Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
হেপাটাইটিস বি
হেপাটাইটিস বি | |
---|---|
ইলেক্ট্রিক মাইক্রোস্কোপে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস | |
বিশেষত্ব | সংক্রামক রোগ |
হেপাটাইটিস বি একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা যকৃত বা লিভার কে আক্রমণ করে। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (HBV) এর আক্রমণে এ রোগ হয়। অনেক সময় সংক্রমণের প্রথম দিকে কোন লক্ষন প্রকাশ পায় না। তবে অনেক ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, চামড়া হলুদ হওয়া, ক্লান্তি, পেট ব্যাথা, প্রস্রাব হলুদ হওয়া প্রভৃতি লক্ষন দেখা যায়। সাধারনত এই লক্ষনগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং কদাচিৎ লক্ষ্মণ প্রকাশ পাওয়ার পর পরিশেষে মৃত্যু হয়। সংক্রমণের পর রোগের লক্ষন প্রকাশ পেতে ৩০ থেকে ১৮০ দিন সময় লাগতে পারে। জন্মের সময় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ৯০% ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হন যেখানে ৫ বছর বয়সের পর আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ১০% এরও কম এতে আক্রান্ত হন। দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগেরই কোন প্রাথমিক লক্ষন থাকে না। যদিও এক্ষেত্রে এটি ধীরে ধীরে এটি সিরোসিস এবং যকৃতের ক্যান্সার এ রূপ নিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ১৫ থেকে ২৫% মৃত্যুবরণ করতে পারে।
এই ভাইরাসটি রক্ত কিংবা দেহনিঃসৃত তরলের মাধ্যমে ছড়ায়। যে সব জায়গায় এ রোগের প্রকোপ বেশি সেখানে সাধারনত শিশুর জন্মের সময় কিংবা শৈশবে অন্য আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের মাধ্যমে এ রোগ সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। কিন্তু যে সব জায়গায় এ রোগের প্রকোপ কম সেখানে শিরায় মাদক দ্রব্যের ব্যবহার এবং অরক্ষিত যৌনমিলন এ রোগের প্রধান কারণ। এছাড়াও রক্ত আদান-প্রদান, ডায়ালাইসিস, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে বসবাস, সংক্রমণের হার বেশি এমন স্থানে ভ্রমণ প্রভৃতি মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায়। ১৯৮০ সালের দিকে ট্যাটু এবং আকুপাংচারের মাধ্যমেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলেন যদিও বর্তমানে এ ধরনের মাধ্যমে সংক্রমণ কমে এসেছে। হাত ধরা, খাবারের তৈজসপত্র শেয়ার করা, চুম্বন, কোলাকুলি করা, হাঁচি-কাশি, কিংবা মাতৃদুগ্ধপানের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায় না। সংক্রমণের পর ৩০ থেকে ৬০ দিন পর এ রোগ নির্ণয় করা যায়। সাধারনত রক্তে অবস্থিত ভাইরাস এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থিত অ্যান্টিবডি থেকে এ রোগ নির্ণয় করা হয়। এটি পরিচিত পাঁচটি হেপাটাইটিস ভাইরাসের মধ্যে অন্যতম একটি: এ, বি, সি, ডি, এবং ই।
১৯৮২ সাল থেকে টীকার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে জন্মের প্রথম দিনেই এ রোগের টীকা নেয়া উচিত। সম্পূর্ণ সুরক্ষার জন্য আরও ২-৩ টি ডোজ নেয়া প্রয়োজন। প্রায় ৯৫% ক্ষেত্রেই এই টীকা কাজ করে। জাতীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২০০৬ থেকে বিশ্বের প্রায় ১৮০ টি দেশে এই রোগের প্রতিষেধক টীকা দেয়া হয়। এটা সুপারিশ করা হয়ে থাকে যে সব ধরনের রক্ত আদান-প্রদানের পূর্বে পরীক্ষা করে দেখা এবং সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কনডম ব্যবহার করা। প্রাথমিক সংক্রমণের ক্ষেত্রে, রোগের লক্ষ্মণ অনুযায়ী রোগীর যত্ন নেওয়া হয়। দীর্ঘস্থায়ী আক্রান্ত রোগীদের বেলায়, টেনোফোবির বা ইন্টারফেরোনের মতো সংক্রমণ ধ্বংসকারী ওষুধ কার্যকর হতে পারে; যদিও, ওষুধগুলো অনেক দামী। সিরোসিসের জন্য অনেক সময় যকৃত প্রতিস্থাপন করা হয়ে থাকে।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তাদের জীবদ্দশার কোন এক সময় এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ থেকে ৩৫ কোটি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণে আক্রান্ত। ২০১৩ সালে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ রোগে প্রতি বছর ৭.৫ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এদের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ মারা যায় যকৃতের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। বর্তমানে এ রোগটি শুধুমাত্র পূর্ব এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকায় বেশি দেখা যায়। এ সব অঞ্চলে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৫-১০% দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণে আক্রান্ত।ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় আক্রান্তের হার ১% এরও কম। এটি মূলত "সেরাম হেপাটাইটিস" নামে পরিচিত ছিল। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের প্রতিষেধক সমৃদ্ধ খাবার তৈরির গবেষণা চালানো হচ্ছে। এই রোগটি অন্যান্য হোমিনিডদের মাঝেও সংক্রমিত হতে পারে। কাজের ক্ষেত্রে দেশের বাহিরে যেতে হেপাটাইটিস বি পাহাড় সমান বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং সরকারি সামরিক বাহিনীতেও যোগদানে এ রোগ বিশাল এক বাধা .!
সংক্রমণের ধরন
হেপাটাইটিস বি এর সংক্রমণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, অ্যাকিউট বা তীব্র সংক্রমণ, এবং ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ। কোন ব্যক্তি যখন প্রথমবার আক্রান্ত হন তখন তাকে অ্যাকিউট হেপাটাইটিস বলে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ৯০% ক্ষেত্রে কোন সমস্যা ছাড়াই এটি সেরে যায়। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে হেপাটাইটিস বি এর অ্যান্টিবডি তৈরি হয় যা তাকে ভবিষ্যতে পুনরায় সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু যদি এ ভাইরাসটি ৬ মাসেরও বেশি সময় রক্তে অবস্থান করে তখন তাকে ক্রনিক হেপাটাইটিস বলা হয়। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে প্রায় ৯০% এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৫-১০% ক্রনিক হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
লক্ষণ ও উপসর্গ
হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের অ্যাকিউট সংক্রমণের লক্ষনগুলো হল খাদ্যে অরুচি, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, শরীর ব্যাথা, হালকা জ্বর, প্রস্রাব গাঢ় হওয়া ইত্যাদি। এ লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে জন্ডিসে রূপ নিতে থাকে। দেখা গেছে যে, সব ধরনের হেপাটাইটিস এর ক্ষেত্রেই গা চুলকানো একটি সম্ভাব্য লক্ষন হতে পারে। এ অসুস্থতাগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং এরপর ধীরে ধীরে এর অবস্থার অবনতি ঘটে। কারও কারও ক্ষেত্রে যকৃতের গুরুতর অসুস্থতা(Acute Hepatic Failure)দেখা যায় এবং এক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণটি কোন লক্ষন প্রকাশ না করে সুপ্ত অবস্থাতেও থাকতে পারে।
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ক্রনিক সংক্রমণ হয় asymptomatic হতে পারে বা যকৃতের একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হতে পারে। সিরোসিস হতে বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত সময় ধরে চলে। এই ধরনের সংক্রমণ নাটকীয়ভাবে প্রকোপ বৃদ্ধি পায় হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা (যকৃত ক্যান্সার) হতে পারে। ইউরোপে হেপাটাইটিস বি এবং সি কারণে হেপাটোসেলুলার কার্সিনমাস প্রায় 50%। ক্রনিক বাহকের জন্য ঝুকি এড়াতে মদ্যপান ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার হেপাটাইটিস বি ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়েছে।
রোগের কারণ
এ রোগ দুই ভাবে ছড়াতে পারে।
- হস্তান্তর
- ভাইরাস সংক্রামন
হস্তান্তর
সাধারনত তরল পদার্থ ও চামড়ার সংস্পর্শেও এ রোগ ছড়াতে দেখা গেছে। রক্তে হেপাটাইটিস বি ধারনকারী কাউকে রক্ত প্রদানে এ রোগ হতে পারে, এ ছাড়া যেকোন প্রকার যৌন আচরণ যেমনঃ যৌন মিলন, সমকামিতা, বীর্য পান করা, মুখে যৌন ক্রিয়া, অথবা চুম্বনের ফলেও এটি ছড়ায়। আক্রান্ত মা থেকেও সন্তান এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর সংক্রামন ঝুকি ৯০%। আক্রান্ত সন্তান থেকে মা আক্রান্ত হবার ঝুঁকি ২০%। এটি পরিবারের এক সদস্য থেকে দ্রুত অন্য সদস্যরা আক্রান্ত হয়। এটি সহজে সনাক্ত করা যায় না। এইচআইভি এইডস (HIV AIDS) থেকেও এটি ১০০ গুন সংক্রামক।
ভাইরাস সংক্রামন
গঠন প্রক্রিয়া
রোগ নির্ণয়
লক্ষণ
- চোখ হলুদ হয়ে যায়, একে জন্ডিস বলে।
- প্রশ্রাবের রং হলুদ হয়।
- পেটে ব্যথা এবং সেই সাথে জ্বর হয়।
- ক্ষুধা মন্দা এবং বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে।
- মাংসপেশি এবং হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা হয়।
- আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় অস্বস্তি অনুভব করে।
- গায়ের চামরার উজ্জলতা নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিষেধক
টিকার সময়কাল
হেপাটাইটিস-বি এর ভ্যাকসিন ডোজ ৪টি ৷ প্রথম ৩টি একমাস পরপর এবং ৪র্থটি প্রথম ডোজ থেকে এক বছর পর ৷ পাঁচ বছর পর বুস্টার ডোজ নিতে হয় ৷ এর মাধ্যমে শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে ৷
চিকিৎসা
রোগলক্ষণ প্রকাশ পেলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার ৷ সাধারণত এর কোনো কার্যকরী চিকিৎসা নেই ৷ নিয়মিত চিকিৎসায় সুস্থ থাকা যায় কিন্তু আরোগ্য হওয়া যায় না ৷ এর মূল চিকিৎসা হলো রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখা ৷ গ্লুকোজের সরবত খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায় ৷ অড়হড় পাতা, ভুঁই আমলার পাতা ইত্যাদির রস খাওয়ায়ে উপকার পেয়েছেন বলেও অনেকে দাবি করেন ৷
আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন যাপন পদ্ধতিঃ
হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির নিয়মিত তরল বা পানীয় গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে লেবুর শরবত কার্যকরী। তাছাড়া অতিরিক্ত মাংস জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। শরীরের যত্নে সর্বদা সচেষ্ট হতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করুন এতে আপনার শরীরের পরিপাক ক্ষমতা বেড়ে যাবে এবং পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করুন এবং পরিমিত মাত্রায় বিশ্রাম নিন।
ভবিষ্যতের আশংকা
লিভার সিরোসিস
লিভার ক্যান্সার
কিডনী বিকল
অন্যান্য
রোগ সংক্রামন
ইতিহাস
সামাজিক অনুশাসন ও সংস্কৃতি
প্রতি বছর ২৮ জুলাই বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস বি ও সি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি; রোগনির্ণয়, প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার জন্য বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস, সারাবিশ্বে পালন করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে এটি বিশ্ব হেপাটাইটিস জোট গঠন করে এবং ২০১০ সালে বৈশ্বিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন লাভ করে।
আরো দেখুন
বহিঃসংযোগ
ব্যাক্টেরিয়া জনিত | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
প্রোটোজোয়া জনিত | |||||||||
কৃমিজনিত | |||||||||
ভাইরাস জনিত | |||||||||
সাধারণ প্রদাহ |
|||||||||
|