Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
পশুকামিতা
পশুকামিতা (ইংরেজি: Zoophilia) হচ্ছে এমন এক প্রকার যৌন বিকৃতি যেখানে মানুষ নয় এমন প্রাণীর সাথে মানুষের যৌন আকর্ষণ প্রকাশ পায়। পশ্বাচার (ইংরেজি: Bestiality) হচ্ছে মানুষ এবং মানুষ নয় এমন প্রাণীর মধ্যে আন্তঃপ্রজাতি-যৌন কর্মকাণ্ড প্রায়সই পশ্বাচার এবং পশুকামিতা শব্দদ্বয়কে একে অপরের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কিছু গবেষক আকর্ষণ (পশুকামিতা) এবং যৌনক্রিয়া (পশ্বাচার) এর মধ্যে বিভাজন রেখা তৈরী করেছেন।
যদিও প্রাণীর সাথে সঙ্গম কিছু দেশে নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু বেশিরভাগ দেশেই প্রাণীর নির্যাতন আইন, পায়ুকামিতা মূলক আইন অথবা প্রকৃতিবিরুদ্ধ আইনে পশ্বাচার অবৈধ।
পরিভাষা
সাধারণ
পশ্বাচার এবং পশুকামিতা একে অপরের বিকল্প শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও কিছু গবেষক এদের মধ্যে শ্রেণীবিভাগ করেছেন। যেমন পশুকামিতা (প্রাণীর প্রতি যৌন আকর্ষণ) এবং পশ্বাচার (প্রাণীর সাথে যৌন ক্রিয়া)। পশ্বাচারের ক্ষেত্রে প্রাণী যৌন আকর্ষণ বোধ করে না। কিছু গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে, প্রাণীর প্রতি অনুরক্ততা থেকেই প্রাণীর সাথে যৌনক্রিয়া এমনটা খুবই বিরল। একই সাথে কিছু পশু কামি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন তারা কখনোই প্রাণীর সাথে কোনরুপ যৌন কর্মকাণ্ডে জড়ান নি।আর্নেস্ট বোরনেম্যান (১৯৯০) পশু ধর্ষকামী শব্দটির প্রবর্তন করেন; যার অর্থ হল যারা প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে যৌন সুখ লাভ করে।
পশুকামিতা
১৮৮৬ সালে ক্রাফট এবিং সাইকোপ্যাথিয়া সেক্সুয়ালিস নামক যৌনতার গবেষণার একটি ক্ষেত্রে পশুকামিতা শব্দটি ব্যবহার করেন। যেখানে তিনি এমন অনেক ঘটনার কথা বর্ণনা করেন, "যেখানে প্রাণীকে নির্যাতন করা হয়েছে (পশ্বাচার)", সেখানে তিনি একইসাথে কামদ পশুকামিতা (ইংরেজি: zoophilia erotica) শব্দটি ব্যবহার করেন। সেখানে সংজ্ঞায়িতকরণে তিনি বলেন মানুষের প্রাণীর চামড়ার অথবা পশমের প্রতি যৌন আকর্ষণই পশুকামিতা। সাধারণ অর্থে পশুকামিতা হল মানুষ এবং পশুর মধ্যকার যৌন আকর্ষণ এবং এ আকর্ষণ বাস্তবায়ন করার একপ্রকার অভিলাষ।
পশ্বাচার
কিছু পশুকামী এবং গবেষক পশুকামিতা ও পশ্বাচার এর মধ্যে পার্থক্য নিরুপণ করেছেন। যেখানে একটি হলোব প্রাণী সাথে যৌন সম্পর্কের অভিলাষ এবং অন্যটি প্রাণীর সাথে যৌন কর্মকে বর্ণনা করণ। এই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা থাকায় ১৯৬২ সালের লিখায় মাস্টার্স পশুধর্ষকাম নিয়ে আলোচনায় পশ্বাচার শব্দটি ব্যবহার করেন। নিউ জার্সি মেডিকেলে স্কুল এর সহকারী অধ্যাপক এবং এএসপিসিএর এর পরিচালক স্টিফেনি লারফাজ লিখেন, দুই শব্দকে তার বৈশিষ্ট্যভেদে পৃথক করা যায়। পশ্বাচার হলো যারা প্রাণীকে নির্যাতন অথবা ধর্ষণ করে এবং পশুকামী হল সারা প্রাণীর প্রতি যৌন আকর্ষণ বা আবেগপ্রবণ আকর্ষণ অনুভব করে।কলিন জে উইলিয়ামস এবং মার্টিন ওয়েনবার্গ; ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত স্বঘোষিত পশুকামীদের গবেষণা করেছেন। গবেষণার মাধ্যমে দেখেছেন পশু কামিরা পশুর স্বাস্থ্য সচেতনতা আনন্দ নিয়ে উদ্বিগ্ন; যা কখনোই পশ্বাচারীরা হয় না। উইলিয়াম এবং ওয়েন বার্গ ব্রিটিশ পত্রিকায় আরো বলেন পশ্বাচারীরা কৈফিয়তকারী হিসেবে নিজেদের পশুকামী হিসেবে দাবী করে।
ঘটনার সীমা
কিনসে প্রতিবেদন অনুসারে পুরুষদের মধ্যে ৮ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৩.৬ শতাংশ নিজের জীবনসীমার কোনো এক বিন্দুতে পশুর সাথে যৌন ক্রিয়া করেছে এবং দাবী করা হয়েছে, এদের মধ্যে ৪০-৬০ শতাংশ সেসব ব্যক্তির মধ্যে এ যৌনক্রিয়া দেখা গিয়েছে, যারা খামারের কাছে বসবাস করে, কিন্তু পরবর্তীতে কিছু লেখক এই পরিসংখ্যানকে বাতিল করে দেন। তাদের মতে এখানে কারাবন্দীদের যে হিসাবটা নেওয়া হয়েছে সেখানে অসমঞ্জস্যতা আছে এবং এটি একপ্রকার নমুনা পক্ষপাত। মার্টিন ডোবারম্যান লিখেছেন কিন্দের গবেষণা সহকারী কারাগারের নমুনা এ পরিসংখ্যান থেকে অপসারণ করেছে।
খামারের পশুদের সাথে থাকার সুযোগ কমে গিয়ে, ১৯৭৪ সালের মধ্যে আমেরিকার খামার্ গুলোর জনসংখ্যা ১৯৪০ সালের তুলনায় ৮০ ভাগ কমে যায়। হান্টের ১৯৭৪ সালের গবেষণায় পাওয়া যায়, এই ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তন ইঙ্গিত করে পশুকামিতার ঘটনাগুলোর এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের দিকে। ১৯৭৪ সালে পশুকামী পুরুষের সংখ্যা শতকরা ৪.৯ ভাগ ( ১৯৪৮ঃ শতকরা ৮.৩ ভাগ)।আর ১৯৭৪ সালে পশুকামী নারী শতকরা ১.৯ ভাগ ( ১৯৪৮ঃ শতকরা ৩.৬ ভাগ)। মিলেটস্কির বিশ্বাস পশুকামীতার হার কমে যাওয়ার পেছনে তাদের রুচির পরিবর্তন না, বরং সুযোগের অভাবই প্রধান কারণ হিসেবে আছে।
ন্যান্সি ফ্রাইডে তার বই ফিমেল সেক্সুয়ালিটি, মাই সিক্রেট গার্ডেনে, ভিন্ন ভিন্ন মহিলার ১৯০ টি উদ্ভট খেয়াল (ফ্যান্টাসি) নথিবদ্ধ করেন; যার মধ্যে ২৩ টি ছিল পশুকামী ক্রিয়াকলাপ।
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সব রোগী মনোরোগ জনিত সমস্যায় ভুগছে তাদের মধ্যেই পশ্বাচারের প্রতি অধিক ঝুঁকে পড়েন (৫৫ শতাংশ) ক্রিপল্ট এবং কচর (১৯৮০) প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, তাদের জরিপের ৫.৩% পুরুষ বিষমকামী যৌনক্রিয়ার সময় প্রাণীর সাথে যৌনক্রিয়ার কথা কল্পনা করেন। ২০১৪ সালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে দেখা গিয়েছে, নারীদের ৩ শতাংশ এবং পুরুষদের ২ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রাণীর সাথে যৌনক্রিয়া করার খায়েশ রয়েছে। ১৯৮২ সালে ১৮৬ টা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর করা একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে দেখা গিয়েছে ৭.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাণীর সাথে যৌনক্রীয়ায় লিপ্ত হয়েছে।
প্রাণীর যৌন ক্রিয়া দেখে আনন্দ পাওয়ার বিষয়টিকে বলা হয় ফনোফিলিয়া (ইংরেজি: faunoiphilia)। ম্যাসেনের মতে(১৯৯৪) প্রাণীর যৌন ক্রিয়া দেখার প্রতি আগ্রহ এবং যৌন উত্তেজনা পরবর্তীতে পশুকামিতায় পরিবর্তিত হওয়ার এক অন্যতম নির্দেশক। ন্যান্সি ফ্রাইডে উল্লেখ করেন যৌনতা প্রসঙ্গে সামাজিক বাধা, বিচার ও সাংস্কৃতিক প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে যৌন আচরণ প্রদর্শন করার আনুষঙ্গিক উপাদান হিসেবে পশুকামিতা ব্যক্তির যৌন চাহিদায় রূপান্তরিত হতে পারে। মাস্টার (১৯৬২) বলেছেন, কিছু পতিতালয়ের নিয়ন্ত্রারা ইচ্ছা করেই পশুর সঙ্গমকে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে, যাতে করে সম্ভাব্য খরিদ্দাররা পশ্বাচারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পশ্বাচার ক্রিয়া করে।. একাধিক গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে, কোনো যৌন ক্রিয়া নেই এধরনের চলচ্চিত্রের তুলনায় বনবোর রতিক্রিয়া দেখায় এধরনের চলচ্চিত্র দেখে নারী যোনি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেয়।
পশুকামিতা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি
গবেষণাগত দৃষ্টিকোণ
পশুকাম নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা করা হয়েছে এ আলোচনার ক্ষেত্রে মধ্যে রয়েছে মনোবিজ্ঞান, যৌনবিজ্ঞান, নৈতিকতা বিজ্ঞান, (প্রাণীর স্বভাব নিয়ে গবেষণা), নৃপ্রাণবিজ্ঞান (মনুষ্য-প্রাণীর মধ্যকার সম্পর্ক এবং আকর্ষণ)।
বিটজ আরো বলেন:
" প্রাণীর সাথে যৌনক্রিয়ার বিষয়টি এতদিন যে জনগণের কাছে ট্যাবু হয়েছিল তাদের হ্রাস পাচ্ছে। এটি স্থান করে নিচ্ছে বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালিত গবেষণাপত্রে, জনগণ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করছে। প্রাণীর সাথে যৌনক্রিয়া পরিচিত পশ্বাচার অথবা পশুকামিতা হিসেবে তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত আরো প্রকাশ্যে এবং বিশেষজ্ঞ দ্বারা এর গবেষণা করা উচিত এবং অবশ্যই প্রাণীর নৈতিকতা, প্রাণীর স্বভাব মনস্তাত্ত্বিকতা, মানসিক স্বাস্থ্য, সমাজবিজ্ঞান এবং আইনের দৃষ্টিতে বিষয়টি আলোচনা করা উচিত।"
মেডিক্যাল গবেষণা মতে কিছু পশুকামী শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট প্রজাতি (যেমন ঘোড়ার) প্রতি আকৃষ্ট হয়; কিছু পশুকামি বিভিন্ন রকম প্রজাতির প্রতি আকৃষ্ট হয়, আবার কিছু পশুকামী মানুষের প্রতি আকৃষ্টই হয় না।
২০১৭ সালে গবেষকরা দেখেন একটি বানর হরিণ এর সাথে সঙ্গম (আন্তঃপ্রজাতি যৌনক্রীয়া) করতে চাচ্ছে, বিবর্তনের পটভূমিকায় মানুষ কেনো আন্তঃপ্রজাতি সাথে যৌনক্রিয়া করতে যায় তার একটি সুত্র এখানে পাওয়া যেতেও পারে। যা নিয়ে গবেষণা চলমান।
ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গী
বাইবেলে এধরনের আচরণের বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায়। উত্তর ইতালির ভাল কামোনিকাতে প্রাপ্ত একটি চিত্রশিল্পের বয়স খ্রিষ্ঠপূর্ব ৮০০০ বছর এবং সেখান থেকে দেখা যায়, একজন মানুষ পশুর সাথে যৌন সঙ্গম করছে। রায়মন্ড ক্রিষ্টিঞ্জার এই চিত্রটিকে উপজাতীয় প্রধানের ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে, তবে আমরা এটা জানি না সে সময়ে এ ধরনের চর্চা স্বীকৃতি পেয়েছিল কিনা, এ আচরণ কী সচরাচর ঘটত নাকি হঠাৎ ঘটত, এই চিত্র কী শুধু প্রতীকী ছিল নাকি আকিঁয়ের কল্পনাবিলাস ছিল তা সম্পুর্ণভাবে জানা যায় নি। দ্য ক্যাম্ব্রিজ ইলাস্ট্রেট এই চিত্রকর্মটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, এটি শুধুমাত্রই কৌতুকপূর্ণ চিত্রকর্ম। কারণ যে মানুষটি পশুর শরীরে যৌন ক্রিয়া করছে তিনি অত্যন্ত আনন্দের সাথে হাত নাড়ছেন। মৃৎশিল্পীরা এমনটা আকেঁন, কারণ এই ভাবনাটাকে শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা চিত্তাকর্ষক ব্যাপার। মার্ক এপরেট এর মতে জ্যাকোবাসের মত লেখকদের বর্ণনা শুধুমাত্রই পাঠককে সুড়সুড়ি দেওয়ার মত বর্ণনা। যা নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নয়। মাস্টার্স বলেছেন, প্রিহিস্ট্রিক মানুষদের যৌন স্বভাবের ব্যাপারে আমরা খুবই কম জানি। এবং গুহাশিল্পের ব্যাপারটি শুধুমাত্র শিল্পীর মনের খেয়াল হতে পারে।
পিন্ডার, হেরোডোটাস এবং প্লুটার্ক দাবি করেছেন মিশরীয়রা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ছাগলের সাথে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হতো। পশ্বাচার উত্তর আমেরিকা এবং মধ্য পূর্ব উপজাতীয় সংস্কৃতির কিছু মানুষের কাছে স্বীকৃত ছিল।হপির মত মার্কিন আদিবাসী ও সেখানকার প্রাণীদের মধ্যে পশ্বাচার বিরল ছিল না। ভ্যাগেট মার্কিন আদিবাসী তরুণদের মধ্যে যৌনাচার এমনকি পশ্বাচার সর্বব্যাপী ছিল বলে বর্ণনা করেন। অধিকন্তু কপার ইনুইট মানুষের মধ্যে জীবন্ত প্রাণীর সাথে যৌনাচারের প্রতি আকর্ষণ ছিল।
বিভিন্ন সংস্কৃতি পশুকামিতা প্রকাশ পায় এরুপ নানা গঠন মন্দিরে (খেজুরাহ, ভারত) অথবা অবয়ব (সাগাহোলম, বারো, সুইডেন) তৈরী করতে থাকে। যদিও ভারতের খেজুরাহতে এজাতীয় ভাস্কর্য মন্দিরের বাহিরে অবস্থিত, যা থেকে অনেকে বলে থাকেন এই ভাষ্কর্যগুলোকে পবিত্র ভাবা হত না বলেই তা মন্দিরের বহির্ভাগে রাখা হয়েছে।
মধ্যযুগে গীর্জা নিয়ন্ত্রিত সংস্কৃতি অনুযায়ী বাইবেলের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য পশুকামীদের ফাঁসি দেওয়া হত, পুড়িয়ে ফেলা হত এবং প্রাণীটিকে ফাসি দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করা হত। ছাগলরূপে শয়তানের সাথে সঙ্গমের জন্য কিছু জাদুকরী অভিযুক্ত হয়েছিল এবং বিচারের নামে তাদের উপর নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হত।
ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গী
ইসলামে কুরআন অনুসারে মুসলিম পুরুষদের জন্য স্ত্রী এবং উপপত্নী, আর নারীদের জন্য স্বামী ছাড়া সকল প্রকার যৌনতাকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে (কুরআন ৭০:২৯-৩১, ২৩:৫-৭)। সে অনুযায়ী পশুকামও হারাম করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইসলামী সকল আলেমের ইজমাহ বা, ঐক্যমত্য রয়েছে। ইসলাম অনুযায়ী যে ব্যক্তি পশুর সাথে যৌনতায় লিপ্ত হবে তাকে অভিশপ্ত বলা হয়েছে। তবে এর শাস্তি নিয়ে ইসলামী ফক্বীহ বা আইনশাস্ত্রবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বেশিরভাগের মতে পশুকামের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। আবার কেউ কেউ বলেছেন তার শাস্তি সাধারণ ব্যভিচারের মতো হবে, অর্থাৎ, অপরাধী বিবাহিত হলে মৃত্যুদণ্ড, আর অবিবাহিত হলে ১০০ ঘা বেত এবং এক বছর দেশত্যাগ। আর কেউ কেউ এই মত দিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট শাস্তি নেই, কাজি (বিচারক) নিজের বুঝমতো তাজির শাস্তি দেবেন।
খ্রিস্টধর্মে বাইবেল অনুসারে (লেবীয় পুস্তক;১৮:২৩: "এবং তুমি কোনো পশুর সাথে শয়ন করবে না এবং নিজেকে পশু দ্বারা নোংরা করবে না এবং কোনো মহিলা নিজেকে কোনো জন্তুর কাছে সমর্পন করে, পশুটি কর্তৃক নোংরা হবে না, এটি একপ্রকার যৌনবিকৃতি." RSV) এবং ২০:১৫-১৬ ("যদি কোনো পুরুষ পশুর সাথে শয়ন করে, তবে মানুষটির মৃত্যু হওয়া আবশ্যক এবং পশুটিকে হত্যা করতে হবে। এবং যদি কোনো নারী পশুর সাথে শয়ন করে তবে নারী এবং পশু উভয়কেই হত্যা করতে হবে। কারণ তাদের অপরাধ ক্ষমাহীন।" RSV) এই আয়াতকে মুসলিম, খ্রিষ্ঠান এবং ইহুদীরা পশ্বাচারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা হিসেবে ব্যবহার করে। যাইহোক, অনেকে মনে করেন নতুন নিয়মের শিক্ষায় পশ্বাচার সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নিষিদ্ধ নয়।
মধ্যযুগীয় ধর্মবেত্তা থমাস একুয়িনাস বিভিন্ন "প্রকৃতিবিরুদ্ধ অনৈতিক ক্রীয়াকে" (যা সন্তান উৎপাদন করবে না, কিন্তু যে ক্রীয়ায় যৌন সুখ লাভ হবে) পাপের বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করেন। সেখানে "পশ্বাচার হলো সব পাপের চেয়ে বড় পাপ।" কিছু খ্রিষ্ঠান ধর্মীয়নেতা ম্যাথিউর দৃষ্টিভঙ্গিকে আরো সম্প্রসারণ করে বলেন, ব্যাভিচারের ভাবনা যতটা পাপাচারপূর্ণ, অনুরূপভাবে পশ্বাচারের ভাবনাও একইরকম পাপচিন্তা।
হিন্দুধর্মে কিছু স্থানে পশুকামের অস্তিত্ব রয়েছে। মহাভারত আদিপর্বের ১১৮ অধ্যায়ে কিন্দম ঋষির হরিণের রূপ লাভ করে হরিণীর সাথে যৌনসঙ্গমের কথা পাওয়া যায়। কামসূত্র অনুযায়ী হিন্দু পুরুষ মেয়ে পশুর সাথে যৌনসঙ্গম করতে পারবে। হিন্দুধর্মের একটি প্রচলন অশ্বমেধ যজ্ঞ অনুসারে পুরুষ ঘোড়ার সাথে নারীদের যৌনসঙ্গম করতে হয়।খেজুরাহতে মন্দিরের বাহিরের অংশে হাজারও বিগ্রহের মধ্যে প্রাণীর সাথে যৌনাচারণে সুষ্পষ্টভাবে লিপ্ত এরকম কিছু বিগ্রহ দেখা যায়। প্রাণীর সাথে মানুষের যৌনাচারণের এধরনের রুপায়ন প্রতীকী মাত্র, এখান থেকে তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অর্থ পাওয়া যায় না। হিন্দুধর্নের কামদমূলক বিভিন্ন ভাস্কর্য এবং চিত্রশিল্প অনুসারে, প্রাণীর সাথে যৌনাচারণের মাধ্যমে বিশ্বাস করা হয়, ঈশ্বর প্রাণীরুপ ধরে পৃথিবীতে বিদ্যমান এবং তার সাথে যৌনাচারণ করা হচ্ছে। যাইহোক, ভগবৎ পুরান এবং দেবী ভগবৎ পুরানের মত ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, যে ব্যক্তি প্রাণী বিশেষত গরুর সাথে যৌনাচার করবে, সে মৃত্যুর পর নরকে পতিত হবে, নরকে তার শরীরকে সুতীক্ষ্ণ কাটা গাছের সাথে ঘষে ঘষে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হবে।
স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা
প্রাণী থেকে মানুষে রোগ সংক্রমিত হওয়া কে বলা হয় জুনোসিস। কিছু জুনোসিস সংক্রমিত হতে পারে সাধারণ সংস্পর্শে। তবে বেশিরভাগ জুনোসিস সংক্রমিত হয় বীর্য, যোনি রস, মূত্র, লালা, বীষ্ঠা এবং প্রাণীর রক্ত স্থানান্তরের মাধ্যমে। জুনুসিসের কিছু উদাহরণ হলো ব্রুসেলসিস, কিউ জ্বর, লেপ্টোস্পাইরোসিস, and টক্সোকারিয়াসিস। এছাড়াও, প্রাণীর সাথে যৌনাচারণস নানাবিধ বিপদের ঝুঁকি থাকে। প্রাণীর বীর্যের জন্য এনাফাইলাক্সিসের মত এলার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। অবলা প্রাণীর সাথে যৌনাচারণের সময় প্রাণীর কামড় সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা যেতে পারে।
বহিঃসংযোগ
- Encyclopedia of Human Sexuality entry for "Bestiality" at Sexology Department of Humboldt University, Berlin.
- Zoophilia References Database Bestiality and zoosadism criminal executions.
- Animal Abuse Crime Database ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে search form for the U.S. and UK.
শারীরবিদ্যা এবং জীববিজ্ঞান |
|
---|---|
স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা |
|
পরিচয় ও বৈচিত্র্য | |
আইন | |
ইতিহাস | |
সম্পর্ক এবং সমাজ |
|
দেশ অনুযায়ী | |
যৌন কার্যক্রম |
|
যৌনশিল্প | |
ধর্ম ও যৌনতা | |