Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতা

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
Two petri dishes with antibiotic resistance tests
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতার পরীক্ষা: সাদা চক্রের ওপর থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলোকে একটি পাত্রে রাখা রয়েছে ও প্রতিটি ব্যাকটেরিয়াকে ভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের সংস্পর্শে আনা হয়েছে। পরিষ্কার রিং তৈরি হওয়া ব্যাক্টেরিয়াগুলোর (যেমন বাম পাশের বেশিরভাগ ব্যাক্টেরিয়া) বংশবৃদ্ধি হয়নি যার ফলে বোঝা যাচ্ছে যে তারা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী নয়। অপরদিকে ডান পাশের পাত্রে রাখা ব্যাকটেরিয়ারগুলোর ৭টির মাঝে মাত্র তিনটি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি সংবেদনশীল।
যেভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতার বিবর্তন ও বিস্তৃতি ঘটে

অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতা বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (ইংরেজি: antimicrobial resistance) বা এএমআর হচ্ছে শরীরে কোনো অনুজীবের (প্রচলিত অর্থে ব্যাক্টেরিয়া) নির্মূলে প্রয়োগকৃত নির্দিষ্ট ওষুধের বিপক্ষে যুদ্ধ করে ঐ অনুজীবের টিকে থাকার বা প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করা, যদিও পূর্বে ঐ নির্দিষ্ট ওষুধের মাধ্যমেই সেই অণুজীবটিকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। এটি প্রচলিত অর্থে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (ইংরেজি: antibiotic resistance) বা এআর নামেও পরিচিত। বিশদার্থে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা মূলত অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতা বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের একটি শাখা। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা, অ্যান্টিবায়োটিকের বিপক্ষে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ্যতাকে নির্দেশ করে, অপরদিকে অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতা ব্যাকটেরিয়াসহ সকল অণুজীবের এ ধরনের ক্ষমতা অর্জনকে নির্দেশ করে। প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করা অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসা করা দুরূহ, কারণ এজন্য ভিন্ন ধরনের ওষুধের (ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক) বা নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ উচ্চমাত্রায় সেবনের প্রয়োজন হয়। যার ফলে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়াসহ শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি ও অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয় যা এক পর্যায়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেসকল অণুজীব একাধিক অণুজীব-বিরোধী ওষুধের বিপক্ষে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করে তাদেরকে একাধিক ওষুধ-বিরোধী প্রতিরোধী বা মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (multidrug resistant বা MDR) বলা হয়। যেসকল অণুজীব ব্যপকভাবে ওষুধের বিপক্ষে প্রতিরোধী বা এক্সটেন্সিভলি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (extensively drug resistant বা XDR) হয়ে ওঠে বা সম্পূর্ণভাবে ওষুধের বিপক্ষে প্রতিরোধী বা টোটালি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (totally drug resistant বা TDR) তাদেরকে মাঝেমাঝে সুপারবাগ (superbug) নামেও অভিহিত করা হয়।

প্রতিরোধক্ষমতা তিনটি পদ্ধতির মধ্যে যে-কোনো একটির মাধ্যমে তৈরি হয়: নির্দিষ্ট ধরনের ব্যাকটেরিয়ায় প্রাকৃতিকভাবে, জিনগত পরিবর্তন, বা একটি প্রজাতির অন্য প্রজাতির কাছ থেকে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করে। সকল ধরনের অণুজীব-ই প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ছত্রাক ছত্রাকরোধী প্রতিরোধ্যতা, ভাইরাস অর্জন করে ভাইরাসরোধী প্রতিরোধ্যতা, প্রোটোজোয়া অর্জন করে প্রোটোজোয়ারোধী প্রতিরোধ্যতা, এবং ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা অর্জন করে। অণুজীবের এলোপাতাড়ি রূপান্তরের মাধ্যমেও প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য অনুজীব-বিরোধী ওষুধের অতিরিক্ত ও অনিয়মিত ব্যবহারের ফলে এ ধরনের জিনগত রূপান্তরের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় যা এক পর্যায়ে অণুজীব-বিরোধী ওষুধের প্রভাব অকার্যকর হয়ে যায়।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময়-ই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও এর অপ্রয়োজনীয় ও অপব্যবহার বন্ধ করা। এটি অ্যান্টিবায়োটিকসহ সকল অণুজীব-বিরোধী ওষুধের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে বড়ো পরিসরের চেয়ে অল্প পরিসরের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার এ ধরনের সমস্যা থেকে প্রতিকারের একটি উপায়। এছাড়াও সঠিক ও কার্যকরভাবে সুনির্দিষ্ট অণুজীবকে লক্ষ্য করে নির্দিষ্ট অনুজীব-বিরোধী ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হলে তা প্রতিরোধ্যতা তৈরিতে ভূমিকা রাখে না বললেই চলে, এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম হয়। যেসকল রোগীরা বাড়িতে এ ধরনের ওষুধ গ্রহণ করেন তাদের এ ধরনের ওষুধ গ্রহণের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান ও সচেতনতা থাকা জরুরী। রোগীদের পরিচর্যার মাঝে সঠিকভাবে হাত ধোয়া ও জীবাণুনাশকের ব্যবহারের সাথে সাথে স্যানিটেশন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা এ ধরনের প্রতিরোধ্যতা বা রেজিস্ট্যান্স ঠেকাতে ভূমিকা রাখতে পারেন। এই একই ধরনের অভ্যাস তৈরিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের পাশাপাশি রোগী, সাক্ষাতাকারী, ও পরিবারের সদস্য মাঝেও উৎসাহিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির মধ্যে অণুজীব-বিরোধী ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমেই মূলত দেহে ওষুধ-বিরোধী প্রতিরোধ্যতার সৃষ্টি হয় যা পরববর্তীতে এই দুই শ্রেণির মাঝে বিস্তৃত হয়। অতিরিক্ত ও একাধিক ওষুধ গ্রহণের ফলেও এই সমস্যার সৃষ্টি হয় যা মূলত সেসব দেশে বেশি দেখা যায় যেখানে ওষুধশিল্পের প্রভাবে বিশাল পরিমাণে ওষুধ প্রস্তুত করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার ওপর বিবর্তনমূলক চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে দুর্বল ব্যাকটেরিয়া মারা যায় ঠিকই, কিন্তু একই সাথে তা প্রতিরোধ্য ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং যার বিস্তৃতি বাড়তেই থাকে। এমন কী খুব অল্প শক্তির অ্যান্টিবায়োটিকেও প্রতিরোধ্য ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার সুবিধা পায় ও দুর্বল ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে দ্রুত গতিতে বংশ বিস্তার করে। যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা ক্রমান্বয়ে একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত হচ্ছে তাই বিকল্প চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তাও বড়ো হয়ে দেখা দিচ্ছে। এর ফলে নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসাপদ্ধতি চালু করা হচ্ছে, যদিও নতুন ওষুধ উন্নয়রের সম্ভাবনা বিরল হয়ে উঠছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের সহজলভ্যতার কারণে বিশ্বব্যাপী অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আনুমানিক হিসেবে প্রতিবছর ৭,০০,০০০ থেকে কয়েক কেটি মানুষ এই ধরনের জটিলতায় প্রাণ হারায়। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ লক্ষ মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা সংক্রমিত হয় যার ফলে কমপক্ষে প্রায় ২৩,০০০ মানুষ মারা যায়। সমস্যা নিরসনে এই হুমকিকে স্বীকৃতি দেওয়ার সাথে সাথে একযোগে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্দেশ্যে জনমানুষের দাবির মাত্রা বাড়ছে যার মধ্যে অণুজীব-বিরোধী প্রতিরোধ্যতা দূরীকরণে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রস্তাবও রয়েছে। বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতার প্রকোপ সম্পূর্ণরূপে চিহ্নিত করা সম্ভব না হলেও দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা সম্পন্ন গরিব দেশগুলো এই সমস্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০১৪ সালের এপ্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, “এই গুরুতর হুমকি এখন আর ভবিষ্যতের জন্য কোনো পূর্বাভাস নয়, বরং বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলেই এটি এখন ঘটছে এবং যে-কোনো দেশের, যে-কোনো বয়সের, যে-কারও এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা — যখন ব্যাকটেরিয়া এমনভাবে নিজেকে পরিবর্তিত করে যার ফলে মানুষের কোনো একটি সংক্রমণের (ইনফেকশন) চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হলেও তা তখন আর কাজ করে না — এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড়ো হুমকি।” ২০১৫ সালের এক হিসাবে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিস প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল উল্লেখ করে যে ঐ বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬,৭১,৬৮৯ জন মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন যার মধ্যে ৩৩,১১০ জন মারা যান। এর মধ্যে বেশিরভাগ স্বাস্থ্যসেবার আওতাভুক্ত ছিলেন।

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение