Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোম

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
৪৭,এক্সওয়াইওয়াইসহ একজন পুরুষের ক্যারিওটাইপ

এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোম বা ৪৭,এক্সওয়াইওয়াই একটি জিনগত অবস্থা। এতে পুরুষের অতিরিক্ত একটি ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে।  খুব অল্প কিছু লক্ষণ এই সিনড্রোমের দরুন দেখা যায়। এর লক্ষণের মধ্যে রয়েছে গড়পড়তার চেয়ে বেশি উচ্চতা, ব্রণ ও বুদ্ধিবৃদ্ধিজনিত সমস্যা।  অবশ্য এই সিনড্রোম ব্যক্তির বংশধারণ ক্ষমতায় কোন প্রভাব ফেলে না। 

এক্সওয়াইওয়াই ক্রোমজোম সাধারণত ব্যক্তি তার পিতামাতা থেকে বংশসূত্রে পায় না বরং এটি শুক্রাণুর বৃদ্ধিকালে এক র‍্যান্ডমভাবে স্ংঘটিত ঘটনার ফলাফলস্বরূপ মানুষের মধ্যে থাকা স্বাভাবিক ৪৬টি ক্রোমোজোমের বদলে এক্সওয়াইওয়াই ক্যারইয়োটাইপ প্রদর্শনকারী ৪৭টি ক্রোমোজোম উপলব্ধ হয়। ক্রোমোজোমাল এনালাইসিসের মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা সম্ভব। 

চিকিৎসা হিসেবে "স্পীচ থেরাপি" অথবা স্কুলের কাজে বাড়তি সাহায্যের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।  ক্রোমোজোমজনিত এই সমস্যার কোন প্রতিকার নেই। প্রতি এক হাজার পুরুষের মাঝে প্রায় একজন পুরুষ জন্মসূত্রে এই সমস্যায় ভোগে। এমনকি অনেক পুরুষ তাদের ক্রোমোজোমের এই ভিন্ন ক্যারইয়োটাইপের ব্যাপারে অজ্ঞাত।  ১৯৬১ সালে সর্বপ্রথম এই জিনগত সিনড্রোম বর্ণনা করা হয়।

লক্ষণ

শারীরিক লক্ষণ

৪৭ টি ক্রোমোজোম ও এক্সওয়াইওয়াই ক্যারইয়োটাইপের অধিকারী ব্যক্তিরা সাধারনত শিশুকালে খুব দ্রুত বাড়ে। দেখা গিয়েছে, তাদের সর্বশেষ উচ্চতা গড়পড়তার চেয়ে প্রায় ৭ সে.মি. বা তিন ইঞ্চির মতো বেশি হয়। ১৯৬২-১৯৭২ সময়কালে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা জন্ম নেয়া আটজন ছেলে শিশুর উচ্চতা পরীক্ষা করে দেখা গেছে ১৮ বছর বয়েসে তাদের গড় উচ্চতা ১৮৮.১ সে.মি বা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। যেখানে তাদের পিতাদের গড় উচ্চতা ছিলো ১৭৪.১ সে.মি. এবংমায়েদের গড় উচ্চতা ছিলো ১৬২.৮সে.মি. বা পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি।  শুরুর দিকের রিপোর্টে ব্রণের প্রকটতা বর্ণনা করা হলেও বর্তমানে ব্রণের উপর বিশেষায়িত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা ৪৭,এক্সওয়াইওয়াই এর সাথে ব্রণের সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। 

৪৭,এক্সওয়াইওয়াই পুরুষদের প্রিন্যাটাল টেস্টোস্টেরন মাত্রা স্বাভাবিক। অধিকন্তু পুরুষের যৌন বিকাশ ও বংশধারণ ক্ষমতা স্বাভাবিক।

কগনিটিভ ও আচরণগত লক্ষণ 

অন্যান্য সাধারণ সেক্স ক্রোমোজোম অসামঞ্জস্য ৪৭,এক্সএক্সএক্স এবং ৪৭,এক্সএক্সওয়াই (ক্লিনেফেল্টআর সিনড্রোম) এবং ৪৭,এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোমসহ জন্ম নেয়া ছেলে শিশুদের গড় আইকিউ সাধারণ জনসংখ্যার তুলনায় কম নয়। ছয়টি ভিন্ন গবেষণায় ২৮ জন ৪৭,এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোমসহ জন্ম নেয়া ছেলেশিশুর ক্ষেত্রে গড়ে ১০০.৭৬ ভার্বাল আইকিউ, ১০৮.৭৯ পারদর্শিতা এবং ১০৫.০০সম্পূর্ণ আইকিউ স্কেলে স্কোর তুলতে দেখা গেছে । অন্য দুই গবেষণায় এই অতিরিক্ত জিনের অধিকারী ৪৭ জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদের উচ্চতা গড়ে ১৮৪ সেন্টিমিটার এবং গড় আইকিউ ৯৯.৫ ভার্বাল আইকিউ এবং ১০৬.৪ পারদর্শিতা স্কোর পাওয়া গিয়েছে। বেশ কিছু পরীক্ষায় অতিরিক্ত জিনসহ জন্ম নেয়া শিশুদের আইকিউ অবশ্য তাদের সহদোরদের তুলনায় কিছুটা কম দেখা গেছে। এডিনবরায় হওয়া গবেষণআয় দেখা গিয়েছে, গড়ে সহোদরদের ভার্বাল আইকিউ ১১২.৯ এবং পারদর্শিতা আইকিউ ১১৪.৬ হলেও অতিরিক্ত জিনের অধিকারী বা এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোমের অধিকারী শিশুদের গড় ভার্বাল আইকিউ এবং পারদর্শিতা স্কোর যথাক্রমে ১০৪.০ এবং ১০৬.৭। উক্ত গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রায় অর্ধেক ছেলে শিশুর কোন কিছু শিখতে সমস্যা হতো। বোস্টনে ৫৫ শতাংশ এক্সওয়াইওয়াই ক্রোমোজোম সম্পন্ন শিশুর নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই অতিরিক্ত ক্রোমোজোম সমেত পুরুষদের মাঝে আক্রমাণত্মক আচরণ দেখা যায় না এবং তাদের বেড়ে ওঠা আর দশজন সাধারণ (৪৬টি ক্রোমোজোম সম্পন্ন) পুরুষদের মতোই।

কারণ

চিত্রে এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোম সংঘটিত হওয়ার প্রণালী বিস্তারিত প্রদর্শিত হচ্ছে। MI এবং MII হচ্ছে মিয়োসিসের ভিন্ন ভিন্ন ধাপ। নীল ও গোলাপি বৃত্ত দ্বারা যথাক্রমে পুরুষ ও নারী কোষ্কে বোঝাচ্ছে। একই ভাবে নীল দন্ড দ্বারা ওয়াই ক্রোমোজোম এবং গোলাপি দন্ড দ্বারা এক্স ক্রোমোজোম চিহ্নিত করা হয়েছে। বেগুনী কোষের ২টি ওয়াই ক্রোমোজোম এবং একটি এক্স ক্রোমোজোম কেননা, ২টি ওয়াই ক্রোমোজোম সম্পন্ন পুরুষ কোষের সাথে একটি এক্স ক্রোমোজোম সম্পন্ন নারী কোষের মিলন ঘটেছে। উক্ত পুরুষ কোষে মিয়োসিসের দ্বিতীয় ধাপে (MII) ক্রোমোজোম আলাদাকরণ প্রক্রিয়ায় সমস্যার হেতু দুইটি ওয়াই ক্রোমোজোম অবস্থান করছে।

৪৭,এক্সওয়াইওয়াই বংশানুক্রমে ব্যক্তির মাঝে আসে না। সাধারণত শুক্রাণু কোষের গঠনের সময় আকস্মিকভাবে সংঘটিত ঘটনার ফলাফল এই সিনড্রোম। মিয়োসিস ২ বা এনাফেজ দশায় ক্রোমোজোমের আলাদাকরণের সময় সংঘটিত হওয়া নন-ডিসজাংশনের দরূণ শুক্রাণুর কোষে একটি অতিরিক্ত ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে। যদি এই ভিন্ন ধরনার শুক্রাণু শিশুর জিনেটিক গঠনে অবদান রাখে, তবে সেই শিশুর শরীরে কোষে একটি অতিরিক্ত ওয়াই ক্রোমোজোম পাওয়া যায়।

ইতিহাস

১৯৫৬ সালের এপ্রিলে সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষজিনতত্ত্ববিদ জো হিন তিজো এবং এলবার্ট লেভান সর্বপ্রথম ডিপ্লয়েড মানব কোষে ৪৬টির বদলে ৪৮টি ক্রোমোজোমের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন।

সমাজ ও সংস্কৃতি

কিছু জিনতত্ত্ববিদেরা এই অবস্থাকে "সিনড্রোম" তালিকার অন্তর্ভূক্তি করার ব্যাপারে সহমত নয়। কেননা,অনেক মানুষ এরকম ক্যারইয়োটাইপ থাকা স্বত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করেন।


Новое сообщение