Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

জোরপূর্বক বিবাহ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
বিংশ শতকের মোল্লা নাসিরুদ্দীন সাপ্তাহিকে আজারবাইজানের জোরপূর্বক বিবাহের সমালোচনা।
অসম বিবাহ, রাশিয়ান চিত্রশিল্পী পুকিরেভ কর্তৃক অঙ্কিত। আয়োজনকৃত বিবাহের ছবি দেখানো হয়েছে এখানে, যেখানে একজন তরুণীকে জোরপূর্বক বিবাহ দেওয়া হচ্ছে।

জোরপূর্বক বিবাহ হল কোন ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বা সম্মতির বিরুদ্ধে বিবাহ দেয়া। জোরপূর্বক বিবাহ আয়োজিত বিবাহ থেকে আলাদা, কারণ আয়োজিত বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে উভয়েই তাদের পিতামাতা বা অন্য ব্যক্তি (যেমন ঘটক) কর্তৃক পছন্দকৃত পাত্রপাত্রীর সাথে বিবাহের ক্ষেত্রে সম্মতি প্রদান করে। জোরপূর্বক বিবাহের ক্ষেত্রে প্রায়ই জোর-জবরদস্তি, শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহের মাধ্যমে, বিবাহ করতে বাধ্য করা হয়। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকায় এখনো জোরপূর্বক বিবাহ প্রচলিত আছে। কিছু পণ্ডিতেরা "জোরপূর্বক বিবাহ" শব্দটি ব্যবহার করার বিপক্ষে। কারণ শব্দটির মাঝে সম্মতিজ্ঞাপক বৈধ বিবাহের শব্দসমূহ (যেমন স্বামী/স্ত্রী) জড়িত অথচ যার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ বিপরীত। অবশ্য কিছু বিকল্প শব্দও আছে, যেমন, জোরপূর্বক দাম্পত্য সম্পর্ক এবং দাম্পত্য দাসত্ব।

জাতিসংঘ জোরপূর্বক বিবাহকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে। কারণ এটি ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যের পরিপন্থী। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে কোন নারী কর্তৃক তার জীবনসঙ্গী নির্বাচন ও স্বাধীনভাবে বিবাহ করার অধিকার তার জীবন ও আত্মসম্মানের ভিত্তি এবং মানুষ হিসেবে সমতার প্রকাশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। রোমান ক্যাথলিক চার্চ জোরপূর্বক বিবাহ রদ করা উচিত বলে মনে করে, কারণ বিবাহ তখনই বৈধ হয় যখন নারী-পুরুষ দুপক্ষই স্বাধীনভাবে তাদের সম্মতি প্রদান করে। দাসত্ব বিলোপের জন্য আহুত সম্পূরক সম্মেলনেও সেই বিবাহকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে যেখানে পিতামাতার, পরিবারের এবং অন্যান্যদের ইচ্ছার ব্যতিরেকে কোন মেয়ের তার নিজের বিয়ের ক্ষেত্রে না-বলার অধিকার নেই এবং এটা প্রতিরোধ করার জন্যই বিবাহের ক্ষেত্রে নুন্যতম বয়স নির্ধারণ করা দরকার।

১৯৬৯ সালে সিয়েরা লিওনের আপিল বিভাগের বিশেষ আদালত যুদ্ধের সময় জোরপূর্বক বিবাহের জন্য নারীদের অপহরণ এবং আটকে রাখাকে একটি নতুন মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে। সিয়েরা লিওনের বিশেষ আদালতের বিচারিক চেম্বার চার্লস টেইলরের সিদ্ধান্তে 'জোরপূর্বক বিবাহ' শব্দটি বাদ দিয়ে এটিকে বরং যুদ্ধের সময় 'দাম্পত্য দাসত্ব' হিসেবে বর্ণনা করার কথা বলে (২০১২)।

২০১৩ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনে শিশু, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং জোরপূর্বক বিবাহের বিরুদ্ধে প্রথম সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তে শিশু, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং জোরপূর্বক বিবাহ মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় যেহেতু এর ফলে একজন ব্যক্তির যেকোন প্রকার বলপ্রয়োগের বাইরে মুক্তভাবে বেঁচে থাকার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় এবং এর ফলে সে বিভিন্ন মানবাধিকার যেমন, শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার বিশেষ করে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য থেকে বঞ্চিত হয়। এই সিদ্ধান্তে আরও বলা হয় যে, ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন সূচীর আলোচনায় শিশু, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং জোরপূর্বক বিবাহ বিলোপের বিষয়টি স্থান পাবে।

বাল্য বিবাহ, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং জোরপূর্বক বিবাহ অথবা নারীর যৌন অঙ্গচ্ছেদ প্রতিরোধের জন্য ব্যাপকভিত্তিক এবং সমন্বিত যৌন শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

টেমপ্লেট:আরো পড়ুন ১৮ শতকের আগে পর্যন্ত দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে বিবাহ আয়োজিত হত। সংস্কৃতিগত কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণত বাবার নিকট থেকে বরের নিকট কনের নির্ভরশীলতা আইনগতভাবে পরিবর্তিত হত। ১৯ ও ২০ এর দশকে নারী স্বাধীনতা বিবাহ আইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনে বিশেষত সম্পত্তি ও অর্থনৈতিক বিষয়ে। ২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে অনেক পশ্চিমা দেশ তাদের পারিবারিক আইনের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে আইনগত সমতা নিশ্চিত করে। ১৯৭৫-১৯৭৯ সালের মাঝে বিভিন্ন দেশ যেমন, ইতালি, স্পেন, অস্ট্রিয়া, পশ্চিম জার্মানি এবং পর্তুগালে বিবাহ আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ১৯৭৮ সালে ইউরোপীয় কাউন্সিলে দেওয়ানী আইন পাশ হয় যার (৭৮) ৩৭ অনুচ্ছেদে স্বামী-স্ত্রীর সমতার কথা বলা হয়। ১৯৮০ এর দশকে শেষ ইউরোপিয়ান দেশ হিসেবে সুইজারল্যান্ড, গ্রীস, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্সে বিবাহের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

আয়োজিত বিবাহ আর জোরপূর্বক বিবাহ এক নয়; আয়োজিত বিবাহের ক্ষেত্রে কনে বিবাহের প্রস্তাবটি বাতিল করে দিতে পারে কিন্তু জোরপূর্বক বিবাহের ক্ষেত্রে তেমনটি করার কোন উপায় থাকে না। তবে আয়োজিত বিবাহ আর জোরপূর্বক বিবাহের মধ্যকার তফাৎ নিরূপণ করা বেশ কঠিন কারণ দুই ক্ষেত্রেই বিবাহের ক্ষেত্রে মত প্রদান এবং পিতামাতার কথা মেনে নেয়ার পারিবারিক এবং সামাজিক চাপ থাকে।

ইউরোপে ১৮ শতকের শেষদিকে এবং ১৯ শতকের প্রথমদিকে 'রোমান্টিসিজম' নামক সাহিত্যিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের ফলে ভালোবেসে বিবাহ করার এক নতুন এবং প্রগতিশীল ধারণার প্রচলন হয় যেটা সমাজে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। ১৯ শতকে ইউরোপ জুড়ে বিবাহের রীতির মাঝে পার্থক্য দেয়া যায়, কিন্তু উচ্চশ্রেণীর মাঝে আয়োজিত বিবাহই বেশি প্রচলিত ছিল। ২০ শতকের প্রথমদিকের আগে রাশিয়াতে আয়োজিত বিবাহই প্রথা ছিল এবং যার অধিকাংশই ছিল অন্তর্বিবাহ। ঐতিহাসিক কাল থেকে বাল্য বিবাহ প্রচলিত থাকলেও ১৯ ও ২০ শতকে এসে তা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। বাল্য বিবাহকে প্রায়শই জোরপূর্বক বিবাহ বলে মনে করা হয় কারণ শিশুরা বিশেষত ছোট শিশুরা তাদের পরিবারের প্রভাবের ফলে বিবাহ করতে ইচ্ছুক না অনিচ্ছুক সে বিষয়ে পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

গত কয়েক দশক যাবত পশ্চিমা দেশগুলিতে বিবাহের ধরন বিশেষ করে, বিবাহ পরবর্তী সন্তান জন্মদানের গুরুত্ব ও বিবাহ বিচ্ছেদের সহজসাধ্যতা ব্যাপকভাবে বদলে গেছে যার ফলে বিবাহ করার জন্য কম সামাজিক ও পারিবারিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং স্বামী/ স্ত্রী পছন্দ করার জন্য যথেষ্ট স্বাধীনতা প্রদান করা হচ্ছে।

ঐতিহাসিকভাবে, কোন বন্দী (দাস বা যুদ্ধবন্দী)-কে মূল গোষ্ঠীর সাথে একীভূত করার জন্য এবং তার নিয়তিকে মেনে নেয়ার জন্য জোরপূর্বক বিবাহের প্রচলন ছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইংরেজ কামার জন আর জিউইটের কথা, যিনি ১৮০২-১৮০৫ পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিম উপকূলে নোটকা জাতির সাথে ৩ বছর বন্দী হিসেবে কাটিয়েছেন। তাকে বিবাহ করার আদেশ দেয়া হয়েছিল কারণ প্রধান ব্যক্তিদের কাউন্সিল মনে করেছিল স্ত্রী এবং পরিবার তাকে আজীবন বন্দীকারীর সাথে বাস করার জন্য মধ্যস্থতা করবে। জিউইটকে তার নিজের জন্য জোরপূর্বক বিবাহ এবং তার ও তার বাবার (আর একজন বন্দী) জন্য মৃত্যুদন্ড এই দুটির মধ্য থেকে যেকোন একটি বিষয় বাছাই করে নিতে বলা হয়েছিল। "একদিকে মৃত্যু আর অন্যদিকে বিবাহ- এই জাতীয় দুঃখজনক চরম পরিস্থিতির মাঝে আমাকে অপেক্ষাকৃত কম খারাপ জিনিসটি বেছে নিতে হয়েছিল।"

একনায়ক সরকার জনসংখ্যার মাত্রা পূরণের জন্যও জোরপূর্বক বিবাহের ব্যবহার করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিপ্লব চলমান রাখার জন্য কম্বোডিয়ায় খেমারুজ শাসনামালে জনগণকে বিবাহ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

These marriage ceremonies consisted of no fewer than three couples and could be as large as 160 couples. Generally, the village chief or a senior leader of the community would approach both parties and inform them that they were to be married and the time and place the marriage would occur. Often, the marriage ceremony would be the first time the future spouses would meet. Parents and other family members were not allowed to participate in selecting the spouse or to attend the marriage ceremony. The Khmer Rouge maintained that parental authority was unnecessary because it “w[as] to be everyone’s ‘mother and father.’”

বিবাহ করার জন্য বা দাস হিসেবে বিশেষ করে যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অধিক সংখ্যক নারীদের অপহরণ করাকে ল্যাটিন ভাষায় Raptio বলা হয়। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিষয়টি প্রচলিত।

২১ শতকে এসে জোরপূর্বক বিবাহ বিষয়টি ইউরোপিয়ান দেশসমূহের নজরে এসেছে, এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে অভিবাসনের ক্ষেত্রে বিষয়টি বেশ প্রচলিত।ইস্তাম্বুল কনভেনশনে জোরপূর্বক বিবাহকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। (৩৭তম অনুচ্ছেদ দেখুন)

দাসত্ব বিলোপের জন্য আহুত সম্পূরক সম্মেলন

১৯৫৬ সালের দাসত্ব, দাস ব্যবসা এবং দাসত্বসুলভ আচার-আচরণ-প্রথা বিলোপের জন্য আহুত সম্পূরক সম্মেলনে দাসত্বসুলভ আচার-আচরণ-প্রথা বলতে নির্দেশ করা হয়েছে

গ) যেকোন আচার-আচরণ-প্রথা যেখানে:

i) অস্বীকার করার অধিকার ছিল না এমন যেকোন মহিলা যাকে বিবাহ দেয়ার বিনিময়ে তার পিতামাতা, অভিভাবক, পরিবার অথবা যেকোন ব্যক্তি বা দলকে টাকা বা অন্যকোন বস্তু দেয়ার প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে; বা

ii) যদি অর্থ বা অন্য কিছুর বিনিময়ে কোন মহিলার স্বামী, তার পরিবার বা তার জ্ঞাতিগোষ্ঠী তাকে অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করতে পারে; বা

III) স্বামীর মৃত্যুর পর যদি কোন মহিলা উত্তরাধিকারসুত্রে অন্য কারোর অধিকারে যায়;

ইস্তাম্বুল কনভেনশন

ইস্তাম্বুল কনভেনশন নামে পরিচিত নারী নির্যাতন ও পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ শীর্ষক ইউরোপ কনভেনশন কাউন্সিলে বলা হয়েছে:

অনুচ্ছেদ ৩২ - জোরপূর্বক বিবাহের দেওয়ানি ফলাফল

উভয় পক্ষই প্রয়োজনীয় আইনগত বা অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যাতে জোরপূর্বক সম্পাদিত বিবাহ এমনভাবে বাতিল করা যায়, রদ করা যায় অথবা লুপ্ত করা যায় যাতে ঘটনার শিকার ব্যক্তি কোনরূপ অন্যায্য আর্থিক বা প্রশাসনিক ঝামেলার শিকার না হয়।

অনুচ্ছেদ ৩৭ - জোরপূর্বক বিবাহ

১। ইচ্ছাকৃত কোন আচরণের মাধ্যমে যদি কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা শিশুকে বিবাহ দেয়ার জন্য জোরাজুরি করা হয় তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষই প্রয়োজনীয় আইনগত বা অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

২। ইচ্ছাকৃতভাবে যদি কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা শিশুকে তার বসবাসের স্থান ছাড়া কোন দলের বা রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট এলাকায় যাওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা হয় যার ফলে সেই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা শিশুকে বিবাহ করার জন্য জোরাজুরি করা যাবে তবে তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

জোরপূর্বক বিবাহের কারণসমূহ

জোরপূর্বক বিবাহের অনেক কারণ আছে যার ফলে কোন একটা সংস্কৃতি জোরপূর্বক বিবাহকে সমর্থন ও উৎসাহিত করে। জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটনের কারণসমূহের মাঝে আছে যৌথ পরিবারের যোগাযোগ শক্তিশালী করা; অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ এবং যৌনতা নিয়ন্ত্রণ করা; অনুপযোগী সম্পর্ক রোধ করা; প্রচলিত সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় নিয়ম-নীতি মেনে চলা এবং সংরক্ষণ করা; যৌথ পরিবারের ভিতরেই সম্পত্তি ধরে রাখা; বিবাহ বহির্ভূত গর্ভাবস্থার বিহিত করা; বিবাহ দেয়াকে পিতামাতার দায়িত্ব মনে করা; দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অর্জন করা; অভিবাসনে সহায়তা করা।

ফলাফলসমূহ

ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের ও সমাজের জন্য

বাল্য ও জোরপূর্বক বিবাহের জন্য মেয়েরা দারিদ্র্য ও ক্ষমতাহীনতার চক্রে আটকে যেতে পারে। তাদের অধিকাংশই বাজে ব্যবহার যেমন নির্যাতন, অপব্যবহার এবং জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের শিকার হতে পারে। যেসব মেয়েরা কম বয়সে বিবাহ করে তারা সাধারণত স্বামীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাদের যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যও খারাপ হয়। কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের এইচআইভি-তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। জোরপূর্বক বিবাহের শিকার ব্যক্তিরা সাধারণত নিরক্ষর হয়। বিবাহের আগেই তারা বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে।

আইনগত ফলাফলসমূহ

বিচার ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে জোরপূর্বক বিবাহ বাতিল হতেও পারে, নাও পারে। তালাক বা বিবাহ রদের মাধ্যমে ঘটনার শিকার ব্যক্তি প্রতিকার চাইতে পারে। ১৯৭৩ সালের ম্যাট্রিমনিয়াল কজেজ অ্যাক্ট অনুসারে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস-এ জোরপূর্বক বিবাহ বাতিলযোগ্য। কিছু বিচার ব্যবস্থায় জোরপূর্বক বিবাহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হয়।

নির্যাতন

জোরপূর্বক বিবাহের সাথে নির্যাতনের সংশ্লিষ্টতা আছে। বিবাহের পরেও যেমন নির্যাতন করা হয় (পারিবারিক নির্যাতন) আবার বিবাহের আগেও বিবাহ করতে অনিচ্ছুক ব্যক্তিকে জোরজবরদস্তি করে বিবাহের জন্য রাজি করানো হয় অথবা যে বিবাহ করতে অস্বীকার করে তাকে শাস্তি দেয়া হয় (সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে যে সকল নারী বা মেয়েরা বিবাহ করতে অস্বীকার করে সম্মান বজায় রাখার জন্য হত্যা করা)।

যৌতুক ও পণের সম্পর্ক

যৌতুক ও পণের মত প্রচলিত প্রথাও জোরপূর্বক বিবাহের পিছনে দায়ী। যৌতুক বলতে বিবাহের সময় বরকে কনে বা তার পরিবারের সদস্যদের প্রদত্ত অর্থ বা সম্পত্তিকে বোঝায়। আর পণ বলতে বোঝায় বিবাহের সময় কন্যা বা তার পিতামাতাকে বর বা তার পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত অর্থ বা সম্পদ বা সম্পত্তি।মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় যৌতুক প্রথা প্রচলিত। আর পণপ্রথার প্রচলন দেখা যায় সাহারা মরুভূমির নিকটবর্তী আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলিতে এবং কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু অঞ্চলে।

অপহরণের মাধ্যমে বিবাহ

অপহরণের মাধ্যমে বিবাহ, যা কনে অপহরণ নামেও অভিহিত, হচ্ছে এমন এক রীতি যেখনে একজন পুরুষ যে নারীকে বিবাহ করতে চায়, তাকে অপহরণ করে। ঐতিহাসিক সময় থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অপহরণের মাধ্যমে বিবাহ প্রচলিত, এমনকি আজও মধ্য এশিয়া, ককেশীয় অঞ্চল এবং আফ্রিকার কিছু দেশে এর প্রচলন আছে। ভাবী বর একজন মেয়ে বা মহিলাকে অপহরণ করে এবং সেকাজে বন্ধুরা তাকে সাহায্য করে। কনেকে ধর্ষণ করে ভাবী বর তার কুমারিত্ব হরণ করে যাতে সে গ্রামের মাতবরদের সাথে দর কষাকষির মাধ্যমে পণের পরিমাণ নির্ধারণ করে বিবাহকে আইনগত ভিত্তি দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাবী কনের মেনে নেয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। কনে যদি কোন কারণে তার পরিবারের কাছে ফেরত যায় তবে সেই কনেকে এবং তার পরিবারকে এলাকার লোকজন একঘরে করে রাখে কারণ তারা মনে করে কুমারীত্ব নষ্ট হওয়ার ফলে সে অপবিত্র।

জোরপূর্বক বিবাহের মাধ্যমে ঝগড়া-বিবাদ সমাধান

দুই পরিবারের মাঝে ঝগড়াবিবাদের ফলেও প্রায়ই জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটিত হয়।এক্ষেত্রে এক পরিবারের মেয়েকে অন্য পরিবারে বিবাহ দিয়ে ঝগড়াবিবাদ সমাধান করা হয়।'বানি' নামক এই প্রথা পাকিস্তানের কোন কোন অংশে প্রচলিত যেখানে পুরুষ সদস্যদের কোন অপরাধের শাস্তি স্বরুপ যুবতী মেয়েদের জোর করে বিবাহ দেয়া হয়। 'বানি' একপ্রকার জোরপূর্বক শিশু বিবাহ, যেখানে বয়স্ক উপজাতীয় 'জিরগা' নামক সভায় শাস্তির ফল নির্ধারিত হয়।

উত্তরাধিকারসুত্রে বিধবাকে বিবাহ করা

উত্তরাধিকারসুত্রে বিধবাকে বিবাহ করা যা উত্তরাধিকারসুত্রে কনে পাওয়া নামেও অভিহিত হচ্ছে এমন একটি সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক প্রথা যেখানে স্বামী মারা যাবার পর একজন বিধবাকে তার কোন আত্মীয় বিশেষত ভাইকে বিবাহ করতে হয়। আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে এটা প্রচলিত। উত্তরাধিকারসুত্রে স্ত্রী পাওয়ার এই প্রথাকে এইচ আই ভি/ এইডস বিস্তারের জন্য দায়ী করা হয়।

যুদ্ধ বিগ্রহে

যুদ্ধ বিক্ষুব্ধ অঞ্চলে মাঝে মাঝে নারী ও মেয়েদের যুদ্ধরত উভয়পক্ষের পুরুষদের বিবাহ করতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া, সিয়েরা লিওন, উগান্ডা এবং কঙ্গোতে এই ঘটনা দেখা গেছে।ঐতিহাসিকভাবে সারা বিশ্বেই এটি দেখা গেছে যেখানে যুদ্ধরত এক পক্ষ অপর পক্ষের নারীদের লুটের মাল মনে করে যাদেরকে অপহরণ করা যায়, ধর্ষণ করা যায় এবং জোরপূর্বক বিবাহ করা যায় যা যৌনদাস বানানো যায়। যেহেতু নারীদের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেহেতু তাদের শত্রু পক্ষের অস্থাবর সম্পত্তি মনে করা যুক্তিসঙ্গত এবং যেটি বিজয়ী কর্তৃক ব্যবহার ও ভোগ যথাযথ।

সঙ্গী কর্তৃক জোরপূর্বক বিবাহ

কোন অবিবাহিত দম্পত্তির ক্ষেত্রে একজন সঙ্গী নির্যাতন করে বা ভয় দেখিয়ে অন্য সঙ্গীকে জোরপূর্বক বিবাহে বাধ্য করতে পারে।

জোরপূর্বক বিবাহ এড়ান

জোরপূর্বক বিবাহের সমাপ্তি টানা পৃথিবীর অনেকে দেশে খুবই কঠিন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জোরপূর্বক বিবাহের সমাপ্তি টানার অন্যতম অন্তরায় পণ প্রথা। পণের অর্থ পরিশোধের সাথে সাথেই মেয়েকে স্বামী ও তার পরিবারের সম্পত্তি হিসেবে দেখা হয়। যদি সে ফিরে যেতে চায় তাহলে স্বামী তার প্রদত্ত পণ মেয়ের পরিবারের কাছে ফেরত চাইতে পারে। মেয়ের পরিবার প্রায়ই এই অর্থ ফেরত দিতে পারে না না চায় না।

যুক্তরাজ্যের অধিবাসীরা যদি বিদেশে জোরপূর্বক বিবাহ এড়াতে চায় তবে তাদের প্রত্যাবাসন খরচ দিতে হয় অথবা ঋণে জড়িয়ে পড়তে হয়। ফলে জোরপূর্বক বিবাহ এড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।

শরিয়া আইন

সুন্নি মুসলিমদের হাদীসগ্রন্থ সহীহ বুখারীতে বলা হয়েছে, আবূ হুরায়রা বর্ণনা করেন যে,

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্-র রসূল ! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই তার অনুমতি।

আরেকটি হাদীসে বলা হয়েছে,

খান্সা বিনতে খিযাম আল আনসারইয়্যাহ বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি অকুমারী ছিলেন তখন তার পিতা তাকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তিনি অপছন্দ করলেন। এরপর তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন।

ইসলামী মতে বিবাহের চুক্তি হয় বর ও কনের অভিভাবকদের (ওয়ালি) মধ্যে, বর ও কনের মধ্যে নয় যদি সে কুমারী হয়। তথাপি তার সম্মতি দরকার। কেবলমাত্র একজন স্বাধীন মুসলিমই কনের অভিভাবক (ওয়ালি) হতে পারে।

শটগান বিবাহ

অপরিকল্পিত গর্ভধারণের জন্য সাধারণত শটগান বিবাহ নামক জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটিত হয়। কিছু ধর্মে এবং সংস্কৃতিতে এই অবস্থায় বিবাহ নৈতিক বাধ্যকতা হয়ে দাঁড়ায়, কারণ বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক বা বিবাহ বহির্ভূত সন্তান জন্মদান পাপ, আইনত বৈধ নয় অথবা কলঙ্কজনক। কোন কোন সংস্কৃতিতে বিবাহ বহির্ভূত সন্তান জন্মদান পরিবার বা সম্প্রদায় থেকে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়, এমনকি সম্মান রক্ষার্থে খুনের মত ঘটনারও জন্ম দেয়। Giving birth outside marriage can, in some cultures, trigger extreme reactions from the family or community, including honor killings.

'শটগান বিবাহ' শব্দটি আমেরিকান কথ্যভাষা থেকে আগত যদিও এটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ব্যবহৃত। ব্যাপারটি কিছুটা নাটকীয়; একজন গর্ভবতী মহিলার বাবা শটগান নিয়ে গর্ভধারণের জন্য দায়ী পুরুষকে বিবাহ করার জন্য ভয় দেখাচ্ছে, এমনকি ঐ পুরুষ যাতে পালিয়ে না যায় তার জন্য বিবাহের বেদীতেও তাকে অনুসরণ করা হয়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিবাহের ক্ষেত্রে উগ্র বলপ্রয়োগ কখনই আইনসিদ্ধ ছিল না যদিও ১৮ ও ১৯ শতকের অনেক লোকগান ও গল্প কাহিনীতে এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এই জাতীয় বিবাহের উদ্দেশ্য ছিল গর্ভধারণের ঘটনার জন্য দায়ী পুরুষের নিকট আশ্রয় গ্রহণ, পিতামাতা উভয়েই যাতে শিশুকে প্রতিপালন করে তা নিশ্চিত করা এবং নারী যাতে বিবাহের ফলে প্রাপ্ত সহায়তা পায় তা নিশ্চিত করা। কিছু ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য ছিল মায়ের সামাজিক মর্যাদা পুনুরুদ্ধার করা।

বিবাহ বহির্ভূত সন্তান জন্মদানকে কলঙ্কজনক মনে করার ধারণা ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং এজাতীয় সন্তান জন্মদানের হার বেড়ে যাওয়ায় শটগান বিবাহ আজ আর খুব একটা দেখা যায় না।জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও গর্ভপাতের সহজলভ্যতা, অবিবাহিত মায়েদের বিভিন্ন প্রকার সহায়তা প্রদান, শিশুদেরকে প্রদত্ত বিভিন্ন প্রকার সুবিধা, পিতামাতাকে প্রদত্ত ছুটি এবং অবৈতনিক কিন্ডারগার্টেন এই জাতীয় ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দিয়েছে।

দেশ অনুযায়ী

আফ্রিকা

মাদাগাস্কার

জোরপূর্বক বিবাহ মাদাগাস্কারে প্রচলিত।মেয়েদের বিবাহ দেয়ার কাজ পরিবারই করে থাকে এবং প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে তারা সে বিবাহ করতে অস্বীকার করলে অভিশপ্ত হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বামীরা স্ত্রীদের চেয়ে অনেক বেশি বয়স্ক হয় এবং স্বামী মারা গেলে একজন বিধবা বৈষম্যের শিকার এবং সমাজ-পরিত্যক্ত হয়।

মালাউই

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর তথ্যনুসারে মালাউইতে ব্যাপকহারে বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিবাহ প্রচলিত এবং ১৮ বছরের আগেই অর্ধেক মেয়েদের বিবাহ হয়ে যায়। এখানে পণপ্রথা, যা লবোলো না পরিচিত, খুবই প্রচলিত যা জোরপূর্বক বিবাহের ক্ষেত্রে মূল ভুমিকা রাখে। উত্তরাধিকারসুত্রে বিধবাকে বিবাহ করাও এখানে প্রচলিত।বিবাহের পরে স্ত্রীদের অধিকার ও স্বাধীনতা খুবই সীমিত এবং বিবাহের পরে স্ত্রীরা স্বামীদের অধীনতা স্বীকার করে নেবে এভাবেই মেয়েদের বিয়ের আগে মানসিকভাবে তৈরি করা হয়।

মৌরিতানিয়া

মৌরিতানিয়ায় প্রধানত তিন ধরনের জোরপূর্বক বিবাহ প্রচলিত: কাজিনের সাথে জোরপূর্বক বিবাহ যা মাসলাহা নামে পরিচিত, আর্থিক লাভের জন্য কোন ধনী ব্যক্তির জোরপূর্বক বিবাহ এবং কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে জোরপূর্বক বহুবিবাহ।

নাইজার

জোরপূর্বক বহুবিবাহ এখানেও প্রচলিত। নাইজারে সারা বিশ্বের মাঝে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি; এবং সন্তান জন্মদানের হারও বেশি। যেসব মেয়েরা জোরপূর্বক বিবাহ বাতিল করার চেষ্টা করে পরিবার তাদের গ্রহণ করে; ফলে তারা জীবন ধারণের জন্য পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ে। খাদ্য সংকটের জন্য বিবাহের নামে মেয়েদের বিক্রি করে দেয়া হয়। বাল্কিসসা চাইবু নাইজারে জোরপূর্বক বিবাহের বিরুদ্ধে কাজ করা নামকরা একজন সমাজকর্মী। ১২ বছর বয়সে চাইবুকে তার মা কাজিনের সাথে বিবাহের কথা জানায় এবং ১৬ বছর বয়সে সে আদালতে যায়। চাইবুকে নারীদের একটা আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে তার পিতামাতা জোরপূর্বক বিবাহের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করলে সে বাড়ি ফিরে যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকাতে যুবতী মেয়েদের অপহরণ করা এবং পিতামাতার সম্মতিক্রমে জোরপূর্বক বিবাহ দেয়া উকুথাওয়ালা নামে অভিহিত। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রামীণ অংশে, প্রধানত ইস্টার্ন কেপ ও কোয়াজুলু-নাটাল এলাকায়, এটি প্রচলিত। অল্পবয়সী মেয়েরা, এমনকি ৮ বছর বয়সী মেয়েরাও এই ঘটনার শিকার হয়। গণমাধ্যমে বিষয়টি নেতিবাচকভাবে আলোচিত হয় এবং ২০০৯ সালে গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় উকুথাওয়ালার শিকার হয়ে প্রতি মাসে ২০ জনের বেশি মেয়ে ইস্টার্ন কেপে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে।

গাম্বিয়া

২০১৬ সালে মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসের শেষে আয়োজিত এক ভোজসভায় গাম্বিয়ান রাষ্ট্রপতি ইয়াহইয়া জাম্মেহ বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিবাহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।

এশিয়া

ক্ষতিপূরণমূলক বিবাহ

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু অংশে উপজাতীয় দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য নারী ও মেয়েদের জোরপূর্বক বিবাহের প্রথা প্রচলিত যা ক্ষতিপূরণমূলক বিবাহ যা বান্নি, সোয়ারা ও স্যাং চাত্তি নামেও পরিচিত।আইনবিরুদ্ধ হলেও এটি পাকিস্তানের খায়বার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে প্রচলিত।

আফগানিস্তান

আফগানিস্তানেও জোরপূর্বক বিবাহ প্রচলিত এবং এই জাতীয় বিবাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে মেয়েরা আত্মহত্যাও করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এক রিপোর্ট অনুসারে আফগানিস্তানের কারাবন্দী ৯৫% মেয়ে এবং ৫০% বয়স্ক মহিলার বিরুদ্ধে রয়েছে 'জিনা' বা 'বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া'র মত 'নৈতিক অপরাধ'-এর অভিযোগ।স্বামীর মতামত ছাড়া আফাগানিস্তানে বিবাহ বিচ্ছেদ অসম্ভব এবং 'বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া'র জন্য কারাবন্দী হয়ে নারীরা কার্যত বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি নিচ্ছে। যেহেতু অনুমতি ছাড়া নারী ও মেয়েদের বাড়ির বাইরে যাওয়া আফগানিস্তানে সামাজিকভাবে স্বীকৃত না, সেহেতু 'বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া'ও আফগান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত না। কিন্তু ২০১০ ও ২০১১ সালে আফগান সুপ্রীম কোর্ট 'বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া'কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে অধস্তন আদালতসমুহকে নির্দেশনা দেয়।এর ফলে নারীদের পক্ষে জোরপূর্বক বিবাহ এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মতে," ২০০৮ সালে জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে আফগানিস্তানের ৭০-৮০ ভাগ বিবাহই জোরপূর্বক, নারীর স্বাধীন মতামত ছাড়াই অথবা জোর করে সংঘটিত হচ্ছে।অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায় ৫৯ ভাগ নারীই জোরপূর্বক বিবাহের সম্মুখীন হয়েছে।"

ভারত

ভারতের জাসবিন্দার সাংহেরা, যাকে তার শিখ পরিবার ১৬ বছর বয়সে বিবাহ করতে অস্বীকার করার জন্য ত্যাজ্য করেছিল, কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা কর্ম নির্বাণ প্রতিমাসে প্রায় ৬০০ কল পায়। পুত্র সন্তানের প্রতি আগ্রহের ফলে ও নারী-পুরুষের অনুপাত কমে যাওয়ায় কনের সংখ্যা কমে গেছে।এর ফলে জোরপূর্বক বিবাহের ঘটনা বেড়ে গেছে।

ইরান

ইরানে কুর্দি মেয়েদের জন্য জোরপূর্বক বিবাহ খুব সাধারণ ঘটনা এবং এটি ইরানে আত্ম বলিদানের অন্যতম কারণ। ইউনিসেফের ১৯৯৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইরানের কুর্দিস্তানে জোরপূর্বক বিবাহ এবং বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি যদিও সেটি ধীরে ধীরে কমছে। কুর্দি সংস্কৃতিতে জোরপূর্বক ও বাল্য বিবাহ প্রচলিত হওয়ার ফলে কুর্দি নারীদের মাঝে সর্বদা নির্যাতনের ভয় কাজ করে।

নেপাল

প্রচলিত যৌতুক প্রথার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অংশের মত নেপালেও মেয়েদের পরিবারের অর্থনৈতিক বোঝা হিসেবে দেখা হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক ও শিক্ষিত ছেলেরা বেশি যৌতুক চায় বলে মেয়েদের কম বয়সেই বিয়ে দেয়া হয়। ২০০৯ সালে নেপাল সরকার বিধবাদের বিবাহ করাকে উৎসাহিত করার জন্য পুরুষদের ৫০,০০০ নেপালি রুপির (৬৪১ ডলার) আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দেয়। নেপালি সমাজে বিধবাদের কোন সামাজিক মর্যাদা না থাকায় তা সমাধানকল্পে সরকার এই নীতি গ্রহণ করে। কিন্তু অবমাননাকর ও জোরপূর্বক বিবাহের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক অভিহিত করে অনেক বিধবা এবং মানবাধিকার সংগঠন এই নীতির বিরোধিতা করে।

শ্রীলঙ্কা

রিপ্রডাকটিভ হেলথ ম্যাটারস জার্নালে ২০০৪ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করায় শ্রীলঙ্কায় জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটিত হচ্ছে। বিবাহের পূর্বে মেয়েরা যাতে সতীত্ব না হারায়, যুদ্ধাবস্থায় এই ঝুঁকিটা অনেক বেশি থাকে, সেজন্য পিতামাতা টিনেজ বয়সেই মেয়েদের জোরপূর্বক বিবাহ দিচ্ছেন। নইলে পরবর্তীতে বিবাহ হতে সমস্যা হতে পারে।

ইউরোপ

জার্মানি

২০১১ সালে জার্মানির পরিবার বিষয়ক মন্ত্রণালয় জোরপূর্বক বিবাহের শিকার ৩০০০ জনের খোঁজ পায়, যাদের ৩০ ভাগই অল্পবয়স্ক। ২০১৬ সালে জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোরপূর্বক বিবাহের শিকার ১৪৭৫ জন শিশুর খোঁজ পায়। এই ১৪৭৫ জনের মাঝে ১১০০ জন মেয়ে, ৬৬৪ জন সিরিয়া থেকে আসা, ১৫৭ জন আফগান এবং ১০০ জন ইরাকি।

যুক্তরাজ্য

ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট, ইউকে

পারিবারিক গর্ব, পিতামাতার ইচ্ছা অথবা সামাজিক বাধ্যকতার জন্য জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদের মতে, ব্রিটিশ পাকিস্তানিদের মাঝে সংঘটিত অনেক জোরপূর্বক বিবাহের লক্ষ্য থাকে বর্তমানে পাকিস্তানে বসবাসরত পরিবারের কোন সদস্যকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাইয়ে দেয়া যেটাকে জোরপূর্বক বিবাহের পেছনে ভূমিকা রাখা ব্যক্তি নিজের দায়িত্ব বলে মনে করে। যুক্তরাজ্যের অভিবাসীদের মাঝে জোরপূর্বক বিবাহের সমস্যা সমাধানের জন্য জোরপূর্বক বিবাহ আইন ২০০৭ (বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষা) পাস হয় (ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে প্রযোজ্য) যার ফলে জোরপূর্বক বিবাহের শিকার ব্যক্তিরা তাদের নিরাপত্তার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে। স্কটল্যান্ডেও এই জাতীয় আইন পাস হয়েছে; জোরপূর্বক বিবাহ প্রভৃতি (নিরাপত্তা ও বিচার ব্যবস্থা) (স্কটল্যান্ড) আইন ২০১১ আদালতকে সুরক্ষার আদেশ প্রদানের ক্ষমতা দিয়েছে।

২০০৮ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ৩০০০ জোরপূর্বক বিবাহ সংঘটিত হয়।

২০১২ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকার যুক্তরাজ্যে জোরপূর্বক বিবাহকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অসিফারেরা বারমিংহামের উচ্চ আদালতে একটি কেস করে - ১৪ বছরের একজন মেয়েকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে তার চেয়ে ১০ বছরের বড় একজন পুরুষের সাথে জোরপূর্বক বিবাহ দেয়া হয় এবং দুই সপ্তাহ পরে ভয় দেখিয়ে সেই বিবাহ মেনে নিতে বাধ্য করা হয় এবং মেয়েটি গর্ভধারণ করে। বিচারপতি হলম্যান মামলাটি নিষ্পত্তি করে বলেন, তিনি এই জোরপূর্বক বিবাহকে অস্বীকৃত ঘোষণা করতে অক্ষম কারণ এমন একটি আইন আছে যেখানে বলা আছে শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেই কোন বিবাহকে বাতিল বলে ঘোষণা করা যায়। বিচারপতি হলম্যান বলেন, যেহেতু বর্তমানে মেয়েটির বয়স ১৭ বছর সেহেতু তাকেই এই বিবাহ বাতিলের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। ব্রিটিশ আদালত জোরপূর্বক বিবাহ বন্ধ করার জন্য বেসামরিক নির্দেশ দিতে পারে এবং ২০১৪ সাল থেকে এই জাতীয় আদেশ না মানলে ৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

অসামাজিক আচরণ, অপরাধ এবং পুলিশিং আইন ২০১৪ আনুসারে কাউকে বিবাহ করার জন্য জোর করা (এমনকি বিদেশেও) অপরাধ। আইনটি জুন ২০১৪ থেকে ইংল্যান্ডে ও ওয়েলসে এবং অক্টোবর ২০১৪ থেকে স্কটল্যান্ডে কার্যকরী। উত্তর আয়ারল্যান্ডে মানব পাচার ও শোষণ (অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং ভুক্তভোগীদের সহায়তা প্রদান) আইন ২০১৫ জোরপূর্বক বিবাহকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে (অনুচ্ছেদ ১৬ - জোরপূর্বক বিবাহের অপরাধ)।

জুলাই ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যেটির লক্ষ্য ছিল এক জেনারেশনের মধ্যে বাল্যবিবাহ, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিবাহ, জোরপূর্বক বিবাহ ও এবং নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ বন্ধের জন্য তৎপরতা বাড়ানো।

যুক্তরাজ্যে জোরপূর্বক বিবাহের অপরাধে প্রথম শাস্তি দেয়া হয় ২০১৫ সালের জুন মাসে,কার্ডিফের এক ব্যক্তিকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

সুইডেন

দক্ষিণাংশের স্কেনের বিদ্যালয়গুলির প্রতিবেদন থেকে জানা যায় প্রতি বছর প্রায় ২৫ জন যুবতী জোরপূর্বক বিবাহের শিকার হয়ে 'শেম সোসাইটি'র সদস্য হয়ে পড়ে।Ungdomsstyrelsen নামক সরকারী সংস্থার এক তদন্ত মতে ৭০০০০ যুবা তাদের জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সময় স্বাধীন ছিল না।

সুইডেনে প্রথমবারের মত ২০১৬ সালের জুলাই মাসে একজন আফগানি ব্যক্তিকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় কারণ সে তার মেয়েকে আফগানিস্তানের কাউকে বিবাহ করার জন্য জোর করেছিল এবং তার সুইডিশ বয়ফ্রেন্ডকে যৌন নির্যাতন করেছিল।

অন্যান্য

ইউরোপে মূলত অভিবাসীদের মাঝে জোরপূর্বক বিবাহ প্রচলিত থাকলেও পূর্ব ইউরোপের রোমা জনগোষ্ঠীর মত কিছু স্থানীয় জনসাধারণের মাঝেও এটি দেখা যায়। ২০১১ সালে প্রকাশিত ইউকে ফোর্সড ম্যারেজ কনসাল্টেশন-এর তথ্যমতে কাউকে বিবাহের জন্য জোর করা অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, তুরস্ক, ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং জার্মানিতে স্বতন্ত্র ফৌজদারি অপরাধ। ২০১৪ সালে এটা ইংল্যান্ডে ও ওয়েলসে স্বতন্ত্র ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়।

নারী নির্যাতন ও পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে গঠিত ইউরোপীয় সমঝোতা কাউন্সিল জোরপূর্বক বিবাহকে এবং নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অন্যান্য নির্যাতনকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে।< ১লা আগস্ট ২০১৪ থেকে সমঝোতাটি কার্যকরী হয়।

২০১৪ সালের নভেম্বরে ইউসিএল জোরপূর্বক বিবাহ: সত্যিকারের অপমান শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যেখানে পুরস্কার বিজয়ী তথ্যচিত্র অনার ডায়েরিজ প্রদর্শিত হয় এবং জাসবিন্দার সাংহেরা সিবিই (কর্ম নির্বাণের প্রতিষ্ঠাতা), সীমা মালহোত্রা এমপি (নারী বিষয়ক লেবার দলের ছায়ামন্ত্রী) এবং ডঃ রীফাত দ্রাবু (ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক)-কে নিয়ে গঠিত প্যানেল ইজ্জত (সম্মান), যুক্তরাজ্যের আইনের সাম্প্রতিক পরিবর্তন, জোরপূর্বক বিবাহ প্রতিরোধের অন্তরায়সমূহ এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আশাবাদী হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করেন।

আমেরিকা

কানাডা

কানাডার কিছু অভিবাসীদের মাঝে জোরপূর্বক বিবাহের প্রচলন থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কানাডায় খুব একটা আলোচনা হয় না।আর সেজন্যই আইনগত হস্তক্ষেপের অভাবে প্রথাটি টিকে রয়েছে। ২০১৫ সালে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংসদ ২টি নতুন ফৌজদারি আইন পাশ হয়েছে। ফৌজদারি আইনে এখন কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহ করার জন্য জোর করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে, এমনকি একজনের বয়স ১৬ বছরের কম হলেও তাদেরকে বাল্যবিবাহে সহায়তা বা সহযোগিতা করাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে পুরাতন অবৈধ বিবাহ অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে বৈধ করার একটা বিষয়ও প্রচলিত ছিল যেটিও ২০১৫ সালের আইনে সংশোধন করা হয়েছে।

এইসব ফৌজদারি অপরাধের বাইরেও বেসামরিক বিবাহ আইনে আছে বিবাহের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী হতে ইচ্ছুক দুই পক্ষেরই স্বাধীন সম্মতি থাকতে হবে। এর পাশাপাশি বিবাহের নূন্যতম বয়স ১৬ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র

ধারণা করা হয় যে নিউইয়র্কের শত শত পাকিস্তানি মেয়েদের পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জোরপূর্বক বিবাহের জন্য এবং যারা প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে ভয় দেখানো হয়েছে এবং বাধ্য করা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক শহরের জোরপূর্বক বিবাহের উপর জন জে কলেজ অব ক্রিমিনাল জাস্টিস-এর তত্ত্বাবধানে এএইচএ ফাউন্ডেশন একটি গবেষণা করেছে যার ফলাফল দ্ব্যর্থক। তবে জোরপূর্বক বিবাহ থেকে পালাতে বা বিরত থাকতে চায় এমন অনেক ব্যক্তিদের সহায়তা প্রদানের জন্য এএইচএ ফাউন্ডেশন উপযুক্ত সেবা প্রদানকারী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট পাঠিয়েছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ভিক্টিমস অব ক্রাইম কনফারেন্স-এর মতে, জোরপূর্বক বিবাহ বিষয়ে সরাসরি আইন/নীতি সীমিত যদিও এক্ষেত্রে অনেক অনির্দিষ্ট সাধারণ আইন ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্রেইডি রেইজ প্রতিষ্ঠিত 'আনচেইন্ড অ্যাট লাস্ট' যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র সংস্থা যারা জোরপূর্বক অথবা আয়োজিত বিবাহের ক্ষেত্রে নারীদের বিনামূল্যে আইনি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে।

ফান্ডামেন্টালিস্ট চার্চ অব জীজাজ ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস (এফএলডিএস) নামক সংস্থাটি বিভিন্ন রাজ্যের সীমান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অনৈচ্ছিক বহুবিবাহ এবং যৌন অপব্যবহারের জন্য জোরপূর্বক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পাচার করে বলে অভিযোগ আছে। ১৯৯০ এর শেষ দিকে ও ২০০৬ সালের মধ্যে এফএলডিএস বহুবিবাহের জন্য ত্রিশের অধিক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছে বলে রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ সন্দেহ করে। এফএলডিএস-এর কার্যক্রম সম্পর্কে আরসিএমপি'র মুখপাত্র ড্যান মস্কালুক বলেন," বস্তুত অবৈধ যৌন কাজের জন্য এরা মানবপাচার করে থাকে।" ভ্যাঙ্কুভার সান মনে করে এফএলডিএস-এর ২০০৫ পূর্ববর্তী কার্যক্রম কানাডার মানবপাচার বিরোধী সংবিধির আওতায় আনা যাবে কিনা সেটা নিশ্চিত নয় কারণ সংবিধিগুলি অতীতে সংঘটিত কাজের জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। ইতিপূর্বে ব্রিটিশ কলোম্বিয়াতে তিন বছর ব্যাপী এফএলডিএস-এর বিরুদ্ধে যৌন অপব্যবহার, মানব পাচার ও জোরপূর্বক বিবাহের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হয়, যদিও তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনা যায় নাই কিন্তু এর ফলে আইনে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

পরিসংখ্যান

বাল্য বিবাহ (২০০৮-২০১৪):

দেশ ১৫ বছরের মধ্যে বিবাহ ১৮ বছরের মধ্যে বিবাহ সুত্র
আফগানিস্তান - ৩৩% লিভিং কন্ডিশন্স সার্ভে ২০১৩
আলবেনিয়া ০% ১০% ডিএইচএস ২০০৮-২০০৯
আলজেরিয়া ০% ৩% এমআইসিএস ২০১২-২০১৩
আর্মেনিয়া ০% ৭% ডিএইচএস ২০১০
আজারবাইজান ২% ১১% ডিএইচএস ২০১১
বাংলাদেশ ১৮% ৫২% এমআইসিএস ২০১২-২০১৩
বারবাডোজ ১% ১১% এমআইসিএস ২০১২
বেলারুশ ০% ৩% এমআইসিএস ২০১২
বেলিজ ৩% ২৬% এমআইসিএস ২০১১
বেনিন ১১% ৩২% ডিএইচএস ২০১১-২০১২
ভুটান ৬% ২৬% এমআইসিএস ২০১০
বলিভিয়া ৩% ২২% ডিএইচএস ২০০৮
বসনিয়া হারজেগোভিনা ০% ৪% এমআইসিএস ২০১১-২০১২
ব্রাজিল ১১% ৩৬% পিএনডিএস ২০০৬
বুরকিনা ফাসো ১০% ৫২% ডিএইচএস ২০১০
বুরুন্ডি ৩% ২০% ডিএইচএস ২০১০
কাবো ভারডি ৩% ১৮% ডিএইচএস ২০০৫
কম্বোডিয়া ২% ১৯% ডিএইচএস ২০১৪
ক্যামেরুন ১৩% ৩৮% ডিএইচএস ২০১১
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ২৯% ৬৮% এমআইসিএস ২০১০
চাঁদ ২৯% ৬৮% এমআইসিএস ২০১০
কলোম্বিয়া ৬% ২৩% ডিএইচএস ২০১০
কমরস ১০% ৩২% ডিএইচএস ২০১২
কঙ্গো ৬% ৩৩% ডিএইচএস ২০১১-২০১২
কোস্টারিকা ৭% ২১% এমআইসিএস ২০১১
কোট ডি আইভরি ১০% ৩৩% ডিএইচএস ২০১১-২০১২
কিউবা ৫% ২৬% এমআইসিএস ২০১৪
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো ১০% ৩৭% ডিএইচএস ২০১৩-২০১৪
জিবুতি ২% ৫% এমআইসিএস ২০০৬
ডোমিনিকান রিপাবলিক ১০% ৩৭% ডিএইচএস ২০১৩
ইকুয়েডর ৪% ২২% ইএনডিইএমএআইএন ২০০৪
মিশর ২% ১৭% ডিএইচএস ২০১৪
এল সালভাদর ৫% ২৫% এফইওএসএএল ২০০৮
ইকুয়েটরিয়াল গিনি ৯% ৩০% ডিএইচএস ২০১১
ইরিত্রিয়া ১৩% ৪১% জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১০
ইথিওপিয়া ১৬% ৪১% ডিএইচএস ২০১১
গ্যাবন ৬% ২২% ডিএইচএস ২০১২
গাম্বিয়া ৯% ৩০% ডিএইচএস ২০১৩
জর্জিয়া ১% ১৪% আরএইচএস ২০১০
ঘানা ৫% ২১% ডিএইচএস ২০১৪
গুয়েতেমালা ৭% ৩০% ইএনএসএমআই ২০০৮/২০০৯
গিনি ২১% ৫২% ডিএইচএস ২০১২
গিনি বিসাউ ৭% ২২% এমআইসিএস ২০১০
গায়ানা ৬% ২৩% ডিএইচএস ২০০৯
হাইতি ৩% ১৮% ডিএইচএস ২০১২
হন্ডুরাস ৮% ৩৪% ডিএইচএস ২০১১-২০১২
ভারত ১৮% ৪৭% এনএফএইচএস ২০০৫-২০০৬
ইন্দোনেশিয়া - ১৪% এসইউএসইএনএএস ২০১৩
ইরান ৩% ১৭% এমআইডিএইচএস ২০১০
ইরাক ৫% ২৪% এমআইসিএস ২০১১
জ্যামাইকা ১% ৮% এমআইসিএস ২০১১
জর্ডান ০% ৮% ডিএইচএস ২০১২
কাজাখাস্তান ০% ৬% এমআইসিএস ২০১০-২০১১
কেনিয়া ৪% ২৩% ডিএইচএস ২০১৪
কিরিবাতি ৩% ২০% ডিএইচএস ২০০৯
কিরগিস্তান ১% ১২% এমআইসিএস ২০১৪
লাউ পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক ৯% ৩৫% এমআইসিএস ২০১১-২০১২
লেবানন ১% ৬% এমআইসিএস ২০০৯
লেসোথো ২% ১৯% ডিএইচএস ২০০৯
লাইবেরিয়া ৯% ৩৬% ডিএইচএস ২০১৩
মেসিডোনিয়া ১% ৭% এমআইসিএস ২০১১
মাদাগাস্কার ১২% ৪১% ইএনএসওএমডি ২০১২-২০১৩
মালাউই ৯% ৪৬% এমআইসিএস ২০১৩-২০১৪
মালদ্বীপ ০% ৪% ডিএইচএস ২০০৯
মালি ১৫% ৫৫% এমআইসিএস ২০১০
মার্শাল আইল্যান্ড ৬% ২৬% ডিএইচএস ২০০৭
মাউরিতানিয়া ১৪% ৩৪% এমআইসিএস ২০১১
মেক্সিকো ৫% ২৩% ইএনএডিইডি ২০০৯
মঙ্গঙ্গোলিয়া ০% ৫% এমআইসিএস ২০১০
মন্টিনিগ্রো ১% ৫% এমআইসিএস ২০১৩
মরক্কো ৩% ১৬% ডিএইচএস ২০০৩-২০০৪
মোজাম্বিক ১৪% ৪৮% ডিএইচএস ২০১১
নামিবিয়া ২% ৭% ডিএইচএস ২০১৩
নাউরু ২% ২৭% ডিএইচএস ২০০৭
নেপাল ১০% ৩৭% এমআইসিএস ২০১৪
নিকারাগুয়া ১০% ৪১% ইএনডিইএসএ ২০০৬
নাইজার ২৮% ৭৬% ডিএইচএস ২০১২
নাইজেরিয়া ১৭% ৪৩% ডিএইচএস ২০১৩
পাকিস্তান ৩% ২১% ডিএইচএস ২০১২-২০১৩
পানামা ৭% ২৬% এমআইসিএস ২০১৩ কেএফআর
পাপুয়া নিউগিনি ২% ২১% ডিএইচএস ২০০৬
প্যারাগুয়ে - ১৮% আরএইচএস ২০০৪
পেরু ৩% ১৯% চলমান ডিএইচএস ২০১৪
ফিলিপাইন ২% ১৫% ডিএইচএস ২০১৩
কাতার ০% ৪% এমআইসিএস ২০১২
রিপাবলিক অব মলদোভা ০% ১২% এমআইসিএস ২০১২
রুয়ান্ডা ১% ৮% ডিএইচএস ২০১০
সেন্ট লুসিয়া ১% ৮% এমআইসিএস ২০১২
সামোয়া ১% ১১% ডিএইচএস ২০১৪
সাউ টমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ ৫% ৩১% ডিএইচএস ২০০৮-২০০৯
সেনেগাল ৯% ৩২% চলমান ডিএইচএস ২০১৪
সার্বিয়া ০% ৩% এমআইসিএস ২০১৪
সিয়েরা লিউন ১৩% ৩৯% ডিএইচএস ২০১৩
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ৩% ২২% ডিএইচএস ২০০৭
সোমালিয়া ৮% ৪৫% এমআইসিএস ২০০৬
দক্ষিণ আফ্রিকা ১% ৬% ডিএইচএস ২০০৩
দক্ষিণ সুদান ৯% ৫২% এসএইচএইচএস ২০১০
শ্রীলঙ্কা ২% ১২% ডিএইচএস ২০০৬-২০০৭
ফিলিস্তিন ১% ১৫% এমআইসিএস ২০১৪
সুদান ৭% ৩৩% এসএইচএইচএস ২০১০
সুরিনাম ৫% ১৯% এমআইসিএস ২০১০
সোয়াজিল্যান্ড ১% ৭% এমআইসিএস ২০১০
সিরিয়া ৩% ১৩% এমআইসিএস ২০০৬
তাজিকিস্তান ০% ১২% ডিএইচএস ২০১২
থাইল্যান্ড ৪% ২২% এমআইসিএস ২০১২
তিমর-লেসতে ৩% ১৯% ডিএইচএস ২০০৯
টোগো ৬% ২২% ডিএইচএস ২০১৩-২০১৪
টোঙ্গা ০% ৬% ডিএইচএস ২০১২
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ২% ৮% এমআইসিএস ২০০৬
তিউনিসিয়া ০% ২% এমআইসিএস ২০১১-২০১২
তুরস্ক ১% ১৫% ডিএইচএস ২০১৩
তুর্কেমেনিস্তান ১% ৭% এমআইসিএস ২০০৬
টুভালু ০% ১০% ডিএইচএস ২০০৭
উগান্ডা ১০% ৪০% ডিএইচএস ২০১১
ইউক্রেন ০% ৯% এমআইসিএস ২০১২
তানজানিয়া ৭% ৩৭% ডিএইচএস ২০১০
উরুগুয়ে ১% ২৫% এমআইসিএস ২০১৩
উজবেকিস্তান ০% ৭% এমআইসিএস ২০০৬
ভানুয়াতু ৩% ২১% ডিএইচএস ২০১৩
ভিয়েতনাম ১% ১১% এমআইসিএস ২০১৪
ইয়েমেন ৯% ৩২% ডিএইচএস ২০১৩
জাম্বিয়া ৬% ৩১% ডিএইচএস ২০১৩-২০১৪
জিম্বাবুয়ে ৪% ৩৪% এমআইসিএস ২০১৪

সারমর্ম:

অঞ্চল ১৫ বছরের মধ্যে বিবাহ ১৮ বছরের মধ্যে বিবাহ মন্তব্য
সাব-সাহারান আফ্রিকা 12% 39%
পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা 10% 36%
পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকা 14% 42%
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা 3% 18%
পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক - 15% চীন ব্যতীত
ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান 5% 23%
সিইই / সিআইএস 1% 11%
স্বল্পোন্নত দেশসমুহ 13% 41%

জোরপূর্বক বিবাহ প্রত্যাখ্যানকারী বিখ্যাত নারী ও কর্মী

  • নজুদ আলি
  • বালকিছছা চাইবু
  • ফ্রাঙ্গকা ভিওলা

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение