Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.
গিরা প্রতিস্থাপন

গিরা প্রতিস্থাপন

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
গিরা প্রতিস্থাপন
Hip replacement Image 3684-PH.jpg
নিতম্বের গিরা প্রতিস্থাপন

প্রতিস্থাপন আর্থ্রোপ্লাস্টি বা গিরা প্রতিস্থাপন (গ্রীক আর্থ্রন (গিরা, অঙ্গ, সন্ধি) + প্লাসেইন (গঠন করা, ছাঁচ তৈরি করা, বানানো)) বা জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি একটি অর্থোপেডিক (অস্থির চিকিৎসা-সংক্রান্ত) শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি যাতে একটি আর্থ্রাইটিক (বাতব্যাধিগ্রস্থ) বা অকার্যকর অস্থিসন্ধি বা গিরা (joint) অপারেশনের মাধ্যমে কৃত্রিম গিরা দ্বারা পাল্টানো হয়। কম ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা দ্বারা যখন অস্থিসন্ধিতে গুরুতর ব্যথা বা অকার্যকর অবস্থার উন্নতি হয় না তখন গিরা প্রতিস্থাপনকে চিকিৎসা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি আর্থ্রোপ্লাস্টির একটি রূপ, এবং প্রায়ই অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসিসহ বিভিন্ন গিরার রোগের চিকিৎসা হিসেবে করা হয়।

হাঁটু এবং নিতম্ব প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে গিরা প্রতিস্থাপন সার্জারি দিনদিন সাধারণ হয়ে উঠছে। ২০০৯ সালে প্রায় ৭৭৩,০০০ আমেরিকান নিতম্ব বা হাঁটু প্রতিস্থাপন করেছিল।

পটভূমি

নিউ ইয়র্ক সিটি ভিত্তিক শল্যচিকিত্সক স্টিফেন এস হুডাক ১৯৩৯ সালে প্রাণিদের উপর কৃত্রিম অস্থিসন্ধির মাধ্যমে পরীক্ষা করা শুরু করেন। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি নিউ ইয়র্ক অর্থোপেডিক হাসপাতালে ছিলেন (কলাম্বিয়া প্রিসবাইটারিয়ান মেডিকেল সেন্টারের অংশ) এবং নৌ গবেষণা সংস্থার অর্থায়নে মানুষের মধ্যে নিতম্বের অস্থিসন্ধিসমূহ প্রতিস্থাপন করছিলেন।

গিরা প্রতিস্থাপনের (আর্থ্রোপ্লাস্টির) দুটি পুরনো কিন্তু জনপ্রিয় রূপ হলঃ (১) ইন্টারপজিশনাল আর্থ্রোপ্লাস্টি , এক্ষেত্রে প্রদাহজনিত পৃষ্ঠকে আলাদা করে রাখতে গিরার সাথে সাথে ত্বক, পেশী বা টেন্ডনের মত অন্যান্য কিছু টিস্যুর প্রতিস্থাপন করা হয় এবং (২) এক্সিজনাল আর্থ্রোপ্লাস্টি যেখানে গিরার পৃষ্ঠ এবং হাড়কে বের করে আনা হয় এবং দাগ সৃষ্টিকারী টিস্যুকে ক্ষতস্থান পূরণ করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। আর্থ্রোপ্লাস্টির অন্যান্য প্রকরণের মধ্যে রয়েছে

  • রিসেকশনাল আর্থ্রোপ্লাস্টি
  • রিসার্ফেসিং আর্থ্রোপ্লাস্টি
  • মোল্ড বা ছাঁচ আর্থ্রোপ্লাস্টি
  • কাপ আর্থ্রোপ্লাস্টি এবং
  • সিলিকন রিপ্লেসমেন্ট আর্থ্রোপ্লাস্টি

অস্থিসন্ধি পুনরুদ্ধার বা কিছুটা পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া অস্টিওটমিও, আর্থ্রোপ্লাস্টিরই আরেকটি রূপ।

সাম্প্রতিক দশগুলোতে আর্থ্রোপ্লাস্টির সর্বাধিক সফল এবং সাধারণ রূপ হল একটি নকল অস্থির সাথে গিরা বা গিরার পৃষ্ঠের প্রতিস্থাপন। উদাহরণস্বরূপ, একটি নিতম্বের অস্থিসন্ধি যেটি অস্টিওআরথ্রাইটিসে আক্রান্ত একটি নকল নিতম্ব দ্বারা পুরোপুরি (টোটাল হিপ আর্থ্রোপ্লাস্টি) প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। এই পদ্ধতি অ্যাসিটাবুলাম (হিপ সকেট) এবং ফিমারের মাথা ও ঘাড় উভয়ই প্রতিস্থাপন করা হয়। এই অস্ত্রোপচারটি করার উদ্দেশ্যটি হল ব্যথা উপশম করা, নড়ানোর ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা এবং হাঁটার ক্ষমতা উন্নত করা, যা পেশিশক্তির উন্নতি ঘটায়।

অস্থিসন্ধিসমূহ

কাঁধ

কাঁধ প্রতিস্থাপনের জন্য, কাঁধের জয়েন্টে পৌঁছানোর জন্য কয়েকটি বড় বড় পথ রয়েছে। প্রথমটি হল ডেলটোপেক্টোরাল পদ্ধতি, যা ডেল্টয়েডকে বাঁচায়, তবে সুপরাস্পিনেটাস কেটে ফেলতে হবে। দ্বিতীয়টি হল ট্রান্সডেল্টোয়েড পদ্ধতি, যাতে গ্লেনয়েডে সরাসরি প্রবেশ করে করা হয়। তবে এই পদ্ধতির সময় ডেল্টয়েডকে সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। শল্যচিকিত্সকের পছন্দ অনুযায়ী উভয় কৌশলই ব্যবহৃত হয়।

নিতম্ব

নিতম্ব (হিপ) প্রতিস্থাপন সম্পূর্ণ নিতম্ব প্রতিস্থাপন বা হেমি (অর্ধেক) প্রতিস্থাপন হিসেবে সম্পাদন করা যেতে পারে। ১৯৭০ সালের দিকে যুক্তরাজ্যে স্যার জন চার্নলী সম্পূর্ণ হিপ (Total Hip) পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। সম্পূর্ণ হিপ প্রতিস্থাপনে অ্যাসিটাবুলাম এবং ফিমোরাল হেড উভয়কে প্রতিস্থাপন করা হয়, কিন্তু হেমি আরথ্রোপ্লাস্টিতে সাধারণত কেবল ফিমোরাল হেডকে প্রতিস্থাপন করা হয়। হিপ প্রতিস্থাপন বর্তমানে সর্বাধিক প্রচলিত সাধারণ অর্থোপেডিক অপারেশন, যদিও বিভিন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে সন্তুষ্টি একেকরকম। এক্ষেত্রে রোগীবিশেষে সন্তুষ্টি স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে।

তবে শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত সহায়ক সরঞ্জামগুলির ব্যবহার অপারেশন পরবর্তী তত্ত্বাবধানে ব্যবহৃত করা যাবে কি না তা সুষ্পষ্ট নয়।

হাঁটু

হাঁটু প্রতিস্থাপন।

১৯৭৩ সালে আমেরিকায় ইনসাল ও তার সঙ্গীরা সম্পূর্ণ হাটু (Total Knee) প্রতিস্থাপন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। হাঁটুর প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে হাঁটুর সামনের অংশ সম্পূর্ণভাবে অনাবৃত থাকা জরুরি, যার সাথে প্যাটেলা থেকে কোয়াড্রিসেপস পেশীর অংশ (ভাস্টাস মিডিয়ালিস) বিচ্ছিন্ন থাকাও প্রয়োজন। প্যাটেলাকে সন্ধির এক দিকে প্রতিস্থাপন করা হয়, যার ফলে ফিমারের ডিস্টাল (দূরবর্তী) প্রান্ত এবং টিবিয়ার প্রক্সিমাল (নিকটবর্তী) প্রান্ত উন্মুক্ত হয়। হাড়ের লম্ব অক্ষ ভিত্তিক কর্তন নির্দেশিকা অনুযায়ী এই হাড়গুলোর প্রান্তগুলিকে সঠিক আকারে কাটা হয়। তরুণাস্থি এবং অঙ্কীয় ক্রুশিয়েট লিগামেন্টকে সরানো হয়; পৃষ্ঠীয় ক্রুশিয়েট লিগামেন্টটিও সরানো যেতে পারে তবে টিবিয়াল এবং ফিবুলার সমান্তরাল লিগামেন্টগুলি সংরক্ষণ করা হয়। তারপরে ধাতব উপাদানগুলি হাড়ের উপরে দেয়া হয় বা পলিমিথাইল মেথা ক্রাইলেট (পিএমএমএ) সিমেন্ট ব্যবহার করে বাঁধাই করা হয়। এর বিকল্প কৌশলও রয়েছে, যাতে সিমেন্ট ছাড়াই গাঁথুনিকে সংযুক্ত করে। এই সিমেন্ট-বিহীন কৌশলগুলি ছিদ্রযুক্ত ধাতব নকল অঙ্গ সংযোজনের সাথে সম্পর্কিত।

অপারেশনের পর সাধারণত মোটামুটি শল্যচিকিৎসাজনিত ব্যথা বিদ্যমান থাকে এবং এতে শারীরিক পুনর্বাসনকেও জোরালোভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। পুনর্বাসনের সময়কাল ৬ সপ্তাহ বা তার বেশি হতে পারে এবং চিকিৎসার সহায়ক যন্ত্রপাতিগুলি (যেমন হাঁটার ফ্রেম, লাঠি, ক্রাচ) ব্যবহারের মাধ্যমে রোগী সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।

গোড়ালি

গোড়ালি প্রতিস্থাপন, আর্থ্রোপ্লাস্টি প্রয়োজন এমন রোগীদের পছন্দের চিকিৎসা হয়ে উঠছে যা আর্থ্রোডিসিসের প্রচলিত ব্যবহারের বিকল্প হিসেবে গণ্য। আর্থ্রোডিসিসের সাথে গোড়ালি প্রতিস্থাপনের মূল পার্থক্য হল এক্ষেত্রে গোড়ালিকে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নড়নক্ষমতার পরিসীমা পুনরুদ্ধারে গুরুত্ব দেয়া হয়। তবে, আর্থ্রোডিসেস শ্রেষ্ঠত্ব কেবল নির্দিষ্ট কিছু বিচ্ছিন্ন গিরার ক্ষেত্রেই দেখা গেছে।

আঙ্গুল

আঙুলের গিরা প্রতিস্থাপন।

আঙুলের গিরা প্রতিস্থাপন প্রায় ৩০ মিনিটের তুলনামূলক দ্রুত প্রক্রিয়া, তবে এক্ষেত্রে অপারেশন পরবর্তী কয়েক মাস থেরাপির প্রয়োজন হয়। অপারেশন পরবর্তী থেরাপি হতে পারে হ্যান্ড স্প্লিন্ট (বন্ধফলক) পরা বা কর্মক্ষমতা এবং ব্যথার উন্নতির জন্য ব্যায়াম করা।

কার্যপ্রণালী সময়কাল

বড় অপারেশন বা সার্জারি করার আগে একটি সম্পূর্ণ প্রাক-অনুভূতিনাশক (প্রি-অ্যানেস্থিটিক) কাজ সম্পন্ন করা আবশ্যক। বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে এটিতে সাধারণত ইসিজি, প্রস্রাব পরীক্ষা, রক্তের চিকিৎসা এবং রক্ত পরীক্ষাতেও করা হয়ে থাকে। রক্তের ক্রস ম্যাচেও এটি নিয়মিত কার্যকর্মের সূচি, যেহেতু বেশিরভাগ রোগীর রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়। প্রি-অপারেটিভ তথা অপারেশন পূর্ববর্তী পরিকল্পনার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ জয়েন্টের সঠিক এক্সরে, সঠিক গিরা নির্বাচন এবং এক্সরে চিত্রগুলির সাথে আকারের সামঞ্জস্য (এই প্রক্রিয়াটি টেম্প্লেটিং হিসাবেও পরিচিত) প্রয়োজন।

কয়েক দিনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে বেশ কয়েক সপ্তাহ সুরক্ষিত কার্যক্রম, নিরাময় ও পুনর্বাসন হয়। এরপরে বেশ কয়েক মাস ধরে ধীরে ধীরে শক্তি ও সহিষ্ণুতার উন্নতি হতে পারে।

রোগীর প্রথম দিকে জয়েন্ট একত্রিত হওয়াকে ভেনাস থ্রোম্বোয়েম্বোলিজম এবং নিউমোনিয়ার মতো জটিলতার সম্ভাবনা এড়ানোর মূল লক্ষণ বলে মনে করা হয়। আধুনিক অপারেশনের ক্ষেত্রে রোগীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একত্রিত করার চেষ্টা এবং যখন সহ্যক্ষমতা হয় তখন হাঁটার উপকরণগুলি দিয়ে চলাচলের জন্য বলা হয়। অপারেশনকৃত জয়েন্ট এবং রোগীর অপারেশন পূর্ববর্তী অবস্থার উপর নির্ভর করে হাসপাতালে ভর্তির সময় ১ দিন থেকে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সময় গড়ে ৪-৭ দিন হয়ে থাকে।

গিরা প্রতিস্থাপনের অপারেশনের পরে রোগীদের গিরার ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে ফিজিওথেরাপি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রাথমিকভাবে রুটিনমাফিক ব্যায়ামের প্রয়োজন, কারণ রোগীদের পেশীগুলি অস্ত্রোপচারের পরে নিরাময় হতে সময় নেয়; জয়েন্টগুলির নড়াচড়ার পরিসীমা অনুযায়ী ব্যায়ামগুলি কঠোর হওয়া উচিত নয়। পরে যখন পেশীগুলি নিরাময় হয়, গিরা শক্তিশালীকরণ এবং সম্পূর্ণ ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য়ে ব্যায়ামের সংখ্যা ও পরিধি বাড়ানো হয়।

উপকরণ

গিরা প্রতিস্থাপনে সাধারণভাবে ব্যবহৃত কিছু সিরামিক পদার্থ হলঃ অ্যালুমিনা (AL2O3), জিরকোনিয়া (ZrO2), সিলিকা (SiO2), হাইড্রোক্সিপ্যাটাইট (Ca10(PO4)6(OH)2), টাইটানিয়াম নাইট্রাইড (TiN), সিলিকন নাইট্রাইড (Si3 N4)। টাইটানিয়াম এবং টাইটানিয়াম কার্বাইডের সংমিশ্রণ খুবই শক্ত সিরামিক উপাদান যা প্রায়শই আর্থ্রোপ্লাস্টিগুলির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ এটি যেমন দৃঢ়তা এবং শক্তির মাত্রাকে প্রভাবিত করে, তেমনি মেডিকেল ইমেজিংয়ের সাথেও এটির সামঞ্জস্যতাও রয়েছে।

টাইটানিয়াম কার্বাইড, পলিক্রিস্টালাইন ডায়মন্ড সারফেস (পিসিডি) এর সাথে মিলিতভাবে ব্যবহার করা সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে। পিসিডি হল একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সিরামিক যা কৃত্রিম জয়েন্টগুলির জন্য একটি উন্নত, শক্তিশালী, দীর্ঘ-পরিসীমা বিশিষ্ট উপাদান সরবরাহ করে। পলিক্রিস্টালাইন ডায়মন্ট কমপ্যাক্ট (পিডিসি) থেকে উচ্চ চাপ এবং তাপমাত্রায় পরিচালিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিসিডি গঠিত হয়। কিউবিক বোরন নাইট্রাইড, সিলিকন নাইট্রাইড এবং অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের মতো অন্যান্য সিরামিক উপকরণগুলির সাথে তুলনা করা হলে, পিসিডিতে উচ্চ মাত্রার কাঠিন্য এবং তুলনামূলকভাবে কম ঘর্ষণসহ আরও অনেক ভাল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কৃত্রিম জয়েন্টগুলির প্রয়োগের জন্য এটি সাধারণত নির্দিষ্ট ধাতু এবং ধাতব মিশ্রণ যেমনঃ কোবাল্ট, ক্রোম, টাইটানিয়াম, ভ্যানাডিয়াম, স্টেইনলেস স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, নিকেল, হাফনিয়াম, সিলিকন, কোবাল্ট-ক্রোম, টাংস্টেন, জিরকোনিয়াম ইত্যাদির সাথে একত্রে মিলিত করা হয়। এর অর্থ হল নিকেল অ্যালার্জি বা অন্যান্য ধাতুর সংবেদনশীলতাযুক্ত লোকেরা ডিভাইসে থাকা রাসায়নিকগুলির কারণে জটিলতার ঝুঁকিতে রয়েছে।

হাঁটুর প্রতিস্থাপনে ব্যবহৃত সিরামিকের দুটি অংশ রয়েছে। সেগুলো একই সিরামিক বা আলাদা আলাদা সিরামিক দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে। যদি সেগুলি একই সিরামিক দিয়ে তৈরি হয় তবে তাদের ওজনের অনুপাতের ভিন্নতা থাকে। এই সিরামিক অংশগুলি এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় যাতে কণাগুলো গিরার মুখ বন্ধ করে দেয়। কণাগুলো সাধারণত সৌম্য হয় এবং তীক্ষ্ণ হয় না। এগুলি এমনভাবেই তৈরি করা হয় যাতে যদি কোনও দুটি সিরামিক উপাদানগুলির মধ্যে কোনও ঠিকরা ভেঙে যায় তবে তারা যেন অপারেশনকৃত গিরার একটি চেক-আপ বা পরিদর্শনকালে এক্স-রে এর মাধ্যমে লক্ষণীয় হয়। হিপ জয়েন্টের মতো গিরাগুলোতে ইমপ্লান্ট বলটি সিরামিক দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে এবং সিরামিকের স্তরগুলোর মধ্যে মধ্যে এবং যেখানে এটি গিরার বাকি অংশগুলির সাথে সংযুক্ত হয়, সেখানে সিরামিকটি ধরে রাখতে সহায়তা করার জন্য সাধারণত একটি ঝিল্লি থাকে। ঝিল্লিটি ফাটল প্রতিরোধে সহায়তা করে, তবে যদি ফাটলগুলি দুটি পয়েন্টে ঘটে অর্থাৎ যদি পৃথক টুকরো তৈরি করে তবে ঝিল্লিটি অংশগুলোকে ধরে রাখতে পারে যাতে গিরাটি স্থানচ্যুত হয়ে আরও আঘাত সৃষ্টি করতে না পারে। যেহেতু এই ধরনের ফাটল এবং বিভাজন দুর্ঘটনাবশতঃ ঘটতেই পারে, তাই ঝিল্লির প্রধান উপাদান হল একটি বায়ো-সামঞ্জস্যপূর্ণ পলিমার যা উচ্চ ভাঙ্গন বা ফাটল প্রতিরোধী এবং এর যথেষ্ট শক্ততা রয়েছে।

ঝুঁকি এবং জটিলতা

চিকিৎসা ঝুঁকি

অপারেশনের ধকলের ফলে চিকিৎসার বিভিন্ন ধাপে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

আন্তঃ-অপারেটিভ ঝুঁকি (অপারেশনের সময়)

  • উপাদানগুলির ভুলভাল-অবস্থান
    • সংক্ষেপন;
    • অস্থায়িত্ব / চ্যুতি;
    • নড়াচড়ার পরিসীমা হ্রাস;
  • সংলগ্ন হাড়ের ফাটল;
  • স্নায়ুর ক্ষতি;
  • রক্তনালীর ক্ষতি।

তাৎক্ষণিক ঝুঁকি

মধ্যমেয়াদী ঝুঁকি

দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি

  • উপাদানগুলির শিথিলতাঃ হাড় এবং উপাদানগুলির মধ্যে বন্ধন বা সিমেন্ট ভেঙে যেতে পারে অথবা ক্লান্তি, অবসাদ হতে পারে। ফলস্বরূপ, উপাদানটি হাড়ের ভিতরে চলে যায়, ব্যথা করে। উপাদানের ধ্বংসাবশেষের টুকরা হাড়ের শোষণের সাথে প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে যার ফলে এই শিথিলতা হতে পারে। এই ঘটনাটি অস্টিওলাইসিস নামে পরিচিত।
  • পলিথিলিন সাইনোভাইটিস - ওজন বহনকারী পোশাক পরিধান: নিতম্ব, যা প্রতি বছর ০.৩ মিমি হারে বাড়ে, এর মতো ওজন বহনকারী অস্থিসন্ধি গুলিতে পলিইথিলিন পরিধান করা হয়। এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে কেননা বহনকারী পৃষ্ঠতল প্রায়শই ১০ মিমি এর চেয়ে কম পুরু হয় এবং পাতলা হওয়ার সাথে সাথে এটি বিকৃত হতে পারে। এটি পরিধানের ফলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, কারণ সাইনোভিয়াল ফ্লুইডে পলিইথিলিনের কণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।

এই বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। অর্থোপেডিক-সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ গবেষণা প্রচেষ্টাই গিরা প্রতিস্থাপন অধ্যয়ন ও উন্নতির জন্য পরিচালিত হয়। প্রধান প্রধান বিতর্কগুলি হলঃ

  • সেরা বা সবচেয়ে উপযুক্ত ভারবহন পৃষ্ঠ হল - ধাতু/পলিথিন, ধাতু-ধাতু, সিরামিক-সিরামিক
  • উপাদানগুলির বিন্যাস স্থায়ীকরণ সিমেন্টেড বনাম সিমেন্ট ছাড়া
  • ন্যূনতম ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার

বাংলাদেশে গিরা প্রতিস্থাপন

ঢাকায় আশির দশকের দিকে ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক ব্যক্তিগত উদ‌্যােগে (সম্পূর্ণ হিপ) এবং নববই দশকের শুরুর দিকে চেন্নাই থেকে আসা ডা. এল প্রকাশ কর্তৃক প্রাইভেট ক্লিনিকে কিছু গিরা প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়। ১৯৯৪ সালে বিদেশ হতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডা. এম.কে.আই কাইয়ুম চৌধুরীর যোগদান করার পর থেকে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে প্রথম অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ চালু হয়। বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সর্বপ্রথম বারডেমই গিরা প্রতিস্থাপন অপারেশন চালু করে। ডা. চৌধুরীকেই সম্পূর্ণ হাটু প্রতিস্থাপনে বাংলাদেশী পাইওনিয়ার বলা হয়। উক্ত অপারেশনে একটি সফল সিরিজ সম্পাদন করার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ বা এস. এস. বি কর্তৃক তাঁকে প্রফেসর মোহাম্মদ আসির উদ্দিন স্মৃতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। পরবর্তীকালে অন্যান্য হাসপাতালসমূহতেও গিরা প্রতিস্থাপন প্রযুক্তি চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়। যন্ত্রপাতি ও কৃত্রিম গিরার উচ্চমূল্য, নতুন সার্জনদের অপারেশনে দক্ষতা অর্জনে সময়সাপেক্ষতা, নষ্ট হয়ে যাওয়া গিরা জীবনহানিকর নয় - জনমনে এরূপ বিশ্বাস এবং অন্যান্য নানাবিধ কারণে বাংলাদেশে জয়েন্ট প্রতিস্থাপন শল্যচিকিৎসা ধীর ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে এবং সমাজে এর গুরুত্ব ও সুফল অন্যান্য দেশের মত ক্রমশ অনুধাবিত হচ্ছে।

নকল অঙ্গ প্রতিস্থাপন

সংক্রমণ বা নকল অঙ্গে ফাটলের মতো জটিলতার কারণে নকল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিস্থাপনটি একটি একক অস্ত্রোপচার সময়ের মধ্যেই করা যেতে পারে। বিকল্প পদ্ধতিতে পূর্ববর্তী কৃত্রিম উপাদানগুলি অপসারণের জন্য প্রাথমিক অপারেশন করা যেতে পারে এবং পরবর্তীতে পৃথক যেকোনো নতুন অপারেশনের নকল অঙ্গ স্থাপন করা হয়। এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে, বিশেষত যখন সংক্রমণের ফলে গিরা জটিলাকার ধারণ করে, তখন একটি স্পেসার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি স্থায়ীভাবে কোনো অঙ্গ স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে গিরা স্থায়িত্ব এবং গতিশীলতা সরবরাহ করার জন্য শক্ত ভরসম্পন্ন একটি বস্তু। এটির মধ্যে যেকোন সংক্রমণের চিকিৎসা করতে অ্যান্টিবায়োটিক থাকতে পারে।

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение