Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
লক্ষ পাকুড়
লক্ষ পাকুড় | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | প্লান্টি (Plante) |
গোষ্ঠী: | ট্র্যাকিওফাইটস (Tracheophytes) |
ক্লেড: | অ্যাঞ্জিওস্পার্মস (Angiosperms) |
ক্লেড: | ইউডিকটস (Eudicots) |
গোষ্ঠী: | Rosids |
বর্গ: | Rosales |
পরিবার: | Moraceae |
গোত্র: | Ficeae |
গণ: |
Ficus লিনিয়াস ১৭৬৭ |
প্রজাতি: | F. benjamina |
দ্বিপদী নাম | |
Ficus benjamina লিনিয়াস ১৭৬৭ | |
লক্ষ পাকুড়ের বৈশ্বিক বিস্তৃতি | |
প্রতিশব্দ | |
তালিকা
|
লক্ষ পাকুড় (বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus benjamina) সাধারণত গণনাম ফিকাস নামে বহুল পরিচিত সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রজাতি। মোরাসিয়া গোত্রভুক্ত এই প্রজাতির সদস্যরা এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। এটি ব্যাংককের প্রাতিষ্ঠানিক বৃক্ষ। সাম্প্রতিককালে তাইওয়ানের উঁচু কোরাল বনে Ficus benjamina var. bracteata প্রকরণ বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনায় অভিযোজিত উদ্ভিদ হিসেবে এদের পাওয়া যায়। যেসব অঞ্চলে এই উদ্ভিদ স্থানীয় সেসব অঞ্চলের বড় ফল ঘুঘু, ওমপু ফল ঘুঘু, গোলাপি-দাগ ফল ঘুঘু, গয়না ফল ঘুঘু, কমলাপেট ফল ঘুঘু, টরেসীয় রাজ ঘুঘু, গোলাপি লেজ রাজ ঘুঘু প্রভৃতি পাখি এই উদ্ভিদের ফল খুবই পছন্দ করে।
বর্ণনা
লক্ষ পাকুড় একটি বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ, যা স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ মি (৯৮ ফু) পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। উদ্ভিদের কিছুটা আনত শাখায় সূক্ষ্মাগ্রবিশিষ্ট ৬–১৩ সেমি (২–৫ ইঞ্চি) আকৃতির প্রায় গোলাকার পাতা থাকে। এর বাকল ধূসর ও মসৃণ। নতুন শাখাগুলো কিছুটা বাদামি রঙের। উঁচু শাখান্বিত ও সুবিস্তৃত গাছের মাথা প্রায়ই ১০ মিটার পর্যন্ত ব্যাসবিশিষ্ট হয়ে থাকে। ডুমুরজাতীয় গাছগুলোর মধ্যে লক্ষ পাকুড়ের পাতা কিছুটা ছোট। এর পাতাগুলো সরল, সম্পূর্ণ ও বোঁটাযুক্ত। পাতার বৃন্ত ১ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার লম্বা। নতুন পাতা কিছুটা হালকা সবুজ এবং হালকা বাতাসেই আন্দোলিত হয়। সামান্য পুরনো পাতা গাঢ় সবুজ ও মসৃণ হয়ে থাকে। পত্রফলক মোটামুটি গোলাকার ভিত্তিসহ কীলকের মতো গোলাকার থেকে কিছুটা বল্লমাকৃতির হয়ে থাকে। পাতার অগ্রভাগ ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম। ম্লান বা ঘোলাটে চকচকে পত্রফলক ৫ থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা ও ২ থেকে ৬ সেমি প্রশস্ত হয়। পত্রকিনারায় পীত ক্রিস্টাল কোষ ("ক্রিস্টোলাইট") থাকে। দুইপাশের প্রাচীরযুক্ত মোচনীয় উপপত্র দুইটি বিযুক্ত, বল্লমাকার এবং ৬ থেকে ১২ মিলিমিটার (কখনো ১৫ মিলিমিটার) পর্যন্ত লম্বা হয়।
লক্ষ পাকুড় উভলিঙ্গ উদ্ভিদ, কিন্তু পুংপুষ্প ও স্ত্রীপুষ্প আলাদা। পুষ্পমঞ্জরি গোলাকার থেকে ডিম্বাকার, উজ্জ্বল সবুজ এবং ১.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসযুক্ত। মঞ্জরিতে তিন ধরনের ফুল থাকে: পুংপুষ্প এবং জননক্ষম ও জনন অক্ষম বা নির্বীজ স্ত্রীপুষ্প। পুষ্পমঞ্জরির বিক্ষিপ্ত, বৃন্তযুক্ত পুংপুষ্পে কিছু মুক্ত পরাগদণ্ড ও একটি করে পুংকেশর থাকে। অনেক জননক্ষম স্ত্রীপুষ্প সেসিল বা বৃন্তহীন। এদের তিন থেকে চারটি বৃতি ও ডিম্বাকৃতির ডিম্বাশয় থাকে। কমবেশি সব ফুলে পার্শ্বীয় একটি বড় দাগ থাকে।
পাকা ফল (যৌগিক ফল) কমলা লাল রঙের এবং ব্যাস ২.০ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট হয়ে থাকে।
উদ্যান উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহার
ক্রান্তীয় অঞ্চলে লক্ষ পাকুড় বেশ বড়সড় ও জমকালোভাবে বেড়ে ওঠে। নাগরিক উদ্যান ও অন্যান্য স্থাপনা, যেমন বড় রাস্তার জন্য এ উদ্ভিদ আদর্শ হওয়ায় লক্ষ পাকুড় লাগানো হয়ে থাকে।
লক্ষ পাকুড়ের সৌষ্ঠবপূর্ণ বেড়ে ওঠা ও প্রতিকূল পরিবেশ সহনীয়তার জন্য নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদ হিসেবে খুব জনপ্রিয়। উজ্জ্বল ও রৌদ্রপূর্ণ আবহাওয়ায় উদ্ভিদটি ভালোভাবে বেড়ে উঠলেও হালকা ছায়াপূর্ণ পরিবেশেও সহনীয়। গ্রীষ্মে পরিমিত মাত্রায় সেচ ও শীতকালে অধিক শুষ্ক হওয়া প্রতিরোধ করতে পারলেই এ উদ্ভিদের বেড়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট হয়। দীর্ঘতম দিনের চেয়ে বরং দীর্ঘ ও মাঝারি দিন ও রাতের অনুকূল তাপমাত্রাই স্বল্প সময়ে এর লক্ষণীয় বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট। এর জন্য কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। লক্ষ পাকুড় অত্যন্ত ঠান্ডা ও খরার প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। গৃহাভ্যন্তরে জন্মানোর জন্য লক্ষ পাকুড় বেশিমাত্রায় বড় হয়ে ওঠে। তাই বারবার ছাটা ও গাছ বদলানোর প্রয়োজন পড়ে। গবেষণায় দেখা যায় লক্ষ পাকুড় ঘরের বাতাস থেকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে গ্যাসীয় ফরমালডিহাইড অপসারণ করে।
নাসার নির্মল বায়ু গবেষণায় লক্ষ পাকুড় গৃহস্থালিতে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাসীয় ফরমালডিহাইড ও জাইলিনের কার্যকর অপসারক হিসেবে প্রমাণিত হয়।
লক্ষ পাকুড়ের ফল ভোজ্য হলেও ফলের জন্য এই গাছ সাধারণত লাগানো হয় না। এর পাতা আলোর সামান্য তারতম্যের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। লক্ষ পাকুড়ের অবস্থান বা দিক পরিবর্তন করে দিলে, এটি এর অধিকাংশ পাতা ঝরিয়ে দেয় এবং নতুন অবস্থানের আলোক তীব্রতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন পাতা গজিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
উদ্ভাবিত প্রকরণ
লক্ষ পাকুড়ের অনেকগুলো উদ্ভাবিত প্রকরণ বা কালটিভার রয়েছে (যেমন 'ড্যানিয়েলি', 'নাওমি', 'এক্সোটিকা' ও 'গোলডেন কিং' ইত্যাদি)। কোনো কোনো উদ্ভাবিত প্রকরণের পাতায় হালকা সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ রঙের বিভিন্ন নকশা ও সাদা রঙের বিভিন্ন রকমের বিচিত্রতা দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যে আবাদের ক্ষেত্রে লক্ষ পাকুড় ও এর উদ্ভাবিত বিচিত্র প্রকরণ 'স্টারলাইট'কেরয়েল হর্টিকালচার সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড অব গার্ডেন মেরিটে ভূষিত করে।
লক্ষ পাকুড়ের কিছু ক্ষুদ্র সংস্করণ, বিশেষত 'টু লিটল', গৃহাভ্যন্তরের বনসাইয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়।
ধ্বংসাত্মক প্রবৃত্তি
যুক্তরাষ্ট্রের বন সেবা বিভাগের মতে, লক্ষ পাকুড়ের মূল খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সম্পূর্ণ উদ্যান জুড়ে বিস্তৃত হয়। এমনকি ফুটপাত, মূল সড়ক প্রভৃতির নিচে বিস্তৃত হয়ে সড়কের নিচে মাটির ভারসাম্য নষ্ট করে। পরিপূর্ণ অবস্থায় আবাসিক বৃক্ষায়নের জন্য এই প্রজাতি উপযোগী নয়। তবে প্রাকৃতিক বেষ্টনী বা ছাঁটা অবস্থায় এই প্রজাতির গাছ লাগানো যেতে পারে।
ফ্লোরিডার দক্ষিণাঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়-প্রবণ এলাকায় প্রবল বাতাসে এসব গাছ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। এ কারণে দক্ষিণ ফ্লোরিডার বেশ কয়েকটি এলাকায় লক্ষ পাকুড় গাছ কাটার জন্য কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া
লক্ষ পাকুড় গৃহাভ্যন্তরে অ্যালার্জির অন্যতম উৎস। এমনকি ধুলা ও পশুপাখির পর এটি অ্যালার্জির তৃতীয় উল্লেখযোগ্য উৎস। লক্ষ পাকুড় সৃষ্ট অ্যালার্জির অতি সাধারণ লক্ষণ হলো রাইনোকনজাংটিভিটি ও অ্যালার্জিক হাঁপানি। লক্ষ পাকুড় নিঃসৃত তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স অনেকের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, তাই এ ধরনের অ্যালার্জির রোগীদের আশেপাশে লক্ষ পাকুড় গাছ রাখা উচিত নয়। গুরুতর ক্ষেত্রে লক্ষ পাকুড়ের রস থেকে এ ধরনের রোগীরা অ্যানাফাইল্যাকটিক শকে চলে যেতে পারে। কেবলমাত্র ভোজ্য ফল ছাড়া গাছের অন্যান্য অংশ ভক্ষণ করা হলে বমি বমি ভাব, বমি, এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে।
লক্ষ পাকুড় গাছের সংস্পর্শ থেকে অ্যালার্জি ধীরে ধীরে সৃষ্টি হয়। এ ধরনের অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া প্রথম দেখা যায় এ গাছ নিয়ে নিয়মিত কাজ করা শ্রমিকদের মাঝে। গবেষণায় দেখা যায়, গাছ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ২৭% কর্মীর দেহে অ্যালার্জিক অ্যান্টিবডি উপস্থিত।
চিত্রশালা
বৃক্ষের শাখা, হায়দ্রাবাদ, ভারত
সম্পূর্ণ বৃক্ষ, হাওয়াই
সম্পূর্ণ বৃক্ষ, টেনেরিফ
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
- তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি বৃহদাকায় লক্ষ পাকুড় উদ্ভিদ লাইফ অব পাই চলচ্চিত্রে প্রদর্শন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
- Frith, H.J.; Rome, F.H.J.C. & Wolfe, T.O. (1976): Food of fruit-pigeons in New Guinea. Emu 76(2): 49-58. HTML abstract
- এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় Weeping fig (plant)
ট্যাক্সন শনাক্তকারী |
|
---|