Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

ভক্ষককোষ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
একটি নিউট্রোফিল ভক্ষককোষ একটি অ্যানথাক্স ব্যাকটেরিয়াকে (কমলা রঙ) ভক্ষণ করছে, স্ক্যানিং ইলেকট্রন অণুবীক্ষণচিত্র।

ভক্ষককোষ (ইংরেজিতে ফ্যাগোসাইট) এমন এক ধরনের কোষ যা দেহের জন্য বহিরাগত বস্তুকণা যেমন ব্যাকটেরিয়া, কার্বন, ধূলিকণা, ইত্যাদিকে ভক্ষণ করে এবং কখনও কখনও হজম করতে পারে। যে প্রক্রিয়ায় এ কাজ তারা সম্পাদন করে তার নাম ফ্যাগোসাইটোসিস

ভক্ষককোষটি তার কোষমাতৃকাকে (সাইটোপ্লাজম) প্রসারিত করে ছদ্মপদ (পা-সদৃশ প্রসারণ) গঠন করে বহিরাগত কণা বা জীবাণুটিকে ঘিরে ফেলে এবং একটি প্রাচীরবেষ্টিত গহ্বর (ভ্যাকুওল) গঠন করে। ভক্ষণকৃত জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াটি যতক্ষণ এই গহ্বরে থাকে, ততক্ষণ এর ভেতরের বিষাক্ত পদার্থগুলি ভক্ষককোষটির ক্ষতি করতে পারে না। এরপর ভক্ষককোষটি ঐ গহ্বরে বিশেষ ভক্ষককোষ উৎসেচক ক্ষরণ করে এবং আবদ্ধ বহিরাগত জীবাণুটি হজম করে।

রক্তে দুই ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা আছে, যেগুলি ভক্ষককোষের ভূমিকা পালন করে। একটি হল নিউট্রোফিলিক শ্বেতকণিকা (মাইক্রোফাজ বা ক্ষুদ্রভক্ষক) এবং মনোসাইট (ম্যাক্রোফাজ বা বৃহৎভক্ষক)। নিউট্রোফিলিস কণিকাগুলি এক জাতীয় ক্ষুদ্র, দানাদার শ্বেতকণিকা। এই ক্ষুদ্রভক্ষকগুলি রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে দেহের সর্বত্র সঞ্চালিত হয়। দেহকে আক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়া যে রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে, সেগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ক্ষুদ্রভক্ষকগুলি খুব দ্রুত ক্ষতস্থানে বা সংক্রমণস্থলে আবির্ভূত হয় এবং রক্তনালীর প্রাচীর ভেদ করে বহিরাগত আক্রমণকারীদের কাছে পৌঁছে সেগুলি ভক্ষণ করে ।

মনোসাইটগুলি অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর কণিকা এবং এদের একটি বড়, বৃক্কাকৃতির কোষকেন্দ্রীন বা নিউক্লিয়াস থাকে। এগুলি রোগ সংক্রমণের প্রায় তিন দিন পরে আবির্ভূত হয় এবং ব্যাকটেরিয়া, বহিরাগত কণা, মৃত কোষ-উপাদান এবং প্রোটোজোয়া চষে বের করে ও খেয়ে পরিষ্কার করে। মানবদেহের এক লিটার পরিমাণ রক্তে প্রায় ছয়শত কোটি ভক্ষককোষ থাকে।

বেশিরভাগ ভক্ষককোষীয় কর্মকাণ্ড সংবহনতন্ত্রের ভেতরে নয়, বরং এর বহিঃস্থ কোষসমূহের মাঝে ঘটে থাকে। যেমন লসিকাতন্ত্রে অবস্থিত বহিরাগত পদার্থগুলি লসিকাগ্রন্থিতে অবস্থিত নিশ্চল ভক্ষককোষগুলি দ্বারা ভক্ষিত হয়। একইভাবে প্লীহা, যকৃৎ ও অস্থিমজ্জায় অবস্থিত নিশ্চল ভক্ষককোষগুলি সংবহনতন্ত্রে অবস্থিত বৃদ্ধ লোহিত রক্তকণিকা ও বহিরাগত পদার্থ গিলে ফেলে। ফুসফুসে অবস্থিত বিশেষ ভক্ষককোষ ধূলিকণা হজম করে ফেলে। প্লীহা বা অস্থিমজ্জার মত আলগা সংযোজক কলাতে অবস্থিত নিশ্চল ম্যাক্রোফাজ বা বৃহৎ ভক্ষককোষগুলি যথাযথ উদ্দীপকের উদ্দীপনায় (যেমন প্রদাহ) বৃত্তাকৃতি ধারণ করে মুক্ত সচল ভক্ষককোষে পরিণত হতে পারে।

মানুষ ও অন্যান্য উচ্চতর প্রাণীতে ভক্ষককোষগুলি দেহের সর্বত্র উৎপন্ন হয় এবং ঘুরে বেড়ায়। বৃহত্তর ভক্ষককোষগুলি লসিকাতন্ত্র, যকৃৎ ও প্লীহার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এককোষী অ্যামিবা-সদৃশ ভক্ষককোষগুলি দেহের কলাগুলির মধ্যে দিয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য বহিরাগত পদার্থ ভক্ষণ করে থাকে।

ভক্ষণ প্রক্রিয়াটি কতটুকু সফল হবে, তা বহিরাগত পদার্থের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। সাধারণত বহিরাগত কণাগুলিকে রক্তের প্রোটিনগুলি আবৃত করে ফেলে এবং এর ফলে ভক্ষককোষগুলি আকৃষ্ট হয়ে এগুলির সাথে আবদ্ধ হয় এবং এগুলিকে ভক্ষণ করে। যদি সক্রিয় ব্যাকটেরিয়া জাতীয় জীবাণু দেহকে আক্রমণ করে তাহলে এগুলিকে ফাঁদে ফেলে নিশ্চল না করলে কিংবা অ্যান্টিবডি বা প্রতিবস্তু নামক বিশেষ ধরনের প্রোটিন দ্বারা আবৃত না হলে এগুলি ভক্ষককোষগুলি খেতে পারে না। এত কিছুর পরেও যদি জীবাণুগুলি ভক্ষণ করা না যায়, তাহলে এগুলি দেহের সর্বত্র ভক্ষককোষগুলির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইলিয়া ইলিয়িচ মেচনিকভ তারামাছের শূককীট নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ১৮৮২ সালে ভক্ষককোষ আবিষ্কার করেন। তিনি এই আবিষ্কারের জন্য ১৯০৮ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।


Новое сообщение