Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

প্রজননবাদ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
প্রজনন

প্রজননবাদ (ইংরেজি: natalism, pronatalism, the pro-birth position, ন্যাটালিজম, প্রোন্যাটালিজম, দ্য প্রো-বার্থ পজিশন) হল একটি মতবাদ যা মানব জাতির বংশবিস্তারকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে। মূল ইংরেজি পরিভাষা ন্যাটালিজম শব্দটি এসেছে লাতিন বিশেষণ বার্থ ও নাটালিস থেকে। প্রজননবাদে শিশু-লালনপালন এবং পিতৃত্ব-মাতৃত্বকে সামাজিকতার জন্য পছন্দনীয় এবং মানব জাতির ক্রমবৃদ্ধির নিশ্চয়তা হিসেবে সমর্থন করে। রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় প্রজননবাদ জনগণকে আর্থিক ও সামাজিক প্রণোদনা সৃষ্টিতে উৎসাহিত করে, যেমন কর প্রণোদনা যা সন্তান গ্রহণ ও ভরণপোষণের নিমিত্তে প্রদান করা হয়। অনেক সময় প্রজননবাদে কট্টরপন্থীদের পদক্ষেপের কারণে গর্ভপাত ও জন্ম-নিয়ন্ত্রণের সুযোগ সীমিতকরণকে উৎসাহিত করা হয়।

দর্শন

ব্যক্তিভেদে প্রজননবাদের সীমারেখার পার্থক্য দেখা যায়। উক্ত দৃষ্টিভঙ্গিসমূহের মধ্যে একটি চরম সীমা হল বায়োন্যাটালিজম, যা প্রজননবাদকে জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করে এবং এই মতবাদকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে ধারণ করে। প্রজননবাদের দার্শনিক প্রণোদনার মধ্যে অন্যতম হল সৃষ্টিশীল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে নবজাতককে পৃথিবীতে নিয়ে আসার বিষয়টিকে মূল্যবোধ হিসেবে বিবেচনা করা।

উদ্দেশ্য

মানবতার অস্তিত্ব রক্ষা

মানব শিশু ছাড়া মানব জাতির টিকে থাকা সম্ভবপর নয়। তাই, বায়োন্যাটালিজমের মত কিছু প্রজননবাদী মতাদর্শ মানব প্রজননকে একটি নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করে, যার কারণ প্রত্যেকটি মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগ পর্যন্ত পরিবার ও সমাজ তাদের জীবিকার একটি অংশ তার পেছনে ব্যয় করেছিল বলেই সে বেঁচে আছে।

ধর্মে উপস্থিতি

ইসলাম, ইহুদিধর্ম এবং খৃস্টধর্মের কিছু শাখা সহ বহু ধর্মই বংশবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।

এসব ধর্মের মধ্যে অ্যামিশ জাতি হল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সম্প্রদায়, যাদের প্রতি পরিবারে গড়ে ৬.৮ টি সন্তান থাকে।

কুইভারফুল আন্দোলন নামক রক্ষণশীল প্রটেস্ট্যান্টদের একটি সাম্প্রতিক আন্দোলনে বৃহৎ পরিবার গঠনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করেন যে, কুইভারফুল আন্দোলন হল বিশ্বের সেসব অস্বীকৃত মৌলবাদী আন্দোলনের অনুরূপ যেগুলো স্বগোত্রীয় প্রজনন এবং সদস্য অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে, যেমন ফিনল্যান্ডে লায়েস্টারডিয়ানিজম এবং মুসলিম বিশ্বের সালাফি আন্দোলন। ধর্মনিরপেক্ষ ও মধ্যপন্থীগণ কম সংখ্যক সন্তান গ্রহণের নীতি গ্রহণ করার কারণে প্রজননবাদী ধর্মীয় দলগুলো আলাদা শ্রেণী হিসেবে বেড়ে ওঠে।

রাজনৈতিক বংশবিস্তার মতবাদ

কোন দলের সংখ্যাবৃদ্ধি ও ফলশ্রুতিতে দলটির রাজনৈতিক প্রভাববিস্তারের উদ্দেশ্যে প্রজননবাদ গ্রহণ করা হলে তাকে বলা হয় রাজনৈতিক বংশবিস্তার মতবাদ। বাস্তবে, এটা প্রমাণ করা কঠিন যে কোন দল কি প্রকৃত অর্থেই বংশবিস্তার মতবাদ অনুযায়ী আচরণ করে, নাকি উক্ত দলের বিশ্বাস ও কাজকর্মের স্বাভাবিক ফলাফল হিসেবেই এর জন্মহার বৃদ্ধি পায় (এবং ফলশ্রুতিতে বৃহৎ রাজনৈতিক প্রভাব না থাকার পরেও তা টিকে থাকে)। এর সঙ্গে জড়িত ধর্মীয় দলগুলোতে প্রায়শই দীর্ঘ-ঐতিহ্যবাহী মৌলিক নীতিমালা ও পারিবারিক কাঠামো থাকে, যেগুলো তাদের দ্বারা পালিত প্রায় অন্যান্য সকল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হতে প্রাচীন (যদিও কুইভারফুল আন্দোলনের ন্যায় কিছু দল তা প্রকাশ্যে সমর্থন করে এবং তা সঠিক প্রমাণের জন্য তাদের ধর্মগ্রন্থের বানীকে উপস্থাপন করে)। রাজনৈতিক বংশবিস্তার মতবাদ একটি গণতন্ত্রের গতিপ্রকৃতিকে বদলে দিতে পারে, কারণ গণতন্ত্রের এক ব্যক্তি, এক ভোট নীতিটি ছোট দলগুলোর তুলনায় বড় দলগুলোকে অধিক সুবিধা দেয়।

সন্তান গ্রহণের অভিপ্রায়

সন্তান গ্রহণের অভিপ্রায় জন্মহার বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ। তবে,সন্তান নেই এমন ব্যক্তিদের মধ্যে স্বল্পমেয়াদী সন্তান ধারণের পরিকল্পনা গ্রহণকারীরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণকারীদের তুলনায় জন্মহার বৃদ্ধিতে অধিক ভূমিকা রাখেন। সন্তান গ্রহণের অভিপ্রায়ের পেছনে বহু কারণ থাকে, এগুলো হল:

  • পরিবারের আকারের প্রতি মায়ের পছন্দ, যা বয়ঃপ্রাপ্তির শুরুতেই সন্তান গ্রহণকে উৎসাহিত করে। একইভাবে, সন্তান গ্রহণের অভিপ্রায়ের ক্ষেত্রে বড় পরিবার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে, নানার ও দাদার বংশে ভাইবোন বেশি হলে তা সন্তান গ্রহণের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে।
  • আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে দ্বিতীয় সন্তান নেয়ার জন্য সামাজিক চাপ আসা।
  • সামাজিক সমর্থন ও সহায়তা। তবে জার্মানির একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যেসব ব্যক্তি এসব ক্ষেত্রে কোনই সমর্থন পান না এবং যেসব ব্যক্তি এসব ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় সমর্থন পান তারা উভয়েই দ্বিতীয় সন্তান নিতে আগ্রহী হন না, দ্বিতীয় ব্যক্তিটির ক্ষেত্রে এর কারণ হতে পারে সিদ্ধান্ত সমন্বয়করণে সমস্যা।
  • সুখঃ সুখী মানুষেরা অধিক সন্তান গ্রহণের প্রবণতা দেখিয়ে থাকেন।
  • গৃহায়ন প্রকল্পের বিকাশ সুরক্ষিত রাখতে।

প্রজননবাদী রাজনীতি

অনেক রাষ্ট্রই অধিক সন্তান গ্রহণে উৎসাহিতকরণের জন্য দম্পতিদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করে থাকে। এসব প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে এককালীন শিশু ভাতা, অথবা চলমান শিশু সুবিধা অর্থপ্রদান অথবা কর হ্রাসকরণ। কিছু দেশ আবার কম সন্তানধারী দম্পতির উপর জরিমানা বা কর আরোপ করে থাকে।

বেতনভুক্ত মাতৃত্বকালীন বা পিতৃত্বকালীন ছুটি নীতিমালাও প্রণোদনা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সুইডেনে ভরপুর বৃহৎমেয়াদি পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব ছুটি দেয়া হয় যেখানে পিতামাতাপ্রতি সন্তানের জন্য ১৬ মাসের বেতনভুক্ত ছুটি পেয়ে থাকেন, এই খরচটি কর্মচারী ও রাষ্ট্র উভয়ের কাছ থেকে ভাগ করে নেয়া হয়।

সাম্প্রতিক উদাহরণ

নিম্নমুখী জনসংখ্যা সম্পন্ন কিছু দেশ জনসংখ্যা হ্রাস প্রতিরোধের জাতীয় পদক্ষেপ হিসেবে বড় পরিবার গঠনের জন্য জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে থাকে। কিছু রাষ্ট্র, যেমন জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান স্থানীয় জনগণের মধ্যে বৃহৎ পরিবার গঠনে প্রণোদনা সৃষ্টির মাধ্যমে গণসম্পৃক্তকরণ প্রজননবাদী নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বা করার চেষ্টা করেছে। তবে অভিবাসীরা সাধারণত প্রজননবাদী নীতির আওতাভুক্ত হন না।

আরেক সরকার যারা প্রকাশ্যে প্রজননবাদকে সমর্থন করে তা হল ইরান, যার কারণ হল ইরান-ইরাক যুদ্ধ'র ব্যাপক প্রাণহানি। তাই সরকার যুদ্ধে হ্রাস হওয়া জনসংখ্যা পুষিয়ে নিতে বিবাহিত দম্পতিদের সাধ্যমত বেশি সন্তান নিতে উৎসাহিত করে।

ইসরাইলে, অধিক সন্তান সম্পন্ন হারেদি পরিবারগুলো সরকারের শিশু উদার বৃদ্ধি নীতির মাধ্যমে আর্থিক সমর্থন লাভ করে, তরুণ ধার্মিক দম্পতিরা গৃহায়নে সরকারি সহায়তা এবং নিজস্ব সম্প্রদায়ের তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতা লাভ করে। জন প্রতি হারেদি নারীর গড়ে ৬.৭ টি সন্তান থাকে, যেখানে অন্যান্য ইহুদি ইসরাইলি নারীদের গড়ে তিনটি সন্তান থাকে।

তিব্বত বিশেষজ্ঞ মেল্ভিন গোল্ডস্টেইন-এর মতে, চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে সাধারণ মানুষ ও সরকারি পরিষদবর্গ উভয়ের মাঝেই প্রজননবাদী অনুভূতি খুবই উচ্চমাত্রায় রয়েছে। তিব্বতের অধিবাসীরা চীনের একটি শিশু নীতির মত অন্যান্য পরিবার পরিকল্পনা নীতি গ্রহণ করা থেকে তিব্বতের জনগণকে বিরত রাখার সফল ঘোষণা দিয়েছে।। তিব্বতীয় বহিষ্কৃত সম্প্রদায়ের মধ্যকার প্রজননবাদী সাহিত্য বিদেশিদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াতে নিরুৎসাহিত করে, যদিও বাস্তবে তা সফল হয় নি।

২০০৪ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় পাতায়, ডেভিড ব্রুকস অভিমত ব্যক্ত করেন যে, ইউরোপের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ জন্মহার হওয়ার পেছনে কারণ হতে পারে এখানের কিছু সামাজিক দলের প্রজননবাদী মনোভাব। উক্ত প্রবন্ধটিকে কুইভারফুল আন্দোলনের একটি পর্যালোচনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে, আদমশুমারি অনুযায়ী উক্ত দলগুলোর সংখ্যা অনেক কম।

যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্রীয় সিনেট দলের রাজনীতিবিদ রিক স্যান্টোরাম তার ২০১২ সালের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রজননবাদকে তার প্ল্যাটফর্মের অংশ হিসেবে নির্ধারণ করেন। বিষয়টি যে যুক্তরাষ্ট্রে অপ্রতুল তাও নয়। সাধারণ সামাজিক জরিপে যারা মৌলবাদী প্রটেস্ট্যান্ট হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হন তারা কমবেশি প্রজননবাদী হয়ে থাকেন, এবং তাদের জন্মহার মধ্যপন্থী ও উদার প্রটেস্ট্যান্টদের থেকে বেশি। যদিও, রিক স্যান্টোরাম কোন প্রটেস্ট্যান্ট নন বরঞ্চ একজন ধার্মিক ক্যাথলিক।

২০১২ এর মে মাসে, তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন যে, গর্ভপাত হল হত্যাকাণ্ড এবং তিনি ঘোষণা করেন, গর্ভপাত করার প্রচলনকে কঠোরভাবে সীমিত করার আইনি প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরদোয়ান আরও দাবি করেন, গর্ভপাত ও সি-সেকশন ডেলিভারি (সিজারিয়ান ডেলিভারি) হল তুরস্কের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে রুদ্ধ করার চক্রান্ত। এই পদক্ষেপের অনুকূলে, এরদোয়ান একাধিকবার দাবি করেন যে, প্রতি দম্পতিকে অন্তত তিনটি সন্তান নিতে হবে।

অ-প্রজননবাদ

অ-প্রজননবাদ হল একটি দার্শনিক অবস্থান যা প্রজনবাদের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে প্রজননের প্রতি একটি নেতিবাচক মূল্যবোধ ধারণ করে। আরথার স্কোপেনহায়ার, এমিল সিওরান, পিতার ওয়াসেল জ্যাপফে এবং ডেভিড বেনাটার এর ন্যায় ব্যাকটিবর্গ এই মতবাদটিকে আরও উন্নত করেন। সাইলেনাসের প্রজ্ঞা হিসেবে এরিস্টটলের ইউডিমাসের বিভাজনেও অনুরূপ মতবাদ দেখতে পাওয়া যায়, যা স্কোপেনহাওয়ার ও ফ্রেডরিখ নিটসচি কর্তৃক আলোচিত হয়েছে। আইনগত ভাবে প্রজননবাদী বা অ-প্রজননবাদী নীতিমালা সন্তানধারণের আধিকারসমূহের প্রতি পীড়াদায়ক হতে পারে, যা নির্ভর করে সেগুলো কীভাবে নির্ধারণ অ কার্যকর করা হয় তার উপর। অ-প্রজননবাদকে জনসংখ্যার আধিক্য এবং এর ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা যায়, যার উদ্দেশ্য হল বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধি হ্রাসকরণ এবং সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় নিয়ন্ত্রণ।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение