের বাচ্চাকে (৯ × ১০) = ৯০ মিলিলিটার রিসোম্যাল তরল ১ম ঘণ্টায় দিতে হবে এবং আরো ৯০ মিলিলিটার তরল ২য় ঘণ্টায় দিতে হবে)  এবং তারপর এই একই হারে এবং একই পরিমাণে অথবা এর চেয়ে কম পরিমাণে রিসোম্যাল তরল দিতে হবে শিশুর তৃৃষ্ণা এবং  পায়খানার পরিমাণ এর উপর ভিত্তি করে,  মনে রাখতে হবে অপুষ্টির শিকার শিশু নিস্তেজ এবং অবসন্ন হতে পারে। শিশু যদি খুবই কম পরিমাণে পান করে বা সঠিক ভাবে পান করতে সক্ষম না হয়, তাহলে নাসাপথে স্থাপিত খাদ্যনল ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে পুনরুদনের জন্যে শিরাপথ ব্যবহার করা যাবে না কেবলমাত্র যদি না বাচ্চার শক থাকে (রক্তচাপ হ্রাস পাওয়া সহ কিছু সমস্যাদি) এবং যদি শিশুর শক থাকে তখন খুবই যত্নশীল ভাবে শিরাপথ ব্যবহার করতে হবে, শিরাপথে খুবই ধীরে ধীরে তরল প্রবাহিত করতে হবে যাতে করে রক্ত সংবহন প্রক্রিয়া এবং হৃদযন্ত্রের উপর অধিক চাপ সৃষ্টি এড়ানো যায়।

পুনরুদন  শুরুর দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে খাদ্য প্রদান শুরু করা উচিত এবং প্রতি দুই থেকে তিন ঘণ্টা অন্তর অন্তর খাবার প্রদান করা উচিত। পরিপূর্ণ রুচি ফিরে আসার আগে বাচ্চাকে  একটি প্রারম্ভিক দানাদার শস্য-জাতীয় খাবারের জন্য, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতে ২৫ গ্রাম পাস্তুরিত গুঁড়া দুধ, ২০ গ্রাম উদ্ভিজ্জ তেল, ৬০ গ্রাম চিনি এবং ৬০ গ্রাম চালের গুঁড়া অথবা অন্য কোন খাদ্যশস্য  ১০০০ মিলিলিটার পানির সাথে মিশ্রিত করে ৫ মিনিট ধরে মৃদু আঁচে সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় বাচ্চার প্রতি কেজি  ওজনের জন্য ১৩০ মিলিলিটার এই পরিমাণে খাওয়াতে হবে। যেসব বাচ্চা সর্বনিম্ন এই উল্লিখিত পরিমাণে খেতে চাইবে না অথবা খেতে পারবে না  তাদেরকে নাসা পথে স্থাপিত খাদ্য-নল দ্বারা এই খাবারটি দিতে হবে ৬ টি সমান ভাগে ভাগ করে। পরবর্তীতে, বাচ্চাটি কে শস্যজাতীয় খাবার দিতে হবে যেখানে পাস্তুরিত দুধ এবং উদ্ভিজ্জ তেলের পরিমাণ আরো বেশি থাকবে এবং চিনির পরিমাণ কিছুটা কম থাকবে। যখন রুচি পুনরায় ফিরে আসবে তখন বাচ্চাকে প্রতিদিন তার প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ২০০ মিলিলিটার হারে খাওয়াতে হবে। দানাদার শস্য জাতীয় খাবারের অথবা মৌখিক পুনরুদন দ্রবণের উভয়ের সাথেই জিংক,পটাসিয়াম,ভিটামিন এ এবং অন্যান্য ভিটামিন এবং খনিজলবণ যোগ করার পরামর্শ দেয়া হয় । যে সব শিশু স্তন্যপান করছে তাদের স্তন্য দুগ্ধপান অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে।

এন্টিবায়োটিক/জীবাণুনাশক ঔষধ

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই পরামর্শ দেয় যে, তীব্র অপুষ্টির শিকার সব শিশুকেই  হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এবং তাদেরকে প্রশস্ত বা বৃহৎ পরিসরের (বেশি সংখ্যক জীবাণু প্রজাতির উপর কার্যকর) এন্টিবায়োটিক বা জীবাণুনাশক ঔষধ ( উদাহরণস্বরূপ : জেন্টামাইসিন এবং এম্পিসিলিন) দিতে হবে। এদের সাথে সাথে, হাসপাতালে ভর্তিকৃত বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন অন্যান্য সংক্রমণের জন্য পরীক্ষা করতে হবে।

যদি বাচ্চার কলেরার আশঙ্কা করা হয় বা কলেরা হয়েছে সেই লক্ষণ দেখা যায় তাহলে বাচ্চাকে এমন একটি এন্টিবায়োটিক দিতে হবে যা ভিব্রিও কলেরা (V.Cholera) জীবাণুর উপর কার্যকর।  ইহা ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট তরলহানি প্রায় ৫০% পর্যন্ত কমায় এবং ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল কমিয়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসে।

শারীরবৃত্তীয় ভিত্তি

অন্ত্রের আবরণী কলা (এইচ.এন্ড.ই স্টেইন বা রঞ্জক )

পরিপাকপ্রক্রিয়া চলাকালীন শরীরের ভেতর হতে অন্ত্রের গহ্বরে তরল পদার্থ ক্ষরিত হয়। এই তরল আইসো-অসমোটিক বা রক্তরসের অভিস্রাব্যতার সমান অভিস্রাব্যতাবিশিষ্ট এবং যা কিনা উচ্চ পরিমাণে প্রায় ১৪২ মিলি ইকুইভেলেন্ট/লিটার, সোডিয়াম বহন করে।একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি প্রতিদিন প্রায় ২০০০ থেকে ৩০০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ সোডিয়াম অন্ত্রের গহবরে নিঃসরণ করে । এই সোডিয়ামের প্রায় পুরোটাই পুনঃশোষিত হয়ে যায় যার ফলে শরীরের সোডিয়ামের পরিমাণ সবসময় ধ্রুবক বা অপরিবর্তিত থাকে।ডায়রিয়াজনিত অসুস্থতায়,এক্ষেত্রে অন্ত্রের নিঃসরণ পুনঃশোষিত হওয়ার আগেই শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যখন তরল হারানোর পরিমাণ অত্যন্ত বেশি থাকে তখন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি জীবনঘাতী পানিস্বল্পতা এবং ইলেক্ট্রোলাইট (শরীরের আয়ন বা চার্জপূর্ণ পদার্থ সমূহ) পদার্থের অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি করতে পারে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসার লক্ষ্য থাকে সোডিয়াম এবং হারিয়ে যাওয়া পানিকে পুনরুদ্ধার এবং পুনঃপূরণ করা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি অথবা আন্তঃশিরা তরল প্রবাহের দ্বারা।

সোডিয়ামের শোষণ ঘটে ২টি ধাপে। প্রথম ধাপটি ঘটে অন্ত্রের আবরণী কোষের দ্বারা (আন্ত্রিক কোষ/অন্ত্রকোষ)। সোডিয়াম এইসব কোষের মধ্যে প্রবেশ করে গ্লুকোজের সাথে সহগমন প্রক্রিয়ার দ্বারা, এস.জি.এলটি-১  প্রোটিন বা দেহসারের সাহায্যে। অন্ত্রের কোষ হতে সোডিয়াম পাম্প প্রক্রিয়ায় বহিঃকোষীয় স্থানে বা কোষের বাইরে পরিবাহিত হয় সক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থার (একটিভ ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম) মাধ্যমে সোডিয়াম-পটাশিয়াম পাম্পের দ্বারা এবং পার্শ্বভিত্তি কোষাবরণীর ভেতর দিয়ে।

পার্শ্বভিত্তি-কোষঝিল্লিতে উপস্থিত সোডিয়াম পটাশিয়াম পাম্প ৩টি সোডিয়াম আয়ন বহিঃকোষীয় স্থানে প্রেরণ করে, একই সময়ে ২টি পটাশিয়াম আয়ন অন্ত্রের কোষের ভিতরে প্রবেশ করায়। এটি কোষের অভ্যন্তরে একটি নিম্নমুখী সোডিয়ামের নতি তৈরি করে । এস.জি.এল.টি এই নিম্নমুখী সোডিয়ামের নতি হতে প্রাপ্ত শক্তি ব্যবহার করে কোষশীর্ষস্থ ঝিল্লির মধ্যদিয়ে গ্লুকোজ পরিবহন করে গ্লুকোজের ঘনত্বের নতির বিপরীতে। এই সহগমন পরিবহনব্যবস্থা দ্বিতীয় সারি বা দ্বিতীয় শ্রেণির সক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থার উদাহরণ।  জি.এল.ইউ.টি ( বা গ্লুট) নামক একমুখী-পরিবাহক সমূহ পার্শ্ব ভিত্তিও ঝিল্লির মাধ্যমে গ্লুকোজ পরিবহন করে। যেহেতু এস.জি.এল.টি-১ এবং এস.জি.এল.টি-২ সোডিয়াম এবং গ্লুকোজকে কোষঝিল্লির মধ্য দিয়ে একই দিকে পরিবহন করে তাই এরা উভয়ই সিম্পোর্টার হিসাবে পরিচিত।  

আবরণী কোষ এর ভিতরে এস.জি.এল.টি-১ দেহসার বা প্রোটিনের মধ্য দিয়ে গ্লুকোজের এই সহগমন প্রক্রিয়ায় সোডিয়ামের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। ২ টি সোডিয়াম আয়ন এবং একটি গ্লুকোজ আয়ন ( অথবা গ্যালাকটোজ) একই সাথে কোষঝিল্লির মধ্য দিয়ে  পরিবাহিত হয়  এস.জি.এল.টি-১ প্রোটিনের মাধ্যমে। গ্লুকোজ ছাড়া অন্ত্রের সোডিয়াম  শোষিত হয় না।এই কারণে মৌখিক পুনরুদন লবণে সোডিয়াম এবং গ্লুকোজ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকে।প্রতিটি পরিবহন চক্রের  জন্য শতশত পানির অণু আবরণী কোষে প্রবেশ করে অসমোটিক সাম্যবস্থা বজায় রাখার জন্য।পরিণতিস্বরূপ সোডিয়াম এবং পানির শোষণ পুনরুদন সাধন করতে পারে, এমনকি ডায়রিয়া চলমান থাকলেও ।

ইতিহাস

সংজ্ঞায়ন

১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে "মৌখিক পুনরোদন থেরাপি"  বলতে শুধুমাত্র বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ.এইচ.ও) এবং ইউনিসেফের নির্দেশিত প্রস্তুত প্রণালীকেই বোঝাতো।  ১৯৮৮ তে, এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয় যাতে করে গৃহে তৈরি  দ্রবণও এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে,  যেহেতু  উল্লেখিত সংস্থ্যাগুলোর নির্দেশকৃত উৎপাদিত দ্রব্যসমূহ সবসময় সহজলভ্য ছিলনা। ১৯৮৮ সালে এই সংজ্ঞাটি পুনরায় সংশোধিত হয় অব্যাহত খাদ্যপ্রদানকে একটি যথাযথ সহ-থেরাপি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। ১৯৯১  সনে, সংজ্ঞাটি এরূপ দাঁড়ায়,"জলযোজন তরল প্রদানে পরিবর্ধন" এবং ১৯৯৩ সনে সংজ্ঞাটি ব্যপ্তিলাভ করে দাঁড়ায়, " প্রদানকৃত তরলের  পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অব্যাহত খাদ্যপ্রদান "

ক্রমবিকাশ

রবার্ট কে. ক্রেন এবং তার আঁকা সোডিয়াম গ্লুকোজ সহগমন প্রক্রিয়ার চিত্র
শরণার্থী শিবির

১৯৬০ এর আগপর্যন্ত,  ও.আর.টি বা মোখিক পুনরুদন থেরাপি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে পরিচিত  ছিল না।  ১৮২৯ সালে কলেরা মহামারীতে রাশিয়া এবং পশ্চিম ইউরোপে ব্যাপক মৃত্যুর জন্য পানিস্বল্পতা একটি অন্যতম কারণ ছিল। ১৮৩১ সনে, উইলিয়াম ব্রুক ও'সগনেসি  কলেরায় আক্রান্ত ব্যক্তির মলের দ্বারা সোডিয়াম এবং পানি হারিয়ে  যাওয়ার প্রমাণ চিহ্নিত করেন এবং আন্তঃশিরা তরল থেরাপি (আইভি ফ্লুইড) এর পরামর্শ দেন। হাইপারটনিক আন্তঃশিরা থেরাপির পরামর্শ কলেরায় মৃত্যুহার  ৭০ থেকে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়। পশ্চিমা বিশ্বে,আই.ভি বা আন্তঃশিরা থেরাপি মাঝারি এবং তীব্র পানিস্বল্পতার জন্য  "আদর্শ বা সোনালি মান" বিশিষ্ট থেরাপি হয়ে ওঠে।

১৯৫৭ সালে হেমেন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী নামক একজন ভারতীয় চিকিৎসক কলেরা রোগীদেরকে ও.আর.টি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপির দ্বারা চিকিৎসার ফলাফল প্রকাশ করেন, যদিও  তনি নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ বা নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষণ (কন্ট্রোলড ট্রায়াল) করেননি। কলেরা রোগীদের ক্ষেত্রে গ্লুকোজের উপস্থিতিতে,সোডিয়াম এবং ক্লোরাইডের শোষণ ঘটা সম্ভব,এই আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে রবার্ট এ. ফিলিপস একটি কার্যকরী ও.আর.টি বা মৌখিক পুনরুদন দ্রবণ আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। কিন্তু ফিলিপের এই চেষ্টা বৃথা হয়, কারণ তিনি যে দ্রবণ ব্যবহার করেছিলেন তা ছিল অতিরিক্ত পরিমাণ হাইপারটনিক বা যার অভিস্রাব্যতা ছিল রক্তের অভিস্রাব্যতার তুলনায় অনেক বেশি।

১৯৬০ সালের গোড়ার দিকে, প্রাণরসায়ন বিশেষজ্ঞ রবার্ট কে.ক্রেন সোডিয়াম গ্লুকোজ সহগমন প্রক্রিয়া এবং অন্ত্রের গ্লুকোজ শোষণে এর ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। কলেরায় অন্ত্রের মিউকোসা কোষস্তর অক্ষত থাকে এই প্রমাণের সাথে যুক্ত হয়ে এটি এই ধারণা দেয় যে,  গ্লুকোজ এবং সোডিয়ামের আন্ত্রিক শোষণ অসুস্থতার সময়ও চলতে থাকে। এটি এই ধারণাকে সমর্থন করে যে কলেরার কারণে সৃষ্ট তীব্র ডায়রিয়ার সময়ও মৌখিক পুনরুদন সম্ভব। ১৯৬৭ - ১৯৬৮ এর মধ্যবর্তী সময়ে, নরবার্ট হার্শখর্ন হর এবং নাথানিয়েল এফ.পিয়েরস, যারা যথাক্রমে কর্মরত ছিলেন ঢাকা, বাংলাদেশ এবং কলকাতা, ভারতে, দেখান যে তীব্র কলেরায় আক্রান্ত রোগীরাও গ্লুকোজ,লবণ এবং পানি শোষণ করতে পারে এবং যা কিনা জলযোজন বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ঘটে।  ১৯৬৮  সনে, ডেভিড আর. নালিন এবং রিচার্ড এ. ক্যাশ প্রতিবেদন দেন যে, যেসব প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর কলেরা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার কারণে হারানো পরিমাণের সমপরিমাণ মৌখিক গ্লুকোজ-ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ প্রদান করলে, তা আন্তঃশিরা তরল থেরাপির প্রয়োজন প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করে।

রফিকুল ইসলাম (১৯৩৬- ৫ মার্চ ২০১৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশি চিকিৎসক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তিনি ডায়রিয়ার চিকিৎসায় খাবার স্যালাইন (ওরস্যালাইন) আবিষ্কারের জন্যে পরিচিত। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং শরণার্থীদের মধ্যে একটি কলেরা মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। যখন আন্তঃশিরা তরল শেষ হয়ে যায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে, রফিকুল ইসলাম এবং দিলীপ মহলানবিশ-একজন চিকিৎসক যিনি জন হপকিন্স আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্রের সাথে কাজ করছিলেন কলকাতাতে, নির্দেশনা পান একটি মৌখিক পুনরুদন দ্রবণ তৈরি এবং তা পরিবারের সদস্য এবং সেবাদানকারীদের মধ্যে বিতরণের জন্যে যা কিনা তৈরি হবে আলাদা আলাদা উপাদান হতে। ঠিক এভাবেই ৩০০০-এরও বেশি কলেরায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও.আর.টি প্রাপ্ত হয়। যেসব ব্যক্তিদের আন্তঃশিরা তরল থেরাপি দেয়া হয় তাদের ৩০% মৃত্যুহারের বিপরীতে, ও.আর.টি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুহার ছিলো মাত্র ৩.৬ শতাংশ। এটি "ঢাকা স্যালাইন" নামেও পরিচিত ছিলো।  বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর, একটি প্রচার প্রচারণা কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে যায় ডায়রিয়ার চিকিৎসায় খাবার স্যালাইনের ব্যবহারের উপর। ১৯৮০ সালে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (W.H.O)  ও.আর.এস বা মৌখিক পুনরুদন স্যালাইন বা ওরস্যালাইনকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

১৯৮০ সালে বাংলাদেশি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ব্র‍্যাক একটি বাড়ি-বাড়ি, জনে-জনে বিক্রয় এবং মায়েদের ঘরে ব্যবহারের জন্যে ও.আর.টি বা মৌখিক পুনরুদন থেরাপি প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্দ্যেশ্যে একটি কর্মীবাহিনী তৈরী করে । ১৪ জন মহিলা, একজন রাঁধুনি এবং একজন পুরুষ তত্ত্বাবধানকারীর সমন্বয়ে একটি কার্যনির্বাহী দল গ্রাম হতে গ্রামে ভ্রমণ করে। বেশকিছু গ্রামের মহিলাদের সাথে সাক্ষাৎ করার পর তারা গ্রামের নারীদের নিজেদের তৈরি মৌখিক পুনরুদন তরল প্রস্তুত করতে উদ্বুদ্ধ করার ধারণা লাভ করে। তারা খুবই সহজলভ্য ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করে, যা শুরু হয় "আধা সের" পরিমাণ পানি নিয়ে এবং এর মধ্যে এক মুঠো পরিমাণ চিনি এবং তিন আঙুলের এক চিমটি পরিমাণ লবণ যুক্ত করে। পরবর্তীতে, এই উদ্যোগটি টেলিভিশন এবং রেডিওতে প্রচার করা হয় এবং মৌখিক পুনরুদন লবণের প্যাকেটের একটি বাজার সৃষ্টি হয়। তিন দশক পর, জাতীয় জরিপ অনুযায়ী প্রায় ৯০% তীব্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে মৌখিক পুনরুদন তরল দেয়া হয় ঘরেই অথবা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে।

২০০৬ হতে ২০১১ পর্যন্ত সময়কালে, ইউনিসেফ ধারণা করে যে বিশ্বব্যাপী প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশু যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলো তারা একটি মৌখিক পুনরুদন তরল গ্রহণ করেছিল, যার অঞ্চলভেদে পরিধি ছিলো হিসাবমতে ৩০% হতে ৪১% পর্যন্ত।

ও.আর.টি  ইউনিসেফ এর "জি.ও বি.আই এফ.এফ.এফ" (GOBI FFF) ( বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ, মৌখিক পুনরুদন থেরাপি, স্তন্যদুগ্ধ পান, টিকা দান, নারী শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, সম্পূরক খাদ্য প্রদান) কর্মসূচির একটি অন্যতম মুখ্য উপাদান। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো স্বল্পব্যয়ী পদক্ষেপ দ্বারা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের বেঁচে থাকার হার বাড়ানো এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস করা।

মোজাম্বিক গৃহযুদ্ধে আক্রান্ত শরণার্থীগণ, ১৯৯০

মোজাম্বিকের গৃহযুদ্ধ চলার সময় মানুষজন পালিয়ে দক্ষিণ মালাউই তে চলে আসে।  নভেম্বর ১৯৯০ তে,  মালাউইর একটি শরণার্থী শিবিরে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে যেখানে আনুমানিক প্রায় ৭৪০০০ ব্যক্তি অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।  যুক্তরাষ্ট্রের সি.ডি.সি এর এপিডেমিক ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস ( ই. আই.এস) বা মহামারী জ্ঞান  বিভাগের  বিভাগের ডেভিড সুয়ের্ডলো এই  পরিস্থিতি সম্পর্কে লেখালিখি করেন। তিনি পরামর্শ দেন একটি একটি তাঁবু তৈরি করার,  শুধুমাত্র শিশুদের জন্য যেখানে কিনা সবচাইতে ভালো কিছু সেবিকাবৃন্দ সেবা দেবেন। তিনি  আন্তশিরা নলের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতার বিপক্ষে মতামত দেন, যা কিনা মাঝেমধ্যে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময়ের জন্য ব্যক্তির দেহের সাথে লাগানো অবস্থায় ফেলে রাখা হতো যা কিনা ব্যক্তিকে শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ এবং সেপটিক শকের দিকে ঠেলে দিতে পারতো। তিনি লক্ষ্য করলেন যে যেসব অসুস্থ ব্যক্তিরা যথেষ্ট পরিমাণ পুনরোদন দ্রবণ পান করছেনা। তিনি কথিত " ও.আর.এস অফিসার" নিয়োগ দিলেন যাদের কাজ ছিল ব্যক্তিদেরকে আরো বেশি পরিমাণে দ্রবণ পান করতে উৎসাহিত করা।

একটি ছোট রহস্যেঘেরা ব্যাপার ছিল  গভীর এবং  ছিদ্রযুক্ত কুয়াসমূহ পরিষ্কার পানির যোগান দেয়ার  পরও এবং শরণার্থীদেরকে হাত ধোয়ার জন্য উৎসাহিত করার পরেও কীভাবে মানুষজন অসুস্থ হচ্ছিল।  তারপর ইহা আবিষ্কৃত হল যে সবার হাত ধোওয়ার একটিমাত্র জায়গা ছিল এবং তা ছিল সেই একই বালতিতে যা দ্বারা পানি পরিবহন করা হত এবং যাতে পানি জমিয়েও রাখা হতো।  শুয়ের্ডলো তার প্রতিবেদনে লিখলেন যে, "সরু মুখ বিশিষ্ট পানির পাত্রের ব্যবহার খুবসম্ভত দূষণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে"।

পুরস্কার এবং স্বীকৃতিসমূহ

  1. স্বাস্থ্য এবং জনসংখ্যা গবেষণা কেন্দ্র,  ঢাকা, বাংলাদেশ,  ২০০১ গেটস বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পুরস্কার
  2. নোরবার্ট হার্শখর্ন, দিলীপ মহলানবিশ, ডেভিড নালিন এবং নাথানিয়েল পিয়েরস, ২০০২ উদ্বোধনী পলিন পুরস্কার শিশু চিকিৎসা গবেষণার জন্যে।
  3. রিচার্ড এ. ক্যাশ, ডেভিড নালিম, দিলীপ মহলানবিশ এবং স্ট্যানলি শুল্টজ, ২০০৬ এর যুবরাজ মহিদল পুরস্কার।

Новое сообщение