Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

ম্যালেরিয়া

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
ম্যালেরিয়া
Malaria Parasite Connecting to Human Red Blood Cell (34034143483).jpg
লোহিত রক্তকণিকার সাথে সংযুক্ত একটি ম্যালেরিয়া পরজীবী
উচ্চারণ
বিশেষত্ব সংক্রামক রোগ
লক্ষণ জ্বর, বমি হওয়া ,মাথা ব্যাথা ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া
জটিলতা Seizures, কোমা
রোগের সূত্রপাত আক্রমণের ১০-১৫ দিন পর
কারণ মশা কর্তৃক ছড়ানো প্লাসমোডিয়াম
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি রক্ত পরীক্ষা , এন্টিজেন সনাক্তকরণ পরীক্ষা
প্রতিরোধ মশারি , মশা নিধন , মশা নিয়ন্ত্রণ , পূর্ব সতর্কতা
ঔষধ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ
সংঘটনের হার ২২৮ মিলিয়ন (২০১৮)
মৃতের সংখ্যা ২০১৮ সালে ৪০৫,০০০ জন

ম্যালেরিয়া (ইংরেজি: Malaria) হল মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের একটি মশা-বাহিত সংক্রামক রোগ যার মূলে রয়েছে প্লাজমোডিয়াম গোত্রের প্রোটিস্টা (এক ধরনের অণুজীব)। ম‍্যলেরিয়া শব্দটি সর্বপ্রথম ব‍্যবহার করেন টর্টি (Torti) ১৭৫১ সালে। ইতালিয় শব্দ Mal (অর্থ- দূষিত) ও aria (অর্থ- বায়ু) হতে Malaria (ম‍্যালেরিয়া) শব্দটি এসেছে। তখন মানুষ মনে করতো দূষিত বায়ু সেবনে এ রোগ হয়। এটি একটি সংক্রমিত স্ত্রী মশার (আনোফেলিস মশা) কামড় সাথে শুরু হয়, যা তার লালা মাধ্যমে প্রোটিস্টর সংবহন তন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে এবং শেষে যকৃতেতে পৌঁছায়, যেখানে তারা পরিপক্ব হয় এবং বংশবৃদ্ধি করে। ম্যালেরিয়ার সাধারণ রোগের লক্ষণসমূহ হল জ্বর এবং মাথাব্যাথা, যা খুব গুরুতর ক্ষেত্রে কোমা বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। রোগটি ক্রান্তীয় অঞ্চল, ‌উপ‌-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং অনেক সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, এশিয়া এবং আমেরিকা অঞ্চলসহ বিষুবরেখা ঘিরে ব্যাপক বিস্তৃত।

মানুষে ১৭৫৩ সালে পাঁচটি প্রজাতির প্লাজমোডিয়াম প্রেরণ এবং সংক্রমণ ঘটতে পারে। বেশিভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হল প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাজমোডিয়াম ওভাল এবং প্লাজমোড,এর সাধারণত এটি ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটায় যা খুব কম ক্ষেত্রেই মারাত্মক হয়ে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে লক্ষণীয়ভাবে জুনটিক প্রজাতি প্লাজমোডিয়াম নলসাই নামক জীবাণু একজাতের ছোটো লেজওয়ালা বাঁদরদের মধ্যে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে এবং এটি মানুষের মধ্যেও তীব্র সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে। ম্যালেরিয়া ক্রান্তীয় অঞ্চল, ‌উপ‌-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায় কারণ বৃষ্টিপাত, উষ্ণ তাপমাত্রা, এবং স্থির জল হল মশার ডিমের জন্য আদর্শ আবাসস্থল। মশারি এবং পোকা তাড়ানোর ঔষধ ব্যবহার করে মশার কামড় থেকে বাচাঁ যায় অথবা কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার এবং স্থায়ী জল নিঃশেষিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগের বিস্তার থেকে বাচাঁ যায়।

ম্যালেরিয়া সাধারণত ব্লাড ফিল্মস ব্যবহার করে রক্তের দূরবীক্ষণ পরীক্ষা অথবা অ্যান্টিজেন-ভিত্তিক দ্রুত ডায়গনস্টিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তিতে প্যারাসাইটের ডিএনএ শনাক্ত করার জন্য পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়ার ব্যবহার উন্নত করা হয়েছে, কিন্তু এর খরচ ও জটিলতার জন্য ব্যাপকভাবে ম্যালেরিয়া-কবলিত এলাকায় ব্যবহার করা হয় না। ২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আনুমানিক ২১৯ মিলিয়ন ম্যালেরিয়ার ঘটনার স্থলসমূহ নথিভুক্ত করেছে। সেই বছরই, ৬,৬০,০০০ থেকে ১.২ মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ার রোগে মারা যায়, যাদের অধিকাংশই ছিল আফ্রিকার শিশুরা। প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি, কারণ অনেক গ্রামীণ এলাকায় উপলব্ধ সঠিক তথ্য নেই, এবং অনেক ক্ষেত্রে অনথিভুক্ত হয়ে থাকে। ২০১১ সালের, ৯৯টি দেশের একটি রিপোর্ট অনুসারে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের কারণে ১,০৬,৮২০ জনের মৃত্যু হয়। ম্যালেরিয়া সাধারণত দারিদ্রতার সাথে সম্পর্ক যুক্ত এবং এছাড়াও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান বাধা হতে পারে।

প্রত্যেক বছর, প্রায় ৫১.৫ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন এবং প্রায় দশ থেকে ত্রিশ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান যাদের মধ্যে বেশিরভাগই আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলের শিশু। ম্যালেরিয়া খুবই পরিচিত একটি সংক্রামক রোগ এবং এটি একটি বৃহৎ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। রোগটি প্লাজমোডিয়াম বর্গের এককোষীয় পরজীবীর দ্বারা ঘটিত হয়। কেবল চার ধরনের প্লাজমোডিয়াম পরজীবী মানুষের মধ্যে সংক্রমন ঘটায়,এদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্রভাবিত করে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম এবং প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স। কিন্তু বাকি দুটি প্রজাতি (প্লাজমোডিয়াম ওভেল, প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরি) ও মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে।

ম্যালেরিয়া স্ত্রী-অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। ম্যালেরিয়ার পরজীবী লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে বংশবৃদ্ধি করে, ফলে রোগীর শরীরে রক্তসল্পতার লক্ষণ দেখা যায়। অন্যান্য সাধারণ লক্ষণসমূহ হল কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, শীতশীত ভাব এবং বমি-বমি ভাব। এই রোগের মারাত্মক দশায় রোগীর কোমা এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

মশারি বা কীটনাশকে ডোবানো মশারি কিংবা অন্যান্য মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করে, মশার কামড় প্রতিরোধ করার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব। মশা নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য উপায় হল কীটনাষক প্রয়োগ এবং জমা জল বের করা দেওয়া,যেখানে সাধারণত মশা ডিম পাড়ে।জমা পানিতে মশা ডিম পারলে,সেখানে কীটনাষক বা কেরোসিন ছিটিয়ে দিতে হবে।

কুইনাইন অথবা আর্টিমেসিনিন গ্রুপের ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়।

শ্রেণিবিন্যাস

রাজ‍্য (Kingdom)  : Protista

উপ-রাজ‍্য (Subkingdom) : Protozoa

পর্ব (Phylum)  : Apicomplexa

শ্রেণি (Class)  : Sporozoa

বর্গ (Order)  : Haemosporidia

গোত্র (Family)  : Plasmodiidae

গণ (Genus)  : Plasmodium

ইতিহাস

প্রাচীন গ্রীসের ফিজিসিয়ান হিপোক্রেটিস, যাকে "ঔষধের জনক" বলা হয়, তিনি প্রথম এই রোগের লক্ষণসমূহের বর্ণনা দেন এবং বছরের কোন সময় এটা হয় ও কোন জায়গায় রোগীরা বাস করে সেই তথ্যের সঙ্গে একটা সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন।

ম্যালেরিয়ার প্রথম নথিবদ্ধ চিকিৎসা পদ্ধতির সময়কাল ১৬০০ সাল, যখন পেরুর আদিবাসীরা চিনচোনা গাছের তিক্ত ছাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করত। ১৬৪৯ সাল নাগাদ ইংল্যান্ডে এটাই "জেসুইট পাউডার" হিসেবে পাওয়া যেত।

১৮৮০ সাল নাগাদ চার্লস ল্যাভেরন লোহিত রক্ত কণিকা থেকে ম্যালেরিয়ার কারণ হিসেবে একটিমাত্র কোষবিশিষ্ট পরজীবী প্রোটোজোয়াকে চিহ্নিত করেন। ফলে শত বছর ধরে চলা দূষিত বায়ু সেবনের ফলে রোগ সৃষ্টির ভুল ধারণার অবসান ঘটে। ১৮৯৭ সালে ভারতে কর্মরত ব্রিটিশ ডাক্তার স‍্যার রোনাল্ড রস প্রমাণ করেন যে Anopheles (অ্যানোফিলিস) মশা এই রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। এ যুগান্তকারী আবিষ্কারের কারণে তাকে ১৯০২ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।

রোগের লক্ষণ

১. প্রথম দিকে মাথাধরা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। ২. দ্বিতীয় পর্যায়ে রোগীর শীত শীত অনুভূত হয় এবং কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। জ্বর ১০৫°-১০৬° ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পর জ্বর কমে যায়। পরে আবার আসে। ৪৮ ঘণ্টা পর পর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা Plasmodium vivax দ্বারা সৃষ্ট ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ। ৩. তৃতীয় পর্যায়ে রোগীর দেহে জীবাণুর সংখ্যা অসম্ভব ভাবে বেড়ে গেলে দ্রুত রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা ভাঙতে থাকে, ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। যকৃত বড় হয় ও সংক্রমিত হয়। প্লীহা, মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে।

১. উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান (প্রথম পত্র) - ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান

বহিঃসংযোগ


Новое сообщение