Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

মনোবিজ্ঞান

Подписчиков: 0, рейтинг: 0

মনোবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ববিদ্যা হল, মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণ সম্পর্কিত বিদ্যা ও অধ্যয়ন। এটি বিজ্ঞানের একটি তাত্ত্বিক ও ফলিত শাখা যাতে মানসিক কর্মপ্রক্রিয়া ও আচরণসমূহ নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান করা হয়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী মনোবিজ্ঞানকে "মানুষ এবং প্রাণী আচরণের বিজ্ঞান" হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আবার অনেক বিজ্ঞানী একে সংজ্ঞায়িত করেছেন "আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞান" হিসাবে।

মনোবিজ্ঞান মূলত মানুষের সাথে সম্পর্কিত, তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। মনোবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণভাবে অধ্যয়ন করা কঠিন হওয়ার কারণে, মনোবিজ্ঞানীগণ প্রায়শই বিভিন্ন সময়ে এর বিভিন্ন অংশের দিকে নজর দেন। বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে মনোবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগসূত্র রয়েছে। এর কিছু ক্ষেত্র হল মেডিসিন, আচরণবিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, এবং ভাষাবিজ্ঞান

মনোবিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্রে, একজন পেশাগত প্রশিক্ষণার্থী বা গবেষককে মনোবিজ্ঞানী এবং সামাজিক, আচরণিক ও চেতনাবিজ্ঞানী বলে ডাকা হয়। মনোবিজ্ঞানী ব্যক্তিগত ও সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে মানসিক কর্মপ্রক্রিয়ার ভূমিকাকে বোঝার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তারা চেতনাগত প্রক্রিয়া ও আচরণের পেছনের মনস্তাত্ত্বিক ও স্নায়বিক প্রক্রিয়াকেও অনুসন্ধান করেন।

মনোবিজ্ঞানের ইতিহাস ও প্রারম্ভিক বিকাশ

উনিশ শতকের আগে মন সম্পর্কীয় সকল অধ্যয়ন দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। দার্শনিকগণ মানসিক আচার-আচরণ বা ক্রিয়া-কলাপ সম্পর্কে কেবল অনুমান করেছিলেন। মন সম্পর্কে গ্রীক দার্শনিক প্লেটো সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা করেন। তিনি মনকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন সত্তা হিসাবে গণ্য করেন। আধুনিক যুগে স্নায়ুবিজ্ঞানপ্রাণীবিজ্ঞানের বিকাশের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞানেরও নব বিকাশ ঘটে ও আধুনিক বিজ্ঞানের এক অন্যতম শাখা হিসাবে মনোবিজ্ঞানের বিকাশ আরম্ভ হয়। স্নায়ুবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের মধ্যেই যে মনোবিজ্ঞানের প্রাথমিক ভিত্তি নিহিত হয়ে আছে সেই কথা সর্বপ্রথম বলেন জার্মান শরীর বিজ্ঞানী জোহানেস পিটার মুলার। অবশ্য মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারটি করেছিলেন আরেকজন জার্মান বিজ্ঞানী হারমেন ভন হেল্মল্টজ্। ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী টমাস ইয়ঙের প্রস্তাবিত রং সংক্রান্ত নীতি নিয়ে গবেষণা করে তিনি ইয়ং-হেল্মল্টজ্ সূত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সূত্র দ্বারা তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে তিনটে বিভিন্ন রঙের (সবুজ, নীল ও লাল) অনুভূতির সৃষ্টি হয় মানুষের চোখের রেটিনার সাথে সংযুক্ত তিন ধরনের স্নায়ুর কর্ম-তৎপরতার ফলে। এরপর পরবর্তী আধুনিক মনোবিজ্ঞান একের পর আরেক আমাদের মন সম্পর্কীয় রহস্য উদ্‌ঘাটন করে এর জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন মতবাদ

  • (১) আচরণবাদ (Behaviorism)

আচরণবাদের জন্ম হয়েছিল বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। আচরণবাদের মুখ্য প্রবক্তা ছিলেন জন বি.ওয়াটসন এবং বি. এফ. স্কীনার। এছাড়া, রাশিয়ার আইভান পাভলভ, বেখটার্ভ ইত্যাদি মনোবিজ্ঞানী আচরণবাদ নিয়ে বহু উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। আচরণবাদীদের মতে, প্রাণীর উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানানোর কার্যই হল আচরণ; এবং যে তত্ত্বের সহায়তায় এই আচরণের অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণ করা হয় তাই হল আচরণবাদ।

আচরণবাদী মানুষেরা কাশি, হাঁচি ইত্যাদি সাধারণ শারীরিক কার্যের থেকে আরম্ভ করে মানুষের উচ্চতম বৌদ্ধিক চিন্তা-চর্চা পর্যন্ত সকল কাজই উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে একপ্রকারের সংযোগ স্থাপন করে বলে বিশ্বাস করেন। আচরণবাদের দরুন ওয়াটসন মনোবিজ্ঞানের জগতে এক নতুন জোয়ার আনেন। তিনি মানুষ ও জীবজন্তুর আচরণকে এক জড়বাদী অছিলা হিসাবে মনোবিজ্ঞানের জগতে নিয়ে আসেন।

CognitivePsychology.svg
  • (২) মনোবিশ্লেষণ বা মনঃসমীক্ষণ:

বিংশ শতকের শুরুতেই সমগ্র বিশ্বকে আন্দোলিত করা একটি তত্ত্ব হল মনোবিশ্লেষণ বা মনঃসমীক্ষণ। এই তত্ত্বের প্রভাবেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে সংযোজিত হয়েছিল এক নতুন শাখা; সেটি হল চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বা মনোরোগ বিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞানের জনক ছিলেন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরের শারীরবিজ্ঞানী ডাঃ সিগমুন্ড ফ্রয়েড। ফ্রয়েডের পরে মনোবিশ্লষণের জগতে অবদান রেখে যাওয়া কয়েকজন জগতবিখ্যাত মনোবিদের ভিতর কার্ল গুষ্টাভ য়ুং, আলফ্রেড এডলার, এরিক এরিকসন উল্লেখযোগ্য। এই তত্ত্ব কেবল মনোবিজ্ঞানের জগতকেই প্রভাবিত করে ক্ষান্ত থাকেনি, এটি মানুষের মন, সমাজ, সাহিত্য, জীবনাদর্শের ওপরেও গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। মানুষ নামক প্রাণীটির সম্পর্কে এই তত্ত্বই মানুষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছিল। এই তত্ত্বই আমাদেরকে নতুন করে শেখায় যে মানুষ অমৃতের সন্তান নয়, এমনকি আগেকার পণ্ডিতদের ভাবনা-চিন্তা অনুযায়ী মানুষ যুক্তিবাদী প্রাণীও নয়। মানুষ আসলে কিছু জৈবিক প্রবৃত্তি ও আবেগের দ্বারা পরিচালিত হয়; এবং সবচেয়ে জরুরি কথাটি হল দূর-দূরান্তের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে জানলেও মানুষ কিন্তু বেশিরভাগ নিজের বিষয়েই অন্ধ হয়ে থাকে। মনোবিশ্লেষণ মানুষের মনোজগতের বহু গোপন রহস্য আমাদের কাছে তুলে ধরেছিল। মানুষের মন সম্পর্কে আবিষ্কৃত এই অপ্রিয় কিন্তু সত্যি শোনানো কথাগুলি সেই সময়ের বহু লোক মেনে নিতে পারেনি, যদিও এমনসব কথাই জীবন সম্পর্কে উৎসুক নবপ্রজন্মকে উল্লসিতও করেছিল। যদিও মনোবিশ্লেষণবাদ প্রয়োগিক ক্ষেত্রে সফল ও সর্বগ্রহণযোগ্য, তবুও একে বিজ্ঞান বলে প্রমাণ করতে অনেক যৌক্তিক সীমাবদ্ধতা চলে আসে। এককথায় বলতে গেলে মনোবিশ্লেষণ বা ফ্রয়েডীয় মনোবিজ্ঞান মানুষের অবচেতন মনের এক দার্শনিক অনুমানভিত্তিক অধ্যয়ন। মানসিক রোগ নিরাময়, মনের অস্বাভাবিক ভাব-অনুভূতির বিশ্লেষণ, স্বপ্ন বিশ্লেষণ, নারী ও শিশুমনের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ফ্রয়েডীয় মনোবিশ্লেষণ আজও প্রভাবশালী ও অপ্রতিদ্বন্দী।

মনোবিজ্ঞানের শাখাসমূহ

ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রয়োগ

১৯৫৫ সালে প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানীত্রয় - ভিক্টোরিয়া মেডভেক, স্কট ম্যাদে এবং থমাস গিলোভিচ আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ায় বিপরীতধর্মী চিন্তা-ভাবনা সংবলিত প্রতিক্রিয়া গবেষণা আকারে তুলে ধরেন। তারা দেখিয়েছেন, যে সকল প্রতিযোগী ব্রোঞ্জপদক জয় করে তারা রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদের তুলনায় অধিকতর সুখী। রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদ মানসিক অবসাদগ্রস্ততায় ভোগেন, কেননা তারা অল্পের জন্য স্বর্ণপদক প্রাপ্তি থেকে নিজেকে বিচ্যুত করেছেন। সে তুলনায় ব্রোঞ্জপদক জয়ী খেলোয়াড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে কমপক্ষে একটি পদক জয়ে সক্ষমতা ও পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। চতুর্থ স্থান অধিকারী প্রতিযোগীকে সাধারণত কোন পদক দেয়া হয় না।নক-আউটভিত্তিক প্রতিযোগিতা হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলে পুনরায় ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জপদক অর্জন করতে হয়। চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত হবার প্রেক্ষাপটে পরাজিত দলকে রৌপ্যপদক প্রদান করা হয়।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение