Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
হামনা বিনতে জাহাশ
হামনা বিনতে জাহাশ মুহাম্মাদের একজন নারী সাহাবা ও নিকটাত্মীয়া ছিলেন। তিনি মুহাম্মাদ এর ফুফাত বোন ও অন্য দিকে শ্যালিকা ছিলেন। তার দুই বোন উম্মে হাবিবা ও জয়নব বিনতে জাহাশ কে মুহাম্মাদ (সা:) বিবাহ করেছিলেন।
নাম ও বংশ পরিচয়
হামনা বিনতে জাহাশ মুহাম্মাদ এর ফুফু উমাইমা বিনতে আবদুল মুত্তালিবের কন্যা ছিলেন। তার বিখ্যাত পরিবারের সদস্য হলঃ
- আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ - তার ভাই ছিলেন
- উম্মে হাবিবা বিনতে জাহাশ- তার বোন ছিলেন
- জয়নব বিনতে জাহাশ - তার বোন ছিলেন ও মুহাম্মাদের স্ত্রী
এবং প্রখ্যাত সাহাবী মুসআব ইবন উমাইর তার প্রথম স্বামী ছিলেন। তার স্বামী মক্কার বিত্তবান পরিবারের এক সুদর্শন যুবক ছিলেন।
ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত
মক্কায় ইসলামের প্রাথমিক পর্বে যে সকল মহিলা ইসলাম গ্রহণ করে হামনা বিনতে জাহাশ তাদের একজন। তাদের পরিবারের সকলেই ইসলাম গ্রহণ করে। মক্কায় তাঁদের উপর কুরাইশদের অত্যাচার মাত্রাছাড়া রূপ ধারণ করলে তাঁরা সকলেই মদীনায় হিজরত করেন।
হিজরতকারী পুরুষরা হলেন :
- আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ - হামনার ভাই
- আবু আহমাদ - হামনার ভাই
- উকাশা ইবনে মিহসান
- শুজা
- উকবা
- ওয়াহাবের দুই পুত্র
- নাম অজানা একজন
হিজরতকারী নারীরা হলেন :
মদিনায় আসার পর হামনা বিনতে জাহাশ ও অন্য ঈমানদার মহিলারা আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জ্ঞান চর্চা ও বিতরণ শুরু করেন। এখানেই হামনা মুসআব এর কোলে কন্যা সন্তান যয়নাব বিনতে মুসআব জন্মগ্রহণ করে।
যুদ্ধে অংশ গ্রহণ
মুহাম্মাদ এর মদিনার জীবনে বিভিন্ন যুদ্ধে হামনা বিনতে জাহাশের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসিত। উহুদ যুদ্ধের সময় হামনা বিনতে জাহাশ আরো কিছু মুসলিম নারীদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা বিভিন্ন আহত ও তৃষ্ণার্ত যোদ্ধাদের পানি পান করেছেন ও সেবা-শুশ্রূষা করেছেন।
এ যুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী হযরত কাব ইবনে মালিক বলেন:
“ |
“আমি উহুদের যুদ্ধের দিন উম্মু সুলাইম বিনত মিলহান ও উম্মুল মু‘মিনীন আয়িশাকে নিজ নিজ পিঠে পানির মশক ঝুলিয়ে বহন করতে দেখেছি। হামনা বিনত জাহাশকে দেখেছি তৃষ্ণার্তদের পানি পান করাতে এবং আহতদের সেবা করতে। আর উম্মু আয়মানকে দেখেছি আহতদের পানি পান করাতে।“ |
” |
উহুদ যুদ্ধে হামনা বিনতে জাহাশের স্বামী মুসআব ইবনে উমাইর,তার ভাই আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ ও তার মামা হামযা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব সহ আরো ৬৭ জন মুসলিম শহীদ হন। হামনা তার স্বামী মৃত্যুবরণ করার পরে ভেঙ্গে পরেন। অতপর হামনা বিনতে জাহাশ প্রখ্যাত সাহাবী তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহকে বিয়ে করেন। এই তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ ঔরসে ছেলে সন্তান মুহাম্মাদ ইবনে তালহা ও ইমরান ইবনে তালহা জন্ম গ্রহণ করেন। পরবর্তী জীবনে এই দুইজন একনিষ্ঠ যোদ্ধা ও আল্লাহ্ প্রেমিক হয়ে উঠেন।
উহুদ যুদ্ধের পর খায়বারের যুদ্ধেও হামনা অংশগ্রহণ এবং সেখান থেকে সেখানে উতপাদিত ফসল থেকে ৩০ ওয়াসাক রাসূল তার জন্য নির্ধারণ করে দেন।
চারিত্রিক গুণাবলী
হামনার বিনতে জাহাশ সন্তানদের প্রতি তিনি ছিলেন দারুণ স্নেহশীল। এইজন্য তার সন্তানেরা পরবর্তীতে ধার্মিক ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। উম্মুল মুমিনীন আয়িশার পূতপবিত্র চরিত্রে কলঙ্ক আরোপের ঘটনায় যারা বিভিন্নভাবে জড়িত পড়েছিলেন তাদের মধ্যে হামনা বিনতে জাহাশ সহ আবদুল্লাহ ইবনে উবাই, যায়দ ইবনে রিফাআ, মিসতাহ ইবনে উছাছা, হাসসান ইবনে সাবিত প্রমুখ ছিলেন। হামনা ভুলবশত কিছু মানবিক দুর্বলতা কারণে এই ঘটনায় জড়িয়ে পরেন। পরবর্তীতে আয়িশা এই ঘটনায় হামনা সম্পর্কে বলেন,
যেহেতু আমার সতীনদের মধ্যে একমাত্র তাঁর বোন যয়নাব ছাড়া আর কেউ আমার সমকক্ষতার দাবীদার ছিলেন না, তাই তিনি তাঁর বোনের কল্যাণের উদ্দেশ্যে আমার প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং ফিতনায় জড়িয়ে পড়েন।
মৃত্যু
হামনা বিনতে জাহাশের মৃত্যু সন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়না। তবে ঐতিহাসিকগণ একমত রয়েছেন যে,তিনি ২০ হিজরির পরেও জীবিত ছিলেন।